কৈশোরের শুরুটা চমৎকার। বলা যায়, ফাল্গুনের কাঁচা রঙ যেন তখন থেকেই উপস্থিতি জানান দিতে শুরু করেছে। প্রেমে পড়ার বয়স হয়নি বলে, যাতায়াত 'উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর' চৌহদ্দীতে কিংবা 'শিশু সাহিত্য বাসর' এর কবিতার আড্ডায়। নিজের লেখা কাঁচা কবিতা আর সদ্য শেখা হারমোনিয়ামের রিড ভাঙ্গা সুর...নিজের প্রতিভায়, নিজেই মুগ্ধ হয়ে যেতাম! আমাদের ছোট্ট একটা দ্বীপ ছিল। পদ্মবিলের মাঝখানে ছোট্ট এক চিলতে আশ্রয়-যেতে হত একহাঁটু পানি, কখনো বা কোমর সমান পানি পেরিয়ে। নচিকেতার গান তখন আমাদের জন্য বেদবাক্য। নীলাঞ্জনা কিংবা ১২ টাকা, অথবা অনির্বাণের শেষ কথাগুলোর আকুতি যেন বোধ কে ছুঁয়ে যেত। হাজার লোকের ভীড়ে একা হবার জন্য আমরা বেছে নিয়েছিলাম ওই দ্বীপটাকে। একটি পলাশ গাছ, আর কাকচক্ষু জলের একটি ছোট পুকুর ছাড়া, আর কোন আসবাব ছিলনা দ্বীপে। আর ছিলাম আমরা কজন ছন্নছাড়া, যারা প্রেমে পড়তে শিখিনি কিন্তু, ভালোবাসা না পাওয়ার যন্ত্রণাটা হাড়ে হাড়ে টের পেতে শিখেছি। কিভাবে? সেই গান-'হাজার কবিতা, বেকার সব'ই তা'! নীলাঞ্জনার 'সিলিং এর বন্ধনে-মাটির ব্যবধানে থাকার গল্প শুনে কতবার যে মনে মনে কতজনকে মেরে ফেলেছি-তার হিসেব'ও এখন মনে নেই! রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে অপেক্ষা করতাম-চুরি যাওয়া আলোর হঠাৎ অনির্বাণের দেখা যদি পাই, প্রথম দেখাতেই চিনে নেব। তখনও মনের ভেতরের পঁচনটা শুরু হয়নি, কারণ, ভাবনার সবুজেরা আমাকে বার বার সবুজের পথ দেখাত।... (চলবে)
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না! (১)
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না! (২)
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না! (৩)
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না! (৪)
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না! (৫)
ছেলেবেলা, কৈশোর ও একটি ঝাপসা আয়না! (শেষ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১২ রাত ৮:১৭