কি জানি হইছে বুঝি না, দেখলেই মাথা খালি চুলকায়! যা ভাবছেন তা না, খুসকি হয় নাইক্কা! নিয়মিত ঐডা দিয়া গোসল করি!! ঐডা বড় কামের জিনিস। কিন্তু কেন চুলকায় জানতে আগ্রহ হচ্ছেনা, তাই না!! কি আর করা তাও কই........
ফেইজবুকে প্রায় প্রতিদিনই দেখি বন্ধু-বান্ধবরা বিয়ের ছবি দেয়। আর রুটিন ডিউটি মতো লাইক মারি আর শুভকামনা জানাই!! আমার এক বন্ধু বিয়ে করছে কয়েক দিন আগে। দেশের বাইরে থাকার কারণেই হয়তো দাওয়াত পাইনি!! কয়েক মাস আগেও তার সাথে কথা হইছে, বললাম দোস্ত বয়সটা তো কম হয়নি, বিয়েশাদী করার ইচ্ছা থাকলে করা উচিত না? বন্ধু কইলো “বিয়া তো করতে চাই, মাগার ইদানিং সবাই বউরে সাজায়ে আনে আমার তো সেই সাজানোরই টাকা নাই, কি যে করি দোস্ত......৬০ হাজার টাকা ভরি!” আমি কইলাম এত সাজানোর চিন্তা করলে সেই টাকা কোনদিনও হবেনা! চাকুরী তো খারাপ করছ না, মেলা টাকা মাইনে...আর ৫/৬ বছর হয়ে গেছে, সব মিলিয়ে হাতে তো কিছু আছে তাই না, শুরু কর বাকিটা ফ্যামিলি/ট্যামিলি মিলিয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু সে কিছুতেই এখন বিয়ে করতে পারবে না, কারণ হাত নাকি খালি। সমস্ত সঞ্চয় শেয়ার বাজার খাইয়া ফালাইছে!!
ফেইসবুকের কল্যানে সেদিন আমার সেই বন্ধুর বিয়ের কিছু ছবি পাইলাম। তো সেই রকম গয়নাগাটিতে মোড়ানো নব বধুকে দেখে ভালই লাগল!! ভাবীর গায়ে গয়নার ছড়াছড়ি, আমারতো খাহিল অবস্থা, গিন্নিকে ছবি খান দেখাইয়া(দেখাইয়াই আরেক ভুল করিলাম, অনুমান করে নেন কি ভুল!!) কইলাম, কয় ভরি হইবে.......ভেংচি কাটার সুরে উত্তর শুনিলাম ১৫ ভরি তো হইবেই!! এরা এত টাকা পায় কই! নাকি ইদানিং বিয়ের গয়না ভাড়া পাওয়া যায়! মাথা খালি চুলকায়!!
কাহিনীর এই অংশ পড়িয়া গিন্নি আবার কাচুমাচু করিতে লাগিল। বুঝিতে অসিবিধা হয়নি কারণটা কি? ইনিয়ে বিনিয়ে বলতে লাগল তার বান্ধবীদের কত গহনাগাটি ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি শান্তনা সুরে কহিলাম, এই যে তুমি রোম, প্যারিস, ভেনিস, ভিয়েনা, জুরিখ ইত্যাদি ঘুরিতেছো ওদের অনেকে তো পারছেনা......মনে কর এগুলোই তোমার গহনা!! নারীর মন এগুলোতে কি আর ভরে!! মাথা খালি চুলকায়!!
গত সপ্তাহে গিয়েছিলাম মিউজিয়াম দেখতেView this link । এমনিতে আমার মিউজিয়াম এলার্জি আছে, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারনে আবার অনেক সময় ফাঁদে পড়ে বিভিন্ন মিউজিয়াম দেখতে হয়েছে। বেশ কিছু আর্ট মিউজিয়াম দেখে মনে এই ধারনা হয়েছে যে, সকল চিত্রকররাই ছিল লুল!! তাদের লুলামিকে তাঁরা তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলেছেন! মিউজিয়ামের ৪র্থ তলা বাদে বাকি সব জায়গাতেই খালি ইরোটিক আর হরর টাইপের চিত্রকর্ম। ৪র্থ তলায় Gustav Klimt এর অনেক কালেশন ছিল কিন্তু সেখানে ছবি তোলা নিষেধ! অন্য গুলোর কিছু ছবি তুলেছিলাম যেগুলো সামুতে ২৫+ ক্যাটাগরিতেও চলবেনা!! Gustav Klimt সাহেব যে লুলু ছিলেন তাহা তিনি ভাল ভাবেই সব ছবিতে ফুটিয়ে তুলেছেন!! আবারো প্রমাণ পেলাম সকল বিখ্যাত চিত্রকররাই লুল ছিলেন। মনে প্রশ্ন জাগে লুলামি করে কিভাবে তারা এত বিখ্যাত হলেন!!......মাথা খালি চুলকায়!!
ও ভাল কথা মিউজিয়ামে ঢোকার সময়ের কাহিনিটা একটু বলে আমি বিদায় নিচ্ছি। ধৈর্য্য থাকলে আপনারা পড়তে থাকেন...!
টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়ালাম, দেখলাম ছাত্রদের জন্য টিকিটে চার ইউরো ছাড়! যাক বুড়ো হলেও তো ছাত্র নামধারী একটা পরিচয় পত্র সাথে আছে। গিন্নিকে বলিলাম উনার কার্ডটা যেন আমাকে দেন। দু’টো কার্ড সহ টিকিটের জন্য সুর্দশনাকে বলিলাম। ভালমতো দেখিয়া উনি আমার কার্ডটি ফেরত দিয়া বলিলেন, আপনি মশাই ২৮ বছর পার করিয়া বুড়োদের দলে চলিয়া গিয়াছেন! তাই তিনি শুধু আমার গিন্নির কার্ডটাই ছাড়ের জন্য গ্রহন করিলেন এবং বলিলেন ছাত্র কিন্তু ২৮ বছরের কম হইতে হইবে যা দেয়ালে লেখা আছে। আমি খুব করে খুঁজিয়া দেখিলাম যে সত্যই লেখা আছে। সাথে সাথে আমাদের দেশের মোবাইল কোম্পানি গুলোর চটকদার বিঙ্গাপনের কথা মনে পড়ে গেল। তাহারা যেমন আমাদেরকে বিরাট অফারের কথা মোটামোটা হরফে লিখিয়া দেন আর সাথে মাইক্রোস্কোপিক ভাবে লিখিয়া রাখেন...শর্ত প্রযোজ্য, ঠিক তেমনি ভাবে ঐ লিখাটাও উনারা লিখিয়া রাখিয়াছেন! মনে মনে ভাবিলাম, ব্যবসা করিতে হইলে বোধহয় এভাবেই লিখিতে হয়......এই দেশেও এসব দেখে মাথা খালি চুলকায়!!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০১২ রাত ৩:৫২