অস্তিত্বের অনুসন্ধান হোমো সেপিয়েন্সের স্বভাবজাত। সে ধর্মতত্বে হোক কিংবা বিজ্ঞানে। মানুষের মানুষ হয়ে উঠার সাথে সাথে হাত ধরে চলেছেন এই আত্ম অনুসন্ধান। গুহামানব থেকে গ্রীক দার্শনিক উষর মরুর পয়গম্বররা থেকে আধুনিক পদার্থবিদ আজো ব্যাস্ত এই অনুসন্ধানে। আজো সেই অনুসন্ধান থেমে নেই। কেউ অস্তিত্ব অনুসন্ধান করে তীর্থস্থানে কেউবা সাব অ্যাটমিক পার্টিক্যালে। যে প্রাচীন মানুষেরা বিস্তীর্ন তৃনভুমিতে নক্ষত্রের রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকে তারকারাজির রহস্য অনুসন্ধান করতেন অথবা সেই আদিম শিকারী গুহামানব সহস্র বছরের বরফ যুগের হিমেল বাতাসে তুষার সুভ্র প্রান্তরের দিকে তাকিয়ে ভাবতেন তাদের ভুত বর্তমান ভবিষ্যত তাদের কিছু অংশের কথা বলবো আজকে।
গোবেকলি মন্দির। এখনো পর্যন্ত পাওয়া ইতিহাসের প্রাচীন্তম উপাসনালয়। বলা হচ্ছে আধুনিক ধর্মের জন্ম এখানে হওয়ার সম্ভবনার কথাও। দক্ষিন তুরস্কের আনাতোলিয়া অঞ্চলে ছোট একটি পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত নব্যপ্রস্তর যুগের একটি কাঠামো। জার্মান ও তুর্কি প্রত্নতাত্বিকদের হিসাবে ১১,৬০০ বছরের বেশি প্রাচীন এই স্থাপনা । নব্য প্রস্তর যুগের সেই সময়ে তখনো কৃষির উদ্ভাবন ঘটেনি আদিম পশু শিকারী মানুষ তাদের উপাসনার উপকরন করতো ।
গিজার পিরামিডের চাইতেও ৭০০০ বছর আগে গোবেকলি উপাসনালয় তৈরি হয়েছিলো। এই প্রাচীন উপাসনালয়ের সন্ধান প্রথম পাওয়া যায় ইস্তাম্বুল ও শিকাগো বিশ্ব বিদ্যালয়ের এক যৌথ সার্ভেতে ১৯৬৪ সালে। ১৯৯৫ সাল থেকে জার্মান ও তুর্কি প্রত্নতত্ববিদদের যৌথ তত্বাবধানে অনুসন্ধান শুরু হয়।
১০ থেকে ৩০ ফুট ব্যাসের কমপক্ষে ২০ টি গোলাক্তির পাথুরে কাঠামো যা বিশাল সব লাইমস্টোনের টি-শেপড পিলার দিয়ে সজ্জিত। পিলারগুলোর গায়ে প্রস্তর যুগের শিল্পীদের খোদিত চিত্র বয়েছে। প্রতি গোলকের মধ্যে ২ টি পিলার দাড়া করানো। ধারনা করা হচ্ছে ওপরের ছাদ ধরে রাখার জন্য েই ব্যবস্থা ছিলো। পিলারে খোদিত চিত্রে পশুর ছবি ,প্রাচীন ধর্মীয় প্রতীক খোদিত করা আছে। নগ্ন মাতৃমুর্তি, সিঙ্ঘ,ষাড়, শেয়াল, হরিন, গাধা,সাপ, পাখি ,গিরগিটি খোদিত ঐ পিলারগুলি কালে গ্রাস থেকে আজো অনেকটাই টিকে আছে ।খোদাইয়ের মধ্যে শকুনের প্রতীক খোদাই করা পিলারের সংখ্যা বেশি। এ থেকে ধারনা করা হচ্ছে এদের মধ্যে মৃতভোজি পক্ষীদের দিয়ে তাদের মৃতদেহ সৎকার করানোর চল ছিলো। ধারনা করা হয় এই উপাসনালয় কেন্দ্র করে শিকারজীবি নব্য প্রস্তর যুগের একাধিক বসতি ছিলো।
যে সময়ে ক্ষুদ্র জনসংখ্যার এই জন গোস্টির পক্ষে ১৬ টন ওজনের পাথর খন্ড বয়ে পাহাড়ের চুড়া উঠানো কিভাবে সম্ভব হয়েছিলো তা প্রত্নতত্ববিদদের কাছে বিস্ময়কর।
চিত্রকরের কল্পনায় গোবেকলি মন্দির
[img|http://media.somewhereinblog.net/images/thumbs/Hard_Nut_1343679634_12-http-www.ahrtp.com-EG-Images2-Gopekli-Tepe-3circles-artist-opt60