শুরুতেই বলে রাখি জন্ম সূত্রে মুসলিম বলে সপ্তাহান্তে একবার মসজিদে যেতে হয়। বসে বসে শুনতে হয় বিভিন্ন বিষয়ে ইমাম সাহেবদের বয়ান। তো একদিন বয়ান শেষ করে ইমামসাহেব সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। মসজিদের উন্নয়নের জন্য সকলের সহযোগীতা চাইলেন। মসজিদটির ভেতরের ডেকোরেশন অত্যন্ত চমৎকার, পুরোটা টাইলস করা। দোতলার ছাঁদ হয়ে গেছে এখন শুধু ডেকোরেশন বাকি। তো ইমাম সাহেব শুরু করলেন- “যে যা পারেন দেন ভাই, ১০০০, ৫০০০, ১০০০০…………… ”। এবং ইমাম সাহেব কিছুক্ষণের মধ্যেই ভালো সাড়া পেলেন। শুরুতেই একজন ১০০০০ টাকা দান করলেন। পরকালে অধিক সওয়াবের আশায় অনেকেই দান করা শুরু করলেন। কিন্তু মহামান্য ইমাম সাহেব একটি বারও কেউকে জিজ্ঞেস করলেন না –
আপনি কি সৎ পথে টাকা রোজগার করেন ??
আপনার এই টাকা ঘুষের টাকা নাতো ??
যে ব্যক্তিটি ১০ বস্তা সিমেন্ট দান করলেন, তিনি একটি সরকারী বিভাগের প্রকৌশলী। আমরা অনেকেই জানি উনার চার তলা একটি বাড়ি আছে, উত্তরায় একটি ফ্ল্যাট আছে, একটি টয়োটা এক্স করোলা গাড়িও আছে। আমাদের ইমাম সাহেব খাস দিলে উনার জন্য দোয়া করলেন এবং আমাদেরকেও দোয়া করতে বাধ্য করলেন যাতে আল্লাহ তাআলা উনার ধন সম্পদ আরও বাড়িয়ে দেন (সবাই বলেন আমীন)।
হ্যা, স্বীকার করি এই সব দানের মধ্যে অনেক সৎ ব্যাক্তির টাকাও আছে। আর এও হলফ করে বলতে পারি সৎ ব্যাক্তির দানের চেয়ে অসৎ ব্যাক্তির দানের পরিমানই বেশি হবে কারন স্বর্গ বা বেহেশতে যাওয়ার লোভ উনাদেরই বেশি থাকে। শুনেছি আমাদের সাবেক রাজপূত্র তারেক রহমান সাহেব গাজীপুর শহরের দক্ষিন ছায়াবিথী এলাকায় কোটি টাকা খরচ করে একটি বিলাশ বহুল মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছেন। এখন আমার প্রশ্ন হল-
এইসব মসজিদে ইবাদত করলে তা কতটুকু গ্রহনযোগ্য হবে??
একজন মুসলমান হিসেবে আমার শুধু ইসলাম ধর্মের অসঙ্গতিগুলোই চোখে পড়ে। ছোটো বেলা থেকেই অনেক কিছু বিশ্বাস করে আসছি, অনেক কিছুই আমাদের বিশ্বাস করতে বাধ্য করা হয়েছে। আর এখন যতই বড় হচ্ছি, যতই জানছি, যতই শিখছি ততই বিশ্বাসের খুটিটা নড়বড়ে হচ্ছে।
মুসলমানরা যদি “এক আল্লাহ” বিশ্বাষ করতে পারেন, সর্বশ্রেষ্ট নবী হিসেবে মুহম্মদ (সঃ) কে বিশ্বাস করতে পারেন তাহলে –
মুসলমানদের মধ্যে এত ডীভাইডেসন কেন ??
বাংলাদেশে পরপর তিন্ দিন ঈদ উদযাপিত হয় কেন ??
শুনেছি হাসরের ময়দানে বিচারের পর শুধু মাত্র মুসলিম পূণ্যবানরাই জান্নাতবাসী হবে আর বাকী সব মানব জাতি জাহান্নামবাসী হবে। জাহান্নামবাসীদের মধ্যে যারা মুসলমান তাদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির পর জান্নাতে পাঠানো হবে। যদিও ব্যাপারটা আমার কাছে হাস্যকর মনে হয়েছে তারপরেও মনে প্রশ্ন জাগে-
আফ্রিকার বিভিন্ন গহীন জঙ্গলে যারা বাস করে, যারা এখনও জ্যান্ত প্রাণী খায়, যাদের কাছে এখনও কোনো ধর্মের বানী পৌছায়নি, কোনো মহামানব এখন পর্যন্ত তাদের কাছে যেতে পারেননি। তাদের ভাগ্যে কি নির্ধারিত হবে?? জান্নাত, নাকি জাহান্নাম? স্বর্গ, নাকি নরক?? হেল, নাকি হেভেন??
(প্রশ্নটা সকল ধর্মের বিশেষজ্ঞদের প্রতি)
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:২৪