পতিত সংবিধান বাতিল করে , পতিত শাসন ব্যবস্থার কবর দিয়ে নতুন ধারার এই রাষ্ট্রে ৯২% মুসলমানের দেশে ইসলামী ভাবধারার বাংলাদেশী জাতীয়বাদী সরকার ক্ষমতায় আসবে, এটাইতো জনগনের প্রত্যাশা । ৫ই আগষ্ট’২৪ কি শুধুই হাসিনাকে ফেলে দিয়েছে ? এই দেশের মানুষ ভারতের আধিপাত্যবাদকেও ঐদিন ঝেটিয়ে বিদায় করেছে, এটা এখনো বোঝেন নি ? আপনাদের মত সুশীলদের এত চুলকাচ্ছে কেন ? আপামর সাধারণ জনগন এটা বোঝে না মনে করেছেন ? নাটক কম করেন চুচীল রাম-বামেরা ! দেশের ম্যাক্সিমাম মানুষ স্বাধীনভাবে যাকে খুশী তাকে শাসন ক্ষমতায় বসানোর জন্য ভোট দিবে, সেই ব্যবস্থার নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অর্থাৎ পঁচে যাওয়া রাষ্ট্র সেই পর্যন্ত মেরামত না হওয়া পর্যন্ত জনগন ভোট দেবার জন্য প্রস্তত নয়, এটা এখন দিনের আলোর মত পরিস্কার । অন্য ধান্দাবাজী চিন্তায় মাথা নষ্ট করছেন ? করতে থাকুন, আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন । প্রসংগক্রমে ইতিহাসের একটা বিশেষ অংশ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিঃ
জোয়ার ভাটার এই ভুখন্ডের বাংলাদেশ ! তাই এদেশের মানুষের আবেগ এর সাথে জোয়ার-ভাটার অনেক মিল রয়েছে । এই দেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান । আর এই পরিচিতির কারণেই কিন্তু এই মানচিত্রটা একটা পৃথক মানচিত্র হিসেবে স্বীকৃত বিশ্বসভায় স্বধীন মানচিত্র । এই বাংলাদেশের মানুষ ৯২% মুসলিম হলেও অন্য ধর্মের সকল মানুষদের সাথে একসাথে হেসে খেলে বড় হয়েছে আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম । এখানে ভারতের হিন্দুত্ববাদী কষাই/ অমানুষদের মত এখানে কোনদিনও সাম্প্রদায়িক হানাহানী ছিল না । আজও নেই। যা দেখানো হয় সেটা ভারত-আওয়ামী ন্যারেটিভ আর তাদের কৃতদাস এ দেশীয় আপনাদের মত চুচীল কিছু দালালদের সৃষ্ট গল্প, নাটক-সিনেমা । ১৯৪৭ এর সেই মানচিত্র কিন্তু ভারতের ষড়যন্ত্রের কারণেই হয়েছিল । অথচ তারা এর জন্য শুধুমাত্র মোহাম্মাদ আলী জিহ্নাকে দায়ী করে । এটা তাদের মোনাফেকী চরিত্র । তাদের চরিত্র চিরকাল এরকমই । পর্দার আড়ালের রূপ এবং পর্দার বাইরে এসে প্রকাশ করা রূপের মধ্যে যে মোনাফেকী স্বভাব ছিল, সেই স্বভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে তারা সর্বকালেই এই অঞ্চলে ফেতনা-ফাসাদ বাঁধিয়ে রেখেছে । আর এর মূল কারণ তাদের বর্ণবাদী, সাম্প্রদায়িক চরিত্র । বাক্ষ্মণ্যবাদীরা চিরকালই তাদের ভাষায় যবন(মুসলমান)দের এবং তাদের স্বগোত্রীয় নিম্ন-বর্ণের হিন্দুদের কখনোই মানুষ হিসেবে সম্মান করত না, এখনো করে না, ভবিষ্যতে কোনদিনও এরা তা করবে না । এদের এই চরিত্রের কারণে মূলতঃ ভারত ভাগ হয় । মুসলমানরা ভারতবর্ষের মানুষকে ৮০০ বছরের শাসনকালে সভ্যতার আলো দেখিয়েছিল, তাদের সারা পৃথিবীব্যাপী যে শক্তিমত্তার পরিচয় এখন গোটা বিশ্ব জানে, সেটার বীজ বপণ করেছিল মুসলিমরা । সুতরাং সেই মুসলিমরা কেন ভারত ভাংতে চাইবে ? বরং তারাই মহাভারত এর মানচিত্রের দ্রষ্টা । আজকের যে মানচিত্রের স্বপ্ন গেরুয়া-সন্ত্রাসীরা দেখায় , সেই মানচিত্রতো মুসলিমরাই চেয়েছিল । কিন্তু ওদের ঘৃণা, মোনাফেকী, ক্ষমতার লোভ আর কাপুরুষতার কারণে সেই শক্তিশালী ভারত প্রতিষ্ঠা পায়নাই । বৃটিশদের সাথে ২০০ বছর আঁতাত করে তারা ভারতের মুসলিম শাসকদের এবং মুসলিম শক্তিকে দুর্বল করেছিল । তলে তলে ওদের জনশক্তিকে বৃটিশদের আদোলে তৈরী করে তথাকথিত সভ্যতার দাবীদার সেজে মুসলিমদের ব্যাকডেটেড , অশিক্ষিত হিসেবে কোণঠাসা করে তাদের কৃতদাস বানিয়ে রাখার যে স্বাধ তাদের অন্তরে ছিল, সেই স্বাধের ফসল ছিল পাকিস্তান এবং ভারত দুই রাষ্ট্রের সৃষ্টি । অথচ এই কাপুরুষরা পুরোটাই দোষ চাপায় জিহ্নার ঘাড়ে ।
হিন্দু-মুসলিম যতগুলো দাংগার কারণ ঘটেছিল, তার জন্য ওরা শুধুমাত্র বৃটিশদের এবং মুসলমানদের দায়ী করে । কিন্তু তলে তলে সবগুলো দাংগার পেছনে বৃটিশদের সহায়তায় মোনাফেক ব্রাক্ষ্মণদেরই কারসাজী ছিল । ইসলামী সন্ত্রাসবাদীতার অযুহাতে নাটকীয় কায়দায় স্বাধীন হায়দ্রাবাদ দখল করে নেয়ার ইতিহাস তার উজ্জ্বল প্রমাণ । বর্তমান স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে একইরকম নাটক করে আসছে ২০০৮ সাল থেকে প্রকাশ্যেই । ওদের চক্রান্ত ১৯৬৬ সাল থেকে শুরু হয় । যা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে কার্যকর করা শুরু হয় । কিন্তু তৎকালীন শাসকদের দেশপ্রেম এবং সেনাবাহিনীর দক্ষতার কারণে সেটা করতে পারেনাই । তাই তাদের কৃতদাসী হাসিনাকে দিয়ে অভিনয় করিয়ে গত ১৬ বছরে তারা মনে করেছিল তাদের মিশন-ভিষণ পুরোটাই সফল হয়ে গেছে ?
কিন্তু ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ওদের সেই স্বপ্ন চুরমার হয়ে ওরো পাগোল হয়ে গেছে । কিন্তু সেই সাথে পাগোল হয়ে গেছে আমাদের দেশের তথাকথিত সুশীল নামের কিছু চরত্রিহীন ভারতের দালাল , গণমাধ্যম, বিচারক, সামরিক-বেসামরিক কিছু অর্থলোভী চরিত্রহীন এই দেশীয় কিছু গাদ্দার । এই দেশের জনগনের ঘাড়ে গত ৫৩ বছরের সকল শাসকদের ব্যর্থতার দায়ভার জমেছে । তারা ছিল ভিষণভাবে ক্ষুব্ধ । এই জ্বালা-যন্ত্রনা আরো প্রকট হয়ে উদগিরণ ঘটেছে হাসিনা ১৬ বছরের দুঃশ্বাসনের যাতাকলে পড়ে । সীমাহীন লুটপাট আর রাষ্ট্রের নাগরিকদের নাগরিক মর্যদা কেড়ে নিয়ে তাদেরকে কৃতদাস বানিয়ে ফেলার মত ভয়ানক যন্ত্রনার সম্মিলিত প্রকাশ ২৪ এর জুলাই বিপ্লব । অথচ এত বড় বিপ্লবের পর এই রাষ্ট্রে একটা বিপ্লবী সরকার গঠণ করতে দেয়নাই এই তথাকথিত সুশীলরা । ভারতের র’ এর দালালদের ইউনুস সরকারের ঘাড়ের উপর কয়েকজনকে উপদেষ্টা হিসেবে বসিয়ে ৫ই আগষ্ট বিপ্লবী জনতার রায়কে অসম্মান করে চুপ্পু এবং পতিত সংবিধানের কাছে এই সরকারকে আটকে দিয়ে একটা দুর্বল সরকার গঠণ করেছে এবং ফাঁক ফোঁকড় দিয়ে সেই পতিত আওয়ামীদের দোষরদের বিচার না করে, জেলে না পুরে তাদেরকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের ছবক দিচ্ছে তথাকথিত সুশীল সমাজ এবং ভারতের দালাল কয়েকটা গণমাধ্যম ।
এরা জানে, এই দেশের অসংখ্য মানুষের চাওয়া কি ? এই দেশের মানুষ বিগত ৫৩ বছরের চোর-বাটপাড় পরিচালিত শাসন ব্যবস্থার পুনর্বহাল চায় না । তারা চায় রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় এমন একঝাক মানুষ আসুক, যারা জনগনের সম্পদ চুরি করবে না । জনগনের অধিকার হরণ করবে না । এরা ভালো করেই জানে এই রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতায় কারা আসতে পারলে তেমন দুর্ণীতিমুক্ত, শোসন-বঞ্চনা মুক্ত শক্তিশালী একটা রাষ্ট্র গঠণে সক্ষম ? তাদের অপরাধ কি ? অপরাধ যেটা সামনে আনার চেষ্টা করে, তা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর খুবই হাস্যকর । কিন্তু এই কুলাংগারগুলোর অনেকেই তাদের মেয়ে বিয়ে দেবার সময় তাদের সুশীলীয় ভাষায় ঐ অপরাধী দলের ছেলেদের জামাই করতে চায় । কারণ তারা জানে, তার মেয়ের জীবনের নিরাপত্তা , সম্মান তারা যে তথাকথিত সুশীল ভারতের দালাল দলকে ক্ষমতায় বসাতে চায়, তাদের দলের কারো ছেলে পেলের হাতেই নিরাপদ নয় ( ব্যতিক্রম ব্যতিত) । তারা ভালো করেই জানে এরা শাসন ক্ষমতায় গেলে দেশকে দুর্ণীতি লুট-পাট করে ধ্বংস করবে না, দেশের মানুষকে ভিক্ষুকে পরিণত করবে না । কিন্তু তেমন ভালো মানুষ রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসুক, এটা তারা কেন চায় না ? কারণ তাদের প্রভু ভারত সেটা চায় না ।
চায়না এই কারণে যে, এরা নিজেরাও অসৎ উপায়ে চরিত্রহীন শাসকদের ছায়াতলে থেকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা, নারীবাজী, চাঁদাবাজী, পরকীয়া সহ নানা রকম অপকর্ম স্বাধীনভাবে করে যেতে পারবে । এই সব মোনাফেকরা জুলাই বিপ্লবের নায়ক বনে গিয়েছে এবং এরা যে কোন উপায়ে ভারতের এজেন্টদের দিয়ে ভারতের হুকুমের গোলাম কোন সরকার ব্যবস্থা জারি রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে । কিন্তু তাদের এই উদ্দেশ্য যে জনগন বুঝে ফেলেছে, এই বোধই তাদের নেই ।
সাবধান করছি সবাইকে । এই দেশের জনগন আগের মত বোকা নেই কিন্তু । প্রত্যেকের হাতে তথ্য প্রবাহ বিদ্যমান । যে যা করছেন, তার সব কিছুই রেকর্ড হয়ে যাচ্ছে তৃণমূল পর্যন্ত । সুতরাং আপনারা আগুন নিয়ে খেলছেন । আপনারা নিজেদের চরিত্রকে আড়াল করতে পারেননাই । জনগনের কাছে আপনাদের প্রত্যেকেরই আমালনামা জমা রয়েছে এবং গত প্রায় ৭ মাসে আবারো নতুন করে চুড়ান্তভাবে সীল লাগিয়ে রেকর্ডপত্র জমা দিয়ে ফেলেছেন ইতমধ্যে । সুতরাং যেনতেনভাবে ভারতের অনুগ্রহের কোন সরকার ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়ার রাজনীতি যদি আবারো এই দেশে বহাল রাখার ইচ্ছা বাস্তবায়ন করতে চান, দেশে গৃহযুদ্ধ বেধে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে । তাতে পরিণতি কারো জন্যই ভালো হবে না ।
এই দেশের মানুষ যেভাবে জেগে রয়েছে, তাতে আপনারা সফল হবেন না । কিন্তু যা করতে চাচ্ছেন, তাতে নিজেরাও মরবেন, জনগনও মরবে , আরো অনেক রক্ত ঝরবে । কিন্তু মনে রাখবেন, এই দেশকে আর কোনদিনও ভারতের করদরাজ্য বানাতে দেবে না ভবিষ্যতের কোন প্রজন্ম । তা আগামী ১০০ বছর পরে হলেও নয় ।