অনেক দিন পর সামুতে একটা পোস্ট দিচ্ছি

আমাদের মধ্যে একটা বদ্ধমূল ধারনা হলো লোডশেডিং হয়েছে তার মানে বিদ্যুৎ উৎপাদণ প্রয়োজনের তুলনার কম হচ্ছে ।
অথচ, সরকার দাবী করছে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রয়োজনীয় ভাবে বাড়িয়েছে ।
এমন কি মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রি দাবী করেন , দেশে লোডশেডিং নাই ।
তাহলে কে ভুল ?? বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রি নাকি আমরা ?? নাকি দুইজনেই ।
মূল ব্যপার হলো , লোডশেডিং হতে পারে কয়েকরকম ভাবে ।
১. বিদ্যুৎ উতপাদন প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল
২. টেকনিক্যাল প্রবলেম ।
০১. নাম্বার ১ নিয়ে আলোচনা না করাই বেটার , কারন সবাই জানে , এটা স্বাভাবিক যদি উতপাদন কম হয় তাহলে লোডশেডিং হবে ।
০২. কি কি টেকনিক্যাল কারণে লোডশেডিং হতে পারে ।
এই জন্য আমাদের জানতে হবে বিদ্যুৎ কিভাবে আমাদের ঘরে পৌচ্ছাছে । আমি আমার এলাকা সিঙ্গাইর নিয়ে বলছি ।
মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গার থানার বিদ্যুৎ এর মূল কেন্দ্র কাপতাই পানি বিদ্যুৎ । এর পর সেটা আসে উপকেন্দ্র "রাউজান" এ রাউজানে আসতে আসতে ভোল্টেজ ড্রপ করে , এই ভোল্টেজকে বাড়িয়ে দিয়ে সেটা পাঠানো হয় , সিঙ্গাইরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে । একটা কেন্দ্র থেকে ২-১০ টা বা অনেক গুলা লাইন এর মাধ্যমে একটা থানার বিভিন্ন এলাকায় যেতে পারে । কয়েকটা জোনে ভাগ করা হয় । এই জোন গুলাতে বিদ্যুৎ যায় " ফিডার " নামক একটা কানেকশন এর মাধ্যমে । যেমন সিঙ্গাইর এ আছে ৫ টা জোন । তারমানে ৫ টা ফিডার দিয়ে বিদ্যুৎ কানেকটেড হয় । মেইন ক্যাবল দিয়ে ফিডারে আসে আর ফিডার ৫ টা ফিডার এর মাধ্যমে ৫ জায়গায় প্রবাহিত করে ।
এই ফিডার এর একটা লোড নেয়ার ক্ষমতা থাকে । একটা জোনে নির্দিষ্ট ফিডার এর লোড এর বেশি বিদ্যুৎ খরচ হলে সেই ফিডার বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় থাকে না । এখন বাস্তবতা হচ্ছে , ম্যক্সিমাম এলাকার ফিডার গুলাই বেশ পুরাতন , লোড বেড়েছে কিন্তু ফিডার পরিবর্তিত হয় নি । সিঙ্গাইর উপকেন্দ্রে মাত্র ২ টা নতুন ফিডার বসানো হয়েছে , যা বর্তমান লোড এর দিগুন লোড নিতে পারে ্, আর বাকি ৩ টা সেই পুরাতন আমলের ফিডার । তাই দেখা যায় যখন ঐ ২ টা ফিডার যে দুইটা জোনে কানেকটেড থাকে সেগুলাতে লোড শেডিং হয় না , অপরদিকে অন্য ৩ টা ফিডার এর আন্ডারের এলাকা গুলাতে সমানে লোড শেডিং চলতে থাকে ।
তো লোডশেডিং সহনীয় রাখতে , বাকি ৩ টা জোনকে লোড বেশি যখন তখন পর্যায় ক্রমে প্রথম ২তা ফিডার ( যে দুইটা নতুন এবন গ্লোড নিতে সক্ষম ) এর মাধ্যমে সাপ্লাই দেয়া হয় । আল্টিমেটলি দেখা যায় , সব গুলা জোন এই সমান ভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং হচ্ছে ।
মজার ব্যাপার হলো , সিঙ্গাইরে কারেন্ট লাগে ১৭-১৮ মেগাওয়াট , সেখানে বর্তমান সাপ্লাই ২২ মেগাওয়াট । কিন্তু মজার এবং দুঃখের ব্যাপার , পর্যাপ্ত কারেন্ট থাকা সত্যেও ফিডার এর জন্য প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘন্টা লোডশেডিং চলছেই ।
এরপর আশা যাক আরেকটা টেকনিক্যাল টার্মস । ধরুন একটা উপকেন্দ্রে বিদ্যতু দরকার ৫০ মেগাওয়াট । দেখা গেলো ফিডার পর্যাপ্ত সংখক আছে লোড নেয়ার জন্য । বিদ্যতু সাপ্লাইও ৫০+ মেগাওয়াট ই আছে । কিন্তু মেইন স্টেশন থেকে যে ক্যাবল এর মাধ্যমে উপকেন্দ্রে বিদ্যতু আসছে সেখানে ক্যাবল ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যতু পরিবহন করতে পারে না । আল্টি মেটলি লোডশেডিং ।
উপসংহারঃ যখন সরকার দাবী করে লোডশেডিং নাই , ওনারা এসিতে বইসা বইসা যোগ বিয়োগ হিসেব করে , খরচ , ৫০০০ , উতপাদনঃ ৬০০০ । এক্সপোর্ট করা যাইবো ১০০০
বাংলাদেশ এ লোডশেডিং নাই ( যোগ বিয়োগ করে )
বাংলাদেশে লোডশেডিং আছে ( যাদের বাসায় আই পি এস / জেনারেটর নাই তাদের হিসেবে )