উচিৎ কথা বললে অনেকের কাছে ভালো লাগবে না । তবু বলতে হচ্ছে ।
কেন আমাদের ১৯৪৭ এর বিপ্লবের বিজয় ছিনতাই হয়েছিল পাকিস্তানী সামরিক জান্তাদের দ্বারা ?
বেশী গবেষণার দরকার নেই । আমরা মুসলমান রাষ্ট্র বানিয়েছিলাম । কিন্তু জনপদের অধিকাংশ মানুষ “মুসলমান” এর সংগা জানি না । মুখে মুসলমান , কিন্তু প্রাকটিক্যালী মোনাফেক । আর মোনাফেকরা বিজয়ী হওয়ার পরও আল্লাহ সুযোগ দেন যে, তার বান্দারা ভুল সংশোধন করতে পারে কি না ? অর্থাৎ বিজয়ের মর্ম উপলব্ধি করতে পেরে তওবা করে মোনাফেকী ছেড়ে খাঁটি “মুসলমান” হতে পেরেছে কি না ?
আল্লাহ অনেকটা লম্বা সময় দেন সুযোগকে কাজে লাগানোর জন্য । তারপরও যখন তারা সেই সুযোগ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তখন তাদেরকে আল্লাহ আবার কোন জালিমের কবলে ফেলে সাইজ করেন । তাই হয়েছিল পাকিস্তানের শাসকদের দ্বারা ।
এবার দয়া করে একটু হিসেব মিলিয়ে দেখব কি আমরা ?
১৯৭১ এর বিজয় ১৯৭২-৭৪ এর মধ্যেই ছিনতাই হয়েছিল কি না ? মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বুলি ছিল গলাবাজীতে । অন্তরে কি ছিল সেই শাসকের চরিত্র ? কালের ইতিহাস তার সাক্ষী । এর পরিণতি কি ? তার গুষ্ঠিশুদ্ধ ধ্বংস হয়ে সে ভন্ড মোনাফেকদের যবনিকাপাত ঘটেছিল কি না ?
আল্লাহ ১৯৭৫ সালে আবার এই জনপদের বিপ্লবীদের বিজয় এনে দিলেন ।
কিন্তু ১৯৮১ সালেই সে বিপ্লব ছিনতাই হয়েছিল কি না ? শুধু কি তাই ? তার পর থেকে টানা ২০২৪ সালের ৪ঠা আগষ্ট পর্যন্ত এই রাষ্ট্রের শাসকদের চরিত্র কি ছিল ? তথাকথিত গণতন্ত্রের নামে কি মোনাফেকী করেনাই সবাই ?
৯৯% মোনাফেক ছিল সব শাসকরাই ( ব্যতিক্রম ব্যতিত ) ।
আল্লাহ ৫ই আগষ্ট ২০২৪ এর আবারও অত্যন্ত ভালোবেসে এই জনপদের বিপ্লবীদের হাতে বিজয় তুলে দিয়েছিলেন কি না ?
এই বিজয় কি ৮ই আগষ্ট ছিনতাই হয়ে যায় নাই ? পতিত সংবিধান এবং আর চুপ্পুর কাছে শপথ নেবার মাধ্যমেই বিপ্লব ছিনতাই হয়ে গেল, কেউ মালুমই করলাম না ?
কেন এভাবে ছিনতাই হলো ? কারণ খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বড় বড় মোনাফেকরা বসে এমন ভয়ানক মোনাফেকী করল যে, মাত্র ৩ দিনের মধ্যেই বিপ্লব ছিনতাই হয়ে গেল । ৬ মাসের মধ্যে বিপ্লবের বিজয়ীরা বুঝতে পারল যে, বিপ্লব ধুলিস্যাৎ হয়ে আবরো ফ্যাসিবাদের অক্টোপাসে বন্দী হওয়ার উপক্রম হতে চলেছে । বিপ্লবীরা বুঝতে পারল যে, কোথায় যেন কি ভুল হয়ে গেছে তাদের । অথচ কী যে ভুল ! বুঝতে পারে না । তারা হিমশিম খাচ্ছে । যাদের উপর ভরসা করে তারা আবারো বিজয়ীর বেশ ধারণ করে মাথা চাড়া দিয়ে জেগে উঠে, সেই তাদের মধ্যেই যে প্রায় সবগুলো মোনাফেক বসে রয়েছে এবং এই রাষ্ট্রের অধিকাংশ মানুষও ( বিশেষ করে যারা নেতৃত্বের চেয়ারে যেতে চান ) নিত্য বড় বড় মোনাফেকী করে যাচ্ছে, তা আমাদের মালুমই হয় না । ব্যবসায়িরা যেমন ছিল, তেমনই আছে, চাঁদাবাজরা বহাল তবিয়তে চাঁদাবাজী করছে, গুষখোররা যেমন ছিল ৫৪ বছর যাবৎ ঠিক তেমনই আছে । তো ?? আল্লাহকে কি আমরা বোকা ভাবছি ??
অতএব সার কথা এই যে, যত কথাই বলেন, এই দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষ মুখে বলে তারা ৯২% মুসলমান । কিন্তু অন্তরে মুসলমানিত্ব নেই । যে জনপদের মানুষ মুখে বলবে তারা “মুসলমান”, কিন্তু অন্তর মোনাফেকীতে পূর্ণ ( ব্যতিক্রম ব্যতিত) , সেই জনপদের মানুষকে কোনভাবেই আল্লাহ সম্মানিত মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবেন না , এটা কোন ফর্মুলায় পড়ে না । মোনাফেকী ছেড়ে তওবা করে খাঁটি দিল নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত পক্ষে প্রত্যেকের নিজ নিজ অন্তর থেকে ডেভিল হান্ট করতে না পারলে বিজয় আবারও ছিনতাই হতে বাধ্য ।
হিসেবটা আমরা প্রত্যেকেই মিলিয়ে দেখি ।