somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দিল্লীতে গ্যাংরেপে তরুণীর মৃত্যু আর সীমান্তে ফালানীদের আর্তনাদ

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইন্ডিয়াতে এক মেয়ে রেইপ হয়ে মরসে।আর বাংলাদেশের মানুষের চিন্তার শেষ নাই।নাওয়া খাওয়া ভুইলা এক আলাপ।আর ওই মেয়ের জন্য শোকগাঁথা রচনার প্রতিযোগিতা।কিন্তু শোকগাঁথাগুলা লিখার আগে কি একবারও ভেবে দেখা হইসে এর পিছনের কারণগুলা???

অনেকদিন আগে মেরী শেলীর ফ্রাঙ্কেনস্টাইন পড়সিলাম।বইটার কাহিনীতে দেখা যায়,এক তরুণ বিজ্ঞানী উদ্ভাবনের নেশায় পড়ে,এক উদ্ভট প্রজাতির জীব সৃষ্টি করে।আধা মানুষ,আধা দানব টাইপ আরকি।তো ওই উদ্ভট জীব পরে ওই বিজ্ঞানীর জীবন বিষময় করে তোলে।আজকের ভারতে ছড়িয়ে আছে এমন অসখ্য রেপিস্ট ফ্রাঙ্কেনস্টাইন,যাদের নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ভারতের নাই।তাই ঘটছে এমন সব ঘটনা।

ভারতের স্বশস্ত্র বাহিনী পৃথিবীর সবচেয়ে কামলোলুপ বাহিনীগুলোর এক্টি।এই বাহিনীর হাতে আজ পর্যন্ত কত কাশ্মীরি মেয়ে রেইপ হইসে তার হিসেব নাই।তাদের অপরাধ??তারা মুসলমান ছিল এবং কাশ্মীরের স্বাধীনতা চাইত।আজ পর্যন্ত একটা ঘটনারও বিচার হয় নাই।

এতো দূরে যাই কেনো??আমদের ফালানীর কথাই বা ভুলি কেনো???বিএসএফ এর শুয়োরের বাচ্চারা রেইপ করার পর ওকে সীমান্তের কাটাটারে ঝুলিয়ে রাখসিল।ওই শুয়োরের বাচ্চাদের কাছে ১২-১৩ বছরের বাচ্চা মেয়েরাও নিরাপদ না।ফালানীর কথা আমরা ভুলে গেছি।এতটাই প্রখর আমাদের স্মৃতিশক্তি আর জাতীয়তাবোধ।লাফালাফি করতেসি কোন ইন্ডিয়ান মেয়ের রেইপ হওয়া নিয়ে!!!আরে ওই মেয়ের তো কপাল জে,সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মরসে।আমাদের ফালানীর মত কাঁটাতারে ঝুইলা মরতে হয় নাই।কাশ্মীরের নির্যাতিত মেয়েগুলার মত রেইপের পর গুম হইতে হয় নাই।

কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন,এটা তো গেল সামরিক বাহিনীর কথা।কিন্তু যে মেয়ে রেইপ হইসে,সে তো সামরিক বাহিনীর কারো কাছে হয় নাই।সাধারণ কিছু যুবকের হাতে হইসে।তা সাধারণ মানুষের মাঝে এতো কামলোলুপতা কেন??এতোই কেন চুলকানি যে চলন্ত বাসে একটা মেয়েরে রেইপ কইরা ফেলে??এই প্রশ্নের উত্তর দিবে ইন্ডিয়ান টিভি চ্যানেলগুলা।
চ্যানেলগুলাতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে থাকলেও সপরিবারে দেখার মত একটা প্রোগ্রাম পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ আছে??গাড়ী থেকে শুরু করে কাপড় কাচা সাবান সব বিজ্ঞাপনেই জায়গাতেই যৌন সুড়সুড়ির উপাদান।এমনকি শান্তিমত ইন্ডিয়ান চ্যানেলে খেলা দেখারও উপায় নাই।মাঝে মাঝে এমনসব বিজ্ঞাপণ দেয়,যে ফ্যামিলির সামনে প্রেস্টিজ পাংচার।তো এমন আল্ট্রা মর্ডাণ যে সমাজ সে সমাজের ছেলেরা একটু আধটু এমন কাজ করতেই পারে।এতে দোষের কি আছে??

পাগলা কুত্তারে লাই দিলে একসময় তা কামড় মারবেই।ইন্ডিয়া যেভাবে তার রেপিস্টদের রক্ষা করেছে,সারা দুনিয়ার কোনো দেশ তেমন করে নাই।বাংলাদেশ,কাশ্মীর এমনকি নিজ দেশের ভিতরেও একই অবস্থা।নারী নির্যাতনের ক্ষেত্রে এখনো শীর্ষ দেশের একটি ইন্ডিয়া।দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি না করে অতি আধুনিকতায় গাঁ ভাসিয়ে দেয়া দেশগুলোর জন্য সতর্কবার্তা হতে পারে আজকের ইন্ডিয়ার পরিণতি।

ফালানী প্রসঙ্গে ফিরে আসি।বিএসএফ এর শুয়োরের বাচ্চাদের দ্বা্রা রেইপ হওয়ার পর ফালানীর ঠাঁই হয়েছিল সীমান্তের কাঁটাতারে।বাতাসে উড়ছিল তার শতছিন্ন,দলিত জামা।সেই প্রাণহীন দেহ আর ছিন্ন জামা আর্তনাদ করছিল নিভৃ্তে।দাবি জানাচ্ছিল তার প্রতি হয়ে যাওয়া চরম অসম্মানের উপযুক্ত বিচারের।কিন্তু তার সেই দাবি কারো কানে পৌছায়নি।বিবেকের দরজায় ধাক্কা খেয়ে ফিরে এসেছে।আজ ফালানীর প্রেতাত্মার অভিশাপে ইন্ডিয়া ছিন্নভিন্ন।যেইসব কুকুর ফালানীকে রক্তাক্ত করেছিল,তাদের শিকার আজ তাদেরই দেশের নিরীহ তরুনীরা।এতে আমাদের বিচলিত হওয়ার কারণ কি???

ধর্ষিতা সেই তরুণী সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা গেছে।কিন্তু আমাদের ফালানী মারা গেছে কাঁটাতারে ঝুলতে ঝুলতে।সেই হিসেবে অনেক শান্তির মৃত্যু।সাথে মিডিয়ায় প্রচারের ঝড়।ফালানী তো কিছুই পায় নাই।তাই ওই তরুণীর মৃত্যুতে আমি দুঃখ করি না।যেদিন ফালানী হত্যার বিচার পাব,সেদিন হয়তো করব।ওই তরুণীর জন্য কিছুটা হলেও দুঃখ পাব।কিন্তু ফালানী হত্যার বিচার হওয়ার কোনো সম্ভবনা নাই।তাই ওই তরুনীর জন্য দুঃখ করার সময়ও আমার নাই।কোনো বাংলাদেশির থাকা উচিতও না।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০৪
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ইতিহাস মুছে দিতে চায় ২৪শের লাল বিপ্লবীরা/ আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:৪৫



২৫শে মার্চ দিবাগত কালো রাতের অপারেশন সার্চলাইটের পরক্ষনেই।২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলার অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ভুমি’কে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে ঘোষণা করেন। সেদিন থেকেই স্বাধীন সার্বভৌম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বডি সোহেলের মন ভালো নেই !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৯:২৫


আমাদের জাতীয় নেতাদের বংশধরেরা বড়ই অদ্ভুত জীবন যাপন করছেন। তাদের বাপ চাচাদের মধ্যে মত-বিরোধ থাকিলেও একে অপর কে জনসম্মুখে অপমান করেন নাই। এক্ষেত্রে নেতাদের প্রজন্ম পূর্বপুরুষ দের ট্রাডিশন ধরে রাখতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পত্রিকায় লেখা প্রকাশের ই-মেইল ঠিকানা

লিখেছেন মি. বিকেল, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১:৩৩



যারা গল্প, কবিতা, সাহিত্য, ফিচার বা কলাম লিখতে আগ্রহী, তাদের জন্য এখানে বাংলাদেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতা, সাহিত্য পাতা ইত্যাদির ই-মেইল ঠিকানা দেওয়া হলো। পত্রিকায় ছাপা হলে আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তার দায়ভার কি সেনাবাহিনী নেবে? তাদের সমালোচনাকে অনেকে সেনাবাহিনীর সমালোচনা মনে করছে কেন?

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ২:২৯

বাংলাদেশের সেনাবাহিনী এখনও আমাদের জন্য গর্ব এবং আস্থার জায়গা। কারণ দুর্নীতির এই দেশে একমাত্র সেনাবাহিনীই সেই প্রতিষ্ঠান যার আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় সুনাম এখনও আছে। কতিপয় বিপথগামী কর্মকর্তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েলকে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তাই মিলেমিশে শান্তিপূর্ণ প্রতিবেশীর মত থাকাই দরকার।

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৯:১৮



একটি জনগণ কিভাবে নিজেদের জন্য নরক ডেকে আনতে পারে-
গাজার জনগণ তার জ্বলন্ত প্রমান। এরা হামাসকে নিরংকুশ ভোট দিয়ে ক্ষমতায় এনেছে কারণ হামাস ইসরায়েলের ভৌগলিক এবং রাজনৈতিক অস্ত্বিত্বে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×