প্রচন্ড ক্ষুধা নিয়ে বাস থেকে নামলাম। ক্ষুধায় মাথা ঘুরতেছে। তার উপরে আছে মাদারচোদ সুর্য। এমন রোদ যে দুনিয়ার সবকিছু সাদা দেখাচ্ছে। সব রংই আজকে সাদা। যাই হোক, রাস্তা ক্রস করে খাবারের দোকান খুঁজতে থাকলাম। প্রজাপতি গুহার পাশ দিয়ে বসুন্ধরা সিটির পিছনের গেটের দিকে যে রাস্তাটা চলে গেছে সেটার মাঝামাঝিতে একটা খাবারের দোকান পেলাম। পরোটা ভাজির দোকান। কিন্তু এয়ার কন্ডিশন্ড। সুর্যের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে "অন ইয়োর ফেইস মাদাফাকা... সাক মাই ডিক" বলে দোকানে ঢুকে গেলাম আমি...
ওউফ... এক্কেবারে পার্ফেক্ট টেম্পারেচার। ঢুকেই আমার শরীর নিস্তেজ হয়ে গেল আরামে। দোকানটা একটু ডিফ্রেন্ট। কোনো চেয়ার টেবিল নাই। বদলে অনেকগুলো চৌকি রাখা। আমাকে ঢুকতে দেখে ওয়েটার এগিয়ে এলো- "কি খাবেন স্যার?"
"ডিমভাজি আর তেলছাড়া পরোটা দিয়েন"
"আচ্ছা, আপনি এই চৌকিটার উপরে একটু বসেন, আমি নিয়ে আসছি।"
ঢাকায় খাওয়াদাওয়ার ট্রেন্ড আজকাল দুইদিন পরপর চেঞ্জ হয়। এখন মনে হয় চৌকিতে বসে খাওয়ারই ট্রেন্ড চলতেছে। যাই হোক, আমার খাওয়া হইলেই হইল। তাই এগুলো নিয়ে আর মাথা ঘামালাম না। জুতা মোজা খুলে, হাত মুখ ধুয়ে চৌকিটায় উঠে বসলাম। ওহ... কি যে শান্তি লাগছে.. ওদিকে আস্তে আস্তে বাতাসে ডিমভাজির গন্ধ ভেসে আসতে শুরু করেছে। কি অসাধারণ একটা গন্ধ.. আমার মুখ মুহুর্তে হাসি হাসি হয়ে গেল..চোখ হয়ে গেল আধবোজা। আয়েশ করে চৌকিতে বাল শুয়েই পড়লাম। কি আছে জীবনে?
একটু পর ওয়েটার একটা ট্রলিতে করে বিশাল একটা ডিমভাজি নিয়ে এলো। আট ফুট বাই ৪ ফুট হবে। একেবারে চৌকির সাইজ। আমাকে আর কিছু বলে দিতে হল না। আমি উঠে দাঁড়ালাম। ওয়েটার ডিমভাজিটা চৌকির উপর বিছিয়ে দিল। উফ.. হলদে ফ্লাফি জিনিসটা থেকে কুসুম কুসুম গরম ভাপ আসছে। সাথে মাথা নষ্ট করা গন্ধ।
আমি একটা লাফ দিয়ে চৌকির উপর পড়লাম। ওহ মাই গড। কি আরাম.. উপরে এসির ঠান্ডা বাতাস আর নিচে ডিমভাজির উষ্ণতা। তুলতুলে ওই তোষকটার উপর আমি আরামে এপাশ ওপাশ করতে থাকলাম। ওয়েটার একটা বিশাল পেয়াজের টুকরা দিয়ে গেল আমার মাথার নিচে। আর দুই পায়ের ফাঁকে বিশাল একটা মরিচ। কি বলে যে ওয়েটারকে ধন্যবাদ দিব -আমি ভাষা খুঁজে পেলাম না। এখন জাস্ট একটা কাঁথা দরকার- এক খাবলা ডিমভাজি মাথার পাশ থেকে তুলে নিয়ে মুখে পুড়ে আমি ভাবলাম। "ভাই, পরোটা দিয়েন তাড়াতাড়ি। খিদায় মরে যাচ্ছি.."
"এইত্তো স্যার, চলে এসেছে" বলে ওয়েটার ইংগিত করলো আমার পায়ের দিকে। সেখানে আরেকজন ওয়েটার একটা ভাঁজ করা পরোটা দু'হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমার দিকে একটা হাসি দিয়ে তিনি পরোটার ভাঁজ খুলতে লাগলেন। অনেকটা রুমালি রুটির মত পরোটাটা। শুধু সাইজটা ডিফ্রেন্ট- আট ফুট বাই ছয় ফুট।
নতুন ওয়েটার আমাকে পরোটা দিয়ে ঢেকে দিলেন। ওফ ম্যান.. কি ওম.. আমি গলা পর্যন্ত টেনে নিলাম পরোটাটা। ডানে-বামে পেঁচিয়ে গায়ের নিচে ঢুকিয়ে এক্কেবারে মমি স্টাইলে শুয়ে পড়লাম।
"এনজয় ইয়োর লাঞ্চ, স্যার" বলে ওয়েটার দুজন রুপ থেকে বেড়িয়ে গেল।
আর আমি কুটকুট করে গলার কাছ থেকে এক কামড় কাঁথা আর বালিশের নিচ থেকে এক খাবলা করে তোষক মুখে পুড়ে দিতে থাকলাম... আর মাঝে মাঝে কোলবালিশ টা টেনে নিয়ে এক কামড় কাঁচা মরিচ।
উফফফ.. অমৃত।
আমার মুখ এখনো স্মাইলি হয়ে আছে..
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৪৫