somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইস! দেশ চালানো কত্ত সহজ!

১৮ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিঃসন্দেহে এই গ্রহের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান মানুষদের একজন। যে কোন ধরণের বিপদ কাটাতে তিনি যে কেবল দল ও আশ্রয়দাতার ব্যাকিং পান, তাই নয় - ভাগ্যও তাকে অকৃপণ ভাবে সহায়তা করে। ১৯৭৫ সালে তাঁর পরিবারের উপর যখন ভয়াবহ ম্যাসাকার হয়, তার মাত্র ১৫ দিন আগে ঢাবি'র ভিসি আব্দুল মতিন প্রায় হাতে পায়ে ধরে তাকে দেশে থেকে যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু বিদেশ বিভুয়ে স্বামীর খেতে পড়তে কষ্ট হচ্ছে - এই বলে তিনি একরকম জোর করেই ইতালীর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ফলাফল, আজকে তিনি বেঁচে বর্তে বাংলাদেশের সৎ ও কর্মনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী। ঠিক তেমনি ২০০৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকার যখন কোনভাবেই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে আনতে না পেরে বিএনপি জামায়াত জোটকে প্রায় ক্ষমতার ধারে কাছে নিয়ে ফেলছিল, সেসময় জাতিসঙ্ঘের 'আওয়ামী লীগ ছাড়া নির্বাচন করলে শান্তিরক্ষী বাহিনী থেকে বাংলাদেশকে ছাঁটাই করার' ভয়াবহ হুমকী পেয়ে ১/১১ এর নামে সেনা শাসকদের টেকওভার রীতিমত হারানো পুতুল তাদের হাতে জোর করে তুলে দেয়।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কোটা আন্দোলনেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখা গেল। বাপের পাঠানো টাকায় থাকা খাওয়া কতগুলো নির্বোধ প্রকৃতির ছেলেপেলে কি নিয়ে আন্দোলন করবে দিশে না পেয়ে বিসিএস চাকরিতে কোটা নিয়ে একটা অসংগঠিত আন্দোলন শুরু করে দিল। তাদের দাবী ছিল একটাই - কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে একটা সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। এই আন্দোলন যখন চরম পর্যায়ে চলে যায়, প্রধানমন্ত্রী তখন সরকারী সফরে দেশের বাইরে ছিলেন। ক্ষমতা টালমাটাল দেখে তিনি তরিঘড়ি দেশে চলে আসেন এবং সংসদে দাঁড়িয়ে পরম উৎসাহের সাথে ঘোষণা দিলেন, "কেউ না চাইলে কোটা থাকবেনা"

ব্যাস। গরম গরম আন্দোলনের মাথায় তিনি স্রেফ মোহিতো ঢেলে দিলেন। আন্দোলনকারীরাও বিভ্রান্ত হয়ে গেল। তারা সুস্পষ্ট ঘোষণা চেয়েছিল - প্রধানমন্ত্রী তা দিয়েছেন। এরপর তো আর আন্দোলন করা চলেনা। আবার অনেকদিন ধরে রাস্তাঘাটে পুলিশের মার আর ছাত্রলীগের ধাওয়া খেয়ে ক্লান্ত আন্দোলনকারীদের একাংশ পিছুটান দেয়ার সুযোগ খুঁজছিলেন। বলাবাহুল্য, প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা তাদেরকে সোনালী সুযোগ এনে দিল।

কিন্তু রাজনীতিতে অনভিজ্ঞ আন্দোলনকারীরা মোটেও আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর ইতিহাস এবং রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিকে আমলে আনেননি। যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দেশের রাজনীতির গোপাল ভাঁড় হিসেবে পরিচিত। তাঁর কথাবার্তা তাৎক্ষণিক হাস্যরসের যোগান দিলেও নিকট ভবিষ্যতে তা অক্ষরে অক্ষরে ফলে যায়। আওয়ামী লীগের চরিত্র সম্পর্কে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিল, "আওয়ামী লীগের নেতারা কথা বললে মিথ্যা বলে, প্রতিজ্ঞা করলে তা ভঙ্গ করে, এবং জনগনের আমানতের খেয়ানত করে।"

যদিও জনগনের আমানতের খেয়ানত করা প্রতিটি রাজনৈতিক দলেরই অত্যাবশ্যকীয় বৈশিষ্ট, কিন্তু মিথ্যা বলা এবং প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করায় আওয়ামী লীগের ধারে কাছে কেউ কোনদিন আসতে পারবেনা। এ কথা নিশ্চয়ই ভেঙে বলার বা প্রমাণ করার কোন প্রয়োজন নেই। সেই আওয়ামী লীগের নেত্রী যখন অঙ্গীকার করেন, কোটা থাকবেনা, তখন তাঁর কথায় কতটুকু নির্ভর করা যায়? যখন তিনি বলেন, মেয়েরা রাস্তায় বেরিয়া আসায় তাদের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি তিনি শঙ্কিত হয়ে উঠছিলেন, তা কতটুকু বিশ্বাস করা যায়, যখন দেখি ছাত্রলীগের ছেলেরা প্রকাশ্য রাস্তায় ছাত্রীদের মলেস্ট করছে?

আমার তো মনে হয়, শিকড় বাকড় ছাড়া এই আন্দোলন জমানোর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের অর্জনকে মহিমান্বিত করা। আপনাদের কি ধারণা?

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:০০
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×