কোম্পানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজে এবার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের মেয়ের অশ্লীল ভিডিও ছেড়েছে ছাত্রলীগ।
এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজের এইচএসসি ফলপ্রার্থী ওই ছাত্রীকে কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরনবী রুবেল প্রেমের জালে জড়িয়ে একটি নির্জন কক্ষে নিয়ে অনৈতিক কাজে বাধ্য করে এবং এক ঘন্টার একটি ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে সম্প্রতি তা বাজারে ছেড়েছে।
ভিডিও ফুটেজ ধারনে রুবেল অপর সহযোগী নিজাম ও সানা উল্যাহর সহযোগিতা নেয় এবং তারই এ ভিডিও আবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।
এর আগে কলেজ ছাত্রলীগের কয়েককর্মী এক ছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশ করে সংগঠন থেকে বহিস্কৃত হয়।
সাম্প্রতিক ঘটনার নায়ক কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরনবী রুবেলের বিরুদ্ধে এখনো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সে চরহাজারী ইউনিয়নের সাহাব উদ্দিনের বখাটে ছেলে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রুবেল পলাতক থাকায় কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না।
তবে অচিরেই দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাম্প্রতিককালের এ ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ায় ওই ছাত্রীর পরিবার বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।
তাছাড়া ছাত্রীর বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান হওয়ায় বিষয়টি এখন ‘টক অব দ্যা কোম্পানীগঞ্জ’ -এ পরিণত হয়েছে।
তাছাড়া ভিডিওটি এখন বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজসহ আশপাশের স্কুল-কলেজের উঠতি বয়সের ছাত্র, বাজারের ব্যবসায়ী ও যুবকদের মোবাইলে-মোবাইলে ঘুরছে।
অন্যদিকে রাজনৈতিক নেতা ও বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছেও এখন এ ভিডিওটি নিয়ে মুখরোচক আলোচনা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিগত কয়েক বছরে মুজিব কলেজের বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজসহ নানা অনৈতিক কাজের খবর বেরিয়েছে। এতে করে ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যাপীঠের অতীতের সুন্দর পরিবেশ প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
এনিয়ে বিপাকে ও দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে অভিভাবকরা। কলেজে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কতিপয় নেতার অশ্লীল ও অসামাজিক কার্যকলাপে কলুষিত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।
এ নিয়ে এখনই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছে অভিভাবক মহল।
এ দিকে এ ভিডিও নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। তবে এ ভিডিওকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামী রাজনীতি ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
একটি পক্ষ দাবি করছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামি কাউন্সিলে এ ভিডিও একটি ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে।
কারণ হিসেবে জানা গেছে, ধারণকৃত ভিডিওতে ছাত্রীর বাবা প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় তিনি আগামি কাউন্সিলে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রার্থী হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি মনে করে তাঁর এ আকাঙ্খাকে ধূলিস্যাৎ করতে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ জন্য তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার নামোল্লেখ করে মামলা দায়েরেরও হুমকি দিয়েছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ আহমেদুল ফারুক ভুঁইয়া ছাত্র-ছাত্রীর অসামাজিক কার্যকলাপের খবর শুনেছেন বলে জানান।
তবে বিষয়টি কলেজের বাইরের উল্লেখ করে এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি
লিংক: সংবাদ