মিগ-২৯ রাশিয়ার তৈরি একটি তৃতীয় প্রজন্মের জঙ্গি বিমান। নির্ভরযোগ্য কার্যক্ষমতার জন্য এর ডাকনাম রাখা হয়েছে ফুলক্রাম। অনেক বিশেষজ্জ এই বিমান কে মাল্টি রোল ফাইটার ও বলে থাকে।সত্তর দশকের প্রথম দিকে মিকোয়ান ডিজাইন ব্যুরো এই জঙ্গি বিমানের নকশা তৈরি করে, এবং ১৯৮৩ খৃস্টাব্দে তৎকালীন সোভিয়েট রাশিয়ার বিমান বাহিনী বহরে এই বিমান যুক্ত করা হয়। ১৯৯১,৯৫,৯৮,২০০১ সালে বিমান গুলোকে অনেক আপগ্রেড করা হয়েছে।তবে প্রোটোটাইপ ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের অনেক কিছু আমেরিকাও করেছে। বর্তমানে এটি পৃথিবির সেরা বিমান মডেলের একটি।
বর্ননাঃ
• বৈমানিক : ১ জন
• দৈর্ঘ্য : ৫৭ ফুট(১৭.৩৭ মি)
• উচ্চতা : ১৫ফিট ৬ ইঞ্চি(৪.৭৩মি)
• খালি অবস্হায় ওজন : ১১০০০ কেজি
• বোঝাই অবস্হায় ওজন : ১৬৮০০ কেজি
• সর্বোচ্চ উড্ডয়ন ওজন : ২১০০০ কেজি
• শক্তির উৎস : ২টি ক্লিমোভ আরডি-৩৩কে আফটার বার্নিং টার্বো ফ্যান
• সর্বোচ্চ গতিসীমা : ২৪৪৫ কিঃমিঃ/ঘণ্টা(১৫১৮ মাইল/ঘণ্টা)
• পাল্লা :৭০০ কিঃমিঃ(যুদ্ধাবস্হায়)২৯০০ কিঃমিঃ (ফেরি)
• ১*৩০মিমি জিএসএইচ-৩০-১ কামান(১৫০ রাউন্ড).
• সর্বোচ্চ ৩৫০০ কেজি ওজনের অস্ত্র ৬টি এন্টি এয়ার ক্রাফট মিসাইলসহ .
• সাইড উইন্ডার মিসাইল/ রাডার গাইডেড মিসাইল ব্যাবহার করা যায়।
• মারভিক(৬০০ পাউন্ড),হারপুন(৫০০ পাউন্ড) বোমা ব্যাবহার করা যায়।
• সব ধরনের জি পি এস গাইডেড মিসাইল ও বোমা মারা যায়।
এ ছাড়াও আরো কিছু উটিলিটি রয়েছে, বিভিন্ন ভাবে রাডার কে ফাকি দেয়া, মিসাইল থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য অতি দ্রুত টার্ন নেয়া। সমুদ্রের জাহাজে অনেক উচু থেকে আঘাত করা। শত্রু বাহিনীর উপর অতি দ্রুত বোমা মেরে দেয়া। বিশাল ট্যাঙ্ক বহরকে বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া।অতি দ্রুত মিশন শেষ করে নিরাপদে ফিরে আসা। এই সুবিধা গুলো মিরেজ,এফ-১৪ সহ অনেক আধুনিক বিমানে নেই। তাই অনেক শক্তিধর দেশ এই বিমানকে লালন পালন করে থাকে। এই বিমান ম্যান্টেইন্যান্স অনেক ব্যায় বহুল।
আমাদের গর্বের বিষয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতেও প্রায় ১ ডজন এই বিমান রয়েছে। প্রতিবেশী মহাশক্তিশালী ভারত আমাদের আক্রমন করলে, বাংলাদেশ যে টুকু প্রতিরোধ গড়ে তুলবে, এই বিমান তার মধ্যে অন্যতম সাহসিকতা দেখাবে।
ইরাক-ইরান যুদ্ধে, ইরান এই বিমান ব্যাবহার করে সাদ্দাম সেনাবাহিনীর বিপক্ষে অনেক সাফল্য পেয়েছিলো। ইসরাইল এই বিমান দিয়ে মিশর, জর্দান ও সিরিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধে জয়লাভ করেছে। ভারত কারগিল যুদ্ধে পাকিস্তানের বিপক্ষে ব্যাবহার করে যুদ্ধের মোর ঘুরিয়ে দিয়েছিলো।
পৃথিবির মাত্র কয়েকটি দেশ এই বিমান ব্যাবহার করেঃ
১) ইরান ২) ভারত ৩) রাশিয়া ৪) আমেরিকা ৫) ইসরাইল ৬)কিউবা ৭) হাংগেরী ৮)পোল্যান্ড ৯) মালোয়েশিয়া ১০) কাজাখিস্তান ১১) সারবিয়া ১২) বাংলাদেশ, সহ আরো কয়েকটি দেশ।
বিভিণ্ণ মডেলঃ
১)মিগ-২৯ এম ২) মিগ-২৯কে ৩)মিগ-২৯ এস এম টি।
মুল্যঃ ২৯-৩৫ মিলিয়ন ডলার প্রতিটি।
বর্তমানেঃ আমেরিকার তৈরি, এফ-১৬ মাল্টিরোল জেট এবং এফ-২২ রেপ্টর তৈরির পর এই বিমান পিছিয়ে পড়েছে। বিমান যুদ্ধের দক্ষতায় এফ-১৬ ও এফ-২২ আরো অনেক ভালো এবং বিস্ময় কর এবং অবাক করার প্রযুক্তি।তারপরো মিগ-২৯ অনেক দেশের বিমান বাহিনীর কাম্য।আমাদের সার্বভৌমত্ত রক্ষার জন্য কমপক্ষে ৩০০ মিগ থাকা উচিত সাথে সেনা ও নৌ বাহিনিকেও আধুনিক করা উচিত।
ধন্যবাদ সবাইকে।
মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান, অতীত ও ভবিষ্যতের আধুনিক বিমান।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২৩টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর


আলোচিত ব্লগ
অদৃশ্য দোলনায়
ভোরের রোদ্র এসে ঘাসের শিশিরে মেঘের দেশে চলে যেতে বলে
শিশির মেঘের দেশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঘাসের মাঝে ফিরে আসে-
বৃষ্টি হাসে শিশিরের কথায়। তাহলে আমরা দু’জন কেন প্রিয়?
এক জুটিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লায় দেছে!
আল্লায় দেছে। কথাটার মানে হচ্ছে- আল্লাহ দিয়েছেন।
হ্যা আল্লাহ আমাদের সব দেন। এই দুনিয়ার মালিক আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন শুধু মাত্র তার ইবাদত করার জন্য। কিন্তু মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন
ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....
ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....
বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। শনিবার (২৯ মার্চ) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও... ...বাকিটুকু পড়ুন
ড. ইউনুস: এক নতুন স্টেটসম্যানের উত্থান
ড. মুহাম্মদ ইউনুস ধীরে ধীরে রাজনীতির এক নতুন স্তরে পদার্পণ করছেন—একজন স্টেটসম্যান হিসেবে। তার রাজনৈতিক যাত্রা হয়তো এখনও পূর্ণতা পায়নি, তবে গতিপথ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে মেপে নেয়া,... ...বাকিটুকু পড়ুন
প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর কেমন হলো ?
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এখনো চীন সফরে রয়েছেন। চীন সফর কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাইপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাসেক্সফুল সফর আর কোনো দলের... ...বাকিটুকু পড়ুন