বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও সারম্বরে পালিত হলো “বিশ্ব মেধাসম্পদ দিবস ২০১২”। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল “visionary innovators” বা “স্বাপ্নিক উদ্ভাবক”।
আমরা জানি প্রত্যেকটি সৃষ্টির মুলে রয়েছে কোন মানুষের মেধা যা হয় শিল্পকর্ম হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে নতুবা সৃষ্টি হয়েছে কোন নতুন প্রযুক্তির। যা ব্যবহারের মাধ্যমে মানুষ উপকৃত হচ্ছে দিনের পর দিন। আমরা বাস করছি মেধা সম্পদের যুগে। যে কোনো সৃষ্টি যদিও শুধু একার জন্য নয়, তবুও যে সৃষ্টি করে সে চায় সৃষ্টিকর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁর পরিচিতির প্রসার এবং আর্থিক ভাবে লাভবান হতে।
আমাদের ব্যক্তি, পারিবারিক, সমাজ ও জাতীয় জীবনে মেধার সঠিক ব্যবহার ও প্রয়োগের মাধ্যমেই মেধাসম্পদ সৃজন ও বিকাশ সম্ভব। আর এর জন্য প্রয়োজন সঠিক দিক নির্দেশনা সম্বলিত একটি নীতিমালা যা সরকারি, বেসরকারি, বিদেশী নাগরিক ও অন্য দেশের সরকার সবাই মেনে চলবে। যাতে করে আমাদের দেশের গবেষক, বিজ্ঞানী, উদ্বাবক, প্রযুক্তিবিদ, কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী এবং আরো যারা সৃজনশীল কর্মকান্ডের সাথে জড়িত আছেন তাদেঁরও স্বার্থ সংরক্ষিত হয় ।
জামদানি, নকসিকাঁথা, পাটজাত পন্য ইত্যাদি যে আমাদের, তা শুধু আমাদের জানলেই হবে না, এটা যে আমাদের তৈ্রী পন্য তা বিশ্বের দরবারে জানাতেও হবে, তবেই যখন তাঁরা এটা ব্যাবহার করবে তখন আমদের দেশের পক্ষে রয়্যালিটি (বিক্রীত দব্য, গ্রন্থ বা পন্যের জন্য মালিককে নিদৃষ্ট হারে প্রদেয় অর্থ) অর্জন করা সহজতর হবে । ব্যবসা ও বানিজ্যে মেধাসম্পদের ব্যবহার এবং এর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার সত্যিকার উন্নয়নে মেধাসম্পদ সৃষ্টি, আহরন ও বিপণনের কোন বিকল্প নেই।বর্তমান বিশ্বের প্রতিযোগিতামুলক কর্মকাণ্ডের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে দল ও মত নির্বিশেষে মেধাসম্পদ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে এবং সৃজনশীল চিন্তার কদর করতে হবে। মেধাসম্পদ বিকাশ ও সংরক্ষণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে বাংলাদেশ মেধাসম্পদ মালিকানা সংরক্ষন ও বিকাশে আইনি কাঠামো আধুনিক ও জোরদার করতে হবে।
তবেই আমাদের দেশের মেধাবি নাগরিকরা এগিয়ে আসবে তাদের সৃজনশীল কর্ম ও নতুন সময়োপযোগী আবিষ্কার নিয়ে। দেশ ও জাতি শুধু উপকৃতই হবে না আর্থিক ভাবেও লাভবান হবে। মেধার মূল্যায়ন ছাড়া মেধাবী জাতি গড়া সম্ভব নয়।
বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থার সদস্যভুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে এধরণের কর্মকান্ডে গুরুত্বপুর্ণ উদ্ভাবনের যোগ্য অংশীদার, উত্তরাধিকার ও সুফলভোগী হবে।ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের আবিষ্কার ও পন্যের যোগ্য উত্তরাধীকার হিসেবে জায়গা করে রেখে যেতে হবে, যাতে করে আমাদের অবহেলার জন্য তাদেরকে পস্তাতে না হয় । এই আশা ব্যক্ত করছি।