somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিদারুন অত্ঃপর ( A GOAT ) :( :!> :#> :)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৪:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই , তুই আমাকে আর কখনো যদি ছাগল বলছিস । রাগে নয়নের চোখ মুখ লাল হয়ে ওঠে ।

তাইলে কি বলবো ? গাধা ?

নয়ন অনেক কিছু বলতে চায় কিন্তু রেগে গেলে ওর মুখ থেকে কোন কথা বেড়ুতে চায় না । রাগে অভিমানে নয়নের গলা ব্যাথা করতে থাকে ।

আহা !! আমাদের নয়ন খোকাটা কি রাগ করছে ? হাসতে হাসতে বলে মিলি।

ধুর তোর সাথে কথা বলাই ঠিক না আমি গেলাম থাক তুই এখানে পড়ে । রাগে গজ গজ করতে করতে হাটতে থাকে নয়ন ।

এই আমার নোট টা দিয়ে গেলি না ? কোথায় যাস ?

জাহান্নামে !! নয়ন রাগি কন্ঠে চেচিয়ে উত্তর দেয় ।

আরে শোন শোন , নোট টা দিয়ে যা না দোস্ত , প্লিজ ।

পারবো না । ছাগলের নোট তোকে নিতে হবে না ।

আরে শোন না একটা জরুরি কথা আছে তোর সাথে একটু শুনে যা না । অনুরোধের সুর ঝরে পড়ে মিলির কন্ঠে ।

নয়নের হাটা থেমে যায়, বুকের মধ্যে কেমন একটা অনুভুতি হতে থাকে তার। খুব অস্বাভাবিক ধরনের মায়াময় অনুভুতি । এই মেয়েটার উপর কেন যে সে রাগ করে থাকতে পারে না সে বুঝতে পারে না ।

নয়ন আর মিলি খুব ভালো বন্ধু, এক সাথে একই ইউনিতে পড়ে । ছোট খাটো ঝগড়া ঝাটি সব সময় লেগেই থাকে ওদের মধ্যে । অবশ্য ঝগড়াটা মিলিই শুরু করে । কিন্তু সেটা বেশিক্ষন কনটিনিউ করেনা।

কি বলবি বল ? নয়ন মুখটা ঘুরিয়ে রেখেছে । তার রাগ পুরা পুরি কমে নাই সেটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছে ।

কিরে মুখটা এরকম কদবেলের মতো করে রেখেছিস কেন ?

কই ? আবার শুরু করলি ? যাবো আমি ?

আরে না না শোন না তুই যখন রাগ করিস না তখন তোর মুখটা কদবেলের মতো লাগে হি হি হি ।

ওকে আমি গেলাম ।

আরে দাড়া সার্টে খামচি মেরে নয়ন কে ফেরায় মিলি ।
শোন একটা ইন্টারেস্টিং খবর আছে ।
সেই লোকটা না দেখা করতে চাচ্ছে।

কোন লোকটা ? চিন্তিত কন্ঠে জিজ্ঞেস করে নয়ন ।

আরে বুদ্ধু সেই লোকটা । যার কথা তোকে সেদিন বলেছিলাম। আমার আব্বুর ফ্রেন্ডের ছেলে । ব্যাংকে ভালো একটা জব করে। যার সাথে আমার বিয়ের কথা হচ্ছে। আমরা সাথে মোবাইলে কথা হয়। তোকে না বল্লাম সেদিন !

ও !!!

জানিস লোকটা না আমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছে এখন কি করি বলতো?

তুই কি করবি তার আমি কি জানি বিরক্ত কন্ঠে জবাব দেয় নয়ন।

আরে তুই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড না ? তুই একটু বলনা ।

তোর যা খুশি কর গিয়ে আমি কি জানি ।

কি রে তুই এরকম রেগে কথা বলছিস কেন ?

আমি আবার কোথায় রেগে কথা বললাম ? দেখা করতে চাচ্ছে তোর ইচ্ছে হলে দেখা কর।

তাহলে তুই বলছিস ?
ওকে তাহলে দেখা করেই ফেলি কি বলিস ?

নয়ন কোন উত্তর দেয় না
নয়নের গলা আবার ব্যাথা করা শুরু করেছে ।

আচ্ছা শোন, সে কালকেই দেখা করতে চায়, হাসি মুখে বলে মিলি ।
ধানমণ্ডির জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টে ।
আমার না খুব নার্ভাস লাগছে কি করি বলতো ?

এবারো কোন উত্তর আসে না নয়নের পক্ষ থেকে ।
মিলি বলে চলে । জানিস লোকটাকে না আমার খুব ভালো মনের মনে হয়। আর খুব রোম্যান্টিক । বলে কিছুটা লজ্জা পায় মিলি ।

নয়ন খুব বিতৃষ্ণা নিয়ে বলে , ভালো ।

আচ্ছা বলতো কালকে কি ড্রেস পড়লে ভালো হয় ? কোন কালারের পড়বো ?

তোর যা খুশি পড় তোঁকে সব কালারেই মানায় । সব থেকে ভালো হয় কালো কালার পড়লে।

আরে ধ্যাত তুই না একটা , কালো তো শোকের রং এখন কি ওটা পড়া ঠিক হবে ?

তাইলে তোর যা খুশি তাই পড় আমি বলতে পারবো না ।

ওকে তাহলে লাল রং পড়ি । কি বলিস ?
আমাকে মানাবে না ?

হুম মানাবে ।

আর শোন কাল কিন্তু তুই আমার সাথে যাবি ।

আমি যাবো মানে ?

হ্যা তুইও যাবি । আমি ওকে তোর কথা বলেছি, তুই আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড । আর আমার না খুব নার্ভাস লাগছে তুই গেলে আমি একটু সাহস পাবো ।

তোদের দুজনের মাঝে আবার আমাকে টানছিস কেন ? কাবাবের হাড্ডি হতে ভালো লাগেনা ।

প্লিজ দোস্ত , না করিস না । আমার লক্ষি দোস্ত , তুই কত ভালো ।
আমার অনুরোধ রাখবি না ? যা আর কক্ষনো তোঁকে কোন অনুরোধ করবো না প্রমিজ ।

নয়নের মুখে কোন কথা আসতে চায় না, শুধু কষ্ট করে বলে , ওকে আমি আসবো। তবে আমি কিন্তু বেশি সময় দিতে পারবো না কালকে আমার একটা জরুরি কাজ আছে ।

দ্যাটস লাইক আ গুড বয় । আচ্ছা বেশি সময় দিতে হবে না কিছুক্ষন থেকেই চলে আসিস।
তাহলে কিন্তু তুই সকাল নয়টায় জিনজিয়ানে থাকবি , ঠিক আছে ?
আর হ্যা শোন কিছু গোলাপ নিয়ে আসতে পারবি ?

আবার গোলাপ কেন ?

আরে বুদ্ধু এই প্রথম ওর সাথে দেখা হচ্ছে আমি ঠিক করেছি ওকে কিছু গোলাপ গিফট করবো। গোলাপ ওর খুব প্রিয় ফুল তাই। লজ্জায় নত মুখে বলে মিলি।
ভালো দেখে কিছু গোলাপ নিয়ে আসতে পারবি না ?

হু পারবো যান্ত্রিক কন্ঠে উত্তর দেয় নয়ন ।

তাহলে আসি রে আমার সুইট দোস্ত । বাসায় যাবো ।

ও হ্যা যা । কোন রকমে বলে নয়ন।

ওকে বাই !! কাল সময় মত চলে আসিস কিন্তু ।

মিলি চলে যায় তার পথে। নয়ন কিছুক্ষন স্ট্যাচুর মত দাড়িয়ে থাকে ওখানেই, যেন ওর কোথাও যাওয়ার নেই, অনন্তকাল সে এখানেই দাড়িয়ে থাকবে ।

পরদিন সকাল বেলা জিনজিয়ান রেস্টুরেন্টের সামনে এসে দাড়ায় নয়ন। তার হাতে অনেক গুলো গোলাপ। খুব দুর্বল দেখায় তাকে হয়তো সারা রাত জেগে থাকার ক্লান্তি । তবে সব থেকে বেশি ক্লান্তি যে তার মনে সেটা আর কেইবা জানবে !!

রেস্টুরেন্টের ভেতরে ঢুকতেই মিলির উল্লসিত কন্ঠে ডাক শোনা যায়, এই দিকে দোস্ত , এখানে চলে আয় ।

নয়ন এলো মেলো পায়ে হেঁটে যায় মিলির টেবিলের দিকে ।

কিরে দেরি করলি কেনো ? দশ মিনিট লেট !
তুইযে একটা রাম ছাগল সেটা কি আমি এমনি এমনি বলি ?

নয়ন আজকে আর রেগে যায় না ।
সরি দোস্ত । তা উনি কোথায় ? ওনাকে দেখছি না যে ?

আরে তার কথা পড়ে হবে আগে বল আমাকে কেমন লাগছে আজকে ?

নয়ন তাকায় মিলির দিকে । মিলিকে আজ সত্যি খুব সুন্দর লাগছে কিন্তু এই সৌন্দর্য যে নয়নের বুকের জ্বালা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে সেটা কি মিলি যানে !!!

কিরে কিছু বলছিস না কেন ? লাল রঙে আমাকে মানায় নি ?

নয়ন যেন মিলির প্রশ্নই শুনতে পায় নি ।
কই ভাইয়া কোথায় ? উনি এখনো আসেন নি ?

নাহ্‌ উনি কখনোই আসবেন না । অদ্ভুত এক ধরনের হাসি হাসতে থাকে মিলি ।

নয়ন এ হাসির রহস্য বুঝতে পারে না ।
আসবে না মানে ? তুই না বল্লি ?

হু বলেছিলাম । খুব স্বাভাবিক কন্ঠে উত্তর দেয় মিলি ।

তাহলে ?

তাহলে আর কি ? এমনি এমনি বলেছি । আবার রহস্য হাসিতে বিভ্রান্ত হতে থাকে নয়ন ।

দেখ তোর এরকম ফাজলামি আমার একদম ভালো লাগছে না ।
তুই না বল্লি তোর বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে দেখা করবি যার সাথে তোর বিয়ে ঠিক হয়েছে ।

তুই আসলেই একটা ছাগল । আমার কোন বিয়ে ঠিক হয়নি আর আব্বুর কোন বন্ধুর ছেলের সাথে আমার কোন কথাও হয় নি কখনো ।
শোন এরকম ভ্যাবলার মত আমার দিকে তাকিয়ে থাকবি নাতো এরকম তাকিয়ে থাকলে তোঁকে আরও বেশি ছাগল ছাগল লাগে।
গোলাপ গুলো এখনো হাতে নিয়ে আছিস কেন গাধা ? আমার হাতে দিয়ে বল আই লাভ ইউ মিলি আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালো বাসি মিলি। বোকা এই কথাটাই তো এত দিন বলতে চেয়েছিস, নাকি ? ভিতু কোথাকার ? লজ্জায় আবার নত হয়ে আসে মিলির মুখ সে মুখে আন্দের হাসি খুবি স্পষ্ট ।

কি ব্যাপার ! একি সাগরের অথৈ জলে ডুবে যাচ্ছে নয়ন ? তার মাথাটা কেমন জানি চক্কর দিচ্ছে । সে কি ঠিক শুনেছে ?
এক মুহূর্ত লাগে তার ধতস্থ হতে । পরক্ষনেই নয়নের চিৎকারে সবাই অবাক হয়ে তাকায় তাদের দিকে ।

নয়ন হাঁটু গেড়ে বসে আছে মিলির সামনে , গোলাপ গুলো মিলির দিকে বাড়ানো ।
আই লাভ ইউ মিলি , আই লাভ ইউ সো মাচ , তার দুচোখ দিয়ে অঝরে আনন্দাশ্রু ঝরে যাচ্ছে ।

আই লাভ ইউ টু মাই সুইট ছাগ্লা ।

অন্য জনের চোখেও যে জল ছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না ।







{ গল্পটা আমার দুজন বন্ধুকে উৎসর্গ করলাম যার একজন পরীক্ষার টেনশানে কোন কিছুই ভাবতে পার্তাছেনা ( স্যার জাকারিয়া বলেছেন : তোমরা এক্সাম নিয়া চিন্তা করো , অন্য কিছু পড়ে হবে :P ) আরেকজন ডাঙায় তোলা পাংগাস মাছের মত তড়পড়াইতাছে :( । আমার পক্ষথ্যিকা তাদের জন্য ইনফিনিটি শুভকামনা সব সময়ের জন্য ;) }
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:৫৯
৩৬টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ড. ইউনুসের বক্তব্যের ব্যাবচ্ছেদ

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৩:২০

আজ সন্ধ্যায় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ শুনলাম। প্রায় ৩৫ মিনিটের এই বক্তৃতা অনেকের কাছে হয়তো ঘ্যানঘ্যানানি আর প্যানপ্যানানির মতো মনে হতে পারে, কিন্তু আমি একজন রাজনৈতিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ডায়েরী- ১৪৯

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:২৯



আজ ২৫ রোজা।
এই তো সেদিন রোজা শুরু হলো। দেখতে দেখতে ২৪ টা রোজা শেষ হয়ে গেলো। সময় কত দ্রুত চলে যায়! আগামী বছর কি রমজান... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবগুণ্ঠন (পর্ব ২)

লিখেছেন পদাতিক চৌধুরি, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ২:৩৯



অবগুণ্ঠন (পর্ব ২)

ওসির নির্দেশ মতো ডিউটি অফিসার রাঘবেন্দ্র যাদব লাশ পরিদর্শনের সব ব্যবস্থা করে দিলেন। গাড়ির ড্রাইভার সহ তিনজন কনস্টেবল যথাস্থানে তৈরি ছিলেন। বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি ওনাদের।খানিক বাদেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগে বিচার , সংস্কার তারপরেই নির্বাচন

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:২২



জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন এক ঝাক তরুনদের রক্তের উপড় দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এ জ্বালাময়ী কর্মসুচী দিচ্ছিল , তখন বিএনপির... ...বাকিটুকু পড়ুন

It is difficult to hide ল্যাঞ্জা

লিখেছেন অধীতি, ২৬ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৩:৪১

এক গর্দভ ইউটিউবার ৭১কে ২৪এর থেকে বড় বলতে গিয়ে আমাদের শিখায় যে ৭১ বড় কারণ সেটা ভারত পাকিস্তানের মধ্যে হয়ে ছিল। আর আপামর জনসাধারণ সেটায় অংশগ্রহণ করেনি। এই হলো যুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×