
পেন্সিল এবং ইরেজার, আপনি কিম্বা ………
পেন্সিল : আমি খুবই দুঃখিত ….
ইরেজার : কেন .. কেন ? তুমি এমোন কিছুই করোনি যে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে ।
পেন্সিল : আমি দুঃখিত এ কারনে যে, আমার জন্যেই তোমাকে বেশ কষ্ট সইতে হচ্ছে । যখনি আমি ভুল লিখে ফেলি মানে ভুল করি তখনই তুমি এসে আমার ভুলটুকু মুছে দাও । কিন্তু আমার ভুল মুছে দিতে গিয়ে তোমাকে যে তোমার শরীরের কিছু অংশকে ক্ষয় করে ফেলতে হচ্ছে । প্রতিবার আমার ভুলের কারনেই তুমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ছোট থেকে ছোট হয়ে যাচ্ছো । আমার কষ্টটা এখানেই ।

ইরেজার : সেটা হয়তো ঠিক আছে । কিন্তু আমি এতে কিছুই মনে করিনা । ভেবে দেখ, আমার জন্ম হয়েছেই তো এ কাজটি করার জন্যে । তুমি যখন কিছু ভুল করে ফেল তা মুছে ফেলাই তো আমার কাজ । যদিও আমি জানি, একদিন আমি থাকবোনা - শেষ হয়ে যাবো ; তুমি নতুন আর একজন কে দিয়ে আমাকে পাল্টে ফেলবে । তারপরেও আমি খুশি তোমার ভুল শোধরাতে পেরে । তাই দুঃখ পেওনা । তোমাকে দুঃখিত দেখতে আমার ভালো লাগেনা ।
*******************************
আপনি একটি পেন্সিল আর ইরেজারের মধ্যের এই কথোপকথনের সাথে জীবনের সবচে’ বাস্তব অবস্থার মিলটি খুঁজে পাবেন ।আপনার ভুমিকাটি কি বুঝতে পারবেন তা ও ।
যখন আপনি একজন দায়িত্ববান পিতা বা সতর্ক কিন্তু স্নেহশীলা একজন মা তখন আপনি কিন্তু ঐ একটি ইরেজারের মতো ।

আপনি সবসময় আপনার সন্তানদের পিছনে আছেন তাদের ভুলগুলি মূছে দিতে, শুধরে দিতে । আর এটি করতে গিয়ে আপনি নিজেকে খানিকটা ক্ষয় করে ফেলবেন, আঘাতও হয়তো পাবেন । এবং একদিন ঝরে যাবেন তাদের মাঝ থেকে । যদিও আপনার সন্তান একদিন আপনার বদলে একজন স্ত্রী বা স্বামী পাবেন তারপরেও আপনার ভালো লাগবে একথাটি ভেবে যে, আপনি আপনার সবকিছু দিয়ে আপনার সন্তানের মঙ্গল কামনাই করেছেন ; তাদের শুদ্ধ করতে চেয়েছেন । আপনার সন্তান কোনও কষ্ট পেলে সে আঘাত আপনার বুকেই বড় বেশী বাজবে ।

আর আপনি যদি একজন তরুন বা তরুনী হয়ে থাকেন, তবে কখোনও কি এমোনটা ভেবে দেখেছেন যে; আপনার জীবনের এতোটুকু পথ আপনাকে বয়ে আনতে গিয়ে আপনার জন্মদাতা কিম্বা জন্মদাত্রীকে ক্ষয়ে যেতে হয়েছে প্রতিটি মূহুর্তে একটি ইরেজারের মতো? একটু কি ব্যথা অনুভূত হয় কোথাও ? জানবেন, আপনার যা কিছু সঞ্চয় তা কিন্তু ঐ ক্ষয়ে যাওয়া ইরেজারেরই দান ।আপনার ভুলটুকু মুছে দিয়ে আপনার জীবনের বিশুদ্ধ কবিতাখানিই তারা আপনাকে লিখতে সাহায্য করেছেন ।

প্রার্থনা হোক –
এই “ইরেজার” যেন দীর্ঘজীবি হয়, আর ‘পেন্সিল” যেন কখোনো জীবন খাতায় ভুল না লেখে ।
জানিনে, এরকম লেখা আপনাদের ভালো লাগে কিনা ! তবুও বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করবে, আপনার ভালো লেগেছে এবং আর একজনকে এটা দেখাতে ভুলে যাননি …………………..
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১১:২১