চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল কাটতে শুরু করলেন। তাঁর শ্লোগান ছিল, "খাল কাটা হলে সারা/ দূর হবে বন্যা-খরা"। আত্ম কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলা তাঁর স্বপ্ন ছিল।
জিয়াউর রহমান প্রথমে নজর দিয়েছিলেন দেশের অবহেলিত অঞ্চলগুলোর উন্নয়নের দিকে, প্রধানত উত্তরাঞ্চলে। খরার কারণে ফসল উৎপাদনে পিছিয়ে থাকা উত্তরাঞ্চলকে কী করে উন্নত করা যায় তিনি সেই চেষ্টা করতে লাগলেন। এই অঞ্চলে পানির অভাবে ফসল উৎপাদন হতো না ঠিকমত। তাই বৃহত্তর রংপুরের বড় এলাকায় সেচ সুবিধা দিতে তিনি তিস্তা সেচ প্রকল্প হাতে নিলেন। এই প্রকল্পের জন্য যে রিজার্ভার- ব্যারেজ নির্মাণ করতে হবে তার প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ণয় হলো পাঁচশো কোটি টাকা। যেহেতু দেশের ইঞ্জিনিয়ারদের এমন নির্মাণের অভিজ্ঞতা নেই তাই বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ করে ব্যারেজ নির্মাণ করার পরামর্শ দেয়া হলো। জিয়াউর রহমান বললেন, "৫০০ কোটি টাকা পানিতে ভেসে গেলে যাক, তবু দেশের ইঞ্জিনিয়াররাই এই প্রকল্পের সব কাজ করবেন"। সেইমতো তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু হলো, একসময় শেষও হলো ভালভাবে। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এখন পর্যন্ত দেশের এটাই একমাত্র বড় প্রকল্প যার বাস্তবায়ন পুরোপুরি করেছিলেন এদেশের ইন্জিনিয়াররা! তারপর থেকে আজ অবধি এদেশের ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ কেবল চেয়ে দেখা, বিদেশি ইঞ্জিনিয়াররা কীভাবে এদেশে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন!!
জিয়া ঢাকায় চোখ ধাঁধানো স্থাপনা তৈরি করেননি কিন্তু এমন কিছু নির্মাণ করেছিলেন যা আগে হয়নি এবং যার সুফল পরবর্তী অনেক দশক জুড়ে রয়ে যায়। ১৯৭৯ সালে ঢাকার শাহবাগে ১৫ একর জমিতে শিশু পার্ক নির্মাণ করেন, এখন পর্যন্ত যা ঢাকায় সরকারিভাবে নির্মিত একমাত্র শিশু পার্ক। এই পার্কের নানা রকম রাইড স্বল্প মূল্যে উপভোগ করা যেতো, ফলে কেবল শিশু- কিশোরেরা নয়, দেখা গেল বড়রাও এই পার্কে এসে বিমলানন্দ উপভোগ করছেন। ঢাকার বাইরের অন্যান্য জেলা থেকেও প্রচুর মানুষ আসতেন এই পার্কে বেড়াতে। জিয়াউর রহমান এর নামকরণ করেছিলেন কেবল "শিশুপার্ক" বলে, পরবর্তীতে বিএনপি এর নাম দেয় "জিয়া শিশুপার্ক"। হাসিনার গলায় এই নাম যুক্ত পার্ক বোধহয় কাঁটার মতো খচখচ করে বিঁধত, তাই এর নাম রাখা হয় 'হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী শিশুপার্ক, এবং উন্নয়নের কথা বলে ২০১৯ সালে শিশুপার্কটি বন্ধ করে দেয়া হয়!!
শিশুদের বিকাশের প্রতি জিয়াউর রহমানের মনোযোগ দিয়েছিলেন, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে আজকের শিশুদের সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে পারলে আগামী দিনের বাংলাদেশ সুন্দর ভাবে গড়ে উঠবে। তিনি শিশু কিশোরদের জন্য টিভিতে নতুন কুঁড়ি নামের একটা অনুষ্ঠান শুরু করেন, শিশুদের জন্য এমন অনুষ্ঠান আগে কখনও হয়নি, পরেও না! নতুন কুঁড়িতে বয়স অনুযায়ী দুই বিভাগ ছিল, প্রতিটি বিভাগে আবৃত্তি, বিতর্ক, গল্প বলা, উপস্থিত বক্তৃতা, ছবি আঁকা, অভিনয়, নাচ আর গানের প্রতিযোগিতা হতো। নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ফলে শিশু কিশোরেরা বিভিন্ন রকমের বাংলা গানের সাথে পরিচিত হয়, যেমন ছড়া গান, দেশাত্মবোধক গান, পল্লী গীতি, রবীন্দ্র সংগীত, নজরুল গীতি, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত ইত্যাদি। প্রতিযোগিতায় সারা দেশের শিশুরা অংশ নিতে পারতো, কারণ মহকুমা পর্যায় থেকে শুরু হয়ে ক্রমান্বয়ে জেলা, বিভাগীয় পর্যায় পার হয়ে বিজয়ীরা চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ঢাকায়। প্রায়ই জিয়া নতুন কুঁড়ির অনুষ্ঠানে এসে শিশুদের সাথে অনুষ্ঠান উপভোগ করতেন, আর ফাইনালে সব শিশুদের হাতে উপহার তুলে দিতেন। নতুন কুঁড়ির এই থিম সং শিশু- কিশোরদের খুব পছন্দের ছিল:
আমরা নূতন, আমরা কুঁড়ি, নিখিল বন-নন্দনে,
ওষ্ঠে রাঙা হাসির রেখা, জীবন জাগে স্পন্দনে।
লক্ষ আশা অন্তরে
ঘুমিয়ে আছে মন্তরে
ঘুমিয়ে আছে বুকের ভাষা পাঁপড়ি-পাতার বন্ধনে।
সাগর-জলে পাল তুলে দে’ কেউ বা হবো নিরুদ্দেশ,
কলম্বাসের মতই বা কেউ পৌঁছে যাবো নূতন দেশ।
জাগবে সাড়া বিশ্বময়
এই বাঙালি নিঃস্ব নয়,
জ্ঞান-গরিমা শক্তি সাহস আজও এদের হয়নি শেষ।
কেউ বা হবো সেনানায়ক গড়বো নূতন সৈন্যদল,
সত্য-ন্যায়ের অস্ত্র ধরি, নাই বা থাকুক অন্য বল।
দেশমাতাকে পূজবো গো,
ব্যথীর ব্যথা বুঝবো গো,
ধন্য হবে দেশের মাটি, ধন্য হবে অন্নজল।
ভবিষ্যতের লক্ষ আশা মোদের মাঝে সন্তরে,
ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে।
আকাশ-আলোর আমরা সুত,
নূত বাণীর অগ্রদূত,
কতই কি যে করবো মোরা-নাইকো তার অন্ত-রে।…
ছাত্রদের মেধার বিকাশের জন্য তিনি নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, যেমন থানা পর্যায় থেকে ছাত্রদের মধ্যে নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যার সমাপ্তি হতো জাতীয় পর্যায়ে এসে। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বৃদ্ধি করা, কৃষি শিল্প ব্যবসা এসব বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা দেবার মাধ্যমে শিক্ষাকে কর্মমুখী ও বাস্তবমুখী করা, ROTC (Reserve Officers’ Training Corps) চালু করা ছাড়াও অনেক পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়নের উদ্যোগ নেন, যাতে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক বাস্তবতার সঙ্গে মানানসই শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়। মেধাবী শিক্ষার্থী, যেমন বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষায় প্রথম দিকে স্থান পাওয়া শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করার জন্য তিনি তাদের একসঙ্গে নিয়ে হিজবুল বাহার জাহাজে করে নৌবিহারে যেতেন এবং আলাপচারিতায় অনুপ্রাণিত করতেন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সহায়ক হবে, এমন কাজে তিনি সবসময়ই সাহায্য করতেন। এমন একটা ঘটনার উল্লেখ আছে বুয়েটের স্থাপত্যের এক শিক্ষার্থীর লেখা বইয়ে। চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের বাসনা জাগলো ভারতের বিভিন্ন প্রাচীন স্থাপত্যকর্ম দর্শনে যাবার, কিন্তু ক্লাসের প্রত্যেক শিক্ষার্থীর পক্ষে এই ভ্রমণ খরচ মেটানো সম্ভব না। তাই তাঁরা ঠিক করলেন দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে অর্থ সাহায্য চাইবেন, ভ্রমণটা 'শিক্ষামূলক' হবে বলে। কিছু চেষ্টা করার পর তারা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি পেলেন। বঙ্গভবনে নির্দিষ্ট দিনে সাক্ষাৎ হলো, প্রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীদের কথা শুনলেন। তাদের নিরাশ করলেন না তিনি, তাদের এই শিক্ষা সফরের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সাহায্য করলেন। সেই শিক্ষার্থী তার বইয়ে দেশের রাষ্ট্রপতিকে প্রথম দেখার বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে:
আরেকটা গল্প জিয়াউর রহমানকে নিয়ে, এটার বক্তা বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা ভিসি ড. এম এ রশিদ, যিনি রহমানের উপদেষ্টা হিসাবে কাজ করছিলেন। একদিন এক মিটিং এর শেষে লাঞ্চের সময় হয়ে গেছে দেখে জিয়াউর রহমান অনুরোধ করলেন তার সাথে লাঞ্চ করে যেতে। খেতে বসে ড. রশিদ দেখলেন ডাল, শাক এবং একটা মাছের তরকারি! তিনি আশা করেছিলেন প্রেসিডেন্টের লাঞ্চ বিশেষ কিছু হবে! আসলে জিয়ার নিজের জীবনযাপন ছিল সাদা মাটা, সেজন্যই হাসিনা আর তার অনুসারীরা হাজার চেষ্টা করেও জিয়া অর্থলোপাটকারি বা দুর্নীতি পরায়ণ, এর কোনটাই প্রমাণ করতে পারেনি।
ডঃ এম এ রশিদ ছিলেন জিয়াউর রহমানের একজন উপদেষ্টা। দেশের জন্য হিতকর উন্নয়নের ধারণা দিতে পারেন এবং এজন্য কাজ করতে পারেন, এমন যে কয়েকজন বিশিষ্ট মানুষকে জিয়াউর রহমান তাঁর উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন তিনি ছিলেন তাঁদের একজন। জিয়াউর রহমান তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ঢাকার নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য "লো কস্ট হাউজিং" তৈরি করতে। ডঃ রশিদের এই লো কস্ট হাউজিং খুব উপকারী একটা প্রকল্প ছিল। তিনি স্বল্প ব্যয়ে নির্মাণ করা যায় এমন বহুতল ভবন (পাঁচতলা/ছয়তলা) ডিজাইন করলেন, যা পঁচিশ বছর মেয়াদি স্বল্প অর্থের কিস্তি সুবিধায় কেবল নিম্ন মধ্যবিত্ত নয়, অনেক মধ্যবিত্ত মানুষও কিনেছিলেন। গৃহায়ন অধিদপ্তরের দ্বারা এই ভবনগুলো মিরপুরে এবং সোবহানবাগে নির্মিত হয়। কয়েক মাসের ব্যবধানে জিয়াউর রহমান এবং ডঃ রশিদের মৃত্যুতে এই প্রকল্প পরে থেমে যায়।
(২)
দেশের অনেক সমস্যার নিরসন এবং বিবিধ উন্নয়ন করার জন্য জিয়া যেমন সারাদেশে ঘুরে বেড়াতেন তেমনি বিশ্বের নানা দেশে নিয়মিতভাবে যেতেন।
কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ি নামে পরিচিত বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুনভাবে পরিচিত করতে জিয়া নানারকম পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো যেমন ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও মালদ্বীপের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য একটি আঞ্চলিক সংগঠন "সার্ক" গঠনের পরিকল্পনা করেন জিয়া। ১৯৮১ সালের মে মাসে নিহত জিয়া সার্কের বাস্তবায়ন দেখতে পাননি, কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁর স্বপ্নের সার্ক গঠিত হয়। ১৯৮৫ সালে ঢাকায় সার্কের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্ভবত জিয়ার উদ্যোগে গঠন করা সংগঠন হবার কারণে সার্ককে ইদানিং অকার্যকর করে দেয়া হয়েছে।
তিনি বুঝতে পারেন যে যুদ্ধবিধ্বস্ত, অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল, নবীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য একজন দক্ষ রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকা পালন করেন তিনি। একটি নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ এবং বহুমুখী পররাষ্ট্রনীতি চালু করেন, যেখানে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তিনি কেবল ভারত ও সোভিয়েত ইউনিয়নের ওপর নির্ভর না করে চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিশেষ জোর দেন মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর সাথে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলায়। তাঁর প্রচেষ্টায় মধ্যপ্রাচ্যের এইসব দেশের শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হয়। রাষ্ট্রপতি হিসেবে তাঁর প্রথম বিদেশ সফর ছিল সৌদি আরবে ১৯৭৭ সালে, বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজের আমন্ত্রণে। ১৯৭৮-১৯৮০ সময়কালের মধ্যে সফর করেন সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, ইরাক, কুয়েত, কাতার, ওমান, বাহরাইন, পাকিস্তান, লিবিয়া, চীন, ইরান ইত্যাদি দেশ। ১৯৮০ সালে চীন সফরের মাধ্যমে চীনের সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করেন তিনি।
এছাড়াও তিনি সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন জোটের কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন। ১৯৭৯ সালে তিনি কিউবার হাভানায় জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে (ন্যাম) অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মরক্কোর রাজধানী রাবাতে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন, যেখানে তিনি মুসলিম বিশ্বের ঐক্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে বক্তব্য দেন।
এই সমস্ত দেশে তিনি সফর করেন সেসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের আমন্ত্রণে; যেমন ইউএইতে প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদের, লিবিয়ায় গাদ্দাফির, ইরানে শাহের আমন্ত্রণে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জিয়ার সফর ফলপ্রসূ হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে তাঁর সফরের কিছুদিন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ারদের চাকরি দেয়া হয়, বাংলাদেশের থেকে অন্তত বিশ গুণ বেশি বেতনে। একই ঘটনা ঘটে লিবিয়া, ইরাক এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশে। ফলে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ শুরু হয়, যাকে বলা হতো 'পেট্রো ডলার'! সফরকালে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের পক্ষ থেকে খুবই সাধারণ উপহার নিয়ে যান কিন্তু এই উপহার সেসব দেশে খুবই সমাদৃত হয়। সৌদি সফরের সময় জিয়া উপহার হিসেবে নিয়ে যান নিমগাছের চারা। সেই থেকে আরাফাতের ময়দান আর অন্যান্য জায়গায় প্রচুর নিমগাছ লাগানো হয়, এগুলোর পরিচর্যার কাজে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশী নিয়োজিত আছেন সেই সময় থেকে শুরু করে আজ অবধি।। এই গাছগুলো সেখানে পরিচিত "জিয়া শাজারাহ" বা জিয়া গাছ হিসেবে। ইউ এ ই তে তিনি উপহার হিসেবে নিয়ে যান জাতীয় ফল কাঁঠাল। শেখ জায়েদের কাঁঠাল এত পছন্দ হয় যে তিনি কাঁঠাল ফলাবার জন্য বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন কৃষিবিদকে আল আইনের কৃষি বিভাগে চাকরি দিয়ে নিয়ে যান।
আশ্চর্যজনক এটাই যে, জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি থাকাকালে এত দেশ সফর করলেও নিকটতম প্রতিবেশী ভারতে কখনো যাননি, অবশ্য দু'দেশের মধ্যে পরোক্ষ যোগাযোগ ও কূটনৈতিক লাইন চালু ছিল। হয়তো তাঁকে ভারত কখনো যাবার জন্য আমন্ত্রণ জানায় নি!!
( ৩)
সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে এখন অনেক নেতাদের কাজকর্ম দেখা এবং কথা শোনার সৌভাগ্য অথবা দুর্ভাগ্য হয়ে চলেছে। এখনকার নেতাদের সাথে জিয়াউর রহমানের চিন্তা- ভাবনা ও কাজকর্মের দুস্তর ব্যবধান ছিল। সেটা দেখানোর উদ্দেশ্যেই এই পোস্ট রচিত!!! অবশ্য এখন অধ্যাপক ইউনূসের কাজকর্মের সাথে জিয়াউর রহমানের কাজকর্মের অনেক মিল দেখা যাচ্ছে।
ছবি সূত্র: প্রথম ছবি view this link
শেষের ছবি: ইউটিউব।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:২৮