আওয়ামী মুসলিম লীগ এর জন্ম থেকে যে দলটি ছিল, তাদেরকে রাজনৈতিক দলা বলা চলে বটে । তবে ১৯৫৫ সালের যেদিন থেকে এই দলটির নাম থেকে “মুসলিম” শব্দটি তুলে দিয়ে “আওয়ামীলীগ” নামকরণ করা হয় তখন থেকে এই দলের নানা রকম কাজ কর্ম, শেখ মুজিবের অস্থির রাজনীতি অনেকেরই কাছে সন্দেহজনক ছিল । এই সন্দেহ প্রমাণ হতে সময় লাগেনি । বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরই কোন রকম গণভোট বা গণরায়ের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই শেখ মুজিব নিজেকে দেশের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে ক্ষমতায় বসে ১৯৭২-৭৪ এর মধ্যেই আওয়ামীলীগ নামক রাজনৈতিক দলের মৃত্যু ঘটিয়েছিলেন তিনি নিজের হাতে । সে ইতিহাস কোথাও গোপন নেই । সবাই তা জানেন । শেখ মুজিব নিজে হাতে প্রমাণ করে গিয়েছিলেন, এই দলটি স্বাধীনতার পর থেকে আর কোন স্বাভাবিক রাজনৈতিক দল ছিল না। এটা হয়ে উঠেছিল একটা ফ্যাসিস্ট সংগঠণ ।
১৯৭৫ থেকে ১৯৭৭ সালের মধ্যেই উচিৎ ছিল সেই সময়ের শাসকদের এই দলটাকে নিষিদ্ধ করা । সেটা না করে যে ভুল করা হয়েছে সে ভুলের খেসারত গুনতে হয়েছে ২০২৪ এর হাসিনা পতন পর্যন্ত । এমনকি এত বড় গণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আধিপাত্যবাদী ভারত এবং ফ্যাসিস্ট হাসিনার একযোগে পতনের মাধ্যমে জাতি এত বড় বিজয় অর্জন করার পর আজও কী এক অজানা চক্রান্তের ফাঁদে পড়ে সেই ভুলের জের টেনে চলেছে এই দেশের কিছু মুর্খ রাজনৈতিক নেতা, সামরিক-বেসামরিক আমলা সহ রাষ্ট্র যারা পরিচালনা করছেন, তারা সবাই । আমি যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করছি যে, এই ভুল আবার করা হলে এই জাতির পরিণতি ফিলিস্তিনের চেয়েও ভয়ানক হতে পারে !
যে জাতি ৭২-৭৫ থেকে শিক্ষা নেয়নি । যে জাতি ১৯৮১ সালে স্বঘোষিত সাইকোপ্যাথ যখন বিবিসিতে বলেছিল, সে রাজনীতিকে ঘৃণা করে কিন্তু সে রাজনীতিতে আসতে রাজী হয়েছে কেবলমাত্র তার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নিতে (এই ঘটনা সিরাজুর রহমান সাহেব দৈনিক ইত্তেফাকে লিখে এই জাতিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন ), এটা জানার পরও যে জাতি হাসিনার ১৯৯১ সালে মাথায় পট্টি, আর হিজাব পরে অভিনয় বুঝতে পারে না । ১৯৯১ সালে নির্বাচিত হয়ে বি এনপি ক্ষমতায় গিয়ে যেসব তুচ্ছ ভুল করে এবং সেই ভুলের কারণে যে জাতি এই সাইকো মহিলাকে ১৯৯৬ সালে নির্বাচিত করে শাসন ক্ষমতায় পাঠায়, তাদের কপালে কি জুটবে বলেন ? শুধু কি তাই ? ২০০৮-এ ১/১১ ঘটিয়ে ভারতের সরাসরি হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে এই দেশের সামরিক-বেসামরিক গাদ্দারদের সহায়তায় ক্ষমতায় জেকে বসার পরও যে বিরোধী রাজনীতিবিদরা এই চক্রান্ত বুঝতে ব্যর্থ হয় এবং গোটা জাতিকে অসহায়ত্বের দিকে ঠেলে দিয়ে একটার পর একটা জংগী নাটক সাজিয়ে , নানা রকম কাহিনী বানিয়ে যে বৃহৎ জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক শক্তিকে ভেড়া বানিয়ে ফেলে এবং ভেড়াদের ভেতরে সিনিয়রগুলো ভারতের কাছে বিক্রি হয়ে ফ্যাসিষ্ট হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামাতে ব্যর্থ হয় এবং তলে তলে তাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের জীবনকে ঝুকির ভেতরে ফেলে দিয়ে তাদের নিজেদের জীবন বাঁচাতে বড় কোন আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়ে ফ্যাসিবাদের সাথে আঁতাত করে চলেছে বলে শোনা যায়, সেই জাতির সামনে আল্লাহ ২০২৪ এর গণ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে আবার সুযোগ করে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে যে, আওয়ামীলীগ মূলতঃ কোন রাজনৈতিক দল নয়, এটা একটা ফ্যাসিস্ট সংগঠণ এবং বি এনপির সিনিয়র নেতারা ২০০৮ সাল থেকেই ভারতের হাতের পুতুলে পরিণত কিছু ভেড়া ছাড়া আর কিছু নয় । সেই জাতি আবার কি করে সেই ফ্যাসিস্টদের নিষিদ্ধ করার এত বড় মওকা পাওয়ার পারও নিষিদ্ধ করছে না ?
এমনকি জাতি সংঘের রিপোর্ট পাওয়ার পারও যে জাতি এখনো ফ্যাসিস্ট এই দলকে নিষিদ্ধ করতে (বিশেষ করে বি এনপির সিনিয়র নেতারা ভারতের দালাল হিসেবে যারা ইতমধ্যেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন, ভারতকে খুশী করতে তাদের কৌশলী অবস্থানের কারণে) গড়িমশি করছে, সেই জাতির কপালে আবারও নেমে আসবে দুর্যোগ । ভাবুনতো, এই মুর্খরা যখন বলে ওরা ক্ষমা চেয়ে আসলে রাজনীতি করবে ? আচ্ছা, এই ৬ মাসে তারা ক্ষমা চাওয়াতো দূরের কথা, তারা আবারো তাদের ফ্যাসীবাদী শক্তি নিয়ে ফিরে আসার হুমকি দিয়েছে কি না প্রকাশ্যে ? এরপরও এই মুর্খ দল এবং এই বোকা জাতি যদি ওদেরকে রাজনৈতিক দল বলে, তার চেয়ে মুর্খতা আর কি হতে পারে ? এরকম মুর্খ মানুষ পৃথিবীর ইতিহাসে আর কি কোথাও ছিল ? আছে ? নাকি ভবিষ্যতেও এমন মুর্খ জাতি পৃথিবীতে আর কোন স্থানে পয়দা হবে বলে মনে করেন ? বাংলাদেশের তথাকথিত বাম ঘরানার ভারতীয় দালাল সুশীলরা যারা আওয়ামীদের বাঁচিয়ে রাখতে চায়, তাদের চরিত্র কি ? ১০০% করাপটেড । তাদের কোন নীতিনৈতিকতা নেই । তাদের কোন ধর্মীয় মূল্যবোধ নেই, তারা কেবল জন্তু -জানোয়ারদের মত প্রাণী হিসেবে নিজেদেরকে মনে করে । তারা দুনিয়ার জীবনে তাদের শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান-গরিমার গৌরব করে । কিন্তু মানুষ হিসেবে তারা জঘন্ন জীবন যাপন করে । তারা ঘরের বউকে ফেলে পরকীয়া পছন্দ করে, দরকার হলে কাজের বুয়ার সাথে ফস্টি-নষ্টি করে , ধরা খেলে বউ এর হাতে কোপ খায়, তারপও তারা মাথা উঁচু করে চলে আর দাবী করে তারা সুশীল ? রাষ্ট্রের জনমতকে যারা সম্মান করে না । যারা নিজেদের বুদ্ধিকেই শ্রেষ্ঠ মনে করে, যারা ভারতের আধিপাত্যবাদকে সমর্থন করে, এমনকি ভারতের অধীন হয়ে গোলামী করতে চায়, সেই এতটা নির্বোধ যারা, তাদেরকে সুশীল বলে এই জাতি এখনো সম্মান করে কি করে ?
অতএব আমি অগোছালো যা কিছু বললাম, মনের দুঃখে , বড় কষ্টে ! এই মুর্খ জাতি যদি এবার আবারও ভুল করে আওয়ামী সন্ত্রাসী/ফ্যাসিস্টদের নিষিদ্ধ না করে তাদের জন্য কোন রকম সুযোগ দেয়, তাহলে এই রাষ্ট্রের অবশিষ্ট মুসলমান ফিলিস্তিনের মত নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে । কথাটা কয়লা দিয়ে হলেও লিখে রাখতে পারেন ।