না আজ আমি আর লিখব না
আজ আর লিখব না তোমায়,
এ হাতে কলম তুলেছিলাম
সে কিশোরীর জন্য লিখব বলে
যে কিশোরী শুধু ভাতের জন্য
বিক্রি করে নিজের দেহ,
সস্তা সুরমা আর লিপস্টিকের ঝাঁঝাঁ গন্ধে
যাকে প্রতিদিন দেখি সংসদ ভবনের পেছনে,
ঝোপে অভুক্ত আবর্জনার মত পড়ে থাকে।
বিশ টাকা, চল্লিশ টাকা ঘণ্টা দরে
অভিশাপ বিক্রি করে,
বোকা মেয়েটা জানেও না
তার অভিশাপ শোনার জন্য
ঈশ্বরেরা তখন বসে থাকে না
ঈশ্বর তখন ব্যস্ত গণতন্ত্রের পথ
সুগম করতে।
আর গণতন্ত্রের পুত্ররাই তোমাদের ধর্ষণ করে
বিশ টাকা, পঁচিশ টাকা দরে
ঈশ্বরেরা তখনও গণতন্ত্র চর্চায় ব্যস্ত,
যখন আমার এ হাতে শক্তি আছে
ঐ গণতন্ত্রের মুখে কালি ঢেলে দেবার
আমার শক্ত কলম দিয়ে।
তখন
আমি তোমায় নিয়ে লিখতে পারি না।
যখন আমার মেয়েরা আগুনে পোড়ে
ঝলসানো মাংসের ঘ্রাণ যখন নাকে আসে
যখন কানে আসে অসহ্য আত্ম চিৎকার
তারপর যখন সুপারভাইজার কাজে ফিরে যেতে বলে
জ্বলন্ত অঙ্গারে যখন তালা ঝোলে কলাপ্সিবল গেটে
যখন ফায়ার ব্রিগেড এসে মানুষের আগে যন্ত্র বাঁচায়
লাশ প্রতি যখন বরাদ্দ দশ হাজার থেকে এক লাখ
যখন কলম দিয়ে ঐ তালা ভাঙার শক্তি আমার আছে
চাইলেই কালির দোয়াত ঢেলে দিতে পারি
পুঁজিপতি বেবুন গুলোর উপর
তখন আর
তোমায় নিয়ে লিখতে পারি না।
যখন ভালবাসার অপরাধে
যুবতীকে দোররা মারা হয়,
ভালো না বাসার অপরাধে
কিশোরীর মুখ ঝলসে যায় এসিডে,
যখন চৌদ্দ বছরের নারী
তিন বাচ্চার মা,
বাসে ওঠার সময় কন্ডাক্টার
পাছায় হাত রাখে সুযোগ বুঝে,
যখন সমবয়সীরা উপর্যুপরি
ধর্ষণ করে সহপাঠিনীকে
বিশ বছরের সংসারে প্রতিদিন মায়ের
গায়ে হাত তোলেন বাবারা,
শুধু নারীদের জন্য লিখে
হুমায়ূন আজাদরা নিহত হন পথে ঘাটে।
তখন আমি চাইলেও
তোমায় নিয়ে লিখতে পারি না
তুমি তো শুভ্রতা
এই সহস্রাব্দের একমাত্র নিষ্কলঙ্কতা,
এ পৃথিবী তোমার জন্য না,
পৃথিবীকে সাজিয়ে
তোমায় ডেকে দেব,
এ কটা দিন আমার হৃদয়েই ঘুমাও..
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১২:০০