somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ত্যাগ ও ভালবাসা, স্বার্থ ও বিতর্ক (প্রসঙ্গ হুমায়ূন আহমেদ)

২৪ শে জুলাই, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই গল্পটা হয়তো আমরা অনেকেই জানি - দুজন নারী সন্তানের দাবী নিয়ে গেল রাজার কাছে। তাদের দু'জনেরই দাবী এটা আমার ছেলে। কেউই যখন সন্তানের দাবী ছাড়তেছেনা তখন রাজা বললেন ছেলেটাকে দু'ভাগ করে দুই নারীকে দিয়ে দিতে। একজন নারী তাতে রাজী হয়ে গেল, কিন্তু অন্যজন রাজী হলনা সে বরং তার নিজের দাবী ছেড়ে দিল। তখন রাজা প্রকৃত ঘটনা বুঝতে পারলেন। যে নারী দাবী ছেড়ে দিয়েছিল তাকে ছেলেটা দিয়ে দিল এবং অন্যজনকে শাস্তি দিল। কারন কোন প্রকৃত মা চাইবেনা তার সন্তানকে দু'টুকরা করা হোক বরং সন্তানের উপর থেকে তার দাবী ছেড়ে দিবে, কিন্তু যে প্রকৃত মা নয় সে চাইবে যদি আমি না পাই তাহলে তাকেও দিবোনা।

আমাদের প্রিয় হুমায়ূন আহমেদের বেলায়ও তাই হল। যারা সত্যিকার অর্থে ভালবাসে, মঙ্গল চায় তারা আসলেই ত্যাগ করতে জানে, আর জানে বলেই তারা নুহাস পল্লিতে তাদের বাবাকে সমাহিত করার বিষয়টি মেনে নিল। কারন স্বার্থ এমন এক জিনিস যেটা ত্যাগ করতে শিখায় না বরং উপরে বলা গল্পের ন্যয় আমি না পেলে তোকেও দিবোনা টাইপের নারীর মত।

প্রকৃতপক্ষে, ত্যাগেই ভালবাসার মহত্ব। যদিও এই ত্যাগটা সাময়িক, এই ত্যাগ দুরত্ব সৃষ্টি করেনা বরং আত্বাকে আরো আত্বার কাছাকাছি টানে। আর যারা আপাত দৃষ্টিতে স্বার্থ ও ভালবাসার যুদ্বে বিজয়ী তারা আসলে নিজের বিবেককে প্রশ্ন করতেও ভয় পায়, যদি অন্যকেউ জেনে পেলে আসল সত্যটা। যদিও আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় তারা কাছাকাছি কিন্তু আত্বার ব্যবধান হাজার মাইলের।

এখানে আরেকটা বিষয় আমাদের ভূলে গেলে চলবেনা তা হল সময়। সময় এমন একটা বিষয় যেটা আসলে সব কিছুর চুড়ান্ত মিমাংসা করে দেয়। এই সময়ের কাছে কারা জয়ী হয় আর কারা পরাজিত হয় তা এখনই বলা মুশকিল।

মানুষের ব্যক্তি জীবন নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে তাই বলে তার সৃষ্টিকর্মকে অবহেলা করা যায়না। রবীন্দ্রনাথ বলেন আর নজরুল বলেন কারো ব্যক্তিগত জীবন কিন্তু বিতর্কের উর্ধ্বে নয়। ব্যক্তিগত জীবন আর সৃষ্টিকর্ম এই দুটা যদি গুলিয়ে পেলি তাহলেই বড় সমস্যা।

যে চলে গেছে তার জন্য দোয়া করাই এখন আমাদের সবছেয়ে বড় কাজ। সময়ই সকল বিতর্কের জবাব দিয়ে দিবে। যে সৃষ্টিকর্ম তিনি আমাদের মাঝে রেখে গেছেন তাতে তিনি মরেও অমর। আমরা তাকে সবসময় অনুভব করবো তার সৃষ্টির মাঝে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×