পাথরগুলো একেকটা আধমণি। আকৃতিও দানবিক। পাঁচ'ছ জন লোককে দেখলাম ওগুলো হাতে নিয়ে রক্তাক্ত লোকটাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। আর বাউণ্ডারির বাহিরে অনেক লোক জড় হয়েছে ধর্ষণকারীর শাস্তি প্রত্যক্ষ করতে।
থ্যাঁতলানো-রক্তাক্ত শরীরে লোকটা যেই দাঁড়াতে যায় ওমনি বিশালায়তনের পাথরগুলো সজোরে মারা হয় লোকটার উপর। এমনি ভাবে ক্ষত-বিক্ষত, থ্যাঁতলানো শরীর নিয়ে প্রাণবায়ু ত্যাগ করে লোকটা।
শাস্তিটার নাম রজম। শরীয়াহ আইনে বিবাহিত লোক 'যেনা' কিংবা যেকেউ 'ধর্ষণ' করলে তাকে এমনিভাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
ভিডিওটা দেখলাম ইয়্যুটিউবে। সম্ভবত সৌদির। আগে মনে করতাম ছোটখাট পাথর নিক্ষেপ করা হয়।
এই শাস্তিটার ব্যাপারে আমি আমার পরিচিত অনেককেই জিজ্ঞাসা করেছি তাদের মতামত জানতে। অধিকাংশই সমর্থন করেনা এত নির্মম শাস্তি।
বাংলাদেশ সরকারও করেনা। 'রজম' বহুদূর কিছুদিন আগে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছিল সেটাও বাতিল করেছে সরকার।
ফলাফল? মাইক্রোবাসে পাঁচজন মিলে এক মেয়েকে ধর্ষণ। কথাটা শুনতে খুব সহজ লাগছে। ধর্ষণই তো! মন্ত্রী মহোদয়ের ভাষায় 'দুষ্টুমি'।
ধর্ষণের পর যদি ভিকটিমকে স্বচক্ষে দেখতেন আর ভিকটিম যদি আপনার ছোটবোন, স্ত্রী বা মেয়ে হত তাহলে বোধয় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়তেন। এরপর, যদি আপনাকে 'রজম' এর ব্যাপারে মতামত দিতে বলতাম সম্ভবত আপনি বিপক্ষে বলতে পারতেন না।
শাস্তিটার প্রত্যক্ষদ্রষ্টা ধর্ষণ করা বহুদূর ধর্ষণের চিন্তা মনে আনতেও একবার হার্ট অ্যাটাক করবে।
ধর্ষণের শাস্তি চেয়ে ব্যানার-বিলবোর্ড হাতে ঘন্টাখানেক দাঁড়িয়ে থেকে আঁইঠাকলাটাও কোনদিন হাসিল হয় নাই। ধর্ষণের হারও কমে নাই। কমবেও না।
শরীয়াহ আইন অ্যাপ্লাই করুন, ফলাফল নগদে দেখুন। মোবাইলে ড্যাটা থাকলে দেখে নিন ধর্ষণের লোয়েস্ট রেট শরীয়াহ শাসিত সৌদিতে নাকি বাহাত্তরের সংবিধান শাসিত বাংলাদেশে?
এরপরেও যদি ধর্ষণকারীকে মানুষ বিবেচনা করে আপনার মানবতা উথলে ওঠে আর শরীয়াহ আইনকে বর্বর বলে মনে হয়, then you or your sister deserves to be raped.
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১১:০৮