গত সপ্তাহে এক ঝটিকা সফরে দেশে গিয়েছিলাম ৪ দিনের জন্য। গিয়ে যা দেখলাম আর টিভিতে, খবরের কাগজে যা দেখি তার মধ্যে মিল পেলাম না। চার দিনের মধ্যে একবারও বিদ্যুৎ পালায়নি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী অঞ্চলে। ঢাকার কথা বলতে পারব না। জাহান্নামে যাক ঢাকা। গ্রাম বাঁচলে দেশ বাঁচবে।
হরিপুরের হাটে গিয়েছিলাম শব্জি কিনতে। নিজের হাতে কিনেছি জিনিসপত্র। দাম খুবই সস্তাঃ-
পটল ১৫ টাকা কেজি
ঢেঁড়স ১৫ টাকা কেজি
করলা ১৫ টাকা কেজি
ঝিঙ্গা ১০ টাকা কেজি
টাটকা তরকারী সব, দেখলেই কাঁচা খেয়ে ফেলতে ইচ্ছা হয়। ঢাকাওয়ালারা শুধু হাউ কাউ করে জিনিসপত্রের উচ্চমুল্য নিয়ে। গ্রামের হাটের এই সস্তা তরকারী তিনদিন পর বাসী হয়ে ঢাকায় এসে বিক্রি হবে তিনগুন বেশী দামে। ঢাকাওয়ালাদের বলি, সস্তা খাবার খেতে হলে গ্রামে আসুন। ঢাকায় বসে মাস্তানী করবেন আর সস্তা খাবার খাবেন তাতো হবেনা ভায়া!
বাবার জমিতে, আমার জমিতে ধান ফলে। ধান বিক্রি করে লাভ পান না তিনি। ২২ টাকা কেজি চাল। উৎপাদন খরচ উঠে না। বাবা জানেনই না যে চালের দাম ৪০ টাকা হতে পারে।
যারা ৪০ টাকা কেজি চালের দাম শোনাচ্ছেন আর সরকার পতন চাচ্ছেন সেই মিথ্যাবাদীদেরকে বলি, আমার বাবার উৎপাদিত চালগুলো কিনবেন ৪০ টাকা দরে? তাহলে আমার বাবার মত লাখো কৃষক সামান্য লাভের মুখ দেখতে পেতেন। তাঁদের কান্না আর হাহাকারে ভরে উঠত না বাংলার আকাশ বাতাস।
হরিপুরের হাটের উন্নতি হয়েছে অনেক। ভাল ভাল শাড়ির দোকান বসেছে পাঁচ ছ টতা, তার মধ্যে একটা আবার এয়ার কন্ডিশন্ড। সুন্দর সুন্দর শাড়ি দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না, কিনে ফেললাম একটা শাড়ি বউয়ের জন্য। সাথে ম্যাচিং পেটিকোট আর ব্লাউস সেট। মা শাড়ি দেখে বলছেন, শহরের দামী শাড়ি পরা বউ, হাটের শাড়ি পছন্দ হবে?
কিন্তু শাড়ি পছন্দ হয়েছে আমার বউয়ের। ঈদের শাড়ি, স্বামী কিনে দিয়েছে নিজের হাতে, হোক না হাটের শাড়ি, উপহার উপহারই।