চৌধুরি সাহেব!! আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না।
আইন নিজের হাতে তুলে নিবেননা এটা বাংলা সিনেমার একটা জনপ্রিয় ডায়লগ। সাধারনত সিনেমার শেষে এটার প্রয়োগ হয়। কারন পুলিশ আসতে দেরী করবে। ততক্ষনে ঘটনা যা ঘটানোর ঘটানো হবে। ত্রিভুজ প্রেমের কাহিনী থাকলে অতিরিক্ত নায়ক বা নায়িকা গুলি খাবে। তার আগে অন্য ঘটনাও ঘটবে। ভিলেনরা ছুরি চাকু হকি পিস্তল স্টেনগান রকেট লাঞ্চার নিইয়ে ইয়া ঢিসা ঢিসা ঢিসা ইয়া ঢা ঢা ঢা …………. চু উ উ উ উ উ বুম ……………… এইভাবে অনেক বার নায়ককে মারবে। কিন্তু নায়কের গায়ে কিছু লাগবেনা। নায়িকার বুলেটপ্রুফ ওড়না তাকে বাঁচাবে। তারপর নায়ক তার পিস্তলে এক গুলিতে সব ভিলেন মেরে ফেলবে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এ পয়েত পয়েত শব্দ হবে। ভিলেন যদি না মরে। তখন পুলিশ আসবে। আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না।
বাস্তব জীবনে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া খুব সোজা। আমি নিজেও কয়েকবার তুলসি। আমার দুই একজন বন্ধুবান্ধব ল (law) তে পড়ে। তাদের ল এর বই আছে। আইনের বই। সেগুলা নিজ হাতে দুই একবার তুলসি। কাজেই অনেকেই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়। এইভাবে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া দোষের কিছুনা।
আবেগঘন এক মুহুর্তের কথা মনে পড়ে গেল। নায়িকার মা ডলি জহুর। ডলি জহুর নায়িকাকে বলছে, দুধটুকু খেয়ে ফেল মা। তোর শরীর খারাপ করবে। নায়িকা বলল, “খাব না। রাজাকে ছাড়া আমি কিছু খাবনা”। এইখান থেকে আমরা কি বুঝতে পারি? হয় নায়িকা একজন নরখাদক। কারন সে রাজাকে খায়। আর নাইলে রাজা কোম্পানি কনডম বানানো ছেড়ে দুধ বানানোর ফ্যাক্টরী দিয়েছে। একই পুকুরে গোসল করলে এইডস ছড়ায় না কিন্তু রাজা ছাড়া আকাম কুকাম করলে তো ছড়ায়। তাহলে ঐ সময় মনে হয় মানুষ রাজার উপর ভরসা রাখতে পারছেনা।
শাকিব খান নম্বর ওয়ান ছবিতে শাকিব খান বুয়েটের ছাত্র কিন্তু ফেরিওয়ালা। সেখানে দোষের কিছু নাই কিন্তু বুয়েটে টেক্সটাইলটা ছিল কবে!! তাহলে শাকিব খানের পরের ছবি আমরা এইভাবে চিন্তা করতে পারি?
মা মা। আমি বুয়েট থেকে পাস করেছি মা। তোমার স্বপ্ন পূরন হয়েছে মা। আমি ডাক্তার হয়েছি।
মা বলবেন, খুব খুশি হয়েছি। মন দিয়ে সেবা করবি।
এইখানে ওমর সানির একটা সিন না তুললেই হইতেসেনা।
মা আমি বিএ পাস করেছি মা।
মা বললেন, খুব খুশি হয়েছি বাবা। এখন ডাক্তারিটাও পাস করে ফেল।
একটা জিনিষ মাথায় ঢুকেনা। এখন মোবাইল সবার হাতে থাকে। ডাইরেক্টররা কোন আক্কেলে বুয়েট পাস করার দৃশ্য গ্রামের বাড়িতে দেখায়??
আসুন আরও একটা ডায়লগ নিয়ে আলোচনা করি।
এভাবে তাকাবেননা মিস! হৃদয়ে কারও অগ্নুৎপাত হলে সে অগ্নুৎপাতে নিজেকেই জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যেতে হবে।
আলোচ্য ডায়লগটুকু ওমর সানির। তার জবাবে মৌসুমী বলেন,
ইউ ইস্টুপিড, ইউ শাট আপ।
বাংলা সিনেমার মজার মজার অসঙ্গতি তুলে ধরার একটা ফ্যান পেজ ছিল ফেসবুকে। ফ্যান পেজের নাম- চৌধুরী সাহেব। টাকা দিয়ে ভালোবাসা কেনা যায় না। ব্লগে "চৌধুরী সাহেব!! আই লাভ ইউ। " নামে আগের পোস্ট দেওয়ার পর একটা অঘটন ঘটে গেছে। ফেসবুক চৌধুরী সাহেবের পেজটাকে ডিলিট করে দিয়েছে। ডিলিট হওয়ার আগে তার ফ্যান সংখ্যা ছিল ১০,৭০০ এরও বেশি। সম্ভবত কিছু বেরসিক মানুষের রিপোর্টের কারনে এরকম হয়েছে। কিন্তু একটা কথা আছে, “ The show must go on.” তাই ফ্যান পেজটা আবার করা হয়েছে। বাংলা ছবি যদি বাংলা সংস্কৃতিকে সঠিক ভাবে তুলে ধরত তাহলে তা নিয়ে মজা করার ধৃষ্টতা আমরা কখনই দেখাতাম না। কিন্তু বাংলা সিনেমা যারা বানান তারা এই কাজ খুব কম করেন। সদিচ্ছা থাকলে স্বল্প বাজেট নিয়েও অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব। কিন্তু সেই সদিচ্ছাই সম্ভবত তাদের নেই। আমরা পাব্লিক। আর পাব্লিকরা পাব্লিক ফিগার নিয়ে মজা করবেই।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই মে, ২০১১ সকাল ১০:৩৩