কোন আদর্শের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ পায় সেই আদর্শের সৌন্দর্য দ্বারা। শ্রেষ্ঠ আদর্শ সেটা যেটা অভিযোগের জবাব যুক্তি দ্বারা খন্ডন করে থাকে। মিথ্যা বা খারাপ আদর্শ সবসময় যুক্তিকে এড়িয়ে গালি-গালাজ বা শক্তি প্রদর্শনের পথ অবলম্বন করে থাকে।খারাপের প্রতিবাদ ভাল দ্বারা করে থাকে। আঘাত আসলে শুধু আত্মরক্ষা করে থাকে।মুহাম্মাদ (সাঃ) এর জীবনে এমন নীতি অবলম্বন করতে দেখা যায়।
এবার শ্যামল কান্তি বলেন, লতিফ সিদ্দিকিই বলেন বা তসলিমা নাসরিনই বলেন না কেন- এদের দোষ কি? এরা ইসলামের বিপক্ষে কথা বলেছে।যিনি যার বিপক্ষে, তিনি তো তার বিপক্ষেই বলবেন, নয় কি? আপনি হয়ত বলবেন তারা শুধু বিপক্ষেই বলেনি বরং ইসলামের নামে অনেক অশালীন কথা বলেছে। আমি বলব যিনি বা যারা অশালীন কথা বলেন তিনি তার নিজের মুর্খতা ও হীনতারই পরিচয় দেন। আপনি যদি শ্রেষ্ঠ হন আপনি তো তার মত আচরন করতে পারেন না। আমি আপনার মা-বাবা কে নিয়ে যদি অশ্রাব্য গালি-গালাজ করি তাতে আপনার কি ক্ষতি হবে? আপনি যদি ধৈর্য ধারন করেন এবং আপনি আপনার রুচিশীল ব্যবহার বহাল রাখেন, তাহলে তো লোকজন আমাকে খারাপ বলবে, আমার পরাজয় হবে।আর যদি দু’জনেই চুল-টানাটানি শুরু করি তাহলে তো দু’জনের কেউউ শ্রেষ্ঠ নয়, সমানে সমান, দু’জনেই কুকুর।
একটি হাদিস আছে যে একদিন এক ইহুদি হযরত আবুবকরকে যাচ্ছেতাই গালিগালাজ করছিল আর হযরত আবুবকর কোন জবাব না দিয়ে চুপ করে শুনছিলেন। হযরত মু: (সাঃ) তা দেখে দুর থেকে হাসছিলেন। হযরত আবু বকর মনে করলেন যে তিনি জবাব না দেয়াতেই মনে হয় নবীজি হাসছেন। তাই তিনি একটি জবাব দিলেন। সাথে সাথে নবীজির মন খারাপ করে চলে গেলেন। পরবর্তীতে নবীজিকে হাসার কারন জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন যে তুমি যতক্ষন চুপ ছিলে ততক্ষন ফেরেশতারা তোমার পক্ষ হয়ে তার গালির উত্তর দিচ্ছিল তাই আমি হেসেছি।
আমাদের দেশে যারা নবীর অনুসারী বলে দাবী করে তারা কি করে? তাদের কথা হল অমুক নবীজিকে গালি দিয়েছে অমুককে ফাসি দাও, তাকে দেশ থেকে বাহির কর, তার/তাদের ছবি ব্যঙ্গ কর অশ্রাব্য গালিগালাজ মুলক মন্তব্য করে থাকে, আরও ইত্যাদি ইত্যাদি।
কেউ কেউ বলবেন তাদেরকে এভাবে প্রতিবাদ না করলে তো তারা আরো বেশি বেশি করে গালি দিবে এবং বাড়াবাড়ি করবে।আমি বলব তাই বলে কি আপনি সেই কাজ করবেন যা নবীজির শিক্ষা নয়। কুরআন তো বলছে -ইদফা’ বিল্লাতি হিয়া আহসান- শ্রেষ্ঠতম পদ্ধতিতে প্রতুত্তর দাও।আল্লাহর নবী তো পথে কাটা বিছানো বুড়িকে ফাসি দিতে যাননি? বরং অসুস্থতাই তার শিয়রে গিয়েছিলেন।
যারা নবীজিকে গালি দিয়েছে, তারা তো শুধু গালি দিয়েছে। আপনাকে তো মারতে আসেনি। যারা গালি দেয়, আপনি তাদেরকে গালি দিতে দিন দেখি তারা কত গালি দিতে পারে। আমাদের দেশের তথাকথিত নবী প্রেমিকেরা কি শুধু গালি দিলেই তমোকের ফাসি চাই, দিতে হবে ইত্যাদি শ্লোগান দেয়? লতিফ সিদ্দিকি কি গালি দিয়েছিলেন? তিনি হজ্জ সম্পর্কে যা বলেছিলেন তা শুধু তার মত।তিনি তো আজে বাজে ভাষা ব্যবহার করেননি?
আমি সাধারণ মানুষের দোষ দিব না। তারা তো ধর্মীয় আবেগে লাফায়। তারা এতকিছু বোঝার কথা নয়।আমি সেই সব তথাকথিত নবী প্রেমিক আলিম বলে দাবিদারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছি যারা ইসলামের ভালবাসার নামে ইসলাম বিরোধী পন্থায় সাধারণ মানুষদের ধর্মীয় উম্মাদনায় নামিয়ে দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৬ রাত ১:১২