"দেখেন, আমার বাপ মা কিন্তু আমাকে দুনিয়ায় আনার আগে কোন কন্ট্রাক্ট সাইন করায় নেয় নাই। স্কুল, কলেজ, ব্যবসা, চাকরি,বিয়ে - সবখানে আগে কন্ট্রাক্ট সাইন হয়, দুই পক্ষ সব টার্মস এন্ড কন্ডিশন ক্লীয়ার করে নেয় । কিন্তু এই যে দুনিয়া- এই বালের দুনিয়া- এইটার নিয়ম কানুন আমাকে না জানিয়েই এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। এটা কি কোনও এংগেল থেকে এথিকাল?"
"ভাই, আপনি বলতে চাচ্ছেন টা কি?" লোকটা কেরুর নেশায় প্রায় বেহুঁশ...
"আমি বলতে চাচ্ছি যে যেহুতু তারা নিজেরা আমাকে নিয়ে আসছে কিছু না জানায়- দে হ্যাভ আ রেস্পন্সিবিলিটি টু লুক আফটার। কিন্তু আমার কোন রেস্পন্সিবিলিটি নাই। আমি কোন কমিটমেন্টে যাই নাই, ইভেন তাদের তো তাদের, আমার নিজের অস্তিত্বের পেছনেও আমার হাত নাই । এখন "ভালবাসা" মালোবাসা থেকে যদি আমি তাদের দেখভাল করি- সেটা এপ্রেশিয়েবল। কিন্তু না করলে সেটাকে কোনভাবেই "খারাপ" বলা সম্ভব না। আর তারা যদি এনাফ ভালবাসা তৈরী করতে না পারে আমার মাঝে- সেটা তাদের ব্যর্থতা। আমার না।" - আমি তার মত টাল নই আজকে। স্মির্নফ আর যাই করুক, মাথা চুদে দেয় না।
লোকটা আরেক পেগ ঢালতে ঢালতে কি যেন বলতে যাচ্ছিল, নাসিবের ইন্টারাপশনে জিনিসটা আর আগালো না-
"এই ব্রো, তুমি এখানে? পুরা বারে খুঁজে বেড়াচ্ছি তখন থেকে..."
"ওহ, সরি ব্রো- আমি ভুলে গেসলাম যে তোমার সাথে আসছি।"
"চোদা খাও তুমি"
"আচ্ছা যাই হোক, মিট মাই- কি বলবো- আ... মাই ফ্রেন্ড - ভাই আপনার নামটাই জানা হয় নাই"
লোকটা এক ঢোকে পুরোটা মেরে দিল এবার- "আমি মুনিফ। বর্তমান জাতির জনক। শোক দিবসে খুব কষ্ট লাগে আমার। তাই শোক পালন করতে এসেছি।"
"আর মাল ছাড়া শোক জমে নাকি ভাই, বলেন?"
মুনিফের পাশের কুতকুতে লোকটা এই ফার্স্ট মুখ খুললো।
"আচ্ছা ভাই,আমার ভাই কোন ঝামেলা করে নাই তো? ও একটু খাইলেই আউলায় যায় আরকি" নাসিব কোন আক্কেলে এই কথাটা বলল আমি বুঝলাম না।
"না না.. আপনার ভাই খুবই জোস। আমরা দুই মিনিটে শোক থেকে জাস্ট শকে চলে গেছি..."
.....
.....
নাসিব আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে শ্যাওড়াপাড়া থেকে কাজীপাড়ার দিকে। আমার আরেক হাতে স্মির্নফের বোতলটা। সামান্য একটু লিকুইড ঝাকি খাচ্ছে সেখানে। মানুষজন বেশ জাজমেন্টাল দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে একটু পরপর- ফার্স্টে বোতলের দিকে, তারপর আমার দিকে।
"সবগুলার মায়েরে চুদি...একটা পার্ফেক্ট মানুষ কেমন হওয়া উচিৎ জানো নাসিব?"
"যা ইচ্ছা বলতে থাকো। জাস্ট থেমে যেও না। হাঁটতে হাঁটতে বলতে থাক।"
"যে কাউকে চুদবে না। কিন্তু সবাইকে চুদবে। ছেলে মেয়ে আকাশ বাতাস গাছ গাছড়া হিজড়া কুমির মুরগী- সব... সব চুদবে এবং এ ব্যাপারে কারো জাজমেন্টকে চুদবে না"
নাসিব চুপচাপ আমাকে টেনে নিয়েই যাচ্ছে।
কিন্তু একটা গরুর সাথে কথা না বলে আমি কিভাবে শিওর হব যে সে আসলেই ব্যপারটা চাচ্ছে? আর শিওর না হয়ে ওর সাথে কিছু করলে তো সেটা রেপও হতে পারে।
শিট ম্যান। তাইলে তো অন্য প্রাণীর সাথে করাটা এথিকাল না। কমিউনিকেশন করা গেলে শুধু তখনই এটা জায়েজ। তারমানে মানুষের বাইরে একমাত্র অপশন হচ্ছে বুদ্ধিমান এলিয়েন। আর ডলফিন।
ডলফিনের স্কিন বেশ আকর্ষণীয়। কিন্তু এলিয়েনের ব্যপারটা বেশী এক্সাইটিং লাগলো আমার। এন্ডলেস পসিবিলিটিস -ইউ নো....
কয়টা স্তন হতে পারে তাদের? এক জোড়া? দুই ডজন?
এমতাবস্থায় হুট করে কোত্থেকে জানি অক্ষর উঁকি দিল -
"এ, সিয়াম ভাই, জাস্ট কথা বললেই কিন্তু হবে না। ম্যাচিউরিটি ম্যাচ করাটাও ইম্পর্ট্যান্ট। একটা গরু অবেক কম বোঝে। তাকে তুমি ভুং চুং বুঝায় পটায় চুদে দিলা- এটা কিন্তু ফেয়ার না। যেই কারনে আঠারো বছরের নিচের কারো সাথে সেক্স করা যায় না, সেই একই কারনে কম বুদ্ধির পশুর সাথেও করা যাবে না"
আরিসসালা.. সেই লজিক তো। আমার কল্পনা থেকে ডলফিনটা হুট করে নাই হয়ে গেল। সেখানে স্থান নিল ৫ স্তন বিশিষ্ট একটা সবুজ প্রাণী। সেই হট। কিন্তু অক্ষর কোত্থেকে আসলো হঠাৎ?
"ভাল বলছো ভাই। কিন্তু তুমি এখানে কোত্থেকে আসলা?"
"কোত্থেকে আসলাম মানে! সেই কালকে থেকেই তো আমরা একসাথে আছি।"
"ওহ... সরি ম্যান। আমি দেখি নাই তোমাকে"
"আমাকে দেখ নাই মানে কি? কালকে এক বিছানায় ঘুমাইলাম, আজকে সকালে তিনজন একসাথে বাসা থেকে বের হয়ে বারে আসলা, এক টেবিলে বসে খাইলাম- এটা কি স্কুলের রি-ইউনিয়ন নাকি যে দেখ নাই?"
আমি খুবই অস্বস্তিতে পড়ে গেলাম। তাড়াতাড়ি একটা এক্সকিউজ দিতে হবে। আমি কন্ঠ্য গম্ভীর করে ওকে বললাম-
"ওহ, ভাই আসলে তুমি অনেক চিকন তো- তাই সবসময় ভালমত দেখা যায় না.."
.......
........
আমি আবার সম্বিত ফিরে পেলাম। নাসিব আমাকে রিকশা থেকে নামতে বলছে। আমি নেমে একটু পাশে গিয়ে বিড়ি ধরালাম। ওদিকে নাসিব রিক্সাওয়ালা মামার সাথে গ্যানজাম করেই যাচ্ছে কি নিয়ে যেন। আবছা আবছা যা কিছু শুনলাম, তা খানিকটা এরকম-
"মামা, পাঁচ টাকা কম আছে। এর বদলে আপনাকে একটা চুমু খাই?"
মামা জায়গায় চোদনা হয়ে গেল। মুখ হা।
"হ্যাঁ, মুখেই - একটা কিস করি? প্লীজ?"
"না না মামা, লাগবে না। থাক"
"আচ্ছা, হাতে চুমু খাই?"
"না না মামা, হাতে ঘাম"
"আরে, ব্যাপার না মামা.."
মামা আর ওকে কথা শেষ করতে দিল না। রিকশা ঘুরায় দৌড়...
নাসিব পাংসু মুখে ফেরত এলো- "মামাটা জানি কেমন.. উইয়ার্ড। চুমু খাইতে চাইলাম- সে উল্টা টাকা না নিয়েই চলে গেল..."
"যাই হোক, আমার ঘুম দরকার। চল বাসায় ঢুকি।"
রাফি দরজা খুললো বেল দেয়ার প্রায় সাথে সাথেই..
"এ মাগী.... আমাকে না বলেই খায়া ফেললা সব?"
"তোর জন্য আনছি একটু- এই নে" -আমি বোতলটা দিতে গিয়ে খেয়াল করলাম সেটা আর আমার হাতে নাই। কই ফেলছি আল্লাহ জানে.."
নাসিব পুরাই ফায়ার এবার- "বাল! আর না হইলেও ১০০০ টাকার মদ ছিল ভিতরে। এগুলা কি যে কর না তুমি...সারাদিন পেইন দিলা আজকে"
"আচ্ছা, বাদ দে। ভাই নাও- দুই টান দাও" - বলে রাফি আমার মুখে একটা দোমড়ানো মোঁচড়ানো সিগারেট চেপে ধরল। আমিও কষে দুইটা টান দিলাম।
এবং সাথে সাথে আমার পৃথিবীটা দুলে উঠলো...
"ফা...ক... এটা কি ছিল?" ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে কোনমতে জিজ্ঞাসা করলাম।
"দেশাল। আজকেই আনছে এক ফ্রেন্ড। অস্থির না?"
"মাদারচোদ, আমার অবস্থা এমনিতেই খারাপ। আসছি একটু ঘুমাইতে আর তুই না বলে গাঁজা খাওয়ায় দিলি? চু...."
আমি আর কথা শেষ করতে পারি না। আমার চোখের সামনে রাফির শরীরটা আস্তে আস্তে পেঁচিয়ে যেতে শুরু করে কেন যেন...
....
.....
রাফি এখন ঘুরছে। স্ট্যান্ডফ্যানের ব্লেডের মত বনবন করে ঘুরছে। রাফির পাশে একটা কমাডো ড্রাগন রাগে ফুঁস ফুঁস করছে - সম্ভবত বোতল হারানোর ক্ষোভে।
হাহাহা.. "ফুসফুস"...
আমি চারদিকে ভাল মত তাকালাম- ছোট্ট একটা গুহা- বাইরে সমুদ্র দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রে অনেকগুলো দ্বীপ- একসাথে বসে গল্প করছে।
আমি প্লেনের মত উড়ে গেলাম দ্বীপগুলোর দিকে। ল্যান্ড করলাম একটার উপর।
"এ ভাই- গায়ের উপরে বসেন ক্যান? আর রাফি, তোর এই ভাইরে আর জীবনে যদি আনছোস বাসায়.. প্রত্যেকদিন একই ক্যাচাল করে.."
আমি আবার উড়াল দিলাম। এবার ল্যান্ড করলাম সমুদ্রের উপর। একটা সীগাল এসে বসল আমার ঘাড়ের উপর। কিন্তু আমি তখন তার ওজন বহন করার মত অবস্থায় ছিলাম না। ধাম করে উল্টে পড়ে গেলাম সাগরে। হাবুডুবু খেতে খেতে তলিয়ে যেতে থাকলাম হালকা নীলের একটা জগতে। সেই নীলের জগতে ডুবে ছিল অনেক অনেক চেনা মুখ- আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, হান্টার থম্পসন, রবিন উইলিয়ামস, হীথ লেজার, কার্ট কোবেইন, চেস্টার বেনিংটন, জাহিন আহমেদ...
জাহিনের গিটারটা এখনো নীলে ভিজে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়নি- নতুন তো। সে তার গিটারে সুর তুললো- সবকিছু ভেঙে চুড়ে ডুবে যাওয়ার ওই ভয়ংকর সুরটা।
....
.....
হাওয়া মানে তোমারই নামে নিরব ডুবতে থাকা..
হাওয়া মানে তোমারই নামে নিরব শুণ্যে চোখ রাখা..
হাওয়া মানে তোমারই নামে নিরব ডুবতে থাকা..
হাওয়া মানে তোমারই নামে নিরব শুণ্যে চোখ রাখা..
এ হে হে হে আ হা হা হা... একা থাকা...
আ হা আ হা.. আ হা আ হা হা... ডুবতে থাকা...
....
.....
হঠাৎ একটা বিকিনি পরা ডলফিন এসে আমার হাত ধরল তখন- "মিসড মি?"
আমি ডলফিনটাকে দু পায়ের ফাঁকে টেনে নিয়ে তার ব্রায়ের ফিতাটা খুলতে শুরু করলাম..
...
পেছনে গিটারটা বেজেই চলছে...
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১১:৩১