
ভালোবাসা দিবস সন্নিকটে চলে আসায়এখন পর্যন্ত প্রেমে পড়া সব নারীর কথা মনে পড়ে গেলো। সবার কথাই পর্ব আকারে প্রকাশ করা হবে। প্রথম পর্বে থাকছে সাত কন্যার কথা।
_____________________________________________
অড্রে হেপবার্ন

একটা সিনেমা আর তাতেই আমি কুপোকাত! রোমান হলিডের সেই প্রিন্সেস বনে গেলো আমার হৃদয়ের রাজকন্যা। কলেজে পড়ি তখন। একাধিকবার দেখে ফেল্লাম ছবিটা। নি:সন্দেহে অসাধারন চলচ্চিত্র কিন্তু বারবার দেখলাম মূলত অড্রে হপেবার্নের জন্যই। এরপর একে একে দেখলাম ওয়ার এন্ড পীস, মাই ফেয়ার লেডি। মিষ্টি হাসি আর অপূর্ব মুখশ্রীর হেপাবর্নকে সব ছবিতে ভালো লাগলেও ঘুরেফিরে রোমান হলিডের সেই রাজকন্যাই মনে গেঁথে গেলো। এখনও মাঝে মাঝে ভাবি কার প্রেমে পড়েছিলাম হেপবার্নের না রোমান হলিডের সেই রাজকন্যার??
এলিজাবেথ টেলর

এই নারীর প্রেমিকের অভাব নেই। তা বাস্তব জীবনে হোক আর ভার্চুয়ালি । নানা-দাদার বয়সী থকে শুরু করে আমার থেকে বয়সে ছোটরাও হাবুডুব খাচ্ছে। এ নারীর ছলনায় ভোলাও তৃপ্তির, প্রত্যাখ্যাত হওয়াও আনন্দের। বিষাদময় আনন্দ। আজীবন এ কষ্ট বয়ে নেয়ার মাঝেই সুখ। কবিতা আমার দ্বারা হয়না। কিন্তু পর্দায় তাকে দেখলে আমার মাথায় সর্বদাই দু এক লাইন খেলা করে যায়।
(লজ্জা লাগতেছে তাই দু-এক লাইনের নমুনা দেখাইলাম না।)

ক্লিওপেট্রারূপী টেলরকে দেখলে আমার মনে হয় ক্লিওপেট্রার জন্মই হয়েছিলো একদিন টেলর তার ভূমিকায় অভিনয় করবেন বলে!! কার জীবন বেশি সার্থক এ তর্কে আমার ভোট যাবে সম্রাজ্ঞী ক্লিওপেট্রায় কারন তাকে রূপালী পর্দায় ফুটিয়ে তুলেছিলেন চিত্রজগতের সম্রাজ্ঞী এলিজাবেথ টেইলর। যেভাবে সে জুলিয়াস সিজার আর অ্যান্টনিকে সিডিউস করত তা এক কথায় অতুলনীয়! পুরুষের ভেতরকার টগবগ করে ফুটতে থাকা পৌরষত্বকে জাগিয়ে তোলার, প্রেমে হাবুডুব খাওয়ানোর জন্য তিনি যে পন্থা অবলম্বন করেছিলেন তা যতনা বেশি ছিলো শরীরি তারচেয়ে অনেক বেশি মনস্তাত্বিক। পুরুষ অনুগত কুকুরের মত তার পায়ে লুটিয়ে পড়তে বাধ্য!
টেলরের পাওয়ারফুল অভিনয় দেখতে চাইলে হুজ এফরেইড অভ ভার্জিনিয়া উলফ অবশ্যই দেখা উচিত। জায়ান্ট আর বাটারফিল্ড এইট দেখলেও টেলরের অভিনয় এ ছবিগুলোতে কাঁচা লেগেছে।
তিন পর্বের একটা সিরিজ লিখছিলাম হলিউডের দেবীকে নিয়া
পর্ব ১
পর্ব ২
পর্ব ৩
মেরিল স্ট্রিপ

আমার স্বপ্নকন্যাদের মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রম মেরিল স্ট্রিপ। যৌবনের মেরিলকে যারা দেখেছেন তার নিশ্চয়ই বলতে বাধ্য হবেন তিনি অন্যরকম সুন্দরী। তবে তার প্রধান অস্ত্র ছিলো অভিনয়! চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে অভিনয়, পাল্লা দিয়ে অভিনয়। এ গুনটা না থাকলেও যে খুব ক্ষতি হয়ে যেত তা নয়! গ্ল্যামার ছড়ানোর জন্য পোশাক-অলংকার বা শরীরি ভঙ্গির প্রয়োজন ছিলোনা তার। বরং মেরিল একটি পোশাক পড়লে সেটিই হয়ে উঠত অনিন্দ্যসুন্দর, তার অঙ্গে কোন গহনা জুড়লে অলংকারটিই বেশি দীপ্তি পেত। ক্রামার ভার্সেস ক্রামার, দি ডিয়ার হান্টার, আউট অফ আফ্রিকা দেখে মেরিলের সঙ্গে পরিচয়ের শুরু। তবে থমকে গিয়েছি সোফি'স চয়েজ দেখে। মেরিলের প্রতি রয়েছে আমার কামনা-বাসনাহীন ভালোবাসা। যে ভালোবাসায় শ্রদ্ধাটাই মুখ্য। যে ভালোবাসায় নি:স্বার্থ ভালোবেসে যাওয়াটাই একমাত্র চাওয়া।
মেরিল আপনি দীর্ঘজীবী হন। দি আয়রন লেডি ছবিতে অভিনয়ের জন্য আপনার হাতে অস্কার এ দৃশ্যটি দেখার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। মুখিয়ে আছি আপনার অভিনীত সবকটি চলচ্চিত্র দেখে ফেলতে।
সূচিত্রা সেন

রীনা ব্রাউন! আমার রীনা ব্রাউন!
রমার কথা বলতে গেলে আমি ঘুরে ফিরে 'সপ্তপদী' নিয়ে বেশি কপচাবো। উত্তম-সূচিত্রা জুটির অমর এই ছবিটি আমার খুব খুব খুব প্রিয় একটি রোমান্টিক ছবি। ছবিটির তিনটি দৃশ্য আমার খুব প্রিয়। বাইকে চড়ে এ পথ যদি না শেষ হয়..গানটির চিত্রায়ন, মঞ্চে ওথেলো অভিনয়ের দৃশ্য আর ছবিটির শেষ দৃশ্য। কে কী বলবেন জানিনা সপ্তপদীতে অভিনয়ে সূচিত্রা সেন উত্তম কুমারকেও ছাড়িয়ে গেছেন।
বাংলা চলচ্চিত্রে সূচিত্রা সেনের মত অভিনেত্রী আর দ্বিতীয়টি আসা সম্ভব না।কোনভাবেই না। অভিনয়-রূপ-মাধুর্যে অতুলনীয় এক নারী তিনি। যাকে দেখলে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ভক্তি করতে ইচ্ছে করে। যাকে দেবীর আসনে বসিয়ে উপাসনা করতে ইচ্ছে করে।
নায়িকা শব্দটি সূচিত্রা সেনের সঙ্গেই যায়.................
সূচিত্রা সেনকে নিয়েও অনেককাল আগে লিখছিলাম
জুলিয়া রবার্টস

প্রিটি ওম্যান জুলিয়া রবার্টস। যার হাসিতে মুক্তো ঝরে। প্রথমে আমি শুধু তার হাসির প্রেমেই পড়েছিলাম। প্রিটি ওম্যান আর নটিং হিল দেখার পর মনে হয়েছিলো প্রেমিকা হিসেবে জুলিয়া রবার্টস মন্দ হতনা। এরিন ব্রকোভিচ দেখে ভাবলাম এমন বউ পেলে মন্দ হতনা। আমি দিনরাত আলসেমী আর ঘুমে পার করে দিতাম। জীবন-জীবিকার দায়িত্ব তারে হাতেই সঁপে দিতাম। তবে এত কিছূর দরকার নেই । দুর্দান্ত এ অভিনেত্রীর হাসিটা নিজের করে পেলেই আমার সারা জীবন চলে যেত।
এরিন ব্রকোভিচ মাস্ট সী মুভি। মাই বেস্ট ফ্রেন্ড'স উইডিং , রানওয়ে ব্রাইড আর ক্লোসার দেখতে পারেন। ভালোই লাগবে।
সালমা হায়েক

বলতে দ্বিধা নেই। সালমা হায়েকের প্রতি আমার প্রেমটা প্রকৃত অর্থেই ছিলো কামজ। Desperados, Ask The Dusk, Bandidas, Wild Wild West কিংবা Midaq Alley দেখার পর কেনই বা হবোনা বলুন? কিন্তু তখন ছোট ছিলাম। সালমার অভিনয়ের প্রেমে পড়লাম Frida মুভিটা দেখে। প্রেমটা আস্তে আস্তে শ্রদ্ধার দিকে ধাবিত হলো। তবে এটা বলতেও দ্বিধা নেই সালমার প্রতি কামনা আজও এতটুকু কমেনি। সালমার হায়েকের পাওয়ারফুল অভিনয় দেখতে চাইলে আরেকটা মুভি দেখতে পারেন সবাই। Breaking Up
কেট উইন্সলেট

প্রথম প্রেম। সত্যি বলছি! টাইটানিক ডুবলো আর আমি ডুবলাম কেট উন্সলেটের প্রেমে। সেই ছোট্টবেলায় টাইটানিক দেখেছিলাম বাসায়। ভিসিপিতে।
মুভিটা দুই পর্বে দেখেছিলাম।
প্রথম পর্ব : কেটের পোট্রেট আঁকার আগ পর্যন্ত
দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব: গাড়ির সিনের পর থেকে শেষ পর্যন্ত
আব্বাজান সেন্সরড করে দিছিলো


দীর্ঘ প্রায় দশবছর পর পুরো ছবিটা সেন্সরশীপ ছাড়াই দেখতে পেরেছিলাম।
আমার জীবনের প্রথম নারী কেট উইন্সলেট। কত কী যে ভাবছি কেটকে নিয়ে তখন..

নি:সন্দেহে সুঅভিনেত্রী কেট কিন্তু পর্দায় বড় বেশি খোলামেলা। একজন লুল পুরুষ হিসেবে তা আমাকে যথেষ্টই পুলক দেয়। কিন্তু একজন প্রেমিক হিসেবে আমি ব্যথিত হই। আমার প্রতিদ্বন্দীরাও যে ওকে এভাবে! দেখছে !

বাট ব্যাপার না। আফটার অল প্রথম প্রেম বলে কথা! তাই সবকিছুর পরও
মাই হার্ট উইল গো অন এন্ড অন ফর ইউ কেট...................

কেট উইন্সলেটের The Reader, Revolutionary Road, Holy Smoke মাস্ট সী!
---------------------------------------------------------------------চলবে