[অনেক বড় পোস্ট। কি যে লিখছে জানিনা। মাফ কইরা দিয়েন, কেউ মাইনাস দিয়েন না।]
তিনটার দিকে ভাতিজা নিমাইয়ের ফোন পেলাম। শুক্রাবাদে দাঁড়িয়ে আছে। পরিমরি করে দৌড় দিলাম বাসস্ট্যান্ডে। হ্যান্ডশ্যাক পর্ব সাড়তেই বললো চাচা ক্ষিধা লাগছে ভীষণ বিরিয়ানী খাওয়ায় । কি আর করা ভাতিজারে বিরিয়ানী খাওয়ালাম। তারপর বাইরে হুক্কা খেতে খেতে আলাপে মশগুল হলাম। শুরু হলো প্রকৃতির মধুবর্ষন। কোনমতে একটা দোকানের শাটারের কাছে দাঁড়িয়ে আলাপ করতে করতে ৫ টা বেজে গেলো। আড্ডার কথাটা মাথায় ছিলো। কিন্তু ভাবলাম এই বৃষ্টিতে কেউ কি আসবে? পকেটে হাত দিলাম। দেখলাম চান্দাবাজদের চাহিদা মিটিয়ে জানটা নিয়ে অবস্থান করা যাবে
লেকের পাড় দিয়ে প্রকৃতি আর যুগলদের অপার কীর্তি দর্শন করিতে করিতে একসময় রবীন্দ্র সরোবরে এসে উপস্থিত হলাম। দেখি ছাইম্যারে। হাসি হাসি মুখ করে হ্যান্ডশেক করলো। ব্লগে-আড্ডায় পোলাটা পিচ্চিই রইলো (আসলেও কিন্তু পোলাটা এক্কেবারে পিচ্চি )।
ডানে তাকাইয়া দেখি ভুঁড়িওয়ালা একটা লোক দেখা যাচ্ছে। নিশ্চিত ছিলাম এইটা ৩৫ বছর ধরে বয়ে বেড়ানো লোকটা অর্থাৎ মিলটন ভাই। ক্লোজ আপ স্মাইল পর্ব শেষ করে ভালোমন্দ অবস্থা জানাজানি হয়ে গেলো। পরে একসময় একসাথে বসে আড্ডার উনারে বললাম বস আপনিতো সুন্দর হয়ে গেছেন। দিগন্ত বিস্তৃত একখান হাসি দিয়ে বললো সবই হইলো গিয়া ফেয়ার এন্ড লাভলীর গুণ। বড়ই আশান্বিত হইয়া জিগাইলাম মেনজ এক্টিভ? লজ্জানত অবস্থায় মাথা নাড়াইয়া কইলো হুমম।
মিলটন ভাইরে জিগাইলাম আর কেউ আসে নাই? উনি বললো ডানের সবাই ব্লগার। বিশ্বাস করেন মাথাটা চক্কর দিয়ে উঠলো। ভনভন করতে লাগলো। ব্লগার আর ব্লগার। সামহোয়্যানইনের বেবাক ব্লগার মনে হয় আইজকা আড্ডায় চইলা আসলো। কেউরেই চিনবার পারতেছিনা। এরমাঝে বৃত্তবন্দীরে দেখলাম। আমাকে দেখে মনে হয় সরে গেলো। পুরানো একটা ক্ষোভে এটা হইবার পারে। নিজে গিয়াই জিগাইলাম। স্বভাবসুলভ ভাবে চওড়া হাসি দিয়ে কুশল বিনিময় করে হাসি ঠাট্রায় জমে গেলো। মনে মনে ভাবলাম হালার দুনিয়াটা আসলেই আজিব । কাউয়া যেভাবে সিগারেট খান তাতে ভীষণ ভয় পাইছি। প্লিজ কমাইয়া ফেলান।
বিশাল দ্বীর্ঘাদেহী শফিকুল ভাই। আমার খুবই প্রিয় মানুষদের একজন। সাথে জাইমা। অনেকক্ষণ মজা করলাম উনার সাথে। পেন্ট ঢিলা কাহিনী শোনার জন্য আবার খুব চাপাচাপি করলো। বলি নাই। ইয়ে আমার কি ইজ্জতের কোন দাম নাই ।
ক্যামেরাম্যান। নেতার মতো করেই ব্রিফ দিচ্ছে। এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে। কুশল বিনিময় করলাম। লোকটাকে প্রথমদিন থেকেই খুবই সাবলীল মনে হয়। আড্ডার শেষ পর্যন্তই অনেক কষ্ট করেছে।
জুলভার্ণ। পরিচিত হতেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো। যেনো কতদিনের চেনা! আমার কাছে জানতে চাইলো আমার বিরহ শেষ হয়েছে কিনা । বুকের সমস্ত কষ্ট চাপা দিয়ে বললাম হুমম। যদিও মিথ্যা বলেছি । উনি আমার বিরহের সমস্ত কবিতায় পড়েছেন।
রাতমুজুর। খুবই পরিশ্রম গেছে লোকটার উপর দিয়া। যাক্ এই চান্সে যদি ভুঁড়িটা কিছুটা কমে।
কিরে খান? চোখবুঝেই বলে দেওয়া যায় মেসবাহ য়াযাদ। খুবই প্রাণবন্ত একটা মানুষ। ক্ষণে ক্ষণে এখানে সেখানে আড্ডায় মেতে উঠেছে। যদি শেষবেলাতে উনাকে আমি টু-বোরের একটা পিস্তল নিয়া চান্দাবাজি করতে দেখেছি । মাগার আমি উনার কাছ থেকে চামে এক্কান সিগারেট খাইয়া ফেলেছি। আরেক্কান ইশারাতে অন্যমনস্ক শরৎদার কাছ থেকে নিয়া নিসি।
শরৎদা বিশ্বাস করেন। আপনারে সামনা-সামনি দেখার খুবই ইচ্ছে ছিলো। অসাধারণ! লাগছেরে ভাই আপনেরে। সবার সাথে নিজে যেচে যেচে পরিচিত হয়েছেন। সুন্দর সুন্দর ছবি তুলেছেন। বেশ!
নিশাচর ডাকে ফিরে তাকালাম। চওড়া হাসি। কুশলাদির পর অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করলো। ভালো লাগছে খুব। বুঝতে পারছি আমারে খুবই আপনজন মনে করছে। কিছুটা শুকিয়ে গেছে।
সুনীল সমুদ্রদা। কবি মানুষ। অসাধারণ বাচন ভঙ্গী। উপস্থাপনার ঢং দেখে ভালো লাগছে। সবার সাথে স্বপ্রণোধিত হয়ে মিশার অদ্ভুধ ক্ষমতা লোকটার।
কালপুরুষদা। দুজন দুজনকেই অনেকদিন পর দেখলাম। চিরতরুন মানুষ। উনি উনার স্বভঙ্গিমাতেই ব্লগ আড্ডাকে সজীবতা দিয়েছে। উনারে দেখলে হিংসেই আমার গাঁ জ্বলে । বুঝছেনতো কি জন্য ।
ইউনুস ভাই। অমায়িক হাসি দিয়ে একজন হাত বাড়িয়ে দিলো। হাটঁতে হাঁটতে ভালোমন্দও জানা হয়ে গেলো। খুবই পরিচিত মনে হলেও চিনতে পারছিলামনা। তাই জিজ্ঞেস করে ফেলেছিলাম, আপনার সাথে কি আরো দেখা হয়েছিলো? উনি বললো আমি জটিল । বললাম স্যরি। জ্বি ভাই আমি জটিল । মনে আছে প্রথম যেবার আমার জবাবে কেউ একজন বলেছিলো "কস কিরে মমিন"। সেদিন আমার যে মানসিক অবস্থা হয়েছিলো ঠিক সেরকম একটা "কস কিরে মমিন" টাইপের অনুভূতি হয়েছিলো। ব্লগ করতে করতে অনেকের চেহাড়াও কল্পনায় সাজিয়েছি। জটিল ভাইয়াকে সবসময় মনে হতো উনার চেহাড়া হবে কিংকর্তব্যবিমূঢ় টাইপের। ঐ যে ফেলুদার নায়কের মতো।
অপরাজিতা আপুর কপাল! দুর্ভাষী ভাই খুবই ভালো মানুষ। কিছুটা মোহগ্রস্থ। দ্বিতীয়বারের মতো ব্লগাড্ডা এসেছেতো এক্সসাইটেড।
ভাই আমি ইউনুস। আপনি মনসুর? উনি সরাসরি অস্বীকার করে বললো কলার ছবিটা আমারনা খেক খেক
ঘাসফুল। ব্লগের শুরু থেকেই যার সাথে অন্যরকম একটা দোস্তিভাব বজায় আছে। উনি বদরুল, আম্মা সবার কথা জিজ্ঞেস করলো। খুবই ভালো মানুষ। বেচারার সব চুল নাকি বাতাসে পেকে যাচ্ছে ব্যপকস ভাবে আফসোসিত হইলাম।
রেজওয়ান শুভ ওরফে টোনা। ক্ল্যাসিকেল বয় নিঃসন্দেহে। অনেক কথা বললাম, মজা করলাম। শেষে কাব্যও এসে যোগ দিলো। কাব্যকে দেখে মনে হলো যতোটা দুষ্টামি সে করে চেহাড়াতে অনেক কষ্ট করেও অতোটা দুষ্টামির ছাপ আনতে পারে নাই । স্যুট-টাই পরিয়ে দিলে নিখাদ ভদ্র লোক।
মন মানেনা। আসলেই যে মানেনা। সেটা উনার বদন দেখে বুঝা গেছে। ভালো লাগছে উনার পরিচয় দেওয়ার সময়কার কথাগুলো। সবাই খুব মজা পেয়েছে।
অমাবস্যার চাঁদ উনাকে দেখে খুবই হতাশ হয়েছি। ভাবছিলাম উনার একটা লেজ আছে । ওমা নিখাদ শ্বান্ত-শিষ্ট ভদ্র লোক। যদিও সন্দেহ হইতাছে সাথে ভাবী ভোরের তারা থাকায় কি উনি লেজখানা রেখে আসলেন কিনা আমরা তিনজন অনেকক্ষণ আড্ডা মারলাম।
ফয়সালরকস এবং ভেংচুকের সাথে পরিচিত হতে পেরে অনেক ভালো লেগেছে। যদিও ঐভাবে কথা বলতে পারিনি।
গোল হয়ে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকতেছি। পাশের জনের সাথে পরিচিত হলাম তাজা কলম। এরমাঝে অন্য কে যেনো আমাকে জিজ্ঞেস করলো আমার প্রোগ্রামিং কেমন চলছে? তাজা কলম সেটা শুনে বললো ভালোই লাগছে আমার লাইনের অনেক লোক। যখন জানতে পারলাম উনি এআইইউবির টিচার তখন আমার অবস্থা লেজেগোবরে। সিগারেটের দোয়া নাকেমুখে। স্যার আমারে মাফ কইরা দিয়েন প্লিজ। ও হ্যাঁ উনার পরিচয় পর্বটাও ছিলো খুব মজার। আপনারা হয়তো ভাবছেন আমার বয়স অনেক। কিন্তু না আমার বয়স হলো মাত্র ছয়মাস ।
পারভেজ। উনার লিখনীর মতো উনার চেহাড়াও বেশ। ভালোই লাগছে কথা বলে। খুবই মিশুক।
সৌম্যভাইরে দেখলাম। কিন্তু কথা বলা হয়ে উঠলোনা।
সাইকেল আরোহী। কিছুটা ওয়েস্টার্ণ কাউবয়ের মতো। মুখে স্পষ্টত দেশ জয় করার অঙ্গিকার। স্যালুট আপনাকে।
আলঝেইমার ক্রিষ্টোসান। নিরবে বসে ছিলো আড্ডার শেষ পর্যন্ত। মজা করে গিয়ে বললাম সন্দেহ হচ্ছে আপনার মনে হয় আরো কোন নিক আছে? ঐটা দিয়ে ছেছনা দিবেন
সালেহ ভাই। বরাবরই যাকে প্রাণবন্ত মানুষ মনে হয়।
আড্ডার মাঝামাঝি সময়ে আসলো হমপ্রগ। হ্যান্ডশেকের সময় হালকা ঝাঁকি অবধারিত। অনেকক্ষণ আড্ডা দিলাম একসাথে। ভাল্লাগছে খুব।
লাল দরজা ভাই বরাবরই চুপচাপ। সবার মজা দেখে আর অবাক হয় নিশ্চিৎ।
অন্ধ দাড়কাক। যথেষ্ট মজার মানুষ। বেশ আড্ডা দিলাম। ভালো লাগছে।
প্রত্যুদা আপনি সার্জেন্ট হইলে ভালো করতেন। রেইনকোটের সাথে সার্জেন্টের একটা সম্পর্ক আছে এইটা আমার কাছে সবসময় মনে হয়।
এফ. আই. দিপুরে দেখে অবাক হইলাম। ঝাকড়া চুল। খুবই রসিক লোক। মজা করছি অনেক।
রায়হান (তন্ময়) ভাইরে দেখে খুব ভালো লেগেছে। খুবই সহজ-সরল মনে হয়েছে।
নীল ভ্রমরা,ব্যতিক্রমী,সবার প্রিয়,রথে চেপে এলাম,এলোমেলো,জানপরী(কসম উনারে আমিও মাইয়া মনে করছিলাম। খুব হতাশ হইছিরে আল্লাহ ),ভিজামন,চোরকাঁটা,দন্ডিত পুরুষ, যাযাবর পাখী, মুখ ও মুখোশ সহ আরো অনেক ব্লগাররেই দেখছি। ভুইলা গেছিরে ভাই। ভুইলা গেছি। এতো এতো ব্লগার।
আসল কথায় আসি। ব্লগ আড্ডাতে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিলো ব্লগার আরিয়ানাকে দেখা। দেখছিও কিন্তু সাহস করে আর পরিচিত হতে পারেনি। যেটা পেরেছি শ্রাবণসন্ধা আপুর সাথে। কিউট জাফনার সাথে দুষ্টামি করতে ইচ্ছে করছিলো কিন্তু জড়তা। আইরিন নানীর সাথে নিঃসংকোচে কথা বলেছি আগের পরিচয় ছিলো বলে। কক্সবাজার থেকে ব্লগার এসেছে শুনে তাকিয়ে দেখি মনপুরা। বেশ কথাও হলো। কিন্তু বুঝতে পারলামইনা উনি পল্লী বাউলের সাথে ভাই-বোনের মতো করে ছাদনা তলায় থাকে ব্যপকভাবে আফসোসিত হইছি যখন পরে ব্লগে দেখছি কেউ কেউ দাওয়াতও পেয়ে গেছে শুনে। নিশ্চিত পল্লী বাউলের আগামী একশো পোস্টে মাইনাস। সেই দুঃখেই মনে হয় পল্লী বাউল যে একটা বাউন্ডুলে সেইটা আলাদা করে বলি নাই
গোয়েবলস যে আসলে মাইয়া এইবার বিশ্বাস হইছে। ফারা তন্বী কোনটা চিনি নাই
খুব কান্দন আইতাছে। ব্লগাড্ডায় গেলাম অথচ রোহান,শামশীর,চাচামিঞা,সোনালীডানা রে না দেইখায় চলে আসলাম অথবা চিনতে পারলামনা
ভাবতেছেন দুঃখ শেষ হইয়া গেছে। নারে ভাই রুমাল বের করেন শুনলে নিশ্চিৎ কান্দন আইবো। খাবারের প্যাকেট পাইলে কাব্যর ছিনতাইয়ের হাত থেকে মুক্তি পাইয়া রাজ্যের হাসি নিয়া বাটন রুজে ছুটছি। আমার এক বন্ধু খাওয়াইবো। হেরে আড্ডার লাইগা দেড় ঘন্টা দাঁড় করাইয়া রাখছি। ভাবছি হেরে খাবারের প্যাকেট টা দিয়া ঠান্ডা করামু। কিন্তু হাত থেকে খাবারের প্যাকেট টি পইড়া গেলো। কিছু বুঝতে বুঝতেই দুই কুত্তা দৌড়াইয়া এসে প্যাকেট টা নিয়া গেলো। কিছুদূর গিয়া আমার দিকে তাকাইয়া আছে। নিশ্চিত মিটিমিটি হাসছে। ঘা জ্বলে গেলো। সেই দুঃখেই কিনা বাটন রুজরে হেভ্ভি সাইজ দিলাম