চাণক্য ওরফে বিষ্ণুগুপ্ত ওরফে কৌটিল্য ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় দার্শনিক এবং মৌর্য্য বংশের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের প্রধানমন্ত্রী। চাণক্য নামটি খুব সম্ভবত তাঁর পিতার নাম থেকে এসেছে, চণকের পুত্র- চাণক্য। বিষ্ণুগুপ্ত সম্ভবত জন্মসূত্রে পাওয়া নাম এবং কৌটিল্য খুব সম্ভবত উপাধি কিংবা পদবি।
তৎকালিন সময়ে বাংলা-বিহার এবং তৎসংলগ্ন অঞ্চলের শাসন ছিল নন্দ বংশীয় রাজাদের হাতে। জৈন বর্ণনা অনুযায়ী নন্দ বংশের শেষ রাজা সুমালী নন্দ ওরফে ধননন্দ চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য্যের পিতা সর্বতসিদ্ধি মৌর্য্যকে হত্যা করেন। সেই থেকে মৌর্য্য-নন্দ যুদ্ধের সূত্রপাত।
চাণক্যের প্রথম জীবন এবং চন্দ্রগুপ্তের সাথে পরিচয়ের প্রায় পুরোটাই ধোঁয়াশাচ্ছন্ন। অধিকাংশ বর্ণনাই লীজেন্ডারি এবং সত্য নিরুপণ করা দূরহ। কিছু বর্ণনা অনুযায়ী, জীবনের কোন এক পর্যায়ে চাণক্য এবং চন্দ্রগুপ্ত উভয়েই একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন এবং পরিচিত হন। অন্যান্য বর্ণনা অনুযায়ী চাণক্য ও চন্দ্রগুপ্তের প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে জঙ্গলে, যখন চাণক্য পলায়নরত। তবে সব বর্ণনাতেই কমন হল - ধননন্দ চাণক্যকে অপমান করেছিলেন।
চাণক্যের শ্বদন্ত ছিল এবং সেই সময়ে এইরূপ দাঁত রাজকীয় লক্ষণ বলে চিহ্নিত করা হোত। চাণক্য তাঁর এই দাঁত ভেঙে ফেলেন। চাণক্য ছিলেন কালো, ক্ষীণদেহী এবং তাঁর এক পা সম্ভবত কিছুটা বাঁকা ছিল। সর্বোপরি চাণক্য ছিলেন বেশ কুৎসিত। ধননন্দ একদা পিতার শ্রাদ্ধ উপলক্ষ্যে দানসভা করছিলেন। সেই সভায় চাণক্য দান গ্রহণ করতে আসেন। অন্য বর্ণনা অনুযায়ী, ধননন্দের মন্ত্রী শকট শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য চাণক্যকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসেন। সে যাই হোক, চাণক্যের কুৎসিত চেহারা দেখে ধননন্দ তাকে উপহাস করেন এবং অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেন। অপমানিত হয়ে চাণক্য তার পৈতা ছিঁড়ে ধননন্দকে অভিশাপ দেন। এতে ধননন্দ ক্রুদ্ধ হয়ে চাণক্যকে মৃত্যুদণ্ড দেন। চাণক্য ধননন্দের ছেলে পব্যতের সহযোগীতায় পালাতে সক্ষম হন। শোনা যায় পব্যত তখন পিতাকে সরিয়ে নিজে সিংহাসনে বসার পরিকল্পনা করছিল।
সে যাই হোক, চাণক্য পালিয়ে বনে চলে যান ও সেখানে বালক চন্দ্রগুপ্তের সাথে দেখা হয়। চাণক্য চন্দ্রগুপ্তের আচরণে মুগ্ধ হন। লীজেন্ড অনুযায়ী - চাণক্যের হাতে তখন ধননন্দের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর জন্য দুইটি অপশন - পব্যত আর চন্দ্রগুপ্ত। তাই তিনি একটি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। পব্যত ও চন্দ্রগুপ্ত উভয়কে তিনি একটি নেকলেস উপহার দেন। এরপর একদিন চন্দ্রগুপ্ত যখন ঘুমন্ত তখন পব্যতকে বলেন চন্দ্রগুপ্তের নেকলেসটি এমন ভাবে খুলে আনতে যেন চন্দ্রগুপ্তের ঘুম না ভাঙে এবং নেকলেসটিও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। পব্যত ব্যর্থ হন। অনুরূপ আদেশ চন্দ্রগুপ্তকে দিলে চন্দ্রগুপ্ত এক কোপে ঘুমন্ত পব্যতের মাথা কেটে ফেলেন ও নেকলেস এনে গুরুর কাছে দেন। সংগত কারণেই এই গল্প বিশ্বাস করা শক্ত। পব্যত চন্দ্রগুপ্তের হাতে নিহত হয়েছিলেন এই সম্ভাবনা প্রবল, তবে নানা অসংগতির জন্য এইরূপে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন তোলা যায়।
সে যাই হোক, চন্দ্রগুপ্ত চাণক্যের সহোযোগীতায় ধননন্দকে পরাজিত করেন এবং সূচনা করেন মৌর্য্য রাজবংশ। এই সেই ধননন্দ যার সামরিক শক্তি দেখে দিগবিজয়ী আলেক্সান্ডার বিপাশা নদীর তীর থেকেই হতাশ হয়ে ফেরৎ গিয়েছিলেন। মৌর্য্য সাম্রাজ্য আজ পর্যন্ত ভারতের বুকে সর্ববৃহৎ সাম্রাজ্য - এমনকি ব্রিটিশ শাসিত ভারতের চেয়েও বড়। চাণক্য ব্যক্তি জীবনে খুবই সাধাসসিধে জীবন - যাপন করতেন। মৌর্য্য সাম্রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হয়েও তিনি কুঁড়েঘরে বাস করতেন বলে জানা যায়।
চাণক্য মূলত বিখ্যাত তাঁর রচিত অর্থশাস্ত্রের জন্য। এই বইয়ের জন্য অনেকে তাঁকে পলিটিকাল ইকোনোমির জনক হিসেবেও চিহ্নিত করেন। এই লেখায় চাণক্যের বিভিন্ন শ্লোক, মূলত ন্যায় শাস্ত্র হতে নেওয়া, সন্নিবেশিত করা হল।
শ্লোকগুলো ব্লগ ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট হতে সংগৃহীত।
১। বিদ্বান ও রাজা কখনই সমান নহেন। রাজা নিজ দেশেই পূজা পাইয়া থাকেন, কিন্তু বিদ্বান সকল স্থানেই পূজা পান। রাজা অপেক্ষা বিদ্বানই বড়।
২। উচ্চকূলে জন্মিয়াও নির্গুণ হইলে কোন লাভ হয় না, অর্থাৎ কোথাও সে আদর পায় না, কিন্তু নীচবংশে জন্মিয়া শাস্ত্রজ্ঞান লাভ করিলে দেবতারাও সম্মান করিয়া থাকেন। লোকসমাজে তো অবশ্যই আদরণীয় হইয়া থাকে।
৩। শিমুল ফুল গন্ধবিহীন বলিয়া সুন্দর হইলেও তাহাকে কেহই আদর করে না, সেইরূপ উচ্চবংশজাত সুন্দর পুরুষ জ্ঞানহীন হইলে তাহাকেও কেহ যত্ন করে না।
৪। বিদ্যাহীনের জীবনে কোন ফল নাই, মিত্রহীনের পক্ষে সকল দিক শূন্যময়, পুত্রহীনের গৃহই শূন্য, দরিদ্রের পক্ষে জগৎই শূন্য।
৫। বিদ্যা কামধেনুর ন্যায়, অর্থাৎ সব সময় ঈপ্সিত ফল প্রদান করিয়া থাকে। বিদ্যা মাতার ন্যায় বিদেশে পালন করে। বিদ্যা অতি গুপ্তধন, তাহাকে কেহই চক্ষে দেখিতে পায় না।
৬। জ্ঞাতিরা ইহা ভাগ করিয়া লইতে সমর্থ হয় না; চোরও চুরি করিয়া নিতে পারে না। বিদ্যা দানে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না বরং বর্দ্ধিতই হয়, অতএব বিদ্যাই শ্রেষ্ঠ ধন।
৭। পণ্ডিতের সকলই গুণ, মুর্খের সকলই দোষ। সেইহেতু হাজার হাজার মুর্খ অপেক্ষা একজন পণ্ডিত ভাল।
৮। ফলযুক্ত বৃক্ষ ফলভারে নত হয়; গুণিগণও নিজগুণে নত হইয়া থাকেন, কিন্তু শুষ্ক কাষ্ঠ ও মুর্খ ভাঙ্গিয়া যাইবে, নত হইবে না।
৯। যিনি পরস্ত্রীকে নিজের মায়ের মত জ্ঞান করেন এবং পরের জিনিসকে ঢিলের মত তুচ্ছজ্ঞান করেন ও সকল প্রাণীকেই নিজের মত মনে করেন, তিনিই প্রকৃত পণ্ডিত।
১০। শত মুর্খ পুত্র অপেক্ষা একটি গুণবান পুত্রও বরং ভাল অগণিত তারাগণ অন্ধকার দূর করিতে সমর্থ হয় না, কিন্তু এক চন্দ্র জগতের অন্ধকার দূর করে।
১. অকর্মারা সদাই ক্ষুধার্ত।
২. অকৃতজ্ঞের নরক বাস হয়। ৩. অখণ্ডিত রত্ন মেলে না।
৪. অতিদর্পে লঙ্কার পতন ঘটেছে, অতিমানে কৌরবদের পতন ঘটেছে, অতিদানে বালির পাতাল বাস ঘটেছে, অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ।
৫. অতি পরিচয়ে দোষ আর ঢাকা থাকে না।
৬. অতিরিক্ত ভার পুরুষকে অবসন্ন করে দেয়।
৭. অধমেরা ধন চায়, মধ্যমেরা ধন ও মান চায়। উত্তমেরা শুধু মান চায়। মানই মহতে ধন।
৮. অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না।
৯. অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না, মলয়-পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
১০. অন্যে যার গুণগান করে সে নির্গুণ হলেও গুণী। নিজের গুণগান নিজে করলে ইন্দ্রও ছোট হয়ে যান।
১১. অবহেলায় কর্মনাশ হয়, যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়, যাচ্ঞায় সম্মান নাশ হয়, দারিদ্র্যে হয় বুদ্ধি নাশ।
১২. অবিশ্বস্তকে বিশ্বাস করবে না, বন্ধুকেও বিশ্বাস করবে না, বন্ধু যদি কখনও ক্রুদ্ধ হয়, সমস্ত গুপ্তকথা প্রকাশ করে দিতে পারে।
১৩. অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ, এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য।
১৪. অমৃত ও বিষ উভয়েরই আকর হল জিভ।
১৫. অর্থলাভ জীবন ধারণের জন্য।
১৬. অর্থলাভের বাসনা কুকাজে সিদ্ধ হয় না।
১৭. অর্থ যার আছে সে মিত্র, স্বজন, সংসারে পুরুষ, সে-ই পণ্ডিত।
১৮. অসতর্ক লোকের প্রায় সকল কাজই সমুদ্রে বিদীর্ণ জলযানের মতো নিশ্চিত বিনষ্ট হয়।
১৯. অহংকারের মতো শত্রু নেই।
২০. আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়, কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতির কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়।
২১. আদর দেওয়ার অনেক দোষ, শাসন করার অনেক গুণ, তাই পুত্রকে ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার, আদর দেওয়া নয়।
২২. আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রয়গুলির অসংযম, তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ- যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যাক।
২৩. আপন চরিত্র কখনও দূষিত করবে না।
২৪. আহারের সংস্থান ও আহারের শক্তি, রমণীয় পত্নী ও রতিশক্তি, ঐশ্বর্য ও দানশক্তি- এসব অল্প তপস্যার ফল নয়।
২৫. আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়, কিন্তু সামনে ভালো কথা বলে, উপরে দুধ আর ভিতরে বিষ কলসির মতো, তাকে পরিত্যাগ করা উচিত।
২৬. আয়ু, কর্ম, ধন, বিদ্যা ও মৃত্যু- মানুষ মাতৃগর্ভে থাকাকালে এই পাঁচটি তাদের জন্য নির্ধারিত হয়ে যায়।
২৭. ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়।
২৮. ইন্দ্রের মন্ত্রিপরিষদ হল সহস্র ঋষি, ওই সহস্র ঋষিই তাঁর চোখ। তাই দুটিমাত্র চোখ থাকলেও তাঁকে সহস্রা বলা হয়।
২৯. উপায়জ্ঞ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য।
৩০. উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে সে-ই বন্ধু।
৩১. ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।
৩২. ঋণকারী পিতা, দুঃশীলা মা, রূপবতী স্ত্রী, মূর্খ পুত্র- এরা সকলেই শত্রু।
৩৩. একই জিনিস কিন্তু, শব কামিনী ও মাংস- এই তিনটি জিনিসকে যোগী, কামী ও কুকুর তিনভাবে দেখে।
৩৪. একটা কাজ শেষ করে পরবর্তী কাজ ধরতে বেশি দেরি করা উচিত নয়।
৩৫. একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
৩৬. একটি কুবৃক্ষের কোটরের আগুন থেকে যেমন সমস্ত বন ভস্মীভূত হয়, তেমনি একটি কুপুত্রের দ্বারাও বংশ দগ্ধ হয়।
৩৭. একটি গাছে ছিল নানা রঙের পাখিরা, ভোরের বেলায় তারা দশ দিকে উড়ে গেল এতে দুঃখের কি আছে?
৩৮. একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কূল ধন্য হয়।
৩৯. একবার বললেই যিনি বুঝে নিতে পারেন, যাঁর তাড়াতাড়ি হাত চলে, যাঁর হস্তাক্ষর সুন্দর এবং সর্বশাস্ত্রে যিনি সমদৃষ্টি তিনিই যথার্থ লেখক হতে পারেন।
৪০. একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভালো। একটি চন্দ্রই অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না।
৪১. একা একা তপস্যা, দুইয়ে মিলে পাঠ, তিনে মিলে গান, চারে মিলে ভ্রমণ, আর পাঁচে মিলে (করলে) ক্ষেতের কাজ। বহুতে মিলে করা চলে যুদ্ধ। ৪২. একা চাকা চলে না।
৪৩. এমনিতে কেউ কারও বন্ধু নয়, কেউ কারও শত্রু নয়, কারণেই শত্রু-মিত্র হয়ে থাকে।
১. খন্তা দিয়ে খুঁড়ে খুঁড়ে মাটি থেকে জল পাওয়া যায়, সেই রকম যে শুশ্রূষু সে গুরুগত বিদ্যাকে লাভ করে।
২. খারাপ সময় যতণ যাচ্ছে ততোণ শত্রুকে কাঁধে করে রাখবে, সুসময় এলেই পাথরের আঘাতে ঘটের মতো সে সখ্য ভেঙে ফেলবে।
৩. খুব বেশি কাছে আসায় হানির সম্ভাবনা, খুব দূরে থাকলেও ফল নেই। রাজা, আগুন, আর স্ত্রী এদের মধ্যপন্থায় সেবা করা উচিত।
৪. খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয়।
৫. গাছের ভয় বাতাসে, পদ্মের ভয় শিশিরে, পর্বতের ভয় বর্জ্রে, সজ্জনের ভয় দুর্জনে।
৬. গুণবানকে আশ্রয় দিয়ে নির্গুণও গুণী হয়।
৭. গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না। নীচকূলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
৮. গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
৯. গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভালো, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই।
১০. ঘরকুণোর বিদ্যা হয় না, মাংসখোরের দয়া হয় না, লোলুপের সত্যবোধ নেই, যে স্ত্রৈণ তার তেমনি পবিত্রতা নেই।
৭৩. চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না। গজরাজ বৃদ্ধ হলেও বপ্রক্রীড়া ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্র গুণ ত্যাগ করে না।
৭৪. চিন্তাই মানুষের জ্বর, বস্ত্রদের জ্বর হল রোদ, স্ত্রীলোকের জ্বর হল পতির অপ্রিয়তা, ঘোড়াদের জ্বর হল মৈথুন।
৭৫. ছয় কানে (অর্থাৎ তিন জনের কানে) গেলে গুপ্তকথা প্রকাশ হয়ে যায়। ৭৬. ছেলের প্রশংসা করবে না।
৭৭. জগতে ত্রুটিহীন কাজ দুর্লভ।
৭৮. জন্মান্ধ দেখতে পায় না, কামান্ধও দেখতে পায় না, গর্বোদ্ধতও দেখতে পায় না, ধনবানও এদের মতো নিজের দোষ দেখতে পায় না।
৭৯. জরুরি কাজ মন দিয়ে তখুনি করে ফেলা উচিত, সময় মতো না করলে তা কষ্টসাধ্য হয়, অথবা একান্ত অসাধ্য হয়।
৮০. জলে তেল, খলে গোপন কথা, সৎপাত্রে সামান্য দান, প্রাজ্ঞে শাস্ত্র আপনা থেকেই বিস্তার লাভ করে। বস্তুর স্বভাবধর্ম অনুযায়ীই তা হয়ে থাকে।
১৪৮. ফল ও ছায়াযুক্ত বড়ো গাছকে আশ্রয় করতে হয়। ফল যদি দৈবাৎ না-ও পাওয়া যায়, ছায়া তো আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
১৪৯. বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
১৫০. বলবানের সঙ্গে যুদ্ধ হল হাতির পায়ের সঙ্গে যুদ্ধের মতো অর্থাৎ দলিত মথিত হয়ে যেতে হবে।
১৫১. বস্ত্রহীন অলংকার, ঘৃতহীন ভোজন, স্তনহীন নারী এবং বিদ্যাহীন জীবন ব্যর্থ।
১৫২. বাঘ আর হাতিতে পূর্ণ বন বরং ভালো, তেমনি ভালো বনের মধ্যে ঘর, সেখানে পাকা ফল আর জল তো খাওয়া চলে, তৃণ শয্যায় শতচ্ছিন্ন কম্বল থাকলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু স্বজনদের মধ্যে ধনহীন জীবন বৃথা।
১৫৩. বার্ধক্যে পত্নী বিয়োগ, জ্ঞাতির হাতে ধন, এবং পরাধীন ভোজন- পুরুষের এই তিন বিড়ম্বনা।
১৫৪. বালকও যদি যুক্তিপূর্ণ কিছু বলে তবে তা মন দিয়ে শুনবে।
১৫৫. বিবেকবান ব্যক্তিকে আশ্রয় করে গুণেরা আরও মনোজ্ঞ হয়ে ওঠে, যেমন স্বর্ণখচিত হয়ে রত্ন আরও শোভা পায়।
১৫৬. বিক্রমই রাজাদের সম্পদ।
১৫৭. বিচক্ষণ ব্যক্তি বর্জন করবে- কুদেশ, কুবৃত্তি, কুভার্যা, কুনদী, কুদ্রব্য ও কুভোজন।
১৫৮. বিদ্বান সকল গুণের আধার, আর অজ্ঞজনের কেবলই দোষ। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
১৫৯. বিদ্যাকে ধরে থাকে অভ্যাস, কুলকে ধরে থাকে চরিত্র। গুণেই শিষ্টের পরিচয়। ক্রোধের প্রকাশ দৃষ্টিতে।
১৬০. বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
১৬১. বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ- তা দিয়ে সে গুহ্য অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
১৬২. বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
১৬৩. বিদ্যার মতো বন্ধু নাই, ব্যাধির মতো শত্রু নাই। সন্তানের মতো স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
১৬৪. বিদ্যার্থী, সেবক, পথিক, ক্ষুধার্ত, ভয়ার্ত, ভাণ্ডারী ও দ্বারপাল- এই সাতজন ঘুমিয়ে থাকলে তাদের জাগিয়ে দেবে।
১৪৮. ফল ও ছায়াযুক্ত বড়ো গাছকে আশ্রয় করতে হয়। ফল যদি দৈবাৎ না-ও পাওয়া যায়, ছায়া তো আর কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।
১৪৯. বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
১৫০. বলবানের সঙ্গে যুদ্ধ হল হাতির পায়ের সঙ্গে যুদ্ধের মতো অর্থাৎ দলিত মথিত হয়ে যেতে হবে।
১৫১. বস্ত্রহীন অলংকার, ঘৃতহীন ভোজন, স্তনহীন নারী এবং বিদ্যাহীন জীবন ব্যর্থ।
১৫২. বাঘ আর হাতিতে পূর্ণ বন বরং ভালো, তেমনি ভালো বনের মধ্যে ঘর, সেখানে পাকা ফল আর জল তো খাওয়া চলে, তৃণ শয্যায় শতচ্ছিন্ন কম্বল থাকলেও ক্ষতি নেই, কিন্তু স্বজনদের মধ্যে ধনহীন জীবন বৃথা।
১৫৩. বার্ধক্যে পত্নী বিয়োগ, জ্ঞাতির হাতে ধন, এবং পরাধীন ভোজন- পুরুষের এই তিন বিড়ম্বনা।
১৫৪. বালকও যদি যুক্তিপূর্ণ কিছু বলে তবে তা মন দিয়ে শুনবে।
১৫৫. বিবেকবান ব্যক্তিকে আশ্রয় করে গুণেরা আরও মনোজ্ঞ হয়ে ওঠে, যেমন স্বর্ণখচিত হয়ে রত্ন আরও শোভা পায়।
১৫৬. বিক্রমই রাজাদের সম্পদ।
১৫৭. বিচক্ষণ ব্যক্তি বর্জন করবে- কুদেশ, কুবৃত্তি, কুভার্যা, কুনদী, কুদ্রব্য ও কুভোজন।
১৫৮. বিদ্বান সকল গুণের আধার, আর অজ্ঞজনের কেবলই দোষ। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
১৫৯. বিদ্যাকে ধরে থাকে অভ্যাস, কুলকে ধরে থাকে চরিত্র। গুণেই শিষ্টের পরিচয়। ক্রোধের প্রকাশ দৃষ্টিতে।
১৬০. বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
১৬১. বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ- তা দিয়ে সে গুহ্য অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
১৬২. বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
১৬৩. বিদ্যার মতো বন্ধু নাই, ব্যাধির মতো শত্রু নাই। সন্তানের মতো স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
১৬৪. বিদ্যার্থী, সেবক, পথিক, ক্ষুধার্ত, ভয়ার্ত, ভাণ্ডারী ও দ্বারপাল- এই সাতজন ঘুমিয়ে থাকলে তাদের জাগিয়ে দেবে।
১৮৪. ভবিতব্যতা যেমন বুদ্ধিও ঠিক তেমনি হয়, কর্মধারাও তেমনি, সহায়তাও তেমনি।
১৮৫. ভাতের চেয়ে দশগুণ পিঠে, পিঠের চেয়ে দশগুণ দুধ, দুধের চেয়ে দশগুণ মাংস, মাংসের চেয়ে দশগুণ ঘি (পুষ্টি দেয়)।
১৮৬. ভৃত্যকে পরীক্ষা করবে কাজে নিযুক্ত করে, কোনও অঘটন ঘটলে চিনবে স্বজনকে, বিপদে চিনবে বন্ধুকে, পত্নীকে চিনবে ধনক্ষয় হলে।
১৮৭. ভেবেচিন্তে যে কাজ করে, তার শ্রী চিরস্থায়ী।
১৮৮. ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়।
১৮৯. ভ্রমণে রাজা, ব্রাহ্মণ, যোগীর সম্মান, কিন্তু এই ভ্রমণেই নারীর বিনাশ।
১৯০. মনের বাসনা কার সবটা পূর্ণ হয়? সমস্তই দৈবের অধীন, তাই সন্তোষকে আশ্রয় করাই শ্রেয়।
১৯১. মনের সংকল্প প্রকাশ করবে না, সংকল্পিত কাজের কথা অন্যে জানতে পারলে সে কাজ সফল হয় না।
১৯২. মাংসাশী, মদ্যপায়ী এবং অরজ্ঞানহীন মূর্খ- এই সব পুরুষাকার পশুর দ্বারা এই পৃথিবী ভারাক্রান্ত।
১৯৩. মিত ভোজনেই স্বাস্থ্যলাভ হয়।
১৯৪. মূর্খ শিষ্যের উপদেশে, দুষ্ট স্ত্রীকে পালনে এবং শত্রুদের কূটচক্রে পণ্ডিত বিনষ্ট হয়।
১৯৫. মূর্খত্ব কষ্টকর, যৌবন কষ্টকর সন্দেহ নেই, কিন্তু পরগৃহে বাস সব চেয়ে কষ্টকর।
১৯৬. মূর্খের কাজ অবাঞ্ছিত হবে, তা নিয়ে বেশি ভেবে লাভ নেই।
১৯৭. মৃগয়ায় যে আসক্ত তার ধর্ম ও অর্থ দুই-ই নষ্ট হয়।
১৯৮. মেঘের মতো জল নাই, আত্মার মতো বল নাই, চোখের মতো তেজ নাই, অন্নের মতো প্রিয় নাই।
১৯৯. মেধাবী এবং বাকপটু, প্রাজ্ঞ, পরের মন বোঝায় যিনি দক্ষ, যিনি ধীর এবং ঠিক যা বলা হয়েছে তা-ই বলেন, তিনিই দূত হবার যোগ্য।
★ 'যে রাজা শত্রুর গতিবিধি সম্পর্কে ধারণা করতে পারে না এবং শুধু অভিযোগ করে যে তার পিঠে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে, তাকে সিংহাসনচ্যুত করা উচিত।’
★ 'সকল উদ্যোগ নির্ভর করে অর্থের উপর। সে জন্য সবচেয়ে অধিক মনোযোগ দেওয়া উচিত খাজাঞ্চিখানার দিকে।
★ জিহ্বার ডগায় বিষ রেখে যেমন মধুর আস্বাদন করা সম্ভব নয়, তেমনি কোন রাজকর্মচারীর পক্ষে রাজার রাজস্বের সামান্য পরিমাণ না-খেয়ে ফেলার ঘটনা অসম্ভব ব্যাপার। পানির নিচের মাছের গতিবিধি বোঝা যেমন অসম্ভব, রাজকর্মচারীর তহবিল তসরুপ বোঝাও তেমনি অসম্ভব। আকাশের অতি উঁচুতেও পাখির উড্ডয়ন দেখা সম্ভব, কিন্তু রাজকর্মচারীর গোপন কার্যকলাপ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া অসম্ভব।’
★অ
অতি পরিচয়ে দোষ আর ঢাকা থাকে না।
অধমেরা ধন চায়, মধ্যমেরা ধন ও মান চায়। উত্তমেরা শুধু মান চায়। মানই মহতের ধন।
অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না।
অন্তঃসার শূন্যদের উপদেশ দিয়ে কিছু ফল হয় না, মলয়-পর্বতের সংসর্গে বাঁশ চন্দনে পরিণত হয় না।
অবহেলায় কর্মনাশ হয়, যথেচ্ছ ভোজনে কুলনাশ হয়, যাচ্ঞায় সম্মান-নাশ হয়, দারিদ্র্যে বুদ্ধিনাশ হয়।
অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য।
অহংকারের মত শত্রু নেই।
★ আ
আকাশে উড়ন্ত পাখির গতিও জানা যায়, কিন্তু প্রচ্ছন্নপ্রকৃতি-কর্মীর গতিবিধি জানা সম্ভব নয়।
আদর দেওয়ার অনেক দোষ, শাসন করার অনেক গুণ, তাই পুত্র ও শিষ্যকে শাসন করাই দরকার, আদর দেওয়া নয়।
আপদের নিশ্চিত পথ হল ইন্দ্রিয়গুলির অসংযম, তাদের জয় করা হল সম্পদের পথ, যার যেটি ঈপ্সিত সে সেই পথেই যায়।
আড়ালে কাজের বিঘ্ন ঘটায়, কিন্তু সামনে ভাল কথা বলে, যার উপরে মধু কিন্তু অন্তরে বিষ, তাকে পরিত্যাগ করা উচিত।
★ ই
ইন্দ্রিয়ের যে অধীন তার চতুরঙ্গ সেনা থাকলেও সে বিনষ্ট হয়।
★ উ
উপায়জ্ঞ মানুষের কাছে দুঃসাধ্য কাজও সহজসাধ্য।
উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
★ ঋ
ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।
★ এ
একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
একটি কুবৃক্ষের কোটরের আগুন থেকে যেমন সমস্ত বন ভস্মীভূত হয়, তেমনি একটি কুপুত্রের দ্বারাও বংশ দগ্ধ হয়।
একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়।
একশত মূর্খ পুত্রের চেয়ে একটি গুণী পুত্র বরং ভাল। একটি চন্দ্রই অন্ধকার দূর করে, সকল তারা মিলেও তা পারে না।
★ ক
কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
★ খ
খেয়ে যার হজম হয়, ব্যাধি তার দূরে রয়।
★ গ
গুণবানকে আশ্রয় দিলে নির্গুণও গুণী হয়।
গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না। নীচকুলে জন্মেও যদি কেউ শাস্ত্রজ্ঞ হয়, তবে দেবতারাও তাঁকে সম্মান করেন।
গুরু শিষ্যকে যদি একটি অক্ষরও শিক্ষা দেন, তবে পৃথিবীতে এমন কোনও জিনিস নেই, যা দিয়ে সেই শিষ্য গুরুর ঋণ শোধ করতে পারে।
গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভাল, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই।
★ চ
চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না।
★ ত
তিনটি বিষয়ে সন্তোষ বিধেয়: নিজের পত্নীতে, ভোজনে এবং ধনে। কিন্তু অধ্যয়ন, জপ, আর দান এই তিন বিষয়ে যেন কোনও সন্তোষ না থাকে।
★ দ
দারিদ্র্য, রোগ, দুঃখ, বন্ধন এবং বিপদ- সব কিছুই মানুষের নিজেরই অপরাধরূপ বৃক্ষের ফল।
দুর্জনের সংসর্গ ত্যাগ করে সজ্জনের সঙ্গ করবে। অহোরাত্র পুণ্য করবে, সর্বদা নশ্বরতার কথা মনে রাখবে।
দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা, চোরের মিথ্যাই বল।
দুষ্টা স্ত্রী, প্রবঞ্চক বন্ধু, দুর্মুখ ভৃত্য এবং সসর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর দ্বার, এ-বিষয়ে সংশয় নেই।
★ ধ
ধর্মের চেয়ে ব্যবহারই বড়।
★ ন
নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না।
★ প
পরস্ত্রীকে যে মায়ের মত দেখে, অন্যের জিনিসকে যে মূল্যহীন মনে করে এবং সকল জীবকে যে নিজের মত মনে করে, সে-ই যথার্থ জ্ঞানী।
পাপীরা বিক্ষোভের ভয় করে না।
পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে।
পুত্র যদি হয় গুণবান, পিতামাতার কাছে তা স্বর্গ সমান।
পুত্রকে যারা পড়ান না, সেই পিতামাতা তার শত্রু। হাঁসদের মধ্যে বক যেমন শোভা পায় না, সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি শোভা পায় না।
★ ব
বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
বিদ্বান সকল গুণের আধার, অজ্ঞ সকল দোষের আকর। তাই হাজার মূর্খের চেয়ে একজন বিদ্বান অনেক কাম্য।
বিদ্যাবত্তা ও রাজপদ এ-দুটি কখনও সমান হয় না। রাজা কেবল নিজদেশেই সমাদৃত, বিদ্বান সর্বত্র সমাদৃত।
বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ, তা দিয়ে সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
বিনয়ই সকলের ভূষণ।
বিষ থেকেও অমৃত আহরণ করা চলে, মলাদি থেকেও স্বর্ণ আহরণ করা যায়, নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়, নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়।
- ভোগবাসনায় বুদ্ধি আচ্ছন্ন হয়। মিত ভোজনেই স্বাস্থ্যলাভ হয়।
- যারা রূপযৌবনসম্পন্ন এবং উচ্চকুলজাত হয়েও বিদ্যাহীন, তাঁরা সুবাসহীন পলাশ ফুলের মত বেমানান।
- যে অলস, অলব্ধ-লাভ তার হয় না।
- যে গাভী দুধ দেয় না, গর্ভ ধারণও করে না, সে গাভী দিয়ে কী হবে! যে বিদ্বান ও ভক্তিমান নয়, সে পুত্র দিয়ে কী হবে!
- রাতের ভূষণ চাঁদ, নারীর ভূষণ পতি, পৃথিবীর ভূষণ রাজা, কিন্তু বিদ্যা সবার ভূষণ।
- শাস্ত্র অনন্ত, বিদ্যাও প্রচুর। সময় অল্প অথচ বিঘ্ন অনেক। তাই যা সারভূত তারই চর্চা করা উচিত। হাঁস যেমন জল-মিশ্রিত দুধ থেকে শুধু দুধটুকুই তুলে নেয়, তেমনি।
- সত্যবাক্য দুর্লভ, হিতকারী-পুত্র দুর্লভ, সমমনস্কা-পত্নী দুর্লভ, প্রিয়স্বজনও তেমনি দুর্লভ।
- সাপ নিষ্ঠুর খলও নিষ্ঠুর, কিন্তু সাপের চেয়ে খল বেশি নিষ্ঠুর। সাপকে মন্ত্র বা ওষধি দিয়ে বশ করা যায়, কিন্তু খলকে কে বশ করতে পারে?
- সুবেশভূষিত মূর্খকে দূর থেকেই দেখতে ভাল, যতক্ষণ সে কথা না বলে ততক্ষণই তার শোভা, কথা বললেই মূর্খতা প্রকাশ পায়।
- হাতি থেকে একহাজার হাত দূরে, ঘোড়া থেকে একশ হাত দূরে, শৃঙ্গধারী প্রাণী থেকে দশহাত দূরে থাকবে। অনুরূপ দুর্জনের কাছ থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকবে।
- উৎসবে, বিপদে, দুর্ভিক্ষে, শত্রুর সঙ্গে সংগ্রামকালে, রাজদ্বারে এবং শ্মশানে যে সঙ্গে থাকে, সে-ই প্রকৃত বন্ধু।
- ঋণ, অগ্নি ও ব্যাধির শেষ রাখতে নেই, কারণ তারা আবার বেড়ে যেতে পারে।
- একটি দোষ বহু গুণকেও গ্রাস করে।
- একটিমাত্র পুষ্পিত সুগন্ধ বৃক্ষে যেমন সমস্ত বন সুবাসিত হয়, তেমনি একটি সুপুত্রের দ্বারা সমস্ত কুল ধন্য হয়।
- কর্কশ কথা অগ্নিদাহের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
- গুণহীন মানুষ যদি উচ্চ বংশেও জন্মায় তাতে কিছু আসে যায় না।
- গৃহে যার মা নেই, স্ত্রী যার দুর্মুখ তার বনে যাওয়াই ভাল, কারণ তার কাছে বন আর গৃহে কোনও তফাৎ নেই।
- চন্দন তরুকে ছেদন করলেও সে সুগন্ধ ত্যাগ করে না, যন্ত্রে ইক্ষু নিপিষ্ট হলেও মধুরতা ত্যাগ করে না, যে সদ্বংশজাত অবস্থা বিপর্যয়েও সে চরিত্রগুণ ত্যাগ করে না।
- দুর্বলের বল রাজা, শিশুর বল কান্না, মূর্খের বল নীরবতা, চোরের মিথ্যাই বল।
- দুষ্টা স্ত্রী, প্রবঞ্চক বন্ধু, দুর্মুখ ভৃত্য এবং সসর্প-গৃহে বাস মৃত্যুর দ্বার, এ-বিষয়ে সংশয় নেই।
- নানাভাবে শিক্ষা পেলেও দুর্জন সাধু হয় না, নিমগাছ যেমন আমূল জলসিক্ত করে কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখলেও কখনও মধুর হয় না।
- পাঁচ বছর বয়স অবধি পুত্রদের লালন করবে, দশ বছর অবধি তাদের চালনা করবে, ষোল বছরে পড়লে তাদের সঙ্গে বন্ধুর মত আচরণ করবে।
- পুত্রকে যাঁরা পড়ান না, সেই পিতামাতা তার শত্রু।
- হাঁসদের মধ্যে বক যেমন শোভা পায় না, সভার মধ্যে সেই মূর্খও তেমনি শোভা পায় না।
- বইয়ে থাকা বিদ্যা, পরের হাতে থাকা ধন একইরকম। প্রয়োজনকালে তা বিদ্যাই নয়, ধনই নয়।
- বিদ্যা ব্যতীত জীবন ব্যর্থ, কুকুরের লেজ যেমন ব্যর্থ, তা দিয়ে সে গুহ্য-অঙ্গও গোপন করতে পারে না, মশাও তাড়াতে পারে না।
- বিদ্যাভূষিত হলেও দুর্জনকে ত্যাগ করবে, মণিভূষিত হলেও সাপ কি ভয়ঙ্কর নয়?
- বিদ্যার চেয়ে বন্ধু নাই, ব্যাধির চেয়ে শত্রু নাই। সন্তানের চেয়ে স্নেহপাত্র নাই, দৈবের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বল নাই।
- বিষ থেকেও ওষুধ আহরণ করা চলে, মলাদি থেকেও স্বর্ণ আহরণ করা যায়, নীচজাতি থেকেও বিদ্যা আহরণ করা যায়, নীচকুল থেকেও স্ত্রীরত্ন গ্রহণ করা যায়।
- অকর্মারা সদাই ক্ষুধার্ত।
- অনেকে চারটি বেদ এবং ধর্মশাস্ত্র অধ্যয়ন করলেও আত্মাকে জানে না, হাতা যেমন রন্ধন-রস জানে না।
- অভ্যাসহীন বিদ্যা, অজীর্ণে ভোজন, দরিদ্রের সভায় বা মজলিশে কালক্ষেপ, এবং বৃদ্ধের তরুণী ভার্যা বিষতুল্য।
- একা একা তপস্যা, দুইয়ে মিলে পাঠ, তিনে মিলে গান, চারে মিলে ভ্রমণ, আর পাঁচে মিলে (করলে) ক্ষেতের কাজ। বহুতে মিলে যুদ্ধ।
- এমনিতে কেউ কারও বন্ধু নয়, কেউ কারও শত্রু নয়, কারণেই শত্রু-মিত্র হয়ে থাকে।
- কবিরা কি না দেখে, স্ত্রীলোকেরা কি না করে, মদ্যপেরা কি না কল্পনা করে, কাকেরা কি না খায়?
- কুয়োর জল, বটের ছায়া, যৌবনবতী স্ত্রী এবং ইটের তৈরি বাড়ি শীতকালে উষ্ণ এবং গ্রীষ্মকালে শীতল।
- কূলের স্বার্থে একজনকে ত্যাগ করবে, গ্রামের স্বার্থে কূলকে ত্যাগ করবে, জনপদের স্বার্থে গ্রামকেও ত্যাগ করবে, আর নিজের স্বার্থে পৃথিবীকেও ত্যাগ করবে।
(বিঃদ্রঃ বিভিন্ন উৎস হইতে কপি করা বিধায় রিপিট হওয়ার ভাল সম্ভাবনা আছে)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩