জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরে আকস্মিকভাবে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম!
বুলাওয়েতে তৃতীয় ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের কাছে ৭ উইকেটে হার এবং ২-১ এ ওয়ানডে সিরিজ হারার পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান মুশফিকুর রহিম। কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন - “দল ভালো খেলছে না, তাই দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মনে হয়েছে আমি নিজেও এ সিরিজ ভালো খেলতে পারেনি এবং দলের বাকি সবাইকে ভালো নেতৃত্বে দিতে পারেনি।” তবে বুলাওয়েতে আগামী ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত ২টি টি-টুয়েন্টি ম্যাচের অধিনায়িকের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
২০০৫ সালে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ক্যারিয়ার শুরু করা মুশফিক ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন।
২০০৯ এর জিম্বাবুয়ে ট্যুরে মুশফিক বাংলাদেশের সহ-অধিনায়ক নির্বাচিত হন। তৎকালীন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় সাকিব তার স্থলাভিষিক্ত হন এবং সহ-অধিনায়ক সাকিবের দায়িত্ব পান মুশফিক। ডিসেম্বর, ২০১০ এ মুশফিকের জায়গায় তামিম ইকবাল সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পান।
২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
যা কিছু অর্জনঃ
► তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে নিজেদের সেরা সাফল্য রানার্সআপ হয়
► ২০১০ এর ২১ জানুয়ারী ভারতের বিরুদ্ধে হোম সিরিজে মাত্র ১১২ বলে সেঞ্চুরি করে তিনি বাংলাদেশের দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরির মালিক হন।
► ২০১৩ শ্রীলঙ্কা সফরে মুশফিকুর রহিম প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি করেন। ৩২১টি বল মোকাবিলা করে ২২ চার ও ১টি ছয়ের সাহায্যে ২০০ রান করেন। তিনি ৮ম উইকেটরক্ষক যিনি টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন এবং ৯ম ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে ৬নং এ নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন।
► মুশফিকুর রহিম ১০টি টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেন। এর মধ্যে একটিতে জয় (চলতি সফরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে), সাতটিতে হার এবং দুটি ম্যাচ ড্র হয়। মুশফিক বাংলাদেশকে ২৪টি একদিনের ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়ে নয়টিতে জয় এনে দেন। তবে এ সময় বাংলাদেশ হারে ১৪টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১২টি। এর মধ্যে জয় পায় পাঁচটিতে আর পরাজিত হয় সাতটিতে।
প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির হিসেব করতে গেলে অনেক লেখা হয়ে যাবে। তাই সে হিসেবে না গিয়ে মুশফিক ভাইকে অনুরোধ করছি - প্লিজ ভাই, এখনি অধিনাকয়ত্ব ছেড়ে দিয়েন না। অধিনায়ক হিসেবে আমাদের বাংলাদেশ কে দেয়ার মত এখনো অনেক কিছুই আছে আপনার কাছে। জিম্বাবুয়ের কাছে ওয়ানডে সিরিজ হেরেই আপনি এমন একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েন না প্লিজ।
আশা করি আসন্ন ত্রিদেশীয় (বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়ে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা) টি২০ টুর্নামেন্টে এবং আগামী সেপ্টেম্বরে শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠেয় টি২০ বিশ্বকাপেও আপনাকে অধিনায়ক হিসেবে পাব।
প্রেস কনফারেন্সে আপনাকে আবার দেখব এমন রূপে দেখার প্রত্যাশা করছি -
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৩ রাত ১:৫২