স্থানঃ সিদরাতুল মুনতাহার নিকটবর্তী স্থান
সময়ঃ
আরশে আজিম স্ট্যান্ডার্ড- টাইমঃ- ৩২২০০ ঘটিকা,
বাংলা টাইমঃ ২৯ এপ্রিল,রোজ মঙ্গলবার
বৈকাল পৌনে ৫ ঘটিকা
দৃশ্যঃ ১-
স্বর্গীয় আইপ্যাডের চোখ রাখিবা মাত্র আজরাঈল আঃ এর গলা শুকাইয়া কাঠ ! পেটে ভিতর সুরসুরি দিয়া শত শত প্রজাপতিরা যেন পাখা মেলিয়া উড়াল দিয়াছে...কপাল বাহিয়া চিকন ঘাম ছুটিলো... কম্পিত কন্ঠে পাশে দন্ডায়মান ফেরেশতাকে বলিলেন জলদি এক বালতি পানি আন !
ঢকঢক করিয়া একচুমুকে জল পানান্তে বালতি নামাইয়া রাখিতে রাখিতে চাপিয়া রাখা নিঃশ্বাস ছাড়িয়া আজরায়েল আঃ বিড়বিড় করিয়া কহিলেন...."মাইরালা আম্রে মাইরা লা...!!"
ভীম দর্শনধারী প্রধান এসিসটেন্ট আজরাঈল আঃ কানের নিকট মুখ নামাইয়া মৃদু কন্ঠে জিজ্ঞাসীলেন হুয়াটস আপ বস !??
আজরাইল আঃ ইঙ্গিতে আইপ্যাডের দিলে ইশারা কইরিয়া আবারো বিড়বিড় করিয়া কহিয়া উঠিলে
“মাইরাল আম্রে মাইরা লা”...!!!
আইপ্যাডে মেজেজ আসিয়াছেঃ
ডিয়ার আজরাইল, ...
যাও নাঃগঞ্জের নাচ্ছুর বডি হইতে রুহু খুলিয়া নিয়া আইসো, অর টাইম শেষ।
হুকুমান্তে,
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন।
দেহ হইতে রুহু গুমের কর্মে টপ প্রফেশনাল আজরাঈল আঃ শেষ পর্যন্ত দ্বিধাদন্দ কাটাইয়া উঠিয়া অভিযানের যোগার যন্ত্র করিতে লাগিলেন।
দৃশ্যঃ ২-
দুন হসপাতাল, দেরাদুন ভারতঃ
হাসপাতালের ইমার্জেন্সীতে শায়িত নাকে-মুখে অক্সিজেন নলিকা লাগানো অজ্ঞান নাচ্ছুর শিয়রে বসিয়া ঘর্মাক্ত কলেবরে চোখের নীচে কালসিটাসমেত গায়ে খামচির লাল লাল দাগ নিয়া হাঁপাইতেছেন আজরাইল আঃ।
অনেক কস্টে নাচ্ছুকে তাহার পানীয়র আসর হইতে পাকড়াও করিয়া হাসপাতাল তক আনিতে মাললাকুল মউতের কাল ঘাম ছুটিয়া গিয়াছে! রুহু কবচের জন্য চুরান্ত প্রচেস্টায় ঝাপাইয়া পড়ার আগে একচান্সেই ফতেহ করিবার বেপারে নিশ্চিত হইতে হবে নতুবা তাহার ক্যারিয়ার ধ্বংশ অবধারিত।
সুদীর্ঘ পেশাগত জীবনে প্রাগৈতিহাসিক ডাইনোসরদিগো হইতে শুরু করিয়া লোমশো ম্যামথ হাতি, নম্রুদ হইতে বেবিলনের নেবুচাদনেজার, কুখ্যাত অ্যাটিলা হইতে জপানী সেনাপতি ইয়ামামাতো সমেত সকলের জান কবচের অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ ফেরেশতাটিকে এইরুপ দুরহ চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন কমই হইতে হইয়াছে।
আজরাঈল আঃ ভাবিয়া পাইলেন না এইরুপ বিপদে শেষবার কবে পড়িয়াছিলেন !
শেষ পর্যন্ত অমানবিক প্রচেস্টায় আজারাঈল আঃ জুজিৎসুর প্যাঁচে নাচ্ছুর রুহুটিকে আটাকাইয়া কহিলেন বাহির হইয়া আয় ব্যাটা নচ্ছর !
রুহু লা জওয়াব !!
আবার রুহুর দাড়ি চাপিয়া টানিয়া ধরিয়া কহিলেন বাইর হ! ... কইলাম বাইর হ !!
নাচ্ছুর নাছোড়বান্দা রুহু এইবারো লা পরওয়া !!!
বিকট চেহারা ধরিয়া ভয় দেখাইয়া, ধমকাইয়া, কাতুকুতু দিয়াও কোন ক্রমেই নাচ্ছুর রুহুটি কবচ হইলো না ...
শেষ পর্যন্ত আজরাঈল আঃ কাঁদিয়া কহিলেন ওরে নাচ্ছু তুই বডি ছাইরা বাইরস না ক্যারে ভাই ???!!!
বিশুদ্ধ শান্তিনিকেতনী ভাষায় নাচ্ছু উত্তর দিলেন ...
"আজ’দা..., তোঁমার সঁহায় সম্পত্তি যা কিছু আছে সব আমার রুহুর নামে দলিল করে লিখে দাও।আমিতো আজ হইতে তোমার কাছেই থাকিবো।অতএব যাহা তোমার তাহাই আমার... তাই না?
ক্যারিয়ারের ও মান সম্মানের কথা বিবেচনা করিয়া বিমর্ষ মনে ভগ্ন হৃদয়ে আজরাইল আঃ কবুল মানিলেন ...
নাচ্ছুর রুহু দেহ হইতে মুক্তি পাইয়া দাঁত কেলাইয়া বাহির হইয়া আসিয়া আজরাইল আঃ ঘাড়ে চাপিয়া বসিলো।
দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া নাঃগঞ্জের নিঃশেষিত হাজারো জীবাত্মার ন্যায় ঐ একই ভবিতব্য মানিয়া লইয়া চোউখ মুছিতে মুছিতে আজরাইল আঃ নাচ্ছুকে ঘাড়ে করিয়া উর্ধাকাশে উড়াল দিলো ....