মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে দেখার মত এবং লেখার মত অনেক কিছু থাকলেও আমি এই ব্লগে ৩ টা জিনিশ নিয়ে লিখব। প্রথম কথা হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কতজন লোক মারা গিয়েছেন বা শাহাদাত বরন করেছেন এটা নিয়ে। শেখ মুজিবুর রহমান নাকি ৩ লাখ বলতে গিয়ে ৩ মিলিয়ন বলে ফেলেছেন। আসলে নাকি সংখ্যাটা মোটেও ৩০ লাখ নয়। একটা ব্যাপার চিন্তা করে দেখুন এখনও নাকি অনেক জায়গায় বধ্যভূমি পাওয়া যায়। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৪০ বছর। এখনও ১৯৭১ সালে মৃত লোকের হদিস পাওয়া যায়। তবে এগুলো বাদেই আমি ছোট একটা হিসাব দেই। ১৯৭১ সালে ভারতে আশ্রয় নেওয়া লোকের সংখ্যা কত ছিল? সেটা তো সহজেই বের করা গিয়েছিল। কারন সেখানে লাশ লুকানোর মত ব্যাপার ছিলোনা। একটা দেশের জনসংখ্যা ৭ কোটি। তার মধ্যে ১ কোটি লোক দেশে ছেড়ে পালিয়ে গেছে। এই ব্যাপারটা কি সেটা কি কেউ বুঝতে পেরেছে? কি পরিস্থিতিতে এরকম অবস্থা হতে পারে? এটা তখনই সম্ভব যখন যাকে খুশি তাকে হত্যা করা হয়। ১ কোটি লোক আশ্রিত হয়েছিল এটা নিয়ে যদি সন্দেহ না থাকে তাহলে ৩০ লক্ষ নিয়েও সন্দেহ থাকা উচিত না।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী শহীদ মিনার গুড়িয়ে দিয়েছিল আর সেখানে লিখেছিল, মসজিদ- নামাজ পড়ার স্থান। আল্লাহ পাকের নাম নিয়ে তারা এ দেশে গনহত্যা চালিয়েছে আবার তাদের ফাজলামিও আল্লাহ পাক নিয়েই। নিজের দেশে মসজিদ বোমা থেকে বাঁচাতে পারেনা আসছে শহীদ মিনারকে মসজিদ বানাতে! অথচ ১৯৭১ সালে মসজিদে ঢুকে ইমাম মেরেছে তারা। মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে এক ৪ মাসের মেয়ের জামা রাখা আছে। ঐ ৪ মাসের মেয়ের বাবা ছিল মুক্তিযোদ্ধা। তাকে না পেয়ে তার ৪ মাসের মেয়েকে বুট দিয়ে পারা দিয়ে হত্যা করে তারা। একটা ৪ মাসের শিশুকে পারা দিয়ে হত্যা করাটা কোন বর্বরতার শামিল সেটা কি আর আলাদা করে বলে দেওয়ার দরকার আছে?
মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে বউয়ের পোশাকে সজ্জিত এক মেয়ের ছবি দেখলাম। নারীদের প্রতি ১৯৭১ যুদ্ধে কি আচরন তারা করেছিল আমরা জানি। এই হতভাগ্য মেয়েটার বিয়ে ছিল ঐদিন। বিয়ের আসরে গিয়ে পশুগুলা মেয়েটাকে তুলে আনে। এই বর্বরতার নিদর্শন মুক্তিযুদ্ধে যাদুঘরে সংরক্ষন করে রাখা আছে। যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মানতে চান না তারা একবার গিয়ে দেখে আসুন। সেগুন বাগিচাতে যাদুঘরটা। আর টিকিটের মূল্য মাত্র ৫ টাকা। আমি মাঝে মাঝে গিয়ে দেখে আসি। দেখার দরকার আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১১ রাত ৯:৩৬