আগের মতো ভিক্ষাও পায়না বৃদ্ধা ছালেমা
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে খেটে খাওয়া মানুষ জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে
সূত্র : মঈনদ্দি আর ফখরদ্দির মুখপত্র
শফিকুল ইসলাম জুয়েল: বাজারের দোকানদাররা কেমন যেনো হয়ে গেছে। আগে হাত পাতলে মাছ, মাংস, চাল, ডাল, তেল, সবজিসহ রান্নার সব উপকরণই পাওয়া যেতো। কিš' এখন সেগুলো মেলে না। বরং সাহায্য চাইলে গালিগালাজ শুনতে হয়। তবুও পেটের দায়ে বাজারে যেতে হয়।
নাখালপাড়া রেললাইন বস্তির বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ ছালেমা বেওয়া গতকাল এভাবেই নিত্যপন্যের দাম বাড়ার প্রতিক্রিয়া জানালেন। বললেন, সারাদিন ভিক্ষা করেও ২০ টাকা পাওয়া যায় না। মেলে না ১ পোয়া চালও।
মোহাম্মদপুর রায়েরবাজারের বস্তিবাসি বৃদ্ধা খোদেজা বিবি বললেন, ধানমন্ডির ১৫ নম্বরে এক সাহেবের বাসায় ছুটা বূয়া হিসেবে কাজ করে মাসে ৫’শ টাকা এবং আরেক বাসায় কাপড় ধুয়ে ও ঘর মুছে মেলে তিন ’শ টাকা। আগে দু’বাড়ি থেকে খাবার মিললেও দু’মাস থেকে তা বন্ধ। বাসায় প্রতিবন্ধি মেয়ে ও অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে কীভাবে দিন যায় আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
চকবাজারে দীর্ঘদিন ঠেলাগাড়ি চালান বৃদ্ধ আয়নাল হোসেন। দেড় হাজার টাকায় ভাড়া থাকেন আজিমপুরের টিনসেড বাসার একরুমে। স্ত্রী ও বিবাহযোগ্য ২ মেয়েকে নিয়ে তার পরিবার। বললেন, বয়সের ভারে শরীর চলেনা। আগে ভালো আয় আসলেও এখন হয়না। স্ত্রীও অসুস্থ। মেয়েদের ভবিষৎ নিয়ে চিন্তা। এর ওপর খাবারসহ সব পণ্যের অতিরিক্ত দাম। সারাদিনের আয় দিয়ে খাবারের যোগানই মেলেনা। তিনি বললেন, ঈদের পর আর মাংস খাওয়া হয়নি। মাছও কেনা সম্ভব হয়নি।
গাইবান্ধার রিক্সাচালক মুজিবরের মন্তব্য, কোন রাজনৈতিক দলের সরকার ক্ষমতায় তা নিয়ে ভাবিনা। উদ্বিগ্ন থাকি নিত্যপণ্যের চড়াদামে। সুন্দর সুন্দর বুলি আর আইনে সুখ পাইনা। পেট পুরে খেতে পারলেই শান্তি অনুভব করি।
মোহাম্মদপুর মহিলা কলেজের শিক্ষক আব্দুল মজিদ, ইউনাইটেড হসপিটালে কর্মরত মারুফুল হক, শাহবাগ অন্তর রে¯েঁ-ারার জাহিদ হোসেনসহ বাজারের ক্রেতারা বলেন, পণ্য সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধিতে সীমিত আয়ের মানুষ চরম দূর্ভোগে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, অতিরিক্ত দামে অধিকাংশ মানুষেরই নাভিঃশ্বাস উঠেছে। গত ২/৩ মাসে নিত্যপণ্যের চাহিদা কমেছে ৩ ভাগের ১ ভাগ।
ডিএমপিতে কর্মরত এক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা জানান, নিত্যপণ্যের চড়ামূল্যের প্রভাব সর্বত্রই পড়েছে। গত কয়েক মাসে রাজধানীসহ সারাদেশে খুন, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ অস্বাভাবিকহারে বেড়েছে।
এনিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে পুলিশ প্রশাসনও।
সম্পাদনা: শামছুদ্দীন আহমেদ