আমি পবিত্র কোর-আনের একটি খুব ছোট্ট আয়াত আপনাদের পড়ে শুনালাম, আয়াতটি সরা আল-বাক্বরার।
আমার ভাই ও বোনদেরকে আমি একটি পরামর্শ দেব যে, যখন কোন বক্তা পবিত্র কোর-আনের কোর ঊদ্ধৃতি দিয়ে কিছু বলেন আপনারা ঐ ঊদ্ধৃতি দিয়ে কিছু বলেন আপনারা ঐ ঊদ্ধৃতি একটু মনে রাখবেন এবং কোর-আনে কি আছে তা বাসায় গিয়ে চেক করা নেবেন। তার মানে এই নয় যে আপনি বক্তাকে সন্দেহ্য করছেন যে তিনি আপনাকে ধোকা দিয়েছেন। যদি আপনি এই ভাবে অভ্যাস করেন এবং প্রতিবারে বাসায় গিয়ে নিজের কোর-আনে তা পরীক্ষা করে দেখেন, সে ক্ষেত্রে প্রতিবারই নিজের চোখে আয়াতটি এবং মন লাগিয়ে তা পড়ার মাধ্যমে সেটি আপনার মনে গেথে যাবে এনং এটি আপনার জ্ঞ্যনার্জনের একটি অংশ হয়ে যাবে। এবং পরবর্তিতে আপনি প্রসঙ্গক্রমে অন্যদেরকেও এসব আয়ার উল্লেখ করে সাহায্য করতে পারবেন। এ প্রসংগে আমি অনুরোধ যাদের বাসায় কোর-আনের তরজমা আছে, তারা সবাই বাসায় গিয়ে চেক করবেন। যদি আপনার কাছে এটা থাকে; রঙ নিয়ে চিন্তা করার কিছু নাই, এ তরজমা খানা আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলীর। যদি আপনার কাছে এটা থাকে তাতে দেখবেন এর শেষে আছে পরিপূর্ণ নির্দেশিকা ইনডেক্সে, আপনি কি জানতে চান, ইনডেক্সে সূচী থেকে দ্রুত সেই বিষয়ের খোজ পেয়ে যাবেন। ইনডেক্সে সকল বিষয় ডিকশেনারীর মত অক্ষর ক্রম অনুসারে দেওয়া আছে। প্রথমে A, পরে B, তারপরে C। ধরা যাক বাক্বারা, এবং আমি বলেছি সূরা নং ২, এবং সহজেউ ২ নং সূরা পাবেন, এ বউ এর সকল সূরা নং, পৃষ্ঠা নং সব পৃষ্ঠাতেই উল্লেখ আছে। এখন ধরুন আয়াত নং , আমি বলেছে ১১০, খুব সহযেই পাওয়া যাবে কারন প্রত্তেকটি আয়াতেই আয়াত নম্বর দেওয়া আছে। ১২০ নং আয়াতটিতে আল্লাহ বলেন আমাদেরকে অর্থাৎ মুসলমানদেরকে সতর্ক করতে আল্লাহ বলেন, ইহুদি আর খৃষ্টানরা কখনো তোমাদের উপর সন্টুস্ট হবে না, কখনো না, যতক্ষন না তোনরা তাদের ধর্ম গ্রহণ করছ। কি! কথা সত্য? না মিথ্যা? খৃষ্টানদের মনভাব সম্পর্কে এই কথা সত্য? না মিথ্যা?
আচ্ছা আমি এখন আপনাদেরকে অনুরোধ করব হাত উঠাতে; আপনাদের মধ্যে উপস্থিত যাদেরকে এই দেশে এখন পর্যন্ত কোন খৃষ্টান
কর্তৃক ধর্মান্তরের চেষ্টা করা হয় নাই তারা হাত উঠান। খৃষ্টানদের বিশ্বাসে বিশ্বাসী করাতে, কোন খৃষ্টান আপনার কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি - এরকম কি কেউ আছেন? মুসলমানদের মধ্যে? থাকলে হাত উঠান। যাদের সাথে আজ পর্যন্তও কোন খৃষ্টান কথা বলেনি তাদের ধর্ম সম্পর্কে, খৃষ্টান ধর্ম সম্পর্কে - এই দেশে এই আমেরিকায়? দয়া করে তারা হাত উঠান। তার মানে? কঠিন অবস্থা! ভাই ও বোনেরা বোঝা গেল কোননা কোন খৃষ্টান কোননা কোন সময় আপনাদের কাছে এসেছে তার ধর্মে বিশ্বাস করাতে। আপনাদেরকে তাদের ধারনা মতে দোযখের আগুন থেকে বাচাতে। না না আসলেও তারা মনে করে - তারা বিশ্বাস করে যে, আমরা মুসলমানেরা সবাই ধ্বংশ হয়ে গেছি।
আসলে তারা জানে যে আমরা মুসলমানেরা খুব ভাল মানুষ। আমার দেশ সাউথ আফ্রীকায় আমরা মাথা উচু করে দাড়াতে, কথা বলতে সক্ষম। মুসলমানেরা গর্ব করে বলতে পারে সে দেশে অন্য ধর্মের এমন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত কেউ দেখাতে পারবেনা যে, তারা আমাদের থেকে ভাল - ভ্রাত্যিত্বের দিক থেকে, ধার্মিকতার দিক থেকে, পরোপকারিতার দিক থেকে, নমনীয়তার ব্যাপরে - আমর দেশে এমন কোনো গোষ্ঠী নাই যে তারা বলতে পারে তারা মসলমানদের চেয়ে ভাল। আমরা মুসলমান, ঐ দেশে আমাদের মধ্যে মদ্যপায়ীর সংখ্যা সবচেয়ে কম, ঐ দেশে আমাদের মধ্যে জুয়াড়ুর সংখ্যা সবচেয়ে কম, ঐ দেশে আমাদের মধ্যে তালাকের ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে কম, ঐ দেশে আমাদের মধ্যে জেল খাটার ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে কম, ঐ দেশে আমাদের মধ্যে পরোপকারিতার ঘটনার সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। কিন্তু আমরা কাউকে পাই না মুসলমান বানাতে। কিন্তু আমরা কাউকে পাই না ইসলামে আনতে। আমরা কাউকে পাই না। আমরা আমাদের ধর্মে আনতে কাউকে পাই না। আমরা মুসলমানরা সমাজ গোষ্ঠী হিসাবে একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত। আমরা শতকরা হিসাবে নামাযী লোকের সংখ্যা বলেন, আমরা শতকরা হিসাবে দাড়ী রাখা লোকের সংখ্যা বলেন, অনেক বেশী। আমরা কৃপণতা করি না, আমরা মদ খাই না, আমরা জুয়া খেলি না, আমরা অশ্লীল নাচা নাচি করি না; আমরা শুকর খাই না। আমরা এমন একটি গোষ্ঠী, যা কেউ কল্পনাও করতে পারে না। কিন্তু আমরা কাউকে পাই না মসলমান বানাতে। আপনারা কি জানেন সমস্যাটা কোথায়? সমস্যা হল আমরা কেউ কথা বলতে চাই না। মুসলমানরা, আমাদের ভাইয়েরা খুব ভাল মানুষ, কিন্তু তারা বলে যে, আমাদের নিজেদেরই কোন ঠিক নাই। আমরা এখনও পরিপূর্ণ ভাল হতে পারি নাই। তারা বলে , আগে মুসলমানদেরকে মুসলমান কর। আমাদের ভাল মানুষ ভাইয়েরা-তারা বলে যে, আমাদের নিজেদেরই কোন কিছুর ঠিক নাই। আমরা এখনও পরিপূর্ণ ভাল হতে পারি নাই। কাজেই অন্যদের কাছে গিয়ে কোন মুখে কথা বলব? কিন্তু আমার প্রশ্ন - কোন খৃষ্টান কি আপনার চেয়ে ভাল? সামগ্রীক ভাবে খৃষ্টানরা কি মুসলমানদের চেয়ে ভাল? না। এ সত্তেও তারা তাদের ধর্মে ভাগিয়ে নিতে লোক পায়। কিন্তু আমরা কাউকে পাই না। কি কারনে? কারনটা কি? কেউ কি আমাকে এর কোন সঠিক কারন দেখাতে পারেন? কেন তারা তাদের ধর্মে ভাগিয়ে নিতে লোক পায়, আমরা পাই না? ঊনবিংশ শতাব্দির শুরুতে আফ্রীকায় ছিল তিন ৩% পারসেন্ট খৃষ্টান আর আজ সেখানে, আফ্রীকায় ৪০% খৃষ্টান। এই শতাব্দির শেষে তারা আফ্রীকাকে একটি খৃষ্টান উপ-মহাদেশ বানিয়ে ফেলতে চেষ্টা করছে। আর অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা তাতে সফলকাম হবে। আমি জানতে চাই কেন। ব্যপারটা কি? তারা তাদের ধর্মে ভাগিয়ে নিতে লোক পায়। কিন্তু আমরা কাউকে পাই না। কি কারনে? আমাকে আপনারা এর উত্তর দেন।
খুব সহজ উত্তর। বইটা আপনাদের জন্য। এই বইটাতে সব কিছু বলা হয়েছে, আপনাদের জন্য। আমরা মুক খুলি না, আমরা কথা বলি না। আসল ব্যপার এখানেই। ও ভাই আপনারা কথা বলতে চান না। ও আমার বোনেরা, আপনারা কথা বলেন না। খৃষ্টানরা কথা বলছে, তারা বলেই চলেছে। তারা বিক্রি করছে। তারা বিক্রি করেই চলেছে।
আর আপনারা তো ভালই বোঝেন যে - আপনার যদি খারাপ কিছু বা বাজে জিনিস কিছু থাকে, আপনি তাও খদ্দেরকে খাওয়াতে সক্ষম; আপনি প্রচার চালাতে থাকেন অনবরত, আমার বিয়ার মদ খুব মিষ্টি। জান? আমার ডুমুর ফল গুলো খুব ভাল আর মিষ্টি। যদিও সবাই জানে কোথাও টক ছাড়া অন্য কিছু পাওয়া যায় না, তবুও যদি আপনি বলতেই থাকেন, কোন না কোন বেকূব হয়ত কিনে নেবে। আপনি বলে বলে সেটা কোন না কোন বেকূবের কাছে বিক্রি করতে সক্ষম হবেন।
তাই আল্লাহ আমাদেরকে বলেছেন, ইহুদি আর খৃষ্টানরা কখনোও তোমাদের উপর সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষন না তোমরা তাদের ধর্ম অনুসরন করছ।
কোন দেশই আজ নিরাপদ নয়। আমার কাছে এখানে এখানে একটা বই এর উপরের পাতা আছে। এখানে বলা হচ্ছে; সৌদি আরব থেকে সংকেত ধ্বনি। সৌদি আরব থেকে শুরু। এই যে এদিক! এদিকে! আপনারা ভাবছেন; আমাদের সৌদি আরবের ভাইয়েরা হয়ত মনে করছেন, তারা নিরাপদ আছেন। পবিত্র নগরীর দেশ সৌদি আরব। খাদেমুল হারামাইন আলহামদুলিল্লাহ। তিনি সংরক্ষিত রেখেছেন যে, এদেশে কোন খৃষ্টান গির্জা তৈরী হয় নাই। আমরা জানা মতে, সারা দুনিয়ার মধ্যে শুধু একটিই মুসলিম দেশ আছে যেখানে কোন খৃষ্টান গীর্জা নাই। আমার মনে হয় না আপনারা এসব খবর জানেন; সে দেশে কোন গীর্জা তৈরীর অনুমতি নাই। আর সেখানে কোন খৃষ্টান মিশনারীর লোক বাড়ী বাড়ী গিয়ে দরজা খটখটাতে পারে না। কিন্তু তাতে কি? খৃষ্টানরা ঠিকই তাদের রাস্তা করে নিতে পারে। ডাগ যোগে তারা কাজ করে যাচ্ছে। যদি আপনি ভিতরে ঢুকতে না দেন, বা কারো সাথে সাক্ষাত করতে না দেন, তাতে কি? আপনি পোষ্টম্যানকে তো আর আটকাচ্ছেন না। বাই পোষ্টে আসা সবকিছুইতো ঠিকানা মত পৌছাচ্ছে। আর এভাবে ওরা বিভিন্ন লোককে, ব্যবসায়ী লোকজনকে আরবী ইঞ্জীল বিনা পয়সায় দিতে চায়। ভিক্ষুককে যেভাবে লোকে দান করে। বর্তমানে তো আপনারা সব কোটিপতি, আপনাদেরকে দান করা হচ্ছে ইঞ্জীল কিতাব। যাকে বলা হচ্ছে গস্ফিল। কোন না কোন বেকূব হয়তো তাদের আহবানে সাড়া দিবে। ওরা সব মানুষদেরকে এই বলে বোকা বানায় যে - তুমি কি কখনো ইঞ্জীল দেখেছো? আপনি বলবেন না। আবার সে প্রশ্ন করবে - তোমাদের আলেম সমাজ কি তোমাদেরকে দেখিয়েছে বা এ সম্পর্কে কিছু বলে থাকে? না! কাজেই যদি তুমি এক কপি ইঞ্জীল ফ্রী ফ্রী পেতে চাও তাহলে আমাদের ঠিকানায় চিঠি লেখ তুমি পেয়ে যাবে। এইভাবেই খৃষ্টানরা আপনাদের অভ্যন্তরে ঢোকার চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ছাড়া তাদের আরো অনেক পন্থা আছে। তারা আপনাদের দারে দারে এসে আপনাদেরকে বাগে আনতে না পারলে সেখানে তাদের অন্য রাস্তা আছে। আর এই দেখেন - এটা হচ্ছে একটা খৃষ্টান ম্যাগাজিন - ইংল্যান্ড থেকে এটা প্রকাশ করা হয়। শুধু খৃষ্টানদের জন্যই। এটা আপনার আমার জন্য নয়, আপনার আমার চোখে পড়ার জন্য এ ম্যাগাজিন ছাপা হয় নাই। এই খৃষ্টান ম্যাগাজিনের এটা একটা ছবি - ছবিতে আছে একটা আরব মহিলা পর্দা অবস্থায়; যাকে বলে হিযাব - পর্দা বলি আমরা, পর্দা করার পরেও এই সাদাকালো শুধু যে অংশ দেখা যাচ্ছে সেটা হচ্ছে মহিলার চোখ দুটো - আর কিছুই না, আর শুধু এতটুকুতেই মহিলা যে কত সুন্দরী - সত্যি সত্যি সে খুব সুন্দরী। যদি আপনারা ছবিটার দিকে একবার তাকান - শুধু তাকিয়েই থাকবেন। কি ভাবছেন - আরে আমি যদি পাত্রী সন্ধানি হোতাম - আর যদি এ মহিলাকে পাত্রী হিসেবে পেতাম, বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে দিতাম।
শুধু সাদা কালো ছবিতেই সে কত সুন্দর - সত্যি বলছি - এই যে দেখেন তার চোখের গ্ল্যামার, তার চোখের পাতা, ভ্রু - অপুর্ব! অপুর্ব!
আচ্ছা তারপর লক্ষ্য করেন, এখানে বলা হচ্ছে - খৃষ্টানদেরকে জানান হচ্ছে - এই যে সুন্দরী মহিলা এ হয়ত এখনও কোন খৃষ্টানের সাথে মিলিত হয় নাই। খৃষ্টানদের জন্য এটা একটা আফসোসের ব্যপার হয়ে গেল নাকি?
পত্রিকায় এখানে বলা হচ্ছে; পাঠকদেরকে মানে খৃষ্টানদেরকে জানান হচ্ছে - এই যে আরব মেয়েটা তাকে এখনও পর্যন্ত কোন খৃষ্টান ছুঁতে পারে নাই। কিন্তু তোমরা খৃষ্টানরা তার কাছে চিঠি পাঠাতে পারবে, প্রভুর ভালবাসায়। তোমরা তাকে চিঠি পাঠাতে পার - কাকে? - আপনাদের বোনকে, আপনাদের মেয়েদেরকে, আপনাদের স্ত্রীদেরকে। তোমরা তার কাছে চিঠি পাঠাতে পারবে, প্রভুর ভালবাসায়। এখন আমি আরব ভাইদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই! আপনারা কি আপনাদের বোনদের, স্ত্রীদের, কন্যাদের নাম ঠিকানা সব ওদেরকে পাঠিয়ে দিয়েছেন? নিশ্চয় না - তাহলে? তাহলে কিভাবে ওরা আপনাদের বোনকে, আপনাদের মেয়েদেরকে, আপনাদের স্ত্রীদেরকে চিঠি পাঠাবে? কাউকে চিঠি দেবে কুয়েতে, কাউকে বাহারাইনে, কাউকে আবুধাবিতে, কাউকে জর্ডানে, সৌদি আরবে, মিশরে - কিভাবে? আপনারা তো কোন ঠিকানা ওদেরকে দেননি? নাকি আপনারা ঠিকানা দিয়ে রেখেছেন? নিশ্চয় না!
আসল কথা হল - ওরা জানে কিভাবে ব্যবস্থা করতে হয়। খৃষ্টানদের উপায় জানা আছে। তারা সক্রীয় আছে - তাদের কর্ম পদ্ধতি নিয়ে; অশুভ কর্মকান্ড নিয়ে ভুল রাস্তায়। ধ্বংশাত্বক প্রক্রিয়ায়। আমরা আছি সিরাতুল মুস্তাকিমের উপর। আছি তবে মৃত লাশের মত অবস্থায়। সঠিক পথে আছি তবে মৃত কিন্তু খৃষ্টানরা সজীব ও সক্রিয় রয়েছে বাতিল এর উপরে। ওরা ছলে বলে কৌশলে আমাদের মধ্যে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। আমাদের পাকড়াও এর চেষ্টায় আছে।
তারা এখানে লিখেছে অর্থাৎ খৃষ্টানদেরকে বলা হচ্ছে - ‘মাজাল্লা’ একটা যুব পত্রিকা, পত্রিকার নাম ‘মাজাল্লা’। এটা হচ্ছে ‘আল-মাজাল্লার’ কাভার পেজ মানে উপরের পৃষ্ঠা। ‘মাজাল্লা’ হচ্ছে একটি ম্যাগাজিন, যুব ম্যাগাজিন, - মিডিল ইষ্টের ১৪ টা আরব দেশে এটা প্রকাশ হয় ও বিতরন করা হয়। ম্যাগাজিনটি আরবি ভাষায় লেখা আর এর প্রায় সকল প্রকার সম্পাদনার কাজে নিয়োজিত রয়েছে আরবি ভাষী খৃষ্টান সম্প্রদায়। আমাদের এসব খবর জানার কথা না। আপনারা এসন খবর রাখেন বলে মনে হয় না। আপনারা শুধু দেখেন - ‘মাজাল্লা’ আর কিনে নিয়ে যান। একটা আরবি ম্যাগাজিন, আরব দেশে ছাপা হচ্ছে - ব্যাস। আর একটা জিনিস এখানে আপনারা লক্ষ করেন - এটা - এই ‘মাজাল্লা’ যেটা এইমাত্র দেখালাম, সেখানে আছে - এই যে এখানে দেখান হয়েছে - কোন এক সৌদী ভদ্রলোক গেছেন উত্তর মেরুতে এবং যেখানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সৌদী আরবের জাতীয় পতাকা - যাতে লেখা আছে ‘লা ইলাহা ইল্লা আল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’। এইসব ছবি ওয়ালা পত্রিকা কোন এক বইয়ের দোকানে দেখলে তা আপনি ভাল বেশে কিনে নিয়ে যাবেন। আপনি ভাববেন আমার বোন এটা পড়ুক, আমার মেয়ে এটা পড়ুক, আমার স্ত্রী এটা পড়ুক। স্বাভাবিক কথা, খুবই স্বাভাবিক। আপনাদের সকলেরই জানার ইচ্ছা ব্যপার টা - যে আমাদেরই এক ভাই ইসলামের পতাকা নিয়ে উত্তর মেরুতে পৌঁছে গেছে - মাশাল্লাহ মাশাল্লাহ। কত বড় খবর। কাজেই এ সব পত্রিকা আপনারা কিনে বাসায় নিয়ে যাবেন - স্বাভাবিক।
যা বলছিলাম - এখানে উল্লেখ করা হয়েছে - এই পত্রিকায় প্রায় সকল প্রকার সম্পাদনার কাজ পরিচালিত হয় আরবি ভাষী খৃষ্টানদের মাধ্যমে। এই ম্যাগাজিনের একটা অংশ আছে - পত্র মিতালী সরবরাহ, পেন ফ্রেন্ড এক্সচেঞ্জ। সেখানে আছে একটি ছোট বিজ্ঞপন; সেখানে বলা হয়েছে - তোমরা যারা ইংরেজী শিখতে চাও বা ভাল মত আয়ত্ব করতে চাও, তারা আমাদেরকে চিঠি লিখতে পার ‘আল-মাজাল্লা’-এর বরাবরে। আর এর মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হবে এমন একজনের সাথে - যে প্রায় সময় চিঠি লিখবে, আপনাদের সাথে, মানে আপনার বোনের সাথে, আপনার মেয়ের সাথে, আপনার স্ত্রীর সাথে। আর আপনার মা বোনেরা চিঠি লিখবে ‘আল-মাজাল্লা’ এর বরাবরে - এই ভেবে যে হয়ত কোন মুসলমান মেয়ের সাথে আল-মাজাল্লার মাধ্যমে তার যোগাযোগ হবে। শেষ মেষ যা ঘোটবে তা হল তারা এ সব ঠিকানা পাঠাবে বিভিন্ন খৃষ্টান মিশনারিতে, যারা যোগাযোগ রাখবে আপনার বোনের সাথে, আপনার মেয়ের সাথে, আপনার স্ত্রীর সাথে।
ওরা জানে কিভাবে আপনার অন্তর মহলে ঢুকতে হবে। আমরা মুসলমানরা জানিই না যে কি খেল তারা আমাদের সাথে খেলছে। আপনারা সরল মনে সরল বিশ্বাসে ওদের কাছে পত্র পাঠাচ্ছেন - আর যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে আপনাদের মেয়েদের সাথে লন্ডনের কোন খৃষ্টান মিশ্নারির সাথে। এবং তারা আপব্ররতিতে আপনাদের পেন ফ্রেন্ড হিসাবে মহিলাদেরকে দাওয়াত করবে লন্ডনে। বলবে - দেখ তুমি যদি লন্ডনে আদতে চাও - তুমি আমার গেষ্ট হয়ে থাকবে, আমি তোমাকে লন্ডনের বিভিন্ন প্রশিদ্ধ স্থান, যেমন বিশাল সব হল, বাকিংহাম প্যালেস, বড় বড় মিউজিয়াম ইত্যাদি বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখাব, আর আপনাদের কীন মেয়ে যখন লন্ডনে পৌছে যাবে, তখন দেখবে তার জন্য তার এক পুরুষ বন্ধু অপেক্ষা করছে।
তারা ভালই জানে আপনাদেরকে কিভাবে পাকড়াও করতে হবে। এখানে আছে আর একটি পত্রিকা, ‘নিউজ উইক’। এখানে বলা হয়েছে সারা বিশ্বে যত গুলি মিশনারি আছে, তারমধ্যে ৬০% ভাগেরও বেশী মিশনারিই হচ্ছে আমেরিকায়। বিশ্বের ৭০,০০০ সত্তর হাজার মিশনারির ৬০% ভাগেরও বেশী মিশনারিই হচ্ছে আমেরিকান। ৬০% ভাগেরও বেশী, আর আছে আছে সত্তর হাজার ৭০,০০০। বাকী সারা বিশ্বে রয়েছে - আছে ইন্ডিয়াতে আছে পাকিস্তানে, আছে বাংলাদেশে, আছে আফ্রিকায়। আফ্রিকায় অবস্থান করছে ৩৫ হাজার; ইন্দোনেশিয়ায় আছে।
ওরা গর্ব করে বলে - যে, ওরা স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে এত লোককে ধর্মান্তর করে খৃষ্টান বানিয়েছে যে পূর্ববর্তি ব্রিটিশ শাসনামলের ১০০ বছরেও হয়নি। ওরা গর্ব করে বলে - যে, তারা ১৫ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৫০ লাখ লোককে ধর্মান্তর করে খৃষ্টান বানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ায় এবং এ শতাব্দির শেষে তারা ইন্দোনেশিয়াকে একটি খৃষ্টান জাতিতে পরিনত করার পরিকল্পনায় আছে; আর অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা সফলকাম হবে। ওরা গর্ব করে বলে যে, বর্তমান পাকিস্তানের এমন অনেক শহর আছে যেখানে ১ লাখেরও উপরে খৃষ্টান সম্প্রদায় রয়েছে - করাচিতে ১ লাখেরও বেশী খৃষ্টান, মুলতানে ১ লাখেরও বেশী খৃষ্টান, লাহরে ১ লাখেরও বেশী খৃষ্টান এবং শত্রু দের সাথে যেখানে বর্ডার অর্থাৎ শিয়ালকোটে ২ লাখেরও বেশী খৃষ্টান রয়েছে। এবং পানজাবের এমন অনেক শহর আর গ্রাম রয়েছে যেখানে মুসলমানদের চেয়ে খৃষ্টানদের সংখ্যাই বেশী। কিন্তু মুসলমানরা সবাই সন্তুষ্ট, তৃপ্ত আর বলে আমরা ৮০ পারসেন্ট, আমরা ৯০ পারসেন্ট।
আরে ভাই আসলে এটাই হচ্ছে মুসলমানদের মনভাব, তারা মনে করে, সব কিছু ঠিক আছে; আমরাই মেজরিটি। আরে মিঞা, তোমাদের জন্য কবর খোড়া হচ্ছে; তোমার দেশে তোমাদের জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তোমরা জান না তোমাদের জন্য কি কি পরিকল্পনা চলছে, তোমারই দেশে। পাকিস্তানে এক অর্থে আমারও দেশ; আমি পাকিস্তানে থেকে এসেছি - ৩ বছর, ভায়ের সাথে করাচিতে ছিলাম।
এখন আমি আপনাদেরকে আরও কিছু দেখাব, একটা ছোট্ট দল বা গোষ্ঠী, ‘জাহয়াজ উইটনেস’ নামে সক্রিয় আছে। তারা একটা বই ছাপিয়েছে; একটা বই যার আছে ১৯২ টা পাতা এবং ঐ বই এর ৮৪ মিলিয়ন কপি তারা ছাপিয়েছে ৯৫টা ভাষায়। এ সব ভাষার মধ্যে আরবি, ঊর্দূ আর গুজরাটিও আছে যা আমার ভাষা। ৮৪ মিলিয়ন মানে ৮ কোটি ৪০ লক্ষ কপি শুধুমাত্র একটি বই। সমগ্র মুসলিম বিশ্ব একত্রে একশ বছরেও যা পারবে না। ১০০ বছরেও আমরা তা পারব না।
ঐ একই গোষ্ঠী তারা নিজেদেরকে ‘জাহয়াজ উইটনেস’ নামে পরিচয় দেয়, তারা একটা পত্রিকা ছাপে নাম ‘দা ওয়াচ টাওয়ার’। আমার ধারনা আপনারা কেউই এসব বিষয়ে কোন খবরা খবর রাখেন না। এ সব লোকদের ব্যপারে আপনাদের কোন ধ্যান ধারনা আছে বলে মনে হয় না। ‘ওয়াচ টাওয়ার’ ম্যাগাজিন সম্পর্কে এখানে বলা হয়েছে, গড়ে প্রত্যেকটা ইস্যু তারা ছাপে ৩ কোটি ৪৫ হাজার কপি - মোট ১০৪ টা ভাষায়। আপনারা কল্পনাও করতে পারবেন না। কল্পনার বাইরে, সব কিছু রূপ কথার গল্প মনে হবে। ঐ একই গ্রুপ তারা গর্ব করে বলে যে, তারা কাজ শুরু করে প্রথম আমেরিকায় ১০০ বছর আগে। আমেরিকার বাইরে ২য় বড় গ্রুপ, ‘জাহ্যাজ উইটনেস’ গ্রুপ কাজ করে বা কর্ম কান্ড পরিচালনা করে একটি মুসলিম শেচে আর সে দেশটি হল নাইজেরিয়া। আপনারা ধারনা করতে পারেন? আমেরিকার পরে ২য় বড় গ্রুপ কাজ করছে একটি মুসলিম দেশের অভ্যন্তরে, নাইজেরিয়ায়?
আর এদিকে আমরা মুসলমানরা নিশ্চিন্ত আছি, মনে করছি সব কিছু ঠিক ঠাক আছে। কোন অসুবিধা নাই। অন্য দিকে তারা চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছে - কি কি কায়দায় আমাদের মধ্যে ঢোকা যায়, তা সে যে কোন মুল্যেই হোক।
তারা চাইছে আমাদেরকে বাগে আনতে, তারা আমাদের জন্য তৈরি করছে সুন্দর সুন্দর পবিত্র শো - পিস, এদিকে একটু চেয়ে দেখেন, কি সুন্দর পবিত্র জিনিষ। সুন্দর পবিত্র। ক্যালিগ্রাফি, কায়দা করে লেখা, সাধারনত কোরানের ভিতর এ রূপ কায়দা কোরে আরবি লেখা থাকে। যাকে ক্যালিগ্রাফি বলে।
আপনারা যারা দূরে আছেন, দেখতে পারছেন কি না জানি না - আপনাদের কাছেও নেয়া হয়েছে, ঠিক আছে।
দেখেন, কি সুন্দর, পবিত্র! আমি যদি আপনাদের কাছে ১ টা ১ ডলারে বিক্রি করতে চাই, আমার মনে হয় কেউই আপত্তি করবেন না। কোরানের কায়দায় লেখা, মনে হচ্ছে কোরানের এক একটি আয়াত; বিক্রি করলে কেউই আপত্তি করবে না। ১ টা ১ ডলার, মনে হচ্ছে আপনারা ১০ টা ১০ টা করে নিয়ে যাবেন। নিয়ে বন্ধুদের মাঝে, প্রতিবেশীদের মাঝে বিলি করবেন, তাই না? সবাই বাসার ওয়ালে টাঙ্গিয়ে রাখবেন। আমি ইচ্ছা করলে হাজারে হাজার বিক্রি করতে পারব।
কিন্তু আপনারা জানেন না যে এগুলো কি? এগুলো সবই খৃষ্টান বাইবেল। এ সব গুলিই বাইবেলের এক একটি কথা বা বাক্য। বাইবেলের এক একটি আয়াত। আপনাদের ধারনার বাইরে, আপনারা ধারনা করতে পারবেন না এগুলি কি। কোরানের লেখার স্টাইলে আমরা কোরানই মনে করি। কিন্তু আমরা ধোকা খাচ্ছি। আমরা কি করব এগুলো নিয়ে? এগুলি নিয়ে চুমুদিয়ে দেয়ালে টাঙ্গিয়ে রাখব। এমন ভুল হতেই পারে। যে কেউই এমন ভুল করতে পারে।
ওরা জানে কি কায়দায় মাছ ধরতে হয়। ওরা জানে মুসলমান মাছ গুলো এই টোপ গিলবে। ওরা জানে আমরা আল্লাহর কালাম কে ভক্তি করি। আমরা বুঝি আর না বুঝি আমরা কি করি? চুমু দিয়ে ওয়ালে টাঙ্গিয়ে রাখি। ১ ডলার করে ইচ্ছা করলে হাজারে হাজারে বিক্রি করতে পারব। ১ ডলার কি আপনাদের কাছে কি বেশি? ১ ডলার কিছুই না। যে কেউই কিনবে।
এরপর দেখেন একটা বই। আপনাদের এটা দেয়া হয়ে থাকে আপনাদের মসজিদের বাহিরে। বই এর উপর লেখা কি? ‘আল-কিতাব’ আরবিতে লেখা ‘আল-কিতাব’। আবারো লক্ষ করেন - সেই একই রকম ক্যালিগ্রাফি, যেভাবে আমরা আরবি লেখাকে সুন্দর করে সাজাই। আপনারা ভাবছেন এটা সেই কিতাব; কি সেটা?- ‘যালিকাল কিতাব লা রাইবা ফি’ - এই সেই কিতাব যার মধ্যে কোন সন্দেহ নেই; অর্থাৎ কোরান। আপনাদের কাছে তাই মনে হতে পারে। তারপর আপনি এটা বাসায় নিয়ে যাবেন। আমরা অনেকেই অনেক কিছু বুঝি না - যেমন অনেক পাকিস্তানী, হিন্দুস্তানি, বাংলাদেশী, নাইজেরিয়াবাসী, ঘানার অধিবাসি, সবাই ধর্ম ভিরু, বুঝতেই পারবেনা যে প্রতাড়িত হচ্ছি। আমরা শুধু খেয়াল রাখব, কোরানের মত হরফে লেখা তাই চুমুখাব - ভাবব এটা নিশ্চয় ইসলামের বা কোরানের কোন বিষয়, কাজেই ঘরে নিয়ে যাব। আসলে এটা কি? এটাও হল খৃষ্টানদের বই। মাছ ধরার মত আবারও আপনাকে ধরল। ওদের কাছে আপনি যেন মাছ। টোপ গিললেই ধরা।
এরা দক্ষিন আফ্রিকায় আমাদের কাছে এই বইটা পাঠিয়েছে, বিনা পয়সায়। বাই পোষ্টে পাঠানো হয়েছে, শুধুমাত্র মুসলমানদের কাছে। সকলেই বাই পোষ্টে বইটা পেয়েছেন। আর আমেরিকা থেকে দক্ষিন আফ্রিকায় পাঠাতে প্রতিটা বইয়ের জন্য পোষ্ট করার খরচ ৩ ডলারেরও বেশী, সারফেস মেইলে, বিমানে নয়।
এখানে লেখা হয়েছে, ‘অনন্য পরম ভালবাসা’ যে এই বইটা পাবে, সে যুবক হোক আর বৃদ্ধ হোক, বইটা পড়তে চাইবে। বইটার নাম দেখে মনে হচ্ছে, এটা যৌবনের প্রেম ভালবাসা সম্পর্কিত। আপনি বুড়া হয়েছেন এখনও উৎসাহ কমেনি, এসব বিষয় সম্পর্কে - ‘অনন্য পরম ভালবাসা’ মনে মনে বলবেন ধন্যবাদ! ধন্যবাদ! আপনি বইটা খুললেন - কি আছে এতে? এটাও “পবিত্র বাইবেল”। আপনি আবারও তাদের কাছে ধরা খাইলেন। পুরা ধরা।
এখানে আরও একটা বই আছে। তারা এই বই এর আড়াই লাখ কপ্র বিতরন করেছে মিডিল ইষ্টে, আরব অঞ্চলে, কুয়েত নিয়ে ইরাক যুদ্ধের সময়। বইটার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডেজার্ট ষ্টর্ম’। এই ছবিতে আছে আমেরিকার সৈন্যদের অনুরূপ পোশাকে সেনাবাহিনীর ভাঁওতাবাজী ছবি। আমেরিকান সৈন্যদের অনুরূপ পোশাক, উপরের পাতায় - পদাতিক বাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনীর ছিল ছাপ্পড় মারা আছে; পিছনের পাতায় পদাতিক বাহিনী, নৌ বাহিনী, বিমান বাহিনীর ছিল ছাপ্পড় মারা আছে; আর এই বইটা দেওয়া হয়েছে মুসলমান্দেরকে, বিনা পয়সায় উপহার হিসেবে। মুসলমানরা বইটা হাতে নিয়ে বলবে ধন্যবাদ! আল্লাহর শোকর করবে আর বলবে - আপনাকে অনেক ধন্যবাদ! বইটা দেওয়ার জন্য। বই সে নিয়ে যাবে এই ভেবে যে, বই এর ভিতর “গালফ ওয়ার”, কুয়েত নিয়ে যে ইরাক যুদ্ধ হয়েছিল, সে বিষয়ে সব ঘটনা রয়েছে। যে যুদ্ধের নাম “ডেজার্ট স্টর্ম”। “ডেজার্ট স্টর্ম” কি? কুয়েত নিয়ে ইরাক যুদ্ধের নাম “ডেজার্ট স্টর্ম”। বুশ এই যুদ্ধের নামকরন করেছিল “ডেজার্ট স্টর্ম”। যখন বইটা আপনাকে দেওয়া হবে, আপনি ভাববেন বইটা পড়লে আপনি জানতে পারবেন, সাদ্দামের কুয়েত দখলের বিষয়। আর আমেরিকানরা কি ভাবে সাদ্দামের “স্কাড” ক্ষেপনাস্ত্রকে মোকাবেলা করল, তাদের পেট্রিয়ট মিযাইল দিয়ে। কি ভাবে তারা সাদ্দামকে পরাস্ত করল। কি ভাবে তারা ৫ লাখের মত সৈন যুদ্ধক্ষেত্রে মরুভূমীর মধ্যে সমাবেশ করেছিল অথচ একটা সৈন্যও গুলিবিদ্ধ হয়ে মরেনি। একটা আমেরিকান সৈন্যকেও প্রান দিতে হয়নি। কেউ কেউ মরুভূমীর মধ্যে অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেলেও একজনকেও সাদ্দাম বাহিনী মরুভূমীতে যুদ্ধে মারতে সক্ষম হয়নি। ৬ মাস লেগেছিল মোট ৫ লাখ সৈন্য সমাবেশ করতে, মরুভূমীর মধ্যে। অথচ একজন সৈন্যকেও হারাতে হয়নি এত অত “স্কাড” মিযাইলে; মিত্র বাহিনীর একটা সৈন্যকেও গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রান দিতে হয়নি। আপনারা হয়ত এসব বিষয়ে জানতে চান, পড়তে চান। কি কায়দায় মোকাবেলা করা হয়েছিল। আর সেখানে সকল মিত্র শক্তিকে সমন্নয় করা হয়েছিল কি ভাবে, আর সকল জাতির লোকজনকে কি ভাবে তারা মিত্র বাহিনীর পক্ষে সমন্নয় করে রেখেছিল, যেমন ছিল পাকিস্তানের লোক, বাংলাদেশ থেকে বাংলাদেশর সৈন্য, ছিল সিরিয়া থেকে, মিশর থেকে আর আমেরিকানরা, আর ব্রিটিশরা; তারা কি ভাবে সকলকে এক করে রাখতে সক্ষম হল? আপনারা এ সবকিছু বই পড়ে জানতে আগ্রহী। তাই যখন কেউ এসব বই পড়তে এটা উপহার দেয় তখন আপনি কি করবেন? আপনি তখন বলবেন, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। তারপর আপনি বইটা বাসায় নিয়ে য়াবেন। তারপর বাসায় গিয়ে বইটা খুলবেন। তখন কি দেখতে পাবেন? বই এর ভিতর কি আছে? পবিত্র বাইবেল। খ্রীষ্টানদের বাইবেল। আপনি আবারও ধরা খেলেন।
সারা বিশ্বে খ্রীষ্টানরা চাচ্ছে আমাদের লোকদের ধর্মান্তর করতে। তারা জোরে সোরে চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা কিন্তু আমাদের লোকদের হারাচ্ছি। নিজেদেরকে এত বেশী চালু ভাববেন না। আমরা আসলে ব্যর্থ হচ্ছি। কিন্তু আমরা তো এভাবে নিজেদেরকে হারিয়ে য়েতে দিতে পারিনা। আর এও তো বলতে পারছি না যে আমরা আমাদেরকে হারাচ্ছি না? দক্ষিন আফ্রিকায় যা হচ্ছে, আমি স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছি, আমরা যখন একটা পুরুষ ছেলেকে হারায়, সাথে সাথে হারায় তিনটা মেয়েকে। ১ টা ছেলের সাথে ৩ টা মেয়ে। এখানকার অবস্থা অর্থাৎ আমেরিকার অবস্থা আমার জানা নাই।
সরল মানুষের সাভাবিক সভাবই হল মেনে নেওয়া। যখন ওদের কোন ব্যাক্তি আপনার কাছে আসে, সে কি করে? নরম সুরে মিষ্টি কথায় আপনাকে প্রলুব্ধ করতে চেষ্টা করে অর্থাৎ আপনার মগজে নানান বুদ্ধি ঢোকাতে থাকে, মগজ ধোলাই করতে সক্ষম হয়।
আর তাদের বিশেষ বিশেষ পদ্ধতি আছে। আমাদের মানুষ জনকে কি ভাবে কি করা যায় তার বিশেষ পন্থা তাদের কাছে আছে। মনে করেন তারা আসবে আপনার বাসায়, এর পর আপনাকে কিছু প্রশ্ন জিঙ্গাসা করবে, বলবে- আপনি কি যীষু খ্রীষ্টকে বিশ্বাস করেন? তখন আপনি কি বলবেন? বলবেন অবশ্যই! অবশ্যই! কোন মুসলমানকে মুসলমানই বলা যাবে না যদি না সে ঈসা (আঃ) কে বিশ্বাস করে। এর পর সে আপনাকে বলবে, দেখেন, আমাদের যীষুখ্রীষ্ট আল্লাহর একজন বড় মাপের পয়গম্বর, তা কি আপনি স্বীকার করেন? আপনি বলবেন অবশ্যই আমি তা স্বীকার করি, যে তিনি আল্লাহর একজন ঊচু দরজার পয়গম্বর ছিলেন। অনেকের মধ্যে মা’শাল্লহ তিনিও একজন পয়গম্বর। তখন সে বলবে- আপনি জানেন, আমাদের যীষু খ্রীষ্ট জন্ম গ্রহন করেছিলেন অলৌকিক ভাবে, কোন পুরুষের প্রয়োজন ছাড়াই, অর্থাৎ কোন মানব পিতা ছাড়াই তিনি জন্মেছিলেন, আপনি কি তা স্বীকার করেন? — হ্যা! আমরা তা বিশ্বাস করি। প্রত্যেক প্রশ্নের উত্তরে আপনি যে কি বলবেন তা কিন্তু তার জানাই আছে। সব কিছুতেই আপনার উত্তর হবে হ্যা! হ্যা! হ্যা! তারা একটা পন্থা বা কৌশল ঠিক করেই এসেছে। পরে জিঙ্গাসা করবে, আপনাদের মুহাম্মদ (সঃ) কি একই ভাবে জন্মেছিলেন? পিতা ছাড়া? আমাদের যীষু পিতা ছাড়া জন্মেছিলেন। আপনাদের মুহাম্মদ (সঃ) কি একই ভাবে জন্মেছিলেন? না। তিনার পিতা মাতা ছিল। তাই না? আপনি বলবেন হ্যা! ছিল। সে বলবে, ঠিক আপনার আমার মতই। আপনি বলবেন হ্যা! এবার আসল পয়েন্টে আসা যাক, তা হল, যীষুখ্রীষ্ট মর্যাদায় মুহাম্মদ (সঃ) এরও উপরে। সে কিন্তু মুখে বলবে না যে যীষুখ্রীষ্ট মর্যাদায় উপরে, সে এটা কায়দা করে প্রমান করে দেখাবে।
সে আবার বলবে, আপনি হয়ত জানেন, আমাদের যীষু হচ্ছেন মছিহ, ঈছা মছিহ, ইংরাজিতে বলে, ক্রাইষ্ট। আপনি কি তা বিশ্বাস করেন? আপনি বলবেন অবশ্যই বিশ্বাস করি। সে আবার প্রশ্ন করবে, আপনাদের মুহাম্মদ (সঃ) কি মছিহুল্লাহ? আপনি বলবেন না। তিনি হচ্ছেন রছুলুল্লাহ। তিনি আল্লাহর রছুল বা বার্তা বাহক। সে তখন বলবে দেখেন, আমাদের যীষু হচ্ছেন মছিহ ও রছুল, যা আপনাদের কোরানেই আছে। তিনি মছিহ মরিয়মের পুত্র ঈসা (আঃ) এবং ইসরাইল সম্প্রদায়ের নিকট পাঠান রছুল বা বার্তা বাহক যা কোরানে উল্লেখ আছে। আমাদের যীষু হচ্ছেন মছিহ ও রছুল, আর আপনাদের পয়গম্বর শুধুমাত্র রছুল। কি তাই না? আপনাকে বলতে হবে হ্যা তাই। তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ায়? যে আমার যীষু আপনাদের মুহাম্মদ (সঃ) এর চেয়ে মর্যাদার এক দরজা উপরে। সে অবশ্য মুখে এটা বলবে না, তবে আপনার কাছে এটা প্রমান করার চেষ্টা করবে।
পরে সে বলবে দেখ, আমাদের যীষু মৃতকে জীবিত করতে পারতেন, আপনি কি তা বিশ্বাস করেন? আপনাকে বলতে হবে হ্যা! তবে তা আল্লাহর ইচ্ছায়। না তা ঠিক আছে, আল্লাহর ইচ্ছায়, আপনাদের মুহাম্মদ (সঃ) কি মৃতকে জীবিত করতেন আল্লাহর ইচ্ছায়? করতেন কি? আপনাকে বলতে হবে না। তিনি এমন কিছু করতেন না বলেই জানি। কাজেই সে আবারও প্রমানের চেষ্টা করল, তাদের পয়গম্বর ঈসা (আঃ)আমাদের মুহাম্মদ (সঃ) এর চেয়ে দর্জায় উপরে।
এরপর সে জিঙ্গাসা করবে, আপনাদের মুহাম্মদ (সঃ) এখন কোথায় আছে? আপনি বলবেন উনাকে মদিনায় দাফন করা হয়েছে। সে বলবে সম্ভবত: তাঁর হাড় গোড় কবরের মধ্যে এত দিনে পচে গলে গেছে? আপনি বলবেন, না না আমরা বিশ্বাস করি তিনি হায়াতুন্নবী বা জীবন্ত নবী। আরে ভাই সেটা তো স্থুল অর্থে নয়। বাস্তবে সম্ভবত: তাঁর হাড় হাড্ডি সব পচে গেছে কবরের মধ্যে ? হয়তবা? বলুনতো আমাদের যীষু এখন কোথায়? তিনি আছেন বেহেশতে, তিনি জীবিত আছেন? তিনি আবার পৃথিবীতে আসবেন? আপনাকে বলতে হবে হ্যা! এর মানে সে আবারও প্রমান করতে চাইল তার যীষু আমাদের মুহাম্মদ (সঃ) এর চেয়ে এক দর্জা উপরে।
এরপর শেষ জয় পরাজয়ের খেলা, “নক আউট ব্লো”। সে বলবে, আপনি কি মনে করেন না, যে আল্লাহর এ সব কিছু করার ব্যাপারে কোন না কোন কারন অবশ্য ই ছিল? তিনি বিনা কারনে কিছুই করেন না? এই যে গত কালই গেল আপনাদের ঈদ উল আযহা, কোরবানির ঈদ, কোরবানির জন্য আপনারা খুজেছেন এমন একটা মেষ, ছাগল বা গরু, যার কোন ত্রুটি নাই বা দোষ নাই, কান কাটা নয়, শিং ভাঙ্গা নয়, অন্ধ নয়, খোড়া নয়, আরে ভাই আপনাদের কোরবানি, আপনারা সব সময় খুঁজে বের করেন একটা নিখুত পশু, ঠিক কি না?
আপনাকে বলতে হবে হ্যা! তাই। আচছা যদি সর্ব শক্তিমান আল্লাহ তার সৃষ্টির জন্য কোরবানি করতে চান, তিনি কি খুজবেন? দুনম্বরি কোন কিছু? তিনি কি তাই কোরবেন? সেরা কিছু কোরবানি না করে দুনম্বরি কিছু কোরবেন? না তা কেন কোরবেন? স্বাভাবিক কথা। কে তাহলে সেই দুনম্বরি? আমাদের নবীএ-করিম (সঃ) ।
এখন তার সাথে যুক্তিতে আসেন।যুক্তি খাটান। সেই ব্যাক্তির সাথে পারলে তর্কে আসুন। আপনারা হয়ে গেলেন ভালর মধ্যে দ্বিতীয়।
অবশেষে ঐ লোক চলে যাবে, এই বলে যে, ঠিক আছে আপনার সাথে আগামী সপ্তাহে আবার কথা হবে। আর সে আমাদের সবার মাঝে এই ভাবেই চালাতে থাকবে তার কর্ম কান্ড।
এত সব বিষয়ের প্রত্তুত্তর বা আমাদের অনূকুলে এর সমাধান খুব ই সহজ। সত্যি বলছি একেবারে সরল সোজা। আসলে আমাদের দরকার কিছুটা পূর্ব প্রস্তুতি। যা আমাদের নাই। সমস্যা হল আমরা নিজেরা প্রস্তুতি গ্রহন করি না। আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনের মধ্যে এ সব বিষয় নাই। আমরা জানি অনেক কিছু,যেমন অজু, একেবারে সব কিছু খুটিনাটি বিষয় আমরা জানি। কটা সুন্নত, কটা ওয়াজিব, কটা মুস্তাহাব আছে, ওজুর মধ্যে তা আমরা জানি। দাড়ি কতটুকু লম্বা রাখতে হবে তা অমরা জানি। অমরা জানি দাড়ি লম্বা হতে হবে। মুচ ছাটতে হবে তা ও জানি। আমাদের অনেক বন্ধু আছেন, যাদের দাড়ি লম্বা আছে, আলহাম্দুলিল্লাহ, কিন্তু উনারা মুচ শেভ করেন। যার ফলে কেউ কেউ আবার তাঁদেরকে সংশোধন করতে মনে করিয়ে দেন, মুচ শেভ করা যাবে না, মুচ ছাঁটতে হবে। আমিও এক সময় এমন করতাম, মুচ শেভ করে ফেলতাম। আমাকে একদিন একজন বললেন, আপনি জানেন? আমাদের নবী করিম (সঃ) বলেছেন যে, তোমরা তোমাদের মুচ ছেঁটে রাখবে, কখনও চাঁচবে না। এ ধরনের অনেক কিছু অবশ্যই আপনারা লখ্য করে থাকবেন, অনেক কিছুই দেখে থাকবেন, অনেকেই আছেন জেনারা খুবই সতর্ক এসব বিষয়ে। আপনারা অনেক বিষয়ে খুটিনাটি সব কিছু জানেন।
কিন্তু সেই সব বিষয়ে না। এমন অনেক ব্যাপার আছে যা সম্পুর্ন ভিন্ন প্রকৃতির বিষয়। এগুলি ভিন্ন প্রকৃতির জ্ঞান, যুক্তি তর্ক।
তর্কের ঐ সব বিষয়ের প্রত্তুত্তর আছে যা পাওয়
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১০ বিকাল ৫:১৭