অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ আত্মসাতের কথা উল্লেখ করা হয়। তার প্রতিউত্তরে নাহিদ ইসলাম তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট ফেসবুকে প্রকাশ করেন।
গত বছর পাঠ্যবই ছাপানোর কাজে দুর্নীতি-অনিয়ম এবং জেলা প্রশাসক নিয়োগে অবৈধভাবে হস্তক্ষেপের অভিযোগে এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দিন তানভীরকে দল থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। দলের সাধারণ সভায় তাকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গ উঠেছে এবং বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে সে স্থায়ী বহিষ্কারের পথে রয়েছে ।
নিজের বাবার নামে ঠিকাদারি লাইসেন্স ইস্যু হওয়ার ঘটনাকে ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ উল্লেখ করে ক্ষমা চেয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
গত মার্চে ঈদের আগে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে নিজ এলাকা পঞ্চগড়ে শোডাউন দেন সারজিস আলম। তার এই গাড়িবহরের বিশাল শোডাউন নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা সমালোচনা তৈরি হয়। তখন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তাসনিম জারা বিষয়টির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্টও করেন। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, "আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব ভুল করলে বা সমালোচনা করলে আমাদের একজন কেন্দ্রীয় নেতা তাকে প্রশ্ন করতে পারছেন। সেই প্রশ্নের জবাবও প্রকাশ্যে দিচ্ছে"। নাহিদ আরোও বলেন যে "আমাদের কারো বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের আর্থিক অনিয়ম, চাঁদাবাজি বা দুর্নীতির বিষয়ে প্রমাণ পেলে আমাদের কাছে পৌঁছে দিন । আমরা এ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব"। সুত্র ঃ বিবিসি বাংলা
আমাদের ৫৩ বছরের ইতিহাসে আমরা কি জবাবদিহিতার এই রকম কোন উদাহরন কখনও দেখেছি? তরুনদের দ্বারা পরিচালিত এনসিপির সদস্যদের বয়সতো ২৫ -৩০ এর মাঝে। এরা ভুল করবে, লোভের ফাঁদে পা দেবে এরকমটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভুল ত্রুটি শুধরিয়ে জবাবদিহিতার যে সব দৃষ্টান্ত আমাদের দেশে এই দল স্থাপন করছে তা পুরাই অভিনব। আমাদের দেশের সবচেয়ে দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে , আমাদের সাংবাদিক গোষ্ঠীর কলম বা বক্তব্য আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে চালিত হয়। যেই কলম বা কন্ঠস্বর জুলাই বিপ্লবে মৃত্যূর সাথে পাঞ্জা লড়া ছাত্রদের পক্ষ হয়ে কাজ করছিল আজ সেই কলম বা কন্ঠ ছাত্রদের বিরুদ্ধে তলোয়ার হয়ে কাজ করছে। এই অপ সাংবাদিকেরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে , ইউটিউবে, টকশোতে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষ নিয়ে ছাত্রদের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে। অথচ জুলাই আন্দোলনের স্টেক হোল্ডার হিসাবে এই বর্শিয়ান সাংবাদিকদের দ্বায়িত্ব ছিল গুরুজন হিসাবে ছাত্রদের সময়ে সময়ে উপদেশ দেয়া, ভুল করলে সঠিক পথে আসতে সাহায্য করা এবং ডক্টর ইউনুসের পক্ষে কাজ করা। কিন্ত বাস্তবে এরা পুরোপুরি বীপরিত রুপে অবর্তীন হয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহ তার এক ফেসবুকে স্ট্যটাসে তাই অত্যন্ত দুঃখের সাথে লিখেছে - '' গাং পেরুলে মাঝি শালা ''!!
নানান ষঢ়যন্ত্র ও প্রতিকুলতার মাঝেও এনিসিপির তরুন নেতা নেত্রীরা বিভিন্ন সমাবেশ ও টকশোতে অত্যন্ত তীক্ষ্ণ , স্বচ্ছ , তথ্যবহুল ও নির্ভুল বক্তব্য দিয়ে দারুন সব নজির সৃষ্টি করছে। আমাদের দেশে আমরা এই ধরনের রাজনৈ্তিক বক্তব্য শুনতে একেবারেই অভ্যস্ত নই। বুড়া হাবড়া নষ্ট রাজনিতিবিদদের মিথ্যাচারে ভরপুর অস্বচ্ছ বক্তব্য শুনতেই আমরা অভ্যস্ত। এই প্রজন্মের তরুনদের দেশপ্রেম এবং রাজনৈ্তিক সচেতনতার কারনে এখন এই দেশের ভবিষ্যত আর অন্ধকার বলে মনে হয় না। এই তরুনেরা যদি নষ্ট রাজনীতির কাছে নিজেদের স্বত্তা বিকিয়ে না দিয়ে টিকে থাকতে সক্ষম হয় , তাহলে হয়ত একদিন এই দেশের ভাগ্য পুরোপুরি বদলে যাবে।