আমি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। প্রথম যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি তখন আমি সিগারেট খেতাম না। কিন্তু সিগারেট না খাবার অভ্যসটি আর বেশি দিন থাকলোনা। আমি এখন এক জন নিয়মিত সিগারেট কাষ্টমার। ক্যাম্পাসের প্রায় দশটি দোকান থেকে আমি নিয়মিত সিগারেট কিনি। টাকা না থাকলে মামারা বাকী দেয়। কারণ সিগারেট কিনতে কিনতে এখন পরিচয় হয়ে গেছে। এখন সিগারেট কিনতে আমার প্রতি মাসে ব্যয় হয় কমপক্ষে দেড় হাজার টাকা। নিজের আয় অত্যান্ত কম। তার উপর সিগারেটের এই ভার আর সইতে পারছিনা। কিন্তু কি করার না খেয়ে পারছিনা। আমি জীবনে ভাবিনী সিগারেট খাবো। যা ভাবিনী তা করছি। এর ফলে আমি প্রায় এক বছর ধরে হাপানী রোগে আক্রান্ত হয়েছি। ডাক্তার বলেছে সিগারেট ছেড়ে দিলে সুস্থ্য হয়ে যাবো। আমি বাড়িতে গিয়ে প্রায় দশ দিন সিগারেট খেতে পারিনি। সে সময় আমার হাপানী আর ছিলনা। আমার এই অবস্থার জন্য আমি দায়ি। এর সাথে আরেকজন দায়ি। সে হচ্ছে পরিবেশ। আমার সিগারেটের নেশা হবার একমাত্র কারণ আমার পরিবেশ। বর্তমান বাংলাদেশের সবগুলো বিশ্বিবিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হরহামেশা সিগারেট বিক্রি হয়। তরুণ শিক্ষার্থীরা প্রথম বর্ষে একটু ভাব নিতে সিগারেটে দুই এক টান দেয়। আর কি। কাম সারা। তাছাড়া বন্ধু-বান্ধব বা বড় ভাইদের দ্বারা সিগারেটে আসক্ত হবার পরিমানটা বেশি। আমার মত অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা পরিবেশের কারণে নেশা করতে শেখে। আর সিগারেটের নেশার সাথে সাথে আরো অনেক নেশা হয়ে যায়। আমার পরিচিত এই বিশ্ববিদ্যায়টিতে কমপক্ষে ৩৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে যারা নিয়মিত নেশা করে। আমাকে তাদের মধ্যে কয়েকজন অফার করেছে। আমি কয়েকবার গাঁজা আর মদ খেয়েছি। পরে একটি চক্রের সাথে আমার পরিচয় হয়। তারা আমাকে প্রতিদিন এক বোতল ফেন্সিডিল দেয়ার অফার দিয়েছে। বিনিময় আমাকে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। আমার সিগারেটের টাকা জোগাড় করতে আর মাঝে মধ্যে নেশা করতে টাকা দরকার। তাই আমি এখন দ্বিধা দ্বন্দে আছি। সত্যি বলতে কি, আমার আসলে এসব ভালো লাগেনা। গতকাল আমার এক স্যার আমাকে বলেছিলেন, দেখ আমাদের ক্যাম্পাসে ছেলে মেয়েরা আসে দুইটি সার্টিফিকেট নিয়ে আর ফিরে যায় অনেক কিছু নিয়ে যা তাদের জন্য নয়। তিনি বলছিলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কেউ নিয়ে যায় একটি সার্টিফিকেট+সিগারেট। অনেকে নেয় সার্টিফিকেট+সিগারেট+গাঁজা। কেউ কেউ সার্টিফিকেট+সিগারেট+গাঁজা+ফেন্সিডিল। দেখা যায় সার্টিফিকেট+সিগারেট+গাঁজা+ফেন্সিডিল+মদ নিয়ে যায় অনেকে। তবে আমার দেখা আছে আমার এক বড় ভাই সার্টিফিকেটের সাতে নিয়েছে সিগারেট+গাঁজা+ফেন্সিডিল+মদ+হেরোইন+যক্ষা। তিনি আমার চার বছর সিনিয়র। কিন্ত তার শারিরীক অবস্থা দেখে আমার খুব মায়া হত। আমি স্যারের কথা শোনার পর তার কথা বার বার মনে পড়ছে। তাই আমি নিযেকে এক কঠিন বিপদ থেকে রাঁচতে এবং অন্যদের বাঁচাতে নেশা বিরোধী প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি যতদ্রুত সম্ভব সিগারেট ছেড়ে দিবো। সাথে সাথে নেশার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাবো। এজন্য আমি সকল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কতৃপক্ষের কাছে ক্যাম্পাসছে সিগারেটসহ সকল প্রকার নেশাজাত দ্রব্য কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি যানাচ্ছি।
ক্যাম্পাস+সার্টিফিকেট+সিগারেট+গাঁজা+ফেন্সিডিল+মদ+হেরোইন+যক্ষা=মৃত্যু
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১২:২০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর


আলোচিত ব্লগ
বাংলার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী...
বাংলার প্রথম নারী কবি চন্দ্রাবতী...
ময়মনসিংহ গীতিকা প্রকৃতপক্ষে একক কোনো কাহিনী নির্ভর বই না। 'ময়মনসিংহ গীতিকা' হচ্ছে কবিতা বা গানের সংকলন, যা বৃহত্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের মানুষের মুখেমুখে প্রাচীন কাল থেকে ভিন্নভিন্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন
ব্যাটারি অটো রিক্সা বন্ধ করা কী খুব কঠিন কাজ?
বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড় হল এখন অটো রিক্সা, স্বল্প পরিশ্রমে সহজ আয়ের মাধ্যম হিসাবে খুবই জনপ্রিয় একটা পেশা। স্বল্প ভাড়ার জন্য অনেক মানুষ এখন পায়ে হাঁটা ভুলেই গেছে আর হাঁটার... ...বাকিটুকু পড়ুন
জিয়াউর রহমান
চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল... ...বাকিটুকু পড়ুন
জবাবদিহিতার অনন্য দৃষ্টান্ত
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল... ...বাকিটুকু পড়ুন
আপনি যাত্রা করবেন নাকি রাজনীতি করবেন ?
ইদানীং দেশে রাজনৈতিক দল গজানোর হার দেখলে মনে হয়, দেশের মাটিতে এখন ধান নয়, গজায় দল। ভোট এলেই বুঝি এই দলগুলো দুলে ওঠে, আর না এলেই পড়ে থাকে ফাইলের পাতায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন