নীলা চমকালো না। একটু অবাকও হলো না। ওর মুখে স্মিত হাসি ফুটে উঠলো। যেন ওর জন্যই মন খারাপ করে বসে ছিলো সে। তাই ওকে দেখেই হাসি ফুটলো তার মুখে। অন্য কোনো বউ হলে এইভাবে বাইরে থেকে ফিরেই অফিসের জামা কাপড় শুদ্ধ ধুপ করে কোলে শুয়ে পড়লে বিরক্তিতে চেঁচিয়ে উঠতো হয়ত। কিন্তু নীলা তো জানেই এই পাগলটাকে খুব ভালো করে। এমনই সে। কোনো কিছু বলে কাজ হবে না। অফিস থেকে ফিরেই তার নীলাকে চাই। যা মনে আসে তাই করবে, বাধা দিলেই ঝঞ্ঝাট। অযথা ঝামেলা বাড়াতে কার ভালো লাগে?
আর সত্যি বলতে এই পাগল পাগল ভালোবাসার এই পাগলটাকে এই কারণেই এত ভালোবাসে নীলা। এই সব নিয়ম না মানা আবোল তাবোল পাগলামী ভালোবাসার পাগল পাগল ছেলেটাকে। মুখ নিচু করে ওর কপালে চুমু খায় নীলা। মাথার চুলের ভাঁজে বিলি কেটে যাচ্ছিলো ওর আঙ্গুলগুলো। কপালের চুলগুলো মাথার উপর দিয়ে টেনে টেনে পেছনে ঠেলে দিলে নাঈমকে একদম অন্যরকম লাগে। নীলা খুব অবাক হয়ে খেয়াল করেছে একেক সময় নাঈমের চেহারা এক এক রকম বদলে যায়।
এই যে এখন চোখ বুজে বুকের উপর দুহাত রেখে শুয়ে আছে নাঈম। কপালের চুলগুলো ব্যাকব্রাশের মত করে উল্টে দিয়েছে নীলা ওর হাতের আঙ্গুল দিয়ে টেনে। মনে হচ্ছে যেন এমন শান্তির মুখ এই পৃথিবীতে একটাও নেই। এত বড়্ একটা শিশুর মত মানুষ যেন। শার্ট টাই জুতামোজা শুদ্ধ ঘুমিয়ে গেলো নাকি? নীলা আস্তে ডাকে,
- এ্যাই।
কোনো উত্তর নেই। নীলা জানে নাঈম মোটেও ঘুমিয়ে পড়েনি। ইচ্ছা করে চুপ করে আদর খাচ্ছে। ওর ঠোঁটে আঙ্গুল রাখে নীলা। আবার অস্ফুটে ডাকে।
-খাবে না? খিদু পায়নি বাবু?
- উহু। উলটে শোয় নাঈম। নীলার কোলটাকেই বালিশ বানিয়ে আরও আষ্ঠে পৃষ্ঠে দুহাতে জড়িয়ে চোখ বুঁজে পড়ে থাকে। নীলার হাসি পায়। জীবনেও কি বড় হবে না নাঈম? এখনও কি সেই জেদী আর আল্লাদী ২১ বছরের ছেলেটাই রয়ে যাবে? যাকগে সেসব কথা। কম কাঁঠখড় পোড়াতে হয়নি তাকে নাঈমের কাছে আসতে গিয়ে। ভাগ্যিস নাঈমের বাবা মা মেনে নিয়েছিলো। নইলে তো একূল ও কূল দুলকুল হারাতে হত।
এটি একটি গল্পের সূচনা- মিররডল ফিরে আসলে বাকীটা প্রকাশিত হবে।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৭