আমার তখন বয়সইবা কত? ছ মাস বা বছর এক
আমায় তখন বলা হল দৈত্যপুরীর গল্প এক।
দৈত্য মানে লম্বা মোটা কালো বেজায় বিদঘুটে
চালচলনে আঁতকে উঠে ঠাঠা ভয়ের চোটে ।
তার দ্যুখানা শিং ও আছে নাকও বেজায় বাড়ে
ঠিক এক্ষুনি ঘুম না এলে পড়বে আমার ঘাড়ে!
একটু যখন বড় হলেম রাক্ষস আর খোক্ষস
ঠিকমত না খাবার খেলে তেড়েই আসত ভোঁক্ষস!
বলব কি তার চেহারে মশাই বমি এসে যায় দেখে
আমিও দুবার করেছি বমি আধবাটি দুধ চেখে!
ও পাড়ার অই পুড়োবাড়ি? ক্রিকেট খেলার মাঠ?
ঠিক অখানেই ডাইনি বুড়ি করত বাজার ঘাট!
তাই ওখানে সন্ধ্যাবেলা ক্রিকেট খেলা বারন
নাহয় তোমার ঘাড় মটকালে কেউ জানেনা কারন!
আর যদি না পড়তে বসি ঘড়ির কাটা মেপে
ভূতের রাজা, প্রেতের রানী থাকত ঝোপে ঝোপে!
একটু খানি সুযোগ পেলেই ব্যাস একেবারে কল্লা
অঙ্ক খাতায় সেই যে সেবার পেলাম দুটো গোল্লা??
কেউ জানে না সেও তো অই ভূতর ছানার কাজ!
পিঠে খেতে দিইনি বলে চুরি করেছিল বাড়ির কাজ!
তাই দেখেনে না মাস্টার মশাই দিলেন বেজায় মার
লোকে বলে মাস্টার মশাই ভুতো পালেণ চার!
এই দেখো না কান মলেছি কিছুতেই বুঝিনি তখন
যখন ছিলাম ছোট আমি আর সকলের মতন।
এসব কিছুই ফাঁকি ভীষণ এসব কিছুই মেকি
এসব কিছুই ছেলেভুলানো ছড়ার আঁকিবুঁকি!
তাই বলে কি মিছেই গেল সোনার ছেলেবেলা?
তাও কি আর হয়? বলছি শোনো, দৈত্য কাদের চ্যালা!
একটু যখন বড় হলেম ঠিক বুঝেছি ভায়া
তোমরা যাকে দৈত্য বল ভূত ও প্রেতের ছায়া
কেউ বলেনি আমায় তখন যখন ছিলাম ছোট
মানুষ গুলোই দৈত্য দানো, মানুষ দেখলে ছোটো!
ছেলেবেলায় কেউ বলেনি আসলে মানুষই মনস্টার
রুপকথার সব দৈত্যদের মানুষ মানায় হার!
কেমন আছো ভূতর ছেলে? কেমন আছ ভুতো?
মানুষ দেখলে দৌড়ে যেও, মানুষ দেখলে ছোটো!!