ব্লগে বেশ কিছুদিন ধরে নেশার মতো বান্দরবান নিয়ে পোস্টগুলোর কথা পড়ছি। পড়তে পড়তে ক্রমশই মনে হচ্ছিল, ধুসসালা... কি হইলো জীবনে!! এতো অসম্ভব সুন্দর জায়গা না দেখে মারা যাওয়ার কোন মানে আছে?
ফলাফল- তড়িৎ প্ল্যানিং। কালকে যাচ্ছি। কিন্তু যেহেতু ওদিক সম্বন্ধে ধারণা খুব কম, তাই কিছু ব্যাপার নিয়ে কনফিউশনে পড়েছি। অনেক ব্লগারই গিয়েছেন... তাদের কাছ থেকে সাহায্য আশা করছি -
১. মোটামুটি ৫-৬ দিনের প্ল্যান। ৫ দিন মানে এরকম- কালকে ১০ তারিখ রাত ১১ টায় বাসে উঠবো, ১১ তারিখ সকাল ৭ টায় পৌঁছাবো। এরপর ১১,১২,১৩, ১৪ তারিখ থাকবো, ১৫ তারিখ সারাদিন ঘুরে একইভাবে রাতের বাসে ঢাকা রওনা দিবো।
এই ৫ দিনে আমাদের প্ল্যান- সমস্ত বান্দরবানটা কাভার করা। সমস্ত বান্দরবান মানে স্বর্ণমন্দির, শৈলপ্রপাত, মেঘলা রিসোর্ট, নীলাচর, নীলগিরি, চিম্বক পাহাড়, বগা লেক, নাফাখুম ঝর্ণা আর যদি সময়ে কুলায়, তাহলে অবশ্যই অবশ্যই কেওক্রাডং-এর চূড়ায় ওঠা। সময়ের তুলনায় কঠিন জানি, কিন্তু খাটতে আমাদের কোন আপত্তি নেই! প্রয়োজন হলে ১৫ তারিখ রাতেও থেকে আসতে পারি।
এবার আসি আসল কথায়। অভিযাত্রী আমরা ৬ বন্ধু। অনেক পোস্টেই পড়লাম ৬ জন আদর্শ, তাই ৬ জনের টিমই তৈরি করেছি। প্রত্যেকে ৬-৬,৫০০ এর মতো নিয়ে যাচ্ছি, মোট ৩৭-৩৮,০০০। এর মধ্যে প্ল্যান মোতাবেক ৫-৬ দিন থেকে সব জায়গাগুলো ঘোরা সম্ভব??? বলে রাখি, আমাদের কিন্তু হাই-ফাই থাকা-খাওয়া দরকার নেই। কাজ চলার মতো হলেই হবে। বিশেষ করে একজন বলল মারমাদের ঘর নাকি খুব সস্তায় থাকা-খাওয়া সহ ভাড়া পাওয়া যায়। এছাড়া সাধারণ খাবারগুলোর দামও কম শুনেছি।
মূল খরচটা হবে যাতায়াতে, যতোদূর বুঝতে পারছি। সব মিলিয়ে একটা স্পষ্ট ধারণা করতে চাচ্ছি- এই টাকার মধ্যে এ সবগুলো জায়গা ঘোরা সম্ভব হবে কিনা??
এবার আরেকটা ডিটেইল প্ল্যান শেয়ার করি, যাঁরা জানেন, তাঁরা একটু মতামত দেবেন।
১১ তারিখ- দুপুরের মধ্যে বুদ্ধ ধাতু জাদী, শৈলপ্রপাত, মেঘলার মতো আশেপাশের জায়গাগুলোয় ঢুঁ মেরে রওনা হয়ে যাবো লামা উপজেলায় নীলগিরি দেখতে। পথে চিম্বক পাহাড় আর নীলাচল দেখে যাবো কিছুক্ষণের জন্যে।
১২ তারিখ- আগের রাতে নীলগিরিতে থেকে এদিন ভোরে রওনা দেবো থানচির উদ্দেশ্যে। যদি সম্ভব হয়, তাহলে সেদিনই থানচি থেকে রেমাক্রী যাবো। নাহলে রাতটা রেমাক্রী থেকে ১৩ তারিখ ভোরে রওনা দেবো রেমাক্রী পেরিয়ে থানচির উদ্দেশ্যে।
১৩ তারিখ- এদিন শুধুই নাফাখুমের জন্যে!
১৪ তারিখ- যতো দ্রুত সম্ভব ফিরে আসবো বান্দরবান শহরে। তারপর কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে রুমার পথে যাত্রা করবো থানচি থেকে রুমা যাবার পথ আছে কি? সেক্ষেত্রে শহরে না গিয়ে সরাসরি রুমা যাবো। যদি সম্ভব হয়, সেদিনই বগালেক যাবো।
১৫ তারিখ- এদিনের প্ল্যান আগের রাতের ওপর নির্ভর করে। যদি আগের রাতে বগালেক পৌঁছাতে পারি, তাহলে এদিন সকালে রওনা দেবো কেওক্রাডং-এর উদ্দেশ্যে। সেক্ষেত্রে ভ্রমণের সময়সীমা একদিন বাড়বে, অর্থাৎ আমরা ১৫ তারিখ পুরোটাই রাখবো কেওক্রাডং-এর জন্যে। এক্ষেত্রে ১৬ তারিখ বান্দরবান ফিরে এসে ঢাকা রওনা দেবো। আর যদি আগের রাতে বগালেক পৌঁছাতে না পারি, সেক্ষেত্রে পরদিন সকালে বগালেক পৌঁছে তারপর অবস্থা বুঝে বাকি সিদ্ধান্ত, আর আগাবো নাকি পেছাবো।
বলেন ভাই-বোনেরা... ওই টাকার মধ্যে এই বিরাট প্ল্যান কাভার করা সম্ভব কিনা