অপারেশন গ্যানিজ এবং ভোগঃ
এই অপারেশনের মূল ব্যাক্তি ছিল ৩ জন ঃ মায়া, মানু এবং গাজী দস্তগীর। অপারেশনের তারিখ ঠিক করা হয় ১৮ জুলাই এবং গেরিলারা রেকি সম্পন্ন করে ১৭ জুলাই। নির্দিষ্ট দিন বিকেল ৪ টায় গেরিলারা ৯০ সি.সি হোন্ডায় চেপে ঘটনাস্থলে আসে। তাদের কাছে তখন ছিল একটি স্টেনগান, কয়েকটি গ্রেনেড-৩৬ এবং ফসফরাস বোমা। তাদের কভার দিয়েছিল একটি টয়োটা গাড়িতে বসে থাকা সামাদ, উলফাত এবং জুয়েল।
একজন অবাঙ্গালীর কাছ থেকে আনা ৯০ সি.সি হোন্ডা চালাচ্ছিল মানু, তাঁর পেছনে মায়া এবং গাজী। গাজীর হাতে ছিল স্টেনগান। নির্ধারিত জায়গায় রেকি করে দেখল যে গ্যানিজ এর পাহারায় ৪ জন পুলিশ রয়েছে। হোন্ডা থেকে গাজী লাফ দিয়ে নেমে দৌড়াতে দৌড়াতে স্টেনগান এ ম্যাগাজিন ভরে চলে গেল মেইন গেট এর কাছে। তাঁর পেছনে ছিল মায়া। সে চিৎকার করে বলল- “হ্যানডস আপ!” এবং তৎক্ষণাৎ গাজী পুলিশদের ব্রাশফায়ার করলো। মায়া দোকানের ভেতরে ছুড়ল একটি গ্রেনেদ-৩৬ এবং পরে একটি ফসফরাস বোমা। মুহূর্তেই রাস্তাঘাট খালি। হোন্ডার উপর বসে রয়েছে মানু আর কভার দেয়া টয়োটা আড়াআড়িভাবে স্টেন এর নল বের করে রাস্তার উপর দাড়িয়ে আছে।
পরের গন্তব্য ঃ ভোগ। দ্রুতবেগে ছুটে চলে হোন্ডা। গাজীর হাতে “পিন আউট” করা ফসফরাস গ্রেনেড। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বিস্ফোরণ! তাঁরা লক্ষ্যস্থলে পৌছিয়ে দেখল ভোগের কর্মচারী দোকান বন্ধ করবার চেষ্টা করছে... সাটার আর মাত্র এক হাত খোলা! সেই অবস্থাতেই গাজী সাটার লক্ষ্য করে ছুড়ে মারে ফসফরাস গ্রেনেড। সফল হয় গেরিলাদের আরেকটি অপারেশন।
এই অপারেশনে নিহত হয়েছিল- ৪ জন পশ্চিম পাকিস্তানি পুলিশ। আর এই অপারেশনের অন্যতম গেরিলা জুয়েল পরবর্তীতে শহীদ হন। (চলবে)
গেরিলা গোলাম দস্তগীর গাজী এবং ক্র্যাক প্লাটুন সম্পর্কে লিঙ্ক গুলো নিচে দেয়া হল। আশা করি এটা আরও জানতে সাহায্য করবে।
গোলাম দস্তগীর গাজী
ক্র্যাক প্লাটুন
তৃতীয় পর্ব ঃ অপারেশন উলান ও গুলবাগ পাওয়ার ষ্টেশন