এতগুলো মানুষ সমূদ্রে ভাসছে। তাদের কাছে খাবার নেই। সীমিত খাবারের দখল নিয়ে নিজেরা মারামারি করে মরছে; না খেয়ে মরছে, পানির অভাবে নিজের মূত্রপান করতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের সবাই আবার মুসলমান। এই মুসলমানদের প্রায় অর্ধেকই বাংলাদেশের নাগরিক; বাকী অর্ধেক বার্মার আরাকান থেকে বিতাড়িত; যাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দেবে না।
এই আট হাজার মানুষ ভাসছে থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার আর বার্মার সমূদ্র উপকূলে। থাইল্যান্ডের বনে-জঙ্গলে মিলছে এই মানুষদের একটি অংশের গণকবর! মুসলমান দেশ হয়েও মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়া এই মানুষগুলোর জীবন রক্ষার কোন ব্যবস্থা করবেনা, বরং তারা তাদের জেলেদের হুমকী দিয়েছে যে, এই মূমূর্ষ মানুষদের সহায়তা করলে তাদের শাস্তি দেয়া হবে!
বাংলাদেশের সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেবে না; যদিও তাদের পূর্ব পুরুষরা এক সময় বাংলাদেশ থেকেই বার্মায় গিয়েছিল। কিন্তু ওখানে যে প্রায় অর্ধেক বাংলাদেশী আছে, তাদের প্রতি কী বাংলাদেশ সরকারের কোন দায়িত্ব-কর্তব্য নেই? নৌবাহিনীর জাহাজ পাঠিয়ে নিজের দেশের ঐ হতভাগ্য মানুষগুলোকে উদ্ধার করে আনতে কী সমস্যা?
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, এই হতভাগ্য মানুষগুলোকে রক্ষায় এগিয়ে এসেছে একটি অমুসলিম দেশ ফিলিপাইন।
তারচেয়ে বড় আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, আওয়ামী লীগের পথ অনুসরণ করে এই হতভাগ্য 'বাংলাদেশী' এবং 'মুসলমান'দের উদ্ধারের বিষয়ে রহস্যজনক নীরবতা পালন করে চলেছে 'বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ'এ বিশ্বাসী বিএনপি আর 'ইসলাম'পন্থী দল জামায়াতে ইসলামী।