নতুন কিছু বিষয় নয়; বাংলা ভাষায় জেন্ডার সম্পর্কে অনেক প্রকাশনা আছে। শুধু আমি যখন জেন্ডার সম্পর্কে তত্ত্ব, তথ্য জানতে চাচ্ছিলাম তখন(২০০৯ এর শেষের দিকে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার হতে শুরু করে, শাহবাগে অবস্থিত গণ গ্রন্থাগার এমন আরও অনেক পাঠের জায়গা হতে খুব সুখকর অভিজ্ঞতা নিয়ে আসতে পারিনি। তাই নিজে যতোটা জানলাম তা নিজের কাছে না রেখে আর সবাইকে জানানোর চেষ্টা করে যাবো।
'জেন্ডার' শব্দটি মুলত নারী ও পুরুষ উভয়কেই বোঝায়, বোঝায় নারী-পুরুষকে নিয়ে বৈষম্যহীণ সমাজের, রাষ্ট্রের কথা। সংস্কৃতি ও সমাজ নারী ও পুরুষ সম্পর্কে যে সব দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ গড়ে তোলে, ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করতে শেখায়, কিংবা ভুমিকা পালন করতে বলে, সেসবই হচ্ছে জেন্ডার। যেহেতু নারীরাই সাধারণত প্রতিনিয়ত বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, পিছিয়ে পড়ছে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, হচ্ছে প্রতিনিয়ত সুবিধা বঞ্চিত, তাই জেন্ডার সম্পর্কে লিখতে যেয়ে আমি সাধারণত নারীকেই গুরুত্ব দেবার চেষ্টা বেশি করেছি। একজন নারী হয়ে নারীকে গুরুত্ব দেয়াটা স্বজনপ্রীতি হতে পারে। কিন্তু পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠীর একটা বিশাল অংশকে বাদ দিয়ে বা পেছনে ফেলে বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলা আদৌ কতোটুকু সম্ভব তা আমার বোধগম্য নয়।
ঢাবি-র ক্যাম্পাস দিয়ে আসতে যেয়ে চোখ আটকে গেল এই পোস্টারে, এই উচ্ছলতা বড্ড টেনে নিল আমায়, উপায় না দেখে ছবি তুলে নিয়ে এলাম পোস্টার থেকেই।
আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস অনেকেই এই দিবসটিকে তাচ্ছিল্ল্য করে বলে থাকে একদিন যদি নারীদের দিন হয় তবে বাকী ৩৬৪ দিন (একজনকে বলতে দেখলাম এ বছর ৩৬৫ দিন ) পুরুষের। তবে ২১ শে ফেব্রুয়ারী তো ১ দিন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস/ শহীদ দিবস তো বটেই, ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় বিজয় দিবস, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি এগুলো ১ দিন করে মানে কি?! সিম্বলিক ভাবে একদিন হলেও এগুলোর চর্চা যেন আমরা প্রতিদিনই করি এসব দিবস থেকে কি সেই শিক্ষা আমরা পাই না?! আমাদের কি এসব বিশেষ দিবস থেকে সেই শিক্ষা পাওয়া উচিত নয়?!
আমি নিজে নারী হয়ে আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞান থেকে মনে করি না যে সমান অধিকার চাই, হেন চাই, তেন চাই। পৃথিবীকে বাসযোগ্য সুন্দর করার জন্য প্রকৃতিতে আছেই মূলত দুই ধরণ, নারী এবং পুরুষ। তাদের শরীরের, সমাজের, পারিপার্শ্বিক চাহিদা অনুযায়ী ন্যায্য পাওনাগুলি পুরণের পথ সুগম হোক এই প্রত্যাশাই করি।
সবাই ভালো থাকুন।
এই অল্পসময়ের ব্লগিং জীবনে অনেকেই বেশ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, কিন্তু ভার্চুয়াল জগতের এই একজন মানুষ যার কাছ থেকে সহযোগিতা পেতে যেয়ে কখনো নিজেকে নারী মনে হয়নি। যার কাছে নারী-পুরুষ সবাই ব্লগার হিসেবেই মর্যাদা পেয়ে থাকেন বলেই মনে হয়েছে। কৃতজ্ঞতা নিন ভার্চুয়াল জগতের এনোনিমাস সেই ব্যক্তি।