আড্ডাবাজি করতে আমরা কে না ভালবাসি। বিশেষ করে শহরে বসবাসকারি আমাদের মতো যেসব মুরগীর ছাও আছে, যাদের দেশ-গায়ের মতো খোলা-মাঠ বা এরকম কিছু নেই, যেখানে খেলাধুলা করে বিনোদনের চাহিদা মেটানো যায়। আর তাই আমাগো মতো শহুরে ইয়াং-পুলাপাইনের আড্ডা বাজিই প্রাথমিক বিনুদুন।
আর এই আড্ডাবাজি মানেই হচ্ছে, যে যার এলাকার লাইনে লাইনে/মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে বা বসে একরকম ঘিজিবিজি-সার্কেলিং করা।
কার কাছে এটা কেমন লাগে জানি না, তবে আমার কাছে এক কথায় এরকম আড্ডায় সময় পার করা একেবারে একঘেয়ে আর বিরক্তিকর মনে হয়। (ভাই, চাইতেন না। এটা আমার মতামত আর কি! )
তবে আমি এখানে বেশি পক-পক না করে আড্ডাবাজিতে কিভাবে একটু হালকা-পাতলা ভেরিয়েশন এনে একে আরও অধিক বিনুদুন-মুলক আর এর একঘেয়েমি দুর করতে পারি, তাই বলছিঃ
প্রথমত বলে নেই, আমি নরমালি এলাকাবাসি/রিলেটিভসদের বিয়ে বা এই জাতীয় সোসাল অনুষ্ঠানে কখনই যাই না। যেহেতু এসব যায়গায় একরকম রবোটিক আচরন করতে হয়, তাই।
তবে এই বিয়ে যদি হয় কোন ফ্রেন্ডের, তাহলে যেতে আপত্তি নেই। কারন, কোনো ফ্রেন্ডস এর বিয়ে মানে সেখানে পরিচিত প্রায় সব ফ্রেনরা(/সমবয়সি) আসবে। আর এখানে বিয়ে খাওয়ার সাথে সাথে আড্ডা যে একেবারে চরম হয়ে উঠে তা আপনারা অনেকেই খুব ভালো করেই জানেন।
তবে বান্দ্রামি করতে এলাকার ফ্রেন্ডসদের নিয়ে অপরিচিত কোন এলাকার বিয়ে বাড়িতে ঢুকে খেয়ে আসতে পারেন। এরকমের কোন অভিজান এ পর্যন্ত করিনি, তবে অনেক শুনেছি আর দেখেছি। তয়, ধরা খাইলে কি হতে পারে তা জানি না।
আপনার ফ্রেন্ড-সার্কেলের/এলাকার ভাইব্রাদারদের মধ্যে কারা কারা স্টাডি শেষে জবে জয়েন করছে তার হিসেব রাখতে পারেন। কারন জবের প্রথম মাসের সেলারি দিয়ে সে যখন পার্টি থ্রু করবে আপনি যে তা মিস না করে বসেন সে জন্য আগে ভাগেই আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। কারন, এখানে সমবয়সি অনেকে ও ফ্রেন্ডস দের গ্যাদারিং হয় যেখানে আড্ডা ও খানা-দানা সমান তালে চলে....
ঢাকার যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, আইডিবি তে কিন্তু প্রায় সবাই গ্যাছেন। আই মিন এখানে এলে যে আপনার আই.টি-রিলেটেড জ্ঞান বাড়বে তা বুঝতেই পারছেন। আর তাই এখানে আসতে পারেন বন্ধুদের নিয়ে বা পরিবার/গার্ল ফ্রেন্ড নিয়ে। আড্ডাবাজি ও নতুন নতুন অনেক কিছুর দাম সম্পর্কে আইডিয়া দুটোই বাড়বে। (আমার প্রায়ই এখানে যাওয়া হয়।)
তবে এদের খাবারের রেস্টুরেন্ট "বন-এপাটাইট"-এ না ঢুকাই উত্তম। টাকা তো বেশি রাখেই, আবার এখন খাবারের মান আগের থেকে অনেক খারাপ।
অথবা ভাষানী/বঙ্গবন্ধু নভো থিয়েটারে ঘুরে আসতে পারেন।
সমরাস্ত্র যাদুঘরও এর বাইরে পরে না। এখানে মাঝে মধ্যে একটু যাওয়া আসা করলে মন্দ হয় না।
তবে ঢাকায় অনেক মেলা চলে যা অনেকের কাছে প্রিয় না হলেও সেখানে আপনি খুব মনোরম পরিবেশ পাবেন যা আপনার কাছে অবশ্যই ভালো লাগবে। এরকম একটি হলো, বৃক্ষমেলা। এটা তেমন একটা জনপ্রিয় না হওয়ায় এখানে লোক-হয় অপেক্ষাকৃত অনেক কম আর নানা প্রজাতির ছোট বৃক্ষে জায়গাটা আমার কাছে একেবারেই অন্যরকম লাগে।
(একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটা বাদে) একুশে বই মেলায়ও বন্ধু/পরিবার নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। দুনিয়ার আর সব মেলা থেকে এ মেলায় গেলে অন্তত আপনার লস হবে না। (আই মিন আফনে বাউলিয়া হইয়া ব্যাক করিতে ফারেন)
অবশ্য এজাতীয় অনেক মেলা আছে যেগুলোর পাশে এরকম ভাবে আর্টিষ্ট আপনার ছবি এঁকে দিবে। এটার সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, এখানে আশে-পাশে দাঁড়ানো দর্শক গুলা একবার আপনার চেহারার, দিকে আরেকবার আর্টিষ্টের আঁকা ছবিটার দিকে তাকিবে। এবং সাথে কমেন্টও করবে যে "এহহে, ভাইজান তো কান ডা একটু কেমন জানি কইরা দিলেন-টাইপের" আমি অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে রেখেছিলাম
তবে আপনি যত যাই করেন, চীন-মৈত্রি সম্মেলন কেন্দ্রে কিন্তু প্রতি মাসেই একবার করে আসতে পারেন। এখানে প্রতি মাসেই সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে এরকম কোন-না-কোনো ফেয়ার চলতেই থাকে। এসব ফেয়ারে এলে যেমন প্রিয়জনদের সাথে আপনার সময় কাটবে, তেমনি অনেক নতুন নতুন বিষয়ে জানতে পারবেন। আমি এটা মিস করি না।
লবন যেমন খাবেন আয়োডিন যুক্ত, তেমনি আড্ডাবাজিটা হওয়া উচিৎ জ্ঞানমুলক।
সৌর-বিদ্যুৎ দিয়ে এ ভবনটির পুরো বিদ্যুৎ সাপ্লাই হয়। আর তাই, এর কাচের স্থানে ব্যাবহৃত হয়েছে সোলার-প্লেট।
সৌর-বিদ্যুৎ চালিত রিক্সা। কে কে উঠবেন আহেন।
অথব ছুটির দিনে চন্দ্রিমা-উদ্যানে যেতে পারেন। তবে ছুটির দিন বাদে গেলে সন্ধার সাথে সাথেই ওই জায়গা ত্যাগ করাই অতি উত্তম।
আর পরতিযোগিতা কইরা বেলুন ফুডাইতে ফারেন।
আমি খালি হারি......
ঢাকায় যেসব গ্যালারি গুলোয় ফটোগ্রাফি বা এই টাইপের প্রদর্শনি চলে, সেগুলোতে যেতে পারেন। আমার মাঝে মধ্যে এসব প্লেইসে যেতে বেশ লাগে।
কোয়ান্টাম সহ এখন ঢাকায় অনেক সংস্থা আছে যারা ফ্রি মেডিটেশন এর প্র্যাক্টিস করে। এদের সাথে মাঝে মধ্যে বা নিয়ম করে সাপ্তাহিক যোগ দিতে পারেন। আর ধ্যানে মগ্ন হয়ে ঘুমিয়েও নিতে পারেন।
তবে মাঝে মধ্যে জাউরামি কইরা কোন ফ্রেন্ডের বাসায় যেয়ে "দোস্ত আমার নেটে প্রবলেম দেখা দিচ্ছে, তাই ইমারজেন্সি দরকারে তোর টা একটু দে, কাজ করি"-টাইপ কথা বলে লাগাতার ভাবে ঠ্যাঙ্গের উপর ঠ্যাং তুইলা ফেইসবুকে চ্যাটিং করতারেন। (এটা আমি করি নাই, উল্টা ভিক্টিম হয়া শিখছি )
'আলিয়াঁন্স ফ্রাঁসেস', 'ব্রিটিশ কাউন্সিল' বা এরকমের মেম্বার হয়ে থাকলে মাঝে মধ্যে যেয়ে হুদাই বইটই পড়া বা এদের অনেকরকম ইভেন্ট থাকে, যোগ দিতে পারেন। তবে আমি গেলে এদের ক্যান্টিনে বইসা আড্ডা মারা আর খাওয়া-দাওয়া টাই বেশি করি....
তবে সাবেক ভার্সিটিয়ান হলে, মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসে যেয়ে ঘুরে আসতে পারেন। আর জুনিয়রদের সাথে আড্ডা ও প্রিয় শিক্ষকদের সাথে দেখা করতে পারেন। এতে একে আন্তরিকতা আরও মজবুত হয়, অপরদিকে আড্ডায় একটু বৈচিত্রও আসে।
আপনার ফ্রেন্ড-সার্কেলের মধ্যে এমন অনেক পাবেন যাদের ঢাকার আশেপাশের কোন ডিস্ট্রিকেই বাসা। আমি মিন এসব জায়গায় দিন গিয়ে দিন ফেরত আসা যায়। আর এরকম কোথাও বন্ধুদের সাথে একদিনের ট্যুর+আড্ডা দুইটাই বেশ জমপেশে হয়। এখানে গেলে গ্রামের একরকম ছোঁয়া পেয়ে আপনার মনটা একেবারে ফুরফুরে মতন হয়ে যাবে। আমার জোশই লাগে এভাবে আড্ডা মারতে।
তবে বিভিন্ন সরকারি ছুটিতে বা ছুটির দিনে যদি ঢাকার ফাকা রাস্তা পান, তাহলে কিন্তু কখনওই রিকশা ভ্রমন দিতে ভুলবেন না। তবে গাড়ি বা বাইকে করে না বেরনই ভাল। কারন, তাহলে আপনি আর ফাকা-ঢাকাকে তেমন আর উপভোগ করতে পারবেন না।
আমি নিয়ম করে প্রতি ঈদের ঠিক আগের দিন বা তার আগের দিন পুরান ঢাকায় এরকম রিকশা-চক্কর মারি। চরম একটা ফিলিংস!!!!
আর এমএলএম-টাইপের কোন জায়গা থেকে পার্টির অফার থাকলে তা কখনই মিস করি না। কারন আমি জানি এরা খাইয়ে দাইয়ে যতো মিষ্টি কথাই বলুক না কেন, আমাকে খসাতে হলে এদের কর্তা রফিকুল আমিনরে সাত-বারেও বেশি জন্মাইতে হবে।
সো, গো টু দিস কাইন্ডস অফ প্রোগ্রাম এন্ড হ্যাভ আ ফিষ্ট!!!!!!
ব্যাস্ত ঢাকাতে যেমন আমরা লোকাল-সিটিং এরকম ভগিচগি বাসে প্রতিনিয়ত চড়ে বিরক্ত, ঠিক তেমনিই যেদিন রাস্তা-ঘাট মোটামুটি ফাকা পাবেন (অকেশনালি) সেদিন ফাকা রাস্তায় ওই প্রতিদিনের বাস জার্নিটি করে দেখবেন কেমন লাগে!!!
বিশ মিনিটে মিরপুর থেকে যখন বাস একটান মাইরা মতিঝিল-গুলিস্তান নামায়া দিবো তখন এক্কেরে পাক্ষা লাগে!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
এক্কেরে সেইরাম লাগে!!!!
কদাচিৎ এরকম বাহন পাইলে আমরা মজা করতে মাঝে মাঝে উঠে ভ্রমন করি। হুদাই পেইন!!! কি কন??
মিরপুরের বেরিবাধ সহ ঢাকার অনেক প্লেইসই এ রকম একটু ইকো ইকো ভাব নিয়া করবার শুরু হইছে। যেমন এই যায়গাটা দেখে কোন পার্কের ভেতর মনে হলেও এটা কিন্তু একটা চায়ের দোকানের সামনে।
দোকানের মালিক কাপলদের থেকে একটু টু-পাইস বেশি ইনকামের জন্য মনে হয় এরকম করে করেছে।
ভালই ফিলিংস লাগে বসলে।
তবে ঢাকার ভেতরেই জাহাঙ্গিরনগর ইউনিভি তে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন। ঈদের ছুটিতে হলে সবচেয়ে মজা পাবেন। তখন স্টুডেন্ট না থাকায় একেবারে অন্যরকম লাগে। আড্ডাবাজির এরকম পারফেক্ট প্লেইস ঢাকায় আর দ্বিতীয়টি নেই।
আর না হলে, আমার মতো শুরু করে দিন এলাকার বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট-এ আড্ডা মারতেঃ (পূর্বে যেভাবে বলেছিলাম)
কখনো KFC-তে।
অথবা Pizza Hut-এ।
নয়তো Western Grill-এ অথবা কনো চাইনিজ-এ।
................................................................................................
এভাবে আপনি খুব সহজেই আরও অনেক ইউনিক আইডিয়া বের করে গতানুগতিক রাস্তায় দাঁড়িয়ে আড্ডা থেকে একটু একটু করে সরে আসুন।
(আর কিছু না মনে করলে বলি, রাস্তায় আড্ডা মারা পুলাপাইন গুলারেই আমি বেশি ইভটিজিং করতে দেখি। )
................................................................................................
তবে এরকম আইডিয়া ফালতু মনে হইলে আপনে........
বসিয়া বসিয়া কলা খান.......
কি করবেন আর হুদাই দাড়ায়া থাকেন যখন.............. !!!!!
আড্ডাবাজিতে ভেরিয়েশন আনুন; আড্ডাবাজির একঘেয়েমি দূর করার যুগান্তকারি উফায় নিয়ে একটি গবেষনামূলক সচিত্র-পোষ্ট।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !
"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমিত্ব বিসর্জন
আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।
"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?
স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন