ভূত-প্রেত নিয়ে কিছু সত্য-বাস্তব ঘটনার আলোকে আমার এই সিরিজ লিখার প্রয়াস
যখন খুব ছোট ছিলাম তখন আম্মা প্রায়ই বর্গি এলো পাড়া ঘুমালো অথবা ইয়া বড় এক রাক্ষস ছিলো অথবা নদীর পাড়ে যে শ্যাওড়া গাছটা আছেনা সেখানে ইয়া বড়ো এক মামদো ভূত ছিলো টাইপের গল্প বলে আমাকে ঘুম পাড়াত। আমিও সেগুলো শুনে জড়োসড়ো হয়ে মাকে ধরে ঘুমিয়ে পড়তাম। ফলে ছোটকাল থেকেই ভূত-প্রেতে খুবই ভয় পেতাম। একবার পাশের বাড়ীর এক বৃদ্ধলোক মারা গেলে আমি দেখতে গিয়ে ভয় পেয়ে জ্বর বাধিঁয়ে ফেলেছিলাম। আমার ছোটবেলার দোস্ত এসে আমারে বললো মানুষ মরে গেলে নাকি ভূত হয়ে যায়, আর সেই ভূতই নাকি আমাকে ধরে জ্বর বাধিঁয়ে দিয়েছে। এরপর থেকে আমি যখনি শুনতাম কেউ মারা গেছে আমি ভয়ে আর ঘর থেকে বের হতামনা। এমনকি প্রস্বাব করার চাপ আসলেও তা জানালার ফাঁক দিয়ে সেরে ফেলেছি।
কিন্তু একটু বড় হয়ে যাওয়ার পর ভূত দেখার ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হলো। বন্ধুদের সাথে প্রায়ই শলা-পরামর্শ করতাম কেমনে ভূত দেখা যায়। আমার এক হিন্দু বন্ধু সুজন আমাকে বুদ্ধি দিলো সূর্যডোবার সময় যদি আমরা গিয়ে শ্মশান ঘাটে গিয়ে ছোলা-মুড়ি খাই তাহলে নাকি ভূত দেখা দিবে। মনের কৌতুহল মিটাতে তিনজন মিলে সন্ধায় সেখানে ছোলা-মুড়ি-পেঁয়াজু নিয়ে হাজির। সাথে নিয়ে গিয়েছিলাম তিনজনে তিনটি চাকু। কিন্তু মুড়ি খেতে খেতে রাত হয়ে গেলো কিন্তু কোন কিছুর দেখা না পেয়ে এই ভেবে আফসোসিত হলাম যে মাঝখান দিয়ে আমার টাকায় সবাই মিলে চামে খেয়ে গেলো।
কেউ একজন বলেছিলো নিশিরাতে আমাদের পুকুরপাড়ে কেউ একজন পুকুরপাড়ের পুবের মন্দির থেকে ঘোড়া নিয়ে ছুটে আসে ঘোড়াকে পানি খাওয়াতে। পানি খাওয়া শেষ হলে নাকি সে ঘোড়া আগুনের ফুলকি ছুঁড়তো। সেইজন্য একদিন মাঝরাতে পুকুর পাড়ে গিয়ে বসে রইলাম কিন্তু কিছু না পেয়ে বড়ই হতাশ হইলাম।
পাশের বাড়ির চাচী একবার বলেছিলো তিনি নাকি মাঝরাতে ঘুম থেকে বাথরুমে যাওয়ার সময় প্রায়ই দেখেন মন্দিরের ডানপাশটায় যে গোরস্থান আছে সেখানে অনেকেই মিলে জানাজা পড়ছে। সকালে গিয়ে দেখে সেখানে নাকি নতুন কোন কবর নেই। এই শুনে একদিন আমি রাতে গোরস্থানের পাশে বসে রইলাম টুপি হাতে নিয়ে সবার সাথে জানাজা পড়বো বলে। কিন্তু কাউকেই আসতে দেখলাম না।
জীবনদার হোটেলের কাজের ছেলেটি আমাকে দুইদিন বললো সে নাকি রাতে প্রস্বাব করতে হোটেল থেকে বের হয়ে প্রস্বাব শেষে ঘরে আসার সময় দেখে একটি মহিলা ঝোলা নিয়ে তাকে ডাকছে তার কাছে যাওয়ার জন্য। সে ভয়ে দৌড়ে ঘরে এসে পড়তো। এরপর থেকে সে আর রাত্রে ঘর থেকে বের হয়নি। আমি কোমরে একটি চাকু লুকিয়ে নিয়ে অনেকবার সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছিলাম কিন্তু কখনও কাউকে পাইনি।
এইভাবে আমার সাহস দিনকে দিন বৃদ্ধি পাইতে লাগলো এবং ভূত দেখার আগ্রহটা দিনকে দিন বৃদ্ধি পাইতে লাগলো................
( ভালো লাগলে চলবে )
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ দুপুর ১:১৭