ফেসবুক তথা ইন্টারনেট শিষ্টাচারকে বলা হয় নেটিকেট (Netiquette)। শব্দটি তৈরি হয়েছে দুটি শব্দ থেকে (যেটা ইংরেজিতে সচরাচর হয়ে থাকে) Net + etiquette = Netiquette।
আমাদের অনেক বন্ধুরা ফেসবুক-এ এমন সব ষ্টেটাস দেন যা হাস্যকর। এটাকে আমরা বলতে পারি ক্ষেত মার্কা। ধারণা করুন গ্রামের দুই নিরক্ষর ব্যক্তির মধ্য কি আলোচনা হতে পারে? আবার ধারণা করুন দুই জন অক্ষর জ্ঞান সম্পন্ন (লেখাপড়া করলে অথবা সার্টিফিকেট থাকলেই যে শিক্ষিত এ টার্মটি আমি মানি না) ব্যক্তির মধ্য কি আলোচনা হতে পারে। আমরা কি কোন বন্ধুকে দেখলেই বলবো যে, ভাই আজ যা খেলাম! তারপর একে একে খাবারের নাম বলতে থাকবো? আমরা কি কোন বন্ধুকে দেখলেই নসিহত করবো নিয়মিত এবাদত বন্দেগি করার জন্য? আমরা কি কোন বন্ধুকে দেখলেই হা-হুতাশ শুরু করি যে দেশ গেলো দেশ গেলো বলে? এসবের জন্য রয়েছে নির্দিষ্ট গ্রুপ এবং পেজ। আপনি ইচ্ছে মতো সেসব জায়গায় লিখুন এবং আপনার মতামত প্রকাশ করুন।
ফেসবুক একটা মিডিয়া। কেবল মিডিয়াই নয়; এটা একটা শক্তিশালী মিডিয়া। ষ্টেটাস দেয়ার আগে আমাদের মনে রাখতে হবে অন্যান্য বন্ধুদের এতে আগ্রহ আছে কি না! তবে কারো আগ্রহ থাকুক বা না থাকুক তথ্যমূলক যেমন জন্মদিন, বিয়ে, প্রমোশন, অর্জন, সাফল্য, বিভিন্ন অনুষ্ঠানাদিতে অংশগ্রহণ, সন্তান-সন্ততি, বাবা-মা'র হাল-হকিকত এ ধরনের বিষয়বস্তু যেটা সচরাচর আমরা বন্ধুদের সাথে শেয়ার করি সেগুলো ফেসবুকেও শেয়ার করা যায়। হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ তো বন্ধুদের সাথেই আমরা শেয়ার করি। তাই না?
তবে রাজনৈতিক ষ্টেটাস, ধর্মীয় ষ্টেটাস, আক্রমাণাত্মক ষ্টেটাস, কাউকে কষ্ট দেয়, কোন সম্প্রদায়কে আঘাত করে এমন কোন ষ্টেটাস দেয়া শোভনীয় নয়।
জনসচেতনতামূলক, আনন্দ-বিনোদন, শিল্প-সাহিত্য, শিক্ষামূলক, অনুপ্রেরণামূলক ষ্টেটাস সবসময় প্রাধাণ্য দেয়া উচিত। শেয়ার করা উচিত।
গবেষণায় দেখা গেছে যারা বেশি বেশি ব্যক্তিগত ষ্টেটাস দেন তাদের প্রতি বন্ধুরা বিরক্ত হয়ে থাকেন। যারা কোন দলের পক্ষে বিপক্ষে রাজনৈতিক ষ্টেটাস দেন তাদেরকেও কেউ পছন্দ করে না। যারা কেবলই নেতিবাচক ষ্টেটাস দেয় তারা হয়ে থাকেন সবচেয়ে ঘৃণিত। আরও দেখা গেছে যারা 'মুই কি হনুরে' হয়ে জ্ঞাণ বিতরণ করতে চান অথবা নিজেকে জ্ঞানী হিসেবে জাহির করতে চান তারা হলেন অপছন্দের তালিকায় শীর্ষে।
বন্ধু হিসেবে কাউকে গ্রহণ করতে ভেবে চিন্তে করবেন। কারো ষ্টেটাস ভাল না লাগলে আনফলো করে রেখে দিন। একান্তই অসহ্য হয়ে গেলে, কারো আচরণ আপনাকে ক্ষুব্ধ করলে আনফে্রন্ড করে দিতে পারেন। তবে মনে রাখবেন, আনফে্রন্ড করা মানে শত্রু সৃষ্টি করা।
ফেসবুক আনন্দ-বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম। যখনই একা থাকবেন প্রিয় বন্ধুর ষ্টেটাসগুলো পড়ুন, ভিডিও দেখুন, আনন্দ পাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ২:১১