গত ব্লগে "আপনার গুগল এডসেন্স এড অন্য কেউ ব্যবহার করছে না তো??? " এই শিরোনামে ব্লগ লিখেছিলাম। তারই ধারবাহিকতায় আজ "গুগল এডসেন্স এর পিন নাম্বার নিয়ে জটিলতার কিছু গল্প ও তার সমাধান" নিয়ে একটি ব্লগ লিখলাম।
যারা গুগল এডসেন্স নিয়ে কাজ করেন তারা "পিন নাম্বার" শব্দটার সাথে সবাই কম-বেশি পরিচিত। আজকের টিউটোরিয়ালটি একটি গল্প দিয়ে শুরু করবো।
"এক লোক একদিন খুব শখ করে একটি ব্লগ খুললেন।দুই তিন মাস টানা পরিশ্রম ও করলেন ব্লগ এর কণ্টেণ্ট এর জন্য। তার ব্লগটি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হতে লাগল। এবার সে ভাবল, যেহেতু আমার ব্লগটি জনপ্রিয় হচ্ছে, তাহলে তো আমি এটা ব্যবহার আয় করতে পারি?? যেই ভাবনা সেই কাজ। লোকটি গুগল এডসেন্স এড এর জন্য আবেদন করল। যেহেতু তার ব্লগ সাইটটি জনপ্রিয় এবং তাতে যথেষ্ট পরিমান তথ্য আছে তাই গুগল তার আবেদন মঞ্জুর করে নিল । এবার লোকটি মনের আনন্দে তার সাইটে এড দিয়ে আয় করতে লাগল। কিন্তু মানুষের কপালে সুখ বেশি দিন সহ্য হয় না। যখন তার আয় ১০০ ডলার হল তখন হঠ্যাৎ করে সে দেখতে পেল তার সাইটে "পাবলিক সার্ভিস" এড আসছে। তার তো মাথায় হাত। আসলে সে বুঝতেই পারছিল না যে ঘটনা কি ঘটেছে?
যাই হোক মনে দুঃখ নিয়ে সে তার এডসেন্স একাউণ্ট এ লগ-ইন করার পরে সে দেখতে পেল "লাল" অক্ষরে বড়-বড় করে লিখা..." আপনার ওয়েব পেইজে পাবলিক এড দেখানো হচ্ছে, কারন আপনি এখনও আপনার পিন নাম্বার/ফোন নাম্বার ভেরিফাই করেন নাই"। এর পরে লোকটি তার ভুল বুঝতে পারল । কিন্তু তত দিনে তার টাকা উত্তোলন এর তারিখ আরো কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে।"
আপাতত গল্পের এখানেই সমাপ্তি। কিন্তু আসলে কি হল?? কেন হল??এখন সে কথাই বলব, চলুন দেখি............
যারা এডসেন্স থেকে আয় করছেন, তারা সবাই জানেন , গুগল তার এড পাবলিসারদের কে অনেক ভাবে ভেরিফাই করে থাকে। তার মধ্যে পিন-নাম্বার ভেরিফিকেশন অন্যতম। গুগল এডসেন্স একাঊণ্ট এ ১০-১৫ ডলার হওয়ার সাথে সাথে তারা আপনার একাউণ্ট "HOLD" করে রাখবে। এর পরে তারা আপনাকে, একটি পিন নাম্বার আপনার বাসার এড্রেস এ পাঠাবে, যে এড্রেস দিয়ে আপনি গুগল এডসেন্স একাঊণ্ট এর জন্য আবেদন করেছিলেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পিন নাম্বার পোষ্টাল সার্ভিসে আসতে ১মাস এর মত সময় লাগে। তাই এই ১মাস আপনার একাউন্ট "HOLD" এ থাকবে। ভয় এর কিছু নাই, এই ১মাস আপনার সাইটে এডের পেইজ ইম্প্রেশন ও ক্লিক কাউণ্ট হতে থাকবে। "HOLD" এর ব্যাপারটা হল, "আপনি আপনার একাউণ্ট থেকে টাকা তুলতে পারবেন না"।
আপনি যে সময়ে আপনার পিন নাম্বার পেয়ে যাবেন, তখন যদি আপনি সাইট এর নিদিষ্ট জায়গায় ওই পিন নাম্বারটি বসান তাহলে আপনার একাউন্ট এর "HOLD" অপশনটি চলে যাবে। (গুগল আপনাকে বলে দিবে কোথায় আপনাকে পিন নাম্বারটি বসাতে হবে)
পিন নাম্বার আসে নাই! এখন কি করবঃ
অনেক কারনে আপনার কাছে পিন নাম্বার নাও আসতে পারে। আপনার এড্রেস যদি ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই আপনি পিন নাম্বার পাবেন।
এর পরও যদি না পান তাহলে?
চিন্তার কোন কারন নাই, গুগল আপনাকে তিনবার পিন নাম্বার এর জন্য আবেদন করতে দিবে। ১ম পিন নাম্বার আবেদন এর তিন সপ্তাহের ভিতরে যদি আপনি পিন নাম্বার এর পার্সেল(চিঠি) না পান তাহলে ২য় পিন নাম্বার এর জন্য আবেদন করুন। এই ভাবে আপনি সর্বোচ্চ তিনবার পিন নাম্বার এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তিনবার আবেদন করলাম! তাও পিন নাম্বার পেলাম না! এখন কি করবঃ
ভয় পাবেন না। গুগল তার এড পাবলিসারদের সুবিধার জন্য সব রকম ব্যবস্থাই করে রেখেছে। আপনি যদি পিন নাম্বার না পান তাহলে গুগল আপনাকে একটি লিংক দিবে, ওই লিঙ্কে গেলে আপনাকে আপনার এড্রেসের একটি ডিজিটাল প্রুফ কপি পাঠাতে বলবে।(যেমনঃ Payoneer ক্রেডিট কার্ডের আবেদন এর সময় আমাদের ন্যাশনাল আইডি কার্ডের একটি কপি তাদের কাছে পাঠাতে হয়,ঠিক সেই রকমভাবে আপনার এড্রেসের একটি কপি তাদের কাছে পাঠিয়ে দিবেন)। এর পরে গুগল এডসেন্স টিম ম্যানুয়ালি আপনার এড্রেস ভেরিফাই করবে। সব কিছু যদি ঠিক থাকে তাহলে আপনার একাঊণ্ট থেকে "HOLD" অপশনটি তুলে নেওয়া হবে। ব্যস হয়ে গেল আপনার পিন নাম্বার জটিলতার সমাধান।
টিউটোরিয়াল এর শেষ দিকে এসে বলব, "গুগল কে ফাকি দেওয়ার চেষ্টা করবেন না, কারন গুগল জানে পাবলিক কি কি দুনম্বরি/তিন নম্বরি করতে পারে!!! তাই দেখবেন , চালাকি করতে গিয়ে শেষে নিজের ফাদে নিজেই পড়ে গেছেন।"
নিয়মিত গুগল এডসেন্স একাউন্ট ও ই-মেইল চেক করুন। তাহলে পিন নাম্বার সহ আরোও অনেক বিড়ম্বনা থেকে নিজেকে বাচাতে পারবেন।
আজকে এতটূকুই। সবাই ভাল থাকবেন।
টিউটোরিয়ালটির সুত্রঃ
http://www.coolajax.net/tutorial.html
টিউটোরিয়ালটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।