উইলসন পদার্থবিজ্ঞান জগতের একজন বিখ্যাত নাম। পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে গবেষনার পাশাপাশি তিনি প্রচুর অর্থের মালিক। তারপরেও পদার্থবিজ্ঞান তার কাছে নেশার মত। উইলসন এর সহকর্মী বাংলাদেশি ইকবাল এর কাছেও পদার্থবিজ্ঞান অনেক ভাল লাগার একটা বিষয়। ইকবাল কে উইলসন বেশ পছন্দ করেন। সাধাসিধা নিতান্তই ভাল একটা ছেলে। তবে তার মেধাটা মোটেও সাধাসিধা নয়। উইলসন মাঝে মাঝেই চিন্তা করেন বাংলাদেশ এর মত থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে কিভাবে এরকম মেধার জন্ম হল। ইকবাল এর মেইন কাজ হল স্ট্রিং থিওড়ি তে। কিন্তু ইদানিং কালে সে কিছু Atmospheric এর কি একটা মডেল নিয়ে কাজ করছে। উইলসন এর মাঝে মাঝেই এই ব্যাপারটা বিরক্ত লাগে।
উইলসন একদিন ইকবাল কে জিজ্ঞেস করল ব্যাপারটা কি? ইকবাল ১০ বছর আগের কি একটা কাহিনি শুনিয়ে দিল। তাদের দেশে কোন এক সাইক্লোন এ নাকি কত হাজার লোক মারা গিয়েছিল। ইকবাল নাকি সেটার জন্য ত্রান বিতরনে গিয়ে ছিল। সেটার বিভীষিকা নাকি তাকে এখনো নাড়া দেয়। ওয়েদার ফোরকাস্টিং এ নাকি বাংলাদেশিদের কোনো নিজেস্ব মডেল নাই। প্যারামিটার যেখানে ৩০ টা দরকার বাংলাদেশ এ ২-৪ টা আছে। ইকবাল সেটা নিয়েই নাকি অনেক দিন ধরে কাজ করছে। উইলসন এটাতেও বেশ বিরক্ত হল। ইকবাল চাইলেই পদ্দারথবিজ্ঞানের অন্য বিষয়ে অনেক বড় বড় কাজ করে নোবেল পুরষ্কার পেতে পারে। নোবেল অনেক বড় ব্যাপার। চাইলেও পাওয়া যায়না কিন্তু উওইলসন এর ধারনা এই ইকবাল এর পক্ষে সম্ভব।
ইকবাল কয়েকদিন সময় নিয়ে বাংলাদেশ এ আসল। তার ওয়েদার ফোরকাস্টিং এর মডেলটা নিয়ে। এটা সম্পুর্ণ বাংলাদেশ এর প্রেক্ষাপটে বানানো। বাংলাদেশ এর উপকূলীয় এলাকার ঘুর্ণিঝড় এর আগাম সঙ্কেত যাতে অনেক আগেই টের পাওয়া যায় তার জন্য। বিজ্ঞান জগতের অনেক বড় আবিষ্কার কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত না হলেও বাংলাদেশ এ প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড়ে মারা যাওয়ার হারটা কমিয়ে দিবে কোন সন্দেহ নেই। তবে সন্দেহ আছে কি নেই সেটা বুঝার মত অবস্থা যে বাংলাদেশ এর অনেকেরি থাকেনা। ইকবাল তার ঐ পেটেন্ট নিয়ে সরকারী অনেক দুয়ার ঘুরেও কিছু সুবিধা করতে পারলনা।
ইকবাল আমেরিকা ফিরে আরেকটি দুঃসংবাদ শুনল। সেটা হল নোবেল কমিটি তার কাজ এবার ও বিবেচনা করেনি। ইকবাল অবশ্য এত সহজে দমাবার পাত্র নয়। কিন্তু তার নিজের দেশের ঐ ব্যাপারটা নিয়েই সে বেশি আপসেট। তার ধারনা ছিল নোবেল পুরষ্কারটা তাকে খ্যাতি এনে দেওয়ার পাশাপাশি এই তখন বাংলাদেশ এর সরকার কেও বুঝাতে পারবে যে তার ওয়েদার ফোরকাস্টিং এর মডেলটা কত কাজের। আর এটা যে শুধু বাংলাদেশ এই কাজে দিবে।
উইলসন ইকবাল কে একটা অদ্ভুত কথা শুনাল। উইলসন বলল নোবেল পুরষ্কার টার সাথেও যে কিছুটা পলিটিক্স জড়িত। একজন বাংলাদেশিকে নোবেল কমিটি চাইলেই বিবেচনায় আনবেনা যতটা সহজে তারা একজন আমেরিকান কে আনবে। উইলসন ইকবাল কে বলল বাংলাদেশ এর অই মডেলটা ইম্পলিমেন্ট করার পুরা টাকাটা সে ইকবাল কে দিয়ে দিবে যদি ইকবাল এর স্ট্রিং থীওড়ির আর্টিকেল টা উইলসন কে দিয়ে দেয়। ইকবাল এই অত্যন্ত অবিশ্বাস্য প্রস্তাব টা কেন জানি এমনিতেই রাজি হয়ে গেল। বিজ্ঞানী হয়ে যদি দেশের কাজেই না আসে তাহলে আবার বিজ্ঞানী কি!!!
উইলসন এর টাকায় বাংলাদেশ এর উপকূলীয় অঞ্ছলে ৩০ প্যারামিটার এর মডেল তা বসানোর পার্মিশন পাওয়া গেল। সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে নির্মান করা এই মডেল কাজ শুরু করার আগেই সরকারী দলের লোকজন ব্যাঘাত দেওয়া শুরু করল। চাঁদার টাকা চাইল। সেখানেই সব না আরো আরো ঝামেলা শুরু হল। তারপর একদিন সেই ঝামেলার মাঝে কাজ আটকে গেল। সরকার এর পারমিশন নিয়ে শুরু করা হলেও কি জানি সমস্যায় কাজ আটকে দেওয়া হল। কারন সেই জায়গাতে হোটেল আর পর্যটন শিল্প গড়ে তোলা হবে। ওয়েদার ফোরকাস্টিং মডেল না হলেও চলবে। এরকম সময় খবর আসল পদার্থ বিজ্ঞান এ এবার নোবেল পেয়েছেন বিজ্ঞানী উইলসন। কে এই উইলসন এ ব্যাপারে অবশ্য বাংলাদেশিদের তেমন কোনো ধারনা বা আগ্রহ নেই। বিসিএস অনেক পরীক্ষার্থী নামটা খালি জেনে রাখল। বিসিএস পরীক্ষায় যে কাজে লাগতে পারে।
(ওয়েদার ফোরকাস্টিং এর জন্য যে বাংলাদেশ এর নিজেদের মডেল দরকার এই ব্যাপারটা আমি শুনেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান চেয়ারপার্সন প্রফেসর সুলতানা শফী ম্যাডামের কাছে। বাকি গল্পটা পুরা কাল্পনিক)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মে, ২০১১ রাত ১১:০৬