সংক্ষিপ্ত ও অত্যন্ত সহজ - সরলাকারে সংকলিত:
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "হজ্জ এবং ওমরা বেশী বেশী করতে থাক। কেননা ইহা দূর্দশা ও গরিবী এবং গুনাহসমূহকে এমনভাবে বিদূরিত করে, যেমন আগুনে লোহা, সোনা ও রূপার মরিচা দূর করে থাকে।" ( এই হাদিসটি ইমাম তিরমিজী বর্ণনা করেছেন এবং ছহীহ বলেছেন)
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এও বলেছেন: " যে ব্যক্তি এমন হজ্জ করল যাতে না কোন অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়েছে আর না কোন গুনাহর কাজ করেছে, তাহলে সে গুনাহ থেকে এমন পবিত্র হয়ে প্রত্যাবর্তন করবে যেমন তাকে তার মা সদ্য নিষ্পাপ শিশু হিসাবে প্রসব করেছে।"
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরোও বলেছেন: "মাবরুর হজ্জের বিনিময় হচ্ছে একমাত্র জান্নাত।" ( এ দুটি হাদিস ইমাম বোখারী এবং ইমাম মুসলিম রাহেমাহুমুল্লাহ বর্ণনা করেছেন)
শর্তসমূহ:
১. ইসলাম
২. বয়োঃপ্রাপ্তি
৩. স্বজ্ঞান
৪. আযাদ
৫. সামর্থ
৬. নারীদের সাথে মাহরাম পুরুষ থাকা।
মীকাতসমূহ স্থানগত:
১. জুল হুলাইফা ( আবইয়ার আলী ) মদীনাবাসী ও অতিক্রান্তদের।
২. আল-জহফা ( রাবিগ ) শিরিয়াবাসী ও এ পথে অতিক্রান্তদের।
৩. ইয়ালামলাম ( আসসা'দীয়া ) ইয়ামানবাসী ও অতিক্রান্তদের।
৪. জাতুইরক্ক ( আদ দারীবাহ ) ইরাকবাসী ও অতিক্রান্তদের ।
৫. ক্বারনুল মানাযিল ( আসসাইলিল কবীর ) নাজদবাসীদের জন্য।
কালগত: শাওয়াল, জ্বলকাদ ও জ্বলহাজ্জ মাসত্রয়।
হজ্জের প্রকার:
১. তামাত্তু' হজ্জ: মীকাত থেকে লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা ওমরা বলে ইহরাম বেঁধে উচ্চস্বরে তালবীয়া বলতে বলতে ওমরার যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে হবে।অতঃপর ৮ই জিলহজ্জ ইয়াওমি তারবিয়ার দি পূনঃরায় লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা হাজ্জানবলে হজ্জের জন্য ইহরাম বেঁধে তালবিয়া ও অন্যান্য জেকর ও আমলের সাথে হজ্জের বাকী কার্য সমাপন করতে হবে। হজ্জে তামাত্তুকারীর জন্য কোরবানী ওয়াজিব। ( দুই তাওয়াফ ও দুই সায়ী )
২. কেরাণ হজ্জ: মীকাত থেকে লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা ওমরাতান ও হাজ্জান বলে এক সঙ্গে হজ্জ ও ওমরার নিয়্যত করা এবং হজ্জের পুরোপুরি কাজ সেরে হালাল হওয়া। হজ্জ কেরাণকারীর উপর করা ওয়াজিব। ( দুই তাওয়াফ ও দুই সায়ী )
৩. ইফরাদ হজ্জ: মীকাত থেকে লাব্বাইকা হাজ্জান বলে শুধু মাত্র হজ্জের নিয়্যতে ইহরাম বাঁধা। ইফরাদকারীর উপর কোরবাণী ওয়াজিব নয়।তবে কোরবাণী দেওয়া উত্তম। কোরবাণী না করলে কোন কাফফারা দিতে হবে না। ( দুই তাওয়াফ ও দুই সায়ী )
আরকান:
১. ইহরাম বাঁধা
২. আ'রাফায় অবস্থান
৩. ত্বাওয়াফুল ইফাদা / যিয়ারাহ বা ফরয তাওয়াফ
৪. ছাফা ও মারওয়ার মধ্যে দৌড়ানো।
যে ব্যক্তি এই রুকনগুলির কোন একটি ছেড়ে দিবে / বাদ পড়বে তার হজ্জ হবেইনা। তাকে পরবর্তীতে পূনঃরায় হজ্জ সমাধা করে নিতে হবে।
ওয়াজিব সমূহ:
১. মীকাত থেকে ইহরাম বাঁধা
২. আরাফায় সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান
৩. মুযদালীফায় অর্ধ রাত্রি যাপন
৪. তাশরিকের দিনগুলোর রাত্রি মীনায় যাপন ( ১১, ১২, ১৩ তারিখ )
৫. তাশরীকের দিনগুলোতে ক্রম ধারানুযায়ী কংকর নিক্ষেপ
৬. জামরাতুল আকাবায় কংকর নিক্ষেপ করে মাথা মুন্ডন করা অথবা চুল ছেটে ফেলা।
৭. তামাত্তু এবং কেরাণ হজ্জকারীদ্বয়ের কোরবাণী করা।
৮. ত্বাওয়াফে বিদা অর্থাৎ মক্কা থেকে বিদায়কালীন তাওয়াফ করা।
যার থেকে ওয়াজিবসমূহের কোনও একটি ও ছুটে যাবে তাকে কাফফারা স্বরূপ দম দিতে হবে।
সুন্নাত সমূহ:
১. ইহরাম বাঁধার সময় গোসল করা।
২. পুরুষের সেলাই বিহীন সাদা কাপড় দ্বারা ইহরাম বাঁধা।
৩. পুরুষ ও মহিলার তালবিয়া পাঠ। পুরুষ উচ্চস্বরে পাঠ করবে।
৪. আরাফার রাতে ( ৯ তারিখ রাতে ) মিনায় অবস্থান, রাত যাপন।
৫. কেরান এবং ইফরাদ হজ্জকারীদ্বয়ের তাওয়াফে কুমূম করা।
যার থেকে সুন্নাতসমূহের কিছু ছুটে যাবে তাকে দম দিতে হবে না। কোন কাফফারা নেই।
( চলবে )............................