রমজানতো ঘরের দুয়ারে আইসা গেলো রমজানের মধ্যে কোন ঘোরাঘুরি সম্ভব না তাই রমজানের আগে একটা ট্যুর দেওয়া ফরজ ঠিক এমনটাই মাথায় ঘুরতেছিলো কোথায় যাওয়া যায় কোথায় যাওয়া যায়,অবশেষে একদিনের ট্যুর সেট আপ করলাম সীতাকুন্ডে.......
সীতাকুন্ডের ব্যাপারে কিছু তথ্য জেনে নিলাম ইন্টারনেট থেকে তারপর কুমিল্লা থেকে ভোরে রওয়ানা দিলাম সীতাকুন্ডের উদ্দেশ্য
সীতাকুন্ডতে আপনি যাবার মতো দুইটা জায়গা আছে,ইকো পার্কে সহস্রধারা এবং সুপ্তধারা নামে দুইটা ঝরনা আর প্রায় ১২০০+ ফুট উপরে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়ায় চন্দ্রনাথ মন্দির
বাস থেকে নেমেই ইকো পার্কের উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলাম,ইকো পার্কে প্রবেশের পর প্রথমে আপনি সুপ্তধারা ঝরনাটা পাবেন,স্হানীয়রা এটাকে ছোট ঝরনা বলে
সুপ্তধারা ঝরনা
এত বড় একটা ঝরনাকে কেন ছোট ঝরনা বলে তা অবশ্য বের করতে পারিনা ।ঝরনাটা দেখেই মন প্রশান্তিতে ভরে গেলো একসাথে এমন তিনটা ঝরনা এর আগে কোথাও দেখিনি
যাই হোক এই ঝরনাতে যেতে একটু কষ্ট করতে হয় সেটা হলো ঝিরিপথে প্রায় দশমিনিট হাটতে হয় । ঝরনাটা একটু গভীরে নির্জনে তাই একা যাওয়া একটু রিস্ক তবে ৪/৫ জন গেলে কোন সমস্যা নাই যদি কখনো একদুইজন যান তাহলে ছিনতাইয়ের আশংকা থাকে তাই অন্য কোন দলের সাথে মিলে মিশে যাওয়াই উত্তম।
ঝরনার ডান সাইডের পাহাড় বেয়ে বেয়ে উঠে গেলাম ঝরনার একদম উপরে
উপরের অংশটা আসলেই অসাধারন তিনদিক খেকে ছোট তিনটা ঝরনার পানি বেয়ে পড়ছে সেই পানিগুলো আবার নিচে বড় ঝরনা হয়ে বেয়ে বেয়ে পড়ছে সত্যি অসাধারণ
সময়ের কিছুটা স্বল্পতার কারণে দ্রুত ঝরনার পানিতে গোসল সেরে আরেকটা ঝরনা সহস্রধারার উদ্দেশ্য রওয়ানা দিলাম
মাত্র একটা ধারা যার তাকে কেন সহস্রধারা ঝরনা বলে আল্লাহ মালুম যাই হোক স্হানীয়দের ভাষায় এই ঝরনার নাম বড় ঝরনা । সুপ্তধারার মতো বড় ঝরনাকে কেন ছোট ঝরনা বলে আর সহস্রধারার মতো ছোট ঝরনাকে কেন বড় ঝরনা বলে তা স্হানীয়দের সাথে কথা বলেও বের করতে পারলাম না
সহস্রধারার একেবারে উপরে
স্হানীয় দুইটা ছেলে আমাদের সাথে ছিলো হঠাৎ দেখি এরা উধাও একটু পর পাহাড় থেকে আওয়াজ আসলো " বিল্লাহ ভাই "" উপরের দিকে চেয়ে দেখি এরা দুইজন ঝরনার একেবারে উপরে সাথে সাথে কইলাম খাড়া আইতাছি ,পাহাড় বেয়ে বেয়ে আমিও উঠে গেলাম ঝরনার একদম উপরে, উঠেই ঝটপট কিছু ছবি তুলে নিলাম
ক্লান্ত হয়ে পাহাড় থেকে নেমে ঝরনা থেকে উঠে আসলাম এবারের লক্ষ্য চন্দ্রনাথ পাহাড়
ইকো পার্কের ভিতরেই একটা ওয়াচ টাওয়ার আছে সেখান থেকে মোটামুটি অনেক দুর পযর্ন্ত দেখা যায়
যাই হোক দুইটা ঝরনা দেখার পর দুপুরের খাবার খেয়ে রওয়ানা দিলাম চন্দ্রনাথ পাহাড়ে অবস্হিত চন্দ্রনাথ মন্দির দেখার জন্য,উল্লেখ্য ইকো পার্কের ভিতর দিয়ে একটা রাস্তা আছে শর্টকাট মন্দিরে যাবার জণ্য কিন্তু সেই রাস্তায় নাকি প্রায় ডাকাতি হয় তাই কর্তৃপক্ষ সেই রাস্তা দিয়ে যেতে দেয়না তবে বড় দল হলে কোন সমস্যা নাই ।
আমরা ইকো পার্ক দিয়ে না গিয়ে মুল রাস্তা দিয়ে চন্দ্রনাথের দিকে রওয়ানা দিলাম যখন পাহাড়ের সামনে দাড়ালাম তখন আমরা চারজনের ভিতরে দুইজন বললো এত বড় পাহাড়ে উঠা অসম্ভব !!পরে আমি আর আরেকজন তাদেরকে নিচে রেখে পাহাড় বেয়ে উঠা শুরু করলাম......হাফাইতে হাফাইতে অবশেষে চন্দ্রনাথ মন্দিরে পৌছলাম
চন্দ্রনাথ মন্দির থেকে তোলা ছবি [ফটোগ্রাফার তারেক মাহমুদ ভাই]
চন্দ্রনাথ মন্দির থেকে চারদিকটা সত্যি অসাধারণ দুরে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে আর চারদিকে যেন পাহাড়ের ঢেউ খেলা করছে তবে অনেক কষ্ট করে মন্দিরে উঠলেও আফসুস কোন ছবি তুলতে পারিনি কারণ সহস্রধারা ঝরনাতে ক্যামেরা সহ পানিতে পড়েগিয়েছিলাম একারণে ক্যামেরা আর ব্যবহার করতে পারিনি
যারা যেতে চান তারা একদিনের ভিতরেই কম খরচে সুন্দর সীতাকুন্ড ঘুরে আসতে পারেন ।
কোন ধরনের তথ্য বা সাহায্যের প্রয়োজন হলে কমেন্টস করুন
ব্যাক্তিগত ব্লগে প্রকাশিত