somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বকাঁপানো কিছু ছবি ! ( দুর্বল হার্টের কেউ প্রবেশ করবেন না )

০৩ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটা ছবি হাজার শব্দের চেয়ে বেশি শক্তিশালী এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা । কিছু ছবি মানুষের ইতিহাস বদলায়, কিছু ছবি মানুষকে স্বপ্ন দেখায় আর কিছু ছবি মানুষকে বাকরুদ্ধ করে ।

আসুন দেখা যাক এমনিই কিছু ছবি ।






১। কসোভো রিফিউজি



বিখ্যাত এই ছবিটি তোলেন চারবার পুলিত্জার পুরস্কার বিজয়ী মহিলা ফটো গ্রাফার ক্যারল গিউজি। এই ছবিটি দুনিয়াজুড়ে যুদ্ধ ও দাঙ্গার ফলে সৃষ্ট উদ্বাস্তু সমস্যার প্রতীক।
ছবিটিতে দেখা যাওয়া বাচ্চাটির নাম অ্যাজিম শালা, যে তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তার পরিবারের বাকি সদস্যরা কসোভোতে যুদ্ধ চলার সময় আশ্রয় নেয় আলবেনিয়ার সীমান্তবর্তী শহর কুকসের রিফিউজি ক্যাম্পে। পরে বাচ্চাটিকে এক ফ্রেঞ্চ নাগরিকের সহায়তায় তার বাবা-মা ফিরে পায়। কাঁটাতারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে বাচ্চাটিকে তার বাবা-মার হাতে তুলে দেয়ার সময় ছবিটি তোলেন ক্যারল। যে ছবির জন্য তিনি ২০০০ সালে নিউজ ফটোগ্রাফি বিভাগে আবারও পুলিত্জার জেতেন।


২ । ওয়ার আন্ডারফুট



আপনি যদি ভাবেন এই ছবি সেনাদের বার্ষিক গুলি মহড়ার স্থান থেকে তোলা হয়েছে তাহলে আপনি বোকার স্বর্গে আছেন। এটি তোলা হয়েছে লাইবেরিয়ার মনরোভিয়া শহরের একটি রাস্তা থেকে। রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বুলেটের কেসিং কভারের এই ছবি প্রমাণ দেয় লাইবেরিয়ার জাতিগত দাঙ্গার ভয়াবহতার। ভয়ঙ্কর এই ছবি তুলেছেন লস অ্যাঞ্জেলস টাইমসের ফটোগ্রাফার ক্যারোলিন কোল।

৩ । থাইল্যান্ড ম্যাসাকার



স্বৈরশাসকদের নৃশংসতার মূর্তমান প্রতীক এই ছবি। থাইল্যান্ডের নির্বাসিত স্বৈরশাসক ফিল্ড মার্শাল থেনম কিটিকেচর্ন দেশে ফিরে আসতে চাইলে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে পড়ে দেশটি। এই ছবিটি তোলা হয়েছিল থেমাজেট ইউনিভার্সিটি থেকে। সেখানে বিক্ষোভরত সাধারণ ছাত্রদের ওপর ১৯৭৬ সালের ৬ অক্টোবর থেনমের ভাড়াটে গুণ্ডারা এমন নৃশংস আক্রমণ চালায় এবং এতে সৃষ্ট দাঙ্গায় উভয় পক্ষেই বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। ছবিটি তোলার জন্য ফটোগ্রাফার নিল আলেভিচ পুলিত্জার পুরস্কার জিতেন।

৪। আফটার দ্য স্টর্ম


প্রকৃতির রুদ্ররূপের কাছে আমরা কতটা অসহায় তার প্রতীক এই ছবি। হাইতিতে ২০০৮ সালে বয়ে যাওয়া প্রলয়ঙ্করী ঝড়ের সময় এই শিশুটির ছবি তোলেন মিয়ামি হেরাল্ডের ফটোগ্রাফার প্যাট্রিক ফেরাল।
ছবিতে শিশুটি তার স্ট্রোলারটিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে, যেন ভয়ঙ্কর অতীতকে ঠেলে সামনের দিকে এগিয়ে চলার প্রয়াস তার। সাদা-কালো স্টাইলে তোলা ফেরালের হাইতির ওপর একটি ছবির সিরিজ আছে যা সারা দুনিয়াতেই আলোড়ন তুলেছিল।


৫। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ৯/১১



ট্রেড সেন্টারে দ্বিতীয় বিমানটি যখন আঘাত হানে তখন এই ছবি তোলেন বিখ্যাত ফটোগ্রাফার স্টিভ লুডলাম। আমেরিকায় চালানো ভয়াবহ এই সন্ত্রাসী হামলার বীভত্সতা বোঝানোর জন্য এই ছবি যথেষ্ট।


৬। ভূপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি



১৯৮৪ সালের ২-৩ ডিসেম্বর ভারতের ভূপালে ইউনিয়ন কার্বাইড ইন্ডিয়া লিমিটেডের মিথেল আইসোসায়ানেট গ্যাস প্লান্ট লিক হয়ে ওখানকার অন্যান্য কেমিক্যালের সংস্পর্শে চলে আসে এবং বিস্ফোরণ ঘটে। তারপর শিল্পজগতের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাত্ক্ষণিকভাবেই মারা যায় ৩৭৮৭ জন। পরে এই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যায় অন্তত ১৫০০০ মানুষ। আহত এবং গ্যাসের প্রভাবে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫,৫৮,১২৫ জন। এই ছবিটির শিশুটিকে সমাধিস্থ করার সময় ছবিটি তোলেন যৌথভাবে বিখ্যাত ফটোগ্রাফার পাবলো বার্থালোমিউ ও রঘু রায়। ছবিটি অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে সৃষ্ট দুর্ঘটনার ভয়াবহতার প্রতীক হিসেবে বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়েছে।

৭। অপারেশন লায়ন হার্ট



যুদ্ধের ফলে বেসামরিক মানুষ বিশেষ করে নারী ও শিশুদের কষ্ট ও দুর্ভোগের মূর্তমাণ প্রতীক এই ছবি।
আমেরিকা অনৈতিকভাবে ইরাকে আক্রমণ চালানোর সময় প্রচুর বেসামরিক লোক মারে। আমেরিকানদের বোমার আঘাতে ৯ বছর বয়সী এই শিশুটিও গুরুতর আহত হয়। তারপর শিশুটিকে অকল্যান্ডের এক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রায় ডজনখানেক বড় ধরনের অপারেশন চালানো হয় শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য। শিশুটি অপরিসীম কষ্ট সহ্য করে শেষ পর্যন্ত বেঁচে যায়। এত কষ্ট করে ঠিকে থাকার জন্য তাকে ‘সালেহ কালিফ’ অর্থাত্ সিংহ হৃদয় উপাধি দেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিত্সা চলাকালে তার ছবিটি তোলেন ডেন ফিত্জমোরেচ। এই ছবিটির জন্য তিনি ২০০৫ সালে পুলিত্জার পুরস্কার জয় করেন। ছবিটি এক অর্থে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম ও হার না মানার মনোভাব প্রকাশ করে।

৮। ট্র্যাজেডি অব ওমেরা সানচেজ



১৯৮৫ সালে কলম্বিয়ার নেভাডো ডেল রুইজ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুপাতে ভূমি ও কাদাধসের সৃষ্টি হয়। ভয়াবহ প্রলয়ঙ্করী এ কাদাধসে শহর তলিয়ে গিয়ে মারা যায় ২৫ হাজারের মতো মানুষ। কলম্বিয়ান সরকারের উদ্ধার তত্পরতায় অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতাকে এত প্রাণহানির জন্য দায়ী করা হয়। ছবিতে যে মহিলাকে দেখা যাচ্ছে তার নাম ওমেরা সানচেজ। তিন দিনব্যাপী কাদা ও বিল্ডিংধসের ফাঁদে আটকে থেকে হাইপোথারমেয়া ও গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত হয়ে মহিলাটি মারা যায়। এই দীর্ঘ সময়েও তাকে শনাক্ত করে উদ্ধার করতে পারেনি উদ্ধারকারী দল। আলোকচিত্রী ফ্রাঙ্ক ফোরনিয়ার ছবিটি মহিলার মৃত্যুর অল্প কিছুক্ষণ আগে তোলেন। এই ছবিতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে উদ্ধার তত্পরতার অভাব বা অদক্ষতা কত ভয়াবহ রূপ নিতে পারে তা ফুটে উঠেছে।

৯ । বায়াফরা



পূর্ব নাইজেরিয়ার লেগবসরা ১৯৬৭ তে যখন নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করে, তাদের গঠিত দেশ বায়াফরা-কে নাইজেরিয়া সমগ্র পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। তিন বছর চলাকালীন যুদ্ধে দশ লাখ মানুষ মারা যায়। প্রোটিনের অভাবে বাচ্চারা kwashiorkor নামক রোগে ভুগতে থাকে, যে রোগে তাদের পেশি ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে। একটি ক্যাম্পেই এমন ৯০০ শিশু দেখতে পান ফটোগ্রাফার। এই ছবি প্রকাশের পর সমগ্র বিশ্ব এগিয়ে আসে বায়াফরা-কে সাহায্য করার জন্য।

১০ । ডেড অন দা বীচ



ঘরে বসে কখনো বোঝা যায় না, যুদ্ধ আসলে কি? সাগর তীরে আনন্দের বদলে লাশের সারি নিয়ে আসতে পারে যুদ্ধ। ২০শে সেপ্টেম্বর, ১৯৪৩-এ তোলা ছবি। পাপুয়া নিউ গিনিতে সমুদ্রতীরে মৃত অবস্থায় পরে থাকা আমেরিকান সৈন্যরা ।

১১ । ব্রেকার বয়েজ



সেই বিশ লাখ শিশুশ্রমিকের অংশবিশেষের ছবি যারা ১৯১০-এ আমেরিকায় শিশুশ্রমিকের কাজ করতো। ছবিটার শিশুদের কাজ ছিলো কয়লা থেকে স্লেট আলাদা করা। তাদের নিস্পৃহ চেহারা, চোখে জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা কাঁপিয়ে দেয় মানুষকে। ১৯১০-এ আমেরিকায় শিশুশ্রম বন্ধের আইন তৈরী হয়।

১২ । ফ্লাইট



আকাশে উড়ে বেড়ানোর মানুষের বহুকালের স্বপ্ন পূরণের ছবি। ১৯০৩ সালে রাইট ভাইদের তৈরী প্লেন।

১৩ । দা পাওয়ার অফ ওয়ান



২০০৬ সালে তোলা ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে একজন অভিবাসী মহিলা ঠেকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন ইসরাইলী সিকিউরিটি অফিসারদের। লড়াই চালিয়ে যাবার অদম্য ইচ্ছা প্রকাশের এক ছবি।



১৪ । দ্যাট চেঞ্জড দা ওয়াল্র্ড



অ্যানসেল অ্যাডামস এর এই ছবিটিকে বলা হয় ‘ন্যাচার ফটোগ্রাফি’র বিখ্যাত ছবিগুলোর একটি। ১৯৪২ সালে তোলা ছবিটি জলবায়ু সংরক্ষণ আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করে। মানুষের সৌন্দর্যবোধকে নাড়িয়ে যায় অবলীলায়। ভয়েজার নভোযান-এ করে যে ১১৫টি ছবি মহাশুন্যে পাঠানো হয়, তার মধ্যে এটি অন্যতম।








-> এই ওয়েবসাইট এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগ্রহীত ।




সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১২ রাত ১০:৩১
১২০টি মন্তব্য ১২৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×