ওয়েস এন্ডারসনের ‘দ্য গ্র্যান্ড বুডাপেস্ট হোটেল’ নিশ্চিতভাবেই এই আমেরিকান auteur এর সেরা সিনেমাগুলোর মধ্যে একটি। পরিচালক হিসেবে এন্ডারসন এখন অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী। তার কাজ নিয়ে অন্যের মতামতের তোয়াক্কা না করে কেবল নিজের শৈল্পিক সন্তুষ্টির কথাই ভেবেছেন, আর সেখানেই বোধ করি গ্র্যান্ড বুডাপেস্ট এর অসাধারনত্বের মাহাত্ম্য লুকিয়ে আছে।
রিপাবলিক অব জুব্রৌকাতে এক ছাত্রী একজন লেখকের সমাধিতে লেখকের লেখা পড়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করছে। সেখান থেকে আমরা ১৯৮৫ সালে লেখকের একটি মনোলোগে চলে যাই। তারপর ১৯৬৮ সালে। লেখক (জুড ল’) গ্র্যান্ড বুডাপেস্ট হোটেলে অবস্থান করছেন। সেখানেই পরিচয় হয় হোটেল মালিক জিরো মোস্তফার সাথে। মোস্তফা তাকে শোনায় সামান্য লবি বয় থেকে তার হোটেল মালিক বনে যাবার এক অসাধারন কাহিনী।
গ্র্যান্ড বুডাপেস্ট হোটেলের তত্বাবধায়ক এম গুস্তাভ (রেইফ ফাইন্স)। হোটেলের প্রতিটি কর্মচারীর কাছ থেকে সেরা কাজটি আদায় করে নিতে তার জুড়ি নেই। হোটেলের বয়স্কা নারী মক্কেলদের বিশেষ প্রিয়পাত্র গুস্তাভ। এরকমের একজন অশীতিবর্ষীয়া ম্যাডাম ডি (টিল্ডা সুইন্টন) -র সাথে ঘনিষ্ঠতাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ম্যাডাম ডি-র রহস্যময় মৃত্যুর পর জানা যায় তিনি উইলে গুস্তাভের জন্য একটা দামী চিত্রকর্ম রেখে গেছেন। মৃত বৃদ্ধার দুশ্চরিত্র ছেলে ডিমিত্রি (এড্রিয়েন ব্রডি) ভাড়াটে গুন্ডা জপলিং (উইলেম ডেফো) কে লাগায় গুস্তাভের পেছনে। ম্যাডাম ডি কে হত্যার অভিযোগে গুস্তাভকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোস্তফার সাহায্যে গুস্তাভ জেল থেকে পালিয়ে যায়। শুরু হয় তাদের এডভেঞ্চার। আর তাতে রসদ যোগায় গুস্তাভের কিছু সহবন্দী, ইউরোপের হোটেল তত্ত্বাবধায়কদের নেটওয়ার্ক, আগাথা (মোস্তফার প্রেমিকা) এবং জপলিং।
কালার, প্যাটার্ন, সিমেট্রি – সব মিলিয়ে সিনেমার ভিজুয়াল স্টাইল চমৎকার । এন্সেম্বল কাস্ট এর সবাই চরিত্রের ভেতরেই থেকেছেন, প্রথাগত তারকাসুলভ অভিনয় করেন নি। এটা অবশ্য এন্ডারসনের ছবিতে নতুন নয়। যেমন নতুন নয় খুঁটিনাটির ব্যাপারে তার অবসেশন এবং ফেলে আসা দিনের রীতিনীতির প্রতি আকর্ষন। তিনটি ভিন্ন সময়কালের জন্য এন্ডারসন তিন রকমের অ্যাস্পেক্ট রেশিও ব্যবহার করেছেন –1.37:1 (১৯৩২ এর ঘটনাবলীর জন্য), 1.85:1 (১৯৮৫-র জন্য), 2.35:1 (১৯৬৮-র জন্য)।
স্মরনীয় উদ্ধৃতিঃ There are still faint glimmers of civilization left in this barbaric slaughterhouse that was once known as humanity…..He was one of them. What more is there to say?
মুক্তিকালঃ মার্চ ০৭, ২০১৪
দৈর্ঘ্যঃ ১০০ মিনিট
ধরনঃ কমেডি
চিত্রনাট্য ও পরিচালনাঃ ওয়েস এন্ডারসন
পুরস্কারঃ সিলভার বিয়ার, বার্লিন চলচ্চিত্র উতসব।
https://www.facebook.com/mokammel.karim