somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইশারা

২৪ শে মে, ২০১৮ রাত ১১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সময়টা ঠিক মার্চের শুরুর দিকে, স্বাভাবিকত এসময়ে আবহাওয়ায় গরমের তীব্রতা তেমন প্রখর হয়ে ওঠে না কিন্তু কয়েকটা দিন ধরে গরমের তীব্রতা প্রখর থেকে প্রখর হয়ে উঠেছে।অরিত্রর ভার্সিটিতেও তেমন ক্লাস হচ্ছেনা সব কোর্স প্রায় শেষ হয়ে গেছে বলে,তারপরও অরিত্র প্রতিদিন ক্যাম্পাসে যেত বন্ধুবান্ধবদের সাথে আড্ডা দিতে । অরিত্রের ও মন বসছে না কোন কাজে ,আর একমাস পড়েই এপ্রিলে তার ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা।পড়ালেখা থেকেও যেন কেমন একটা খাপ- ছাড়া খাপ- ছাড়া ভাব চলে এসেছে তার ভিতর ,সারাক্ষন রুমের দড়জা লাগিয়ে দিয়ে বসে থাকত তার অগুছালো রুমটায়,এলো মেলো ভাবে পড়ে আছে তার শখের গীটার ,কি বোর্ড ,তবলা যেন ধুলোর পাহাড় তৈরি হয়েছে তার শখের দেশে ।গানকে খুব ভালবাসত অরিত্র কিন্তু আজ তার সেই চিরচেনা স্বভাবের উল্টটা হচ্ছে ।

ইদানীং ফেসবুকের প্রতি অরিত্রের আসক্তি প্রচন্ডই বেড়ে গেছে,সারা ক্ষন রুমের বদ্ধ ঘরে আবদ্ধ থেকে ফেসবুকিং করেই কাটিয়ে দিচ্ছে দিনগুলো।অরিত্রর মা-বাবা তার এরকম পরিবর্তন কোন ভোবেই মেনে নিতে পারছেন না তাই তো তাদের একমাত্র আদরের ছেলেকে বকাবকির পরিমানও বেড়ে গেছে সারাক্ষন। খুব সন্নিকটেই পরীক্ষা অরিত্রর ইচ্ছা হয়না যে পড়ার টেবিলে বসে একটু পড়াশুনা করি তার সবসময়ই ইচ্ছা হয় ফেসবুকে চষে বেড়াত।অরিত্র এখন মোটামুটি কম -বেশি লেখা-লেখি করা শুরু করেছে ফেসবুকে,লেখালেখি করেই পার করে দিত সময় ভাল লাইকও আসত আবার অনেক ভাল ভাল মন্তব্যও আসত তার লেখা লেখিকে কেন্দ্র করে, যা তাকে ভাল লাগাত আরো বেশি করে লিখতে।

অরিত্রর এ্যাকাউন্টে প্রথম দিকে খুব কম সংখ্যকই বন্ধু ছিল আস্তে আস্তে করে তার বন্ধু সংখ্যা বাড়তে শুরু করল ।নিয়ম মাফিক প্রতিদিনই কিছুনা কিছু লিখত ফেসবুকে অরিত্র এবং ফেসবুকেই সে পার করে দিত তার বেশিটা সময়।অরিত্র বেশ কিছু দিন ধরে একটা ব্যাপার খেয়াল করে আসছে যে স্বপ্নরুপা সুহাসিনী নামের একটি এ্যাকাউন্ট থেকে নিয়মিতই লাইক কমেন্ট আসত তার প্রতিটা স্ট্যাটাসে, অরিত্রর ব্যাপারটা নিয়ে একটু কৌতুহল কাজ করা শুরুকরল তার ব্যাপারে জানবার ইচ্ছাটা প্রচন্ড বেড়ে গেল যে কে সে যে কিনা তার প্রতিটা লেখাতে নিয়মিত লাইক দিয়ে যাচ্ছে অতপর কমেন্ট ও করে যাচ্ছে!অরিত্র এ্যাকাউন্টি থেকে তার ব্যাপারে জানবার চেষ্টা করছিল যে কে সে হতে পারে ..কিন্তু অরিত্র ঐ এ্যাকাউন্টটি থেকে তার ব্যাপারে তেমন কিছুই জানতে পারল না শুধুমাত্র একবুক হতাশার নিশ্বাসই বেড়িয়ে আসল ,একটি সুন্দর কার্টুনের ছবি প্রোফাইল পিকচার হিসেবে দেয়া রয়েছে ,ব্যক্তিগত তথ্যাবলীও তেমন সমৃদ্ধ নয় যা তাকে চিনতে সাহায্য করবে যে সে কে হতে পারে। কখন কি ভাবে যে স্বপ্ন রুপা সুহাসিনী নামের এ্যাকাউন্টটি তার বন্ধু তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে অরিত্র তা মনে করে উঠতে পারছেনা আর মনে না থাকাটাই স্বাভাবিক যে কে কবে কখন কার সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে র্ভাচুয়াল জগত বলে কথা।মাঝে মাঝে অরিত্র ভাবত যে সে নিজে থেকেই তাকে বার্তা পাঠাবে কিন্তু কি কারনে যেন অরিত্র তাও করতে পারছেনা ,নানান রকম ভাবনা তার মাথায় কাজ করে যেত।অরিত্র ভাবত হয়তবা তার পরিচিত কেউ হতে পারে যে কিনা তার পরিচয় লুকিয়ে তাকে অনুসরন করে যাচ্ছে,কিন্তু অরত্রির মন কিছুতেই কিছু মানছিল না তার বার বার ইচ্ছা করত সেই স্বপ্নরুপা সুহাসিনী নামধারী অপরিচিতার সাথে পরিচিত হতে!বোধ হয় ঐ স্বপ্নরুপা সুহাসিনী নামে কোন জাদু–টোনা করা আছে যা প্রথমদিন থেকেই অরিত্রকে সবসময়ের জন্য ব্যাকুল করে রাখতো।

একদিন হঠাৎ করেই অরিত্রর কাছে মেসেজ আসল “খুব ব্যস্ত নাকি?” অরিত্র শুধু মাত্র মেসেজটাই সিন করল কিন্তু কে মেসেজটা তাকে সেন্ড করল তা খেয়ালে নেয়নি আর রিপ্লেও করেনি তখন। পরের দিন খুব ভোরে অরিত্র ফোনে ডেটা অনকরল ফেসবুকে সাইন ইন করার জন্য গতকাল রাতে অরিত্র একটা স্ট্যাটাস দিছিলো সেটাতে কি কি কমেন্ট আসলো তা চেক করবার জন্য কিন্তু ফেসবুকে এসেই অরিত্র নিস্তব্ধ হয়ে গেল যে গতকালকে “খুব ব্যস্ত নাকি?” মেসেজটা আসছিল তা স্বপ্ন রুপা সুহাসিনীর ! অরিত্র থমকে গেল কি হতে চলেছে অরিত্র কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলনা। অরিত্র খুব আগ্রহের সাথেই রিপ্লে করল “শুভ সকাল ,কেমন আছেন?”।স্বপ্নরুপা সুহাসিনীরও ইচ্ছা ছিল অরিত্রর সাথে পরিচিত হবার একটু জানার একটু কাছে আসবার।বোধহয় আজকে দুজনেরই মনের আশা পুরন হতে চলেছে, স্বপ্নরুপা সুহাসিনীর ও ফেসবুকিং এ প্রচন্ড রকম নেশা তাই সেও কম যায় না সেও অধিকাংশ সময় ফেসবুকে পার করে দেয়। ধীরে ধীরে দুজনেরই ব্যস্ততা নেমে আসে মেসেজ লেখা আর মেসেজ পড়াকে কেন্দ্র করে এভাবেই অরিত্রর সাথে পরিচয় হয় স্বপ্নরুপা সুহাসিনী নামের কোন এক অপরিচিতার । অরিত্র এই দ্বিতীয় বারের মত স্বপ্নরুপা সুহাসিনীর উপরে ক্রাশ খেল যখন জানতে পারল তার আসল নাম জয়শ্রী ! অরিত্রর জয়শ্রী নামটা খুব পছন্দের ছিল।

এখন অরিত্র সবসময়ই বাবা-মায়ের চোখ ফাকি দিয়ে পড়ার টেবিলে বসেও ফেসবুকিং এ ডুব দেয় –চলতে থাকে দুজনার অবিরত আলাপ চারিতার ফুল ঝুড়ি।মাঝে মাঝে মায়ের কাছে ধরাও পড়ে যায় অরিত্র, পড়াশুনা না করে পড়ার টেবিলে বসে মোবাইল ব্যবহার করা আর বকুনিও খেতে হয় ফ্রি তারপরও অরিত্রর তাতে তেমন কিছু মনে হয় না শুধুমাত্র একগাল হাসি ছাড়া আর কিছুই রিএ্যাক্ট আসেনা অরিত্রর কাছ থেকে কারন অরিত্রর মা হচ্ছে অরিত্রর সবথেকে বেস্ট ফ্রেন্ড।অরিত্রর মা তেমন কিছু বলতেন না কারন অরিত্র কখনওই তাদের হতাশ করেনি প্রতিটা ক্লাসে সে প্রথম হয়ে আসছে এখনও তার ব্যাতিক্রম নয়,যেকোন প্রতিযোগিতাতেই অরিত্র টপার ।ভার্সিটি থেকে বাসা ,এই আসা-যাওয়ার সময় ব্যাতীত বাকিটা সময় অরিত্রর কেটে যেত জয়শ্রীর সাথে মেসেজ বক্সে হাজার কথার আড়ালে।জয়শ্রীর সাথে এখন অরিত্রর ভালই চলছে, একে অপরের সম্বন্ধে বেশ ভালই জেনে গেছে যতটুকু দরকার।জয়শ্রী থাকে খুলনাতে সে এখানে একটি কোচিং সেন্টারে কোচিং করছে ,তার ফ্যামিলি থাকে যশোরে আর জয়শ্রী খুলনাতে একটি ছাত্রী হোস্টেলে থাকে। অরিত্র একদিন হঠাৎ করেই জয়শ্রীর কাছে তার পারসোনাল কন্টাক্ট নাম্বার চাইল !জয়শ্রী না করল না সাথে সাথে সে ইনবক্স করে তার নাম্বার দিয়ে দিল অরিত্রকে কারন জয়শ্রীও মনে মনে তার নি:সঙ্গতায় অরিত্রর সঙ্গ পেতে চাইত।অরিত্রকে নিয়ে জয়শ্রীর কৌতুহলের কোন শেষ ছিলনা অরিত্রর ও একই অবস্থা জয়শ্রীকে নিয়ে তারও অনেক কৌতুহল কাজ করত।ফোন নাম্বার পেয়ে অরিত্র খুশিতে একদম আত্মহারা হয়ে গেছে কোন এক অজানা সুখের নেশা তাকে বার বার ছুয়ে দিয়ে যাচ্ছে।জয়শ্রীও অপেক্ষা করতে লাগল যে কখন অরিত্র তাকে কল করবে…..

অরিত্র ফোন নাম্বারটা প্রথম দেখাতেই মুখস্ত করে নিল অত:পর এক দৌড়ে তার বাসার ছাদে চলে আসলো, অরিত্র ভাল করে চারপাশটায় খেয়াল করে নিল যে কেউ তার আশেপাশে রয়েছে কিনা আসলে অরিত্রর একটু ভয় ভয় লাগছে কারন এর আগে এরকম কোন মেয়ের সাথে কখনও কথা বলেনি অরিত্র।তাকে ইনবক্স করে দেয়া সেই নাম্বার টিতে কল করল অরিত্র, কল রিসিভ করা হলে ক্ষনিকের জন্য চুপ থেকে যায় অরিত্র আসলে কি বলবে তা ভেবে পাচ্ছিলনা অরিত্র। এবারও ওপাশ থেকেই প্রথম রেস্পন্স পেল অরিত্র “কল করে কথা বলছেন না যে ,ভয় করছে আপনার?”। অরিত্র কাপা কাপা স্বরে উত্তর দিল “না তো কই,আপনি আমাকে চিনলেন কেমন করে” এভাবেই শুরু হল অরিত্রর সাথে জয়শ্রীর ফোনালাপ।এখন সময়-অসময় নেই যখন ইচ্ছা তখনই জয়শ্রীকে ফোন দেয় অরিত্র আবার জয়শ্রী ও তার ইচ্ছা হলেই অরিত্রকে ফোন দেয়।

অরিত্র তার বাবা-মায়ের সাথে খাবার টেবিলে খাবার খাচ্ছিল হঠাৎ করেই তার ফোন বেজে উঠলো অরিত্র স্ক্রিনের উপরে “ইকো” নামটি ভেসে উঠতে দেখে থতমত খেয়ে গেল আসলে জয়শ্রীর সাথে কথা বলতে গেলেই অরিত্রর হার্বিট বেড়ে যায় আর তার জন্যই অরিত্র জয়শ্রীর নাম্বার টি তার কন্টাক্ট লিস্টে “ইকো” নামেই সেভ করে রেখেছে।মাত্রই অরিত্র সবার সাথে খেতে বসেছে দু-এক মুঠো খেল আর তার মধ্যই জয়শ্রীর কল! বাবা-মা সামনে এখন জয়শ্রীর ফোন রিসিভ করা যাবেনা তাই অরিত্র বাবা-মাকে একটি মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে যে তার শরীররটা প্রচন্ড খারাপ লাগছে সে আর খাবেনা বলে খাবার প্লেট টেবিলে রেখেই চলে গেল বেসিনে হাত ধুতে।অরিত্রর বাবা-মা অরিত্রর এরকম অস্বাভাবিক আচরন দেখে একটু হতাশ হয়ে একে অপরের দিকে তাকাল ,অরিত্রর বাবা অরিত্রর মাকে বল্লো অরিত্রর রুমে গিয়ে দেখে এসো তো কি হয়েছে অরিত্রর।অরিত্র রুমে এসেই জয়শ্রীকে ফোন ব্যাক করে কিন্তু জয়শ্রী ফোনটা তুলছে না হঠাৎ করেই অরিত্রর মা অরিত্রর রুমে এসে অরিত্রর পাশে বসে।অরিত্রর মা অরিত্রকে জিজ্ঞেস করল কি হয়েছে বাবা খাবার রেখেই চলে আসলি যে?জ্বর আসছে নাকি বলে কপালে হাত রাখে কিন্তু না তাপমাত্রা স্বাভাবিকই আছে,মাথায় একটু হাতবুলিয়ে আবারও জিজ্ঞেস করে কি হয়েছে বাবা বল? খেতে ইচ্ছা করছিলনা মা,কিছু হয়নি! তুমি যাও আমি এখন ঘুমাবো।অরিত্রর মা আবারও অরিত্রকে বলছিল আমি খাবার নিয়ে আসি নিজ হাতে তোকে খাইয়ে দেই …।মা আমি অনেক ক্লান্ত একটু ঘুমাব তুমি যাও রাতে খায়িয়ে দিও।অরিত্রর মা রুম থেকে চলে গেল সাথে সাথে অরিত্রও তার রুমের দড়জা নক করে দিল।অরিত্র আবার জয়শ্রীকে রিং দিলো..জয়শ্রী ফোন রিসিভ করে অরিত্রকে জিজ্ঞেস করে তখন ফোন কেন ধরেনি ?এভাবেই চলতে থাকে অরিত্র আর জয়শ্রীর একটু একটু করে অচেনা পথে পথ চলা।

অরিত্র জয়শ্রীকে মনে মনে ভালবেসে ফেলেছে কিন্তু কি জন্য জয়শ্রীকে তার এত ভাল লেগে গেল তা সে নিজেই বুঝে উঠতে পারছেনা।অরিত্রর মাঝে মাঝে ইচ্ছে হত জয়শ্রীকে তার ভালবাসার কথা বলতে কিন্তু জয়শ্রী যদি তার কথা গুলোতে খারাপ মনে করে তার সাথে যদি আর কখনও কথা না বলে তাই অরিত্র তার কথা গুলো বার বার জয়শ্রীকে বলতে চাইলেও বলতে ভয় পেত।একদিন অরিত্র ফেসবুকে মেসেজে জয়শ্রীকে জানিয়ে দিল যে অরিত্র জয়শ্রীকে ভালবাসে এবং অনেকটা বেশিই ভালবাসে,জয়শ্রী তেমন কোন রিএ্যাক্ট করেনি “ ভেবে দেখা যাবে ” এইটুকুই।জয়শ্রী প্রথম প্রথম না বল্লেও অরিত্রর ভালবাসার কাছে তাকে হার মানতে হয়।অরিত্রকে সে এখন প্রচন্ড ভালবাসে অরিত্রও জয়শ্রী কে ছাড়া কিছুই বুঝে না।অরিত্রর দুনিয়া টা এখন একদমই পাল্টে গেল অরিত্রর খাপ ছাড়া ভাবটা চলে গেল এখন সবকিছুই সে গুছিয়ে করে ,এখন আর সারাদিন রুমের দড়জা বন্ধ করে দিয়ে বসে থাকেনা,ধুলো বালি-পড়া রুমটাতেও এসেছে অনেক পরিবর্তন।অবহেলায় পড়ে থাকা গীটার,কি-বোর্ড এখন অরিত্রর হাতের ছোঁয়া পেতে শুরু করল ,অরিত্রর সবকিছুতেই নতুন করে সজীবতা ফিরে আসলো।অরিত্রর দুনিয়াটা এখন শুধুই জয়শ্রী আর তার পরিবারকে ঘিরে।বর্তমানে জয়শ্রীর তদারকিতে ভালই কাটছে অরিত্রর দিনগুলো।অরিত্রও জয়শ্রীকে নিয়ে প্রচন্ড ভাবে অরিত্র ফোন করে সবসময় জয়শ্রীর খোঁজ নেয় আর চলতে থাকে দুজনের হাজার স্বপ্ন আর ভালবাসার ঘর বোনা।

অরিত্রর বাবা-মা অরিত্রর সবকিছুর প্রতি এত যত্নশীল হতে দেখে খুবই খুশি,কিন্তু অরিত্র এর এরকমটা হওয়ার কারন তারা বুঝতে পারেনা। অরিত্রর ফাইনাল পরীক্ষাও ঘনিয়ে আসলো, ক্যাম্পাসে খুব ভাল ছাত্র অরিত্র তাই নিয়মিত তার বন্ধুরা তাকে ফোন করত তার কাছ থেকে নোট নেয়ার জন্য কিন্তু ইদানীং অরিত্রর ফোন সবসময়ই ব্যস্ত পাচ্ছে তার বন্ধুরা।এর আগে অরিত্রকে কোনসময় এভাবে ফোনে ব্যস্ত পাওয়া যেত না ।তার বন্ধুরাও জানত যে অরিত্র কারো সাথে রিলেশন করছিলনা, তবে কি হল অরিত্রর? ফ্রেন্ড সার্কেলে ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত লাগল।পরের দিন অরিত্র ভার্সিটি গেল ফাইনাল পরীক্ষা বেশি দিন বাকি নেই তাই প্রবেশ পত্র সংগ্রহ করতে,অরিত্র তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছিল ক্যাম্পাসে এমন সময়ই জয়শ্রীর ফোন! অরিত্র আড্ডা থেকে একটু দূরে গিয়ে ফোন টা রিসিভ করে “ক্যাম্পাসে আসছি প্রবেশ পত্র নিতে পরে কথা বলব” ফোনটা কেটে দেয় অরিত্র। এসে আবার আড্ডাতে যোগ দেয় অরিত্র ,হঠাৎ করেই একজন বলে উঠলো আচ্ছা এই ব্যাপার এজন্যই তোমাকে সবসময় ফোনে ব্যস্ত পাওয়া যাচ্ছে ,অরিত্র বুঝেও না বুঝার ভান করে বল্ল কী?কী? কিসের কী ব্যপার?সবাই একসাথে বলে উঠলো হ্যাঁ হ্যাঁ অরিত্রকে ইদানীং ফোনে আমরা পাচ্ছিইনা সবসময়ই ব্যস্ত পাই।বন্ধুদের হাজারো প্রশ্নের মুখে পড়ে অরিত্র জয়শ্রীর ব্যাপারে সবাইকে বলে দিল। সবাই অরিত্রর কাছে জয়শ্রীর ছবি দেখতে চাইল কিন্তু অরিত্রর কাছে তো জয়শ্রীর কোন ছবিই নেই! অরিত্র জয়শ্রীকে না দেখেই ভালবেসেছে কে এটা বিশ্বাস করবে কিন্তু হ্যাঁ এটাই সত্য যে অরিত্র জয়শ্রীকে না দেখেই ভালবেসেছে ।অরিত্র সবাইকে বল্ল যে তার কাছে জয়শ্রীর কোন ছবি নেই কিন্তু কেউ তার এ কথা বিশ্বাস করতে চাইল না সবাই ভাবছিল অরিত্র সবাইকে মিথ্যা বলছে ।

অরিত্র তার বন্ধুদের কোনরকম বুঝিয়ে বাড়ি ফিরল।অরিত্র কোনসময়ই জয়শ্রীর কাছে জয়শ্রীর কোন ছবি চায়নি অরিত্রও ইচ্ছা করছিল যে জয়শ্রীকে দেখতে যাকে সে এত ভালবাসে তাকে কিনা সে এখন পর্যন্তও দেখেনি, নিজেকেই নিজের কাছে অদ্ভুত মনে হল অরিত্রর।বাসায় এসে অরিত্র জয়শ্রীকে ফোন করে ফেসবুকে আসতে বল্ল,জয়শ্রী অরিত্রর কথা মতই সাথে সাথে অনলাইনে আসলো আসলে অরিত্রর কোন কথারই অবাধ্য হয় না জয়শ্রী ।অরিত্র জয়শ্রীর কাছে তাকে দেখতে চেয়ে তার একটা ছবি চাইল ,জয়শ্রী একটু হতবাক হল যে হঠাৎ করেই অরিত্র তার কাছে আজ ছবি চাচ্ছে।জয়শ্রী সাথে সাথে অরিত্রর ইনবক্সে একটি নয় পর পর কয়েকটি ছবি পাঠিয়ে দিল।অরিত্র জয়শ্রীর উপর এই তৃতীয় বারের মত আবার ও ক্রাশ খেল! জয়শ্রী যে এতটা সুন্দর হতে পারে তা অরিত্রর কল্পনার বাইরে ছিল ,সৃস্টিকর্তা বোধ হয় নিজ হাতেই জয়শ্রীকে বানিয়েছেন তার সুনিপুন হাতের সুদক্ষ কারুকাজ দ্বারা।অরিত্র একমনে তাকিয়েই আছে জয়শ্রীর ছবির পানে জয়শ্রীর রুপের স্নানে, অরিত্রর অপলকদৃষ্টিই বুঝিয়ে দিচ্ছে যে অরিত্র কল্পনার জগতে হাবুডুবু খাচ্ছে জয়শ্রী নিয়ে। হঠাৎ করেই মায়ের ডাকে অরিত্র ভাবনার জগত থেকে বেরিয়ে আসল।অরিত্র আজ মনে মনে অনেক খুশি কারন অরিত্র যে রকম জীবন সঙ্গীনি চাইত তার থেকে অনেক বেশিই আছে এই জয়শ্রীর মাঝে।

অরিত্রর মা অরিত্রর সবথেকে ভাল বন্ধু অরিত্র তার সবকিছুই তার মায়ের সাথে শেয়ার করে তার মায়ের কাছ থেকে কখনও কোন দিন কিছুই লুকায়নি আর অরিত্রর মাও অরিত্রকে সবসময় সব ভাল কাজে সাপোর্ট দিয়েছে প্রচন্ড রকম।অরিত্র ভাবল তার মাকে জয়শ্রীর কথা জানাবে ,অরিত্র তার মায়ের একদম কাছে গিয়ে বসল অত:পর অরিত্র তার ফোন বের করে তার মাকে জয়শ্রীর একটি ছবি দেখিয়ে বল্ল দেখতো মা কেমন দেখতে?অরিত্র তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান অরিত্রর কোন আবদার তারা কখনও অপূর্ন রাখেনি তাছাড়া অরিত্রর উপর তাদের ভরসা ছিল যে অরিত্র তাদের কখনও ঠকাবে না।অরিত্রর মায়েরও জয়শ্রীকে দেখে ভাল লেগে গেল !অরিত্রর মা অরিত্রকে জিজ্ঞেস করল (মেয়েটা কে রে?)।অরিত্র জয়শ্রীর সম্বন্ধে মাকে সব খুলে বলল এবং সে জয়শ্রীকে ভালবাসে এবং তার যদি বিয়ে করতে হয় তবে সে এই জয়শ্রীকেই বিয়ে করবে এটাও বলে দিল।অরিত্রর মা তার ছেলের কোন কথা কখনও ফেলেনি আজকেও তার ব্যতীক্রম নয় আর অরিত্রর মায়েরও জয়শ্রীকে দেখে বেশ পছন্দ হয়ে গেছিল।অরিত্রর মা অরিত্রকে সম্মতি দিয়ে দিল আর বল্ল তোর পছন্দই তো আমাদের পছন্দ ,অরিত্র খুশি হয়ে তার মায়ের গালে চুমো খেল ।

জয়শ্রীর সাথে কথা বলতে চাইল অরিত্রর মা ।অরিত্র সাথে সাথে জয়শ্রীকে কল দিয়ে বল্ল যে আমার মা তোমার সাথে কথা বলবে এই নাও কথা বল ,জয়শ্রী কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলনা হঠাৎ করে ।অরিত্র ফোনটা তার মায়ের কাছে দিয়ে সেখান থেকে একটু আড়ালে চলে গেল কারন অরিত্র জানে তার মা জয়শ্রীর সাথে কোন খারাপ আচরন করবেনা তাছাড়া অরিত্রর একটু লজ্জা-লজ্জা লাগছিলও বটে।অরিত্রর মায়ের সাথে বেশ কিছুক্ষন কথা বল্ল জয়শ্রী,অরিত্রকে ডাক দিল অরিত্রর মা-এই নে তোর সাথে কথা বলবে অরিত্র বল্ল না কেটে দাও এখন কথা বলব না অরিত্র ফোনটা হাতে নিয়ে লাইনটা কেটে দেয় ।অরিত্রর মা এবার জয়শ্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ - কত সুন্দর করে কথা বলে মেয়েটা ইত্যাদি- তার থেকেও বেশি খুশি ছিল একারনে যে জয়শ্রী তাকে মা বলে সম্বোধন করেছে সে জন্য।অরিত্র খুশিতে গদগদ হয়ে আবারও মাকে আদর করে ও অনেক গুলো সালাম দিয়ে এক দৌড়ে তার রুমে চলে আসে।অরিত্রর মাও তার ছেলের এরকম আনন্দ দেখে অনেক খুশি কারন অরিত্রই তাদের কাছে সবকিছু।রুমে ঢুকেই জয়শ্রীকে কল দেয় অরিত্র …ফোন রিসিভ করেই জয়শ্রী শুরু করল (অরিত্রর মা যে তার সাথে কথা বলবে তা অরিত্র এর আগে কখনও বলেনি কেন?)হঠাৎ করেই অরিত্রর মায়ের সাথে কথা বলায় প্রচন্ড রকমের ভয় পেয়ে গেছিল জয়শ্রী আর তার রাগ এখন আছড়ে পড়ছে অরিত্রের উপর ।এভাবেই চলতে থাকে তাদের দুস্ট-মিস্টি ভালবাসার সময় গুলো মুঠো বার্তা আর ফোনালাপের সাহায্য নিয়ে।

অরিত্রর বাবা বাসায় ফিরলে অরিত্রর মা অরিত্রর বাবাকে অরিত্র আর জয়শ্রীর ব্যাপারটা জানায়। অরিত্রর বাবাও অরিত্রকে প্রচন্ড রকমের ভালবাসে অরিত্রর জন্য যা কিছুই করতে পারে অরিত্রর বাবা, অরিত্রর বাবা অরিত্রকে কোনদিন কখনও কোনকিছুর জন্যই কষ্ট পেতে দেয়নি যখন যা চেয়েছে তাই এনে দিয়েছে আর বাব-মা হচ্ছে অরিত্রর প্রান অরিত্রর পৃথিবী।অরিত্রর বাবাও জয়শ্রীকে দেখতে চাইল,অরিত্রর বাবা মনে মনে অনেক খুশি কারন অরিত্র খুশি থাকলেই অরিত্রর বাবার আর কিছুর প্রয়োজন পড়ে না অরিত্ররই হচ্ছে তাদের বাঁচবার একমাত্র সম্বল । অরিত্রর মা অরিত্রর রুমে আসে অরিত্র তখন শুয়ে ছিল কখন যে তার মা রুমে আসল অরিত্র তা একদমই খেয়াল করেনি ,রুম এসেই অরিত্রর মা অরিত্রকে বলে উঠলো ওঠ তোর বাবা আমাদের বউ মাকে দেখতে চাচ্ছে ওঠ ফোনটা নিয়ে চলে আয়।অরিত্র এখনও শুয়ে আছে অরিত্র তার কানকে এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছিলনা কারন অরিত্র তার বাবাকে যেমন ভালবাসে তেমনই ভয় পায় কিন্তু তার মা এত তাড়াতাড়িই যে তার বাবাকে ম্যানেজ করে নিতে পারবে সে তা কল্পনা করে উঠতে পারেনি।অরিত্রর মা এখনো দাড়িয়ে ..কিরে উঠিস না কেন? তাড়াতাড়ি আয়।অরিত্র বিছানা থেকে উঠে ফোনটা হাতে নিয়ে মাথা নিচু করে মায়ের পিছু পিছু বাবার কাছে চলে গেল অরিত্রর ভয় ভয় করছে বাবা যদি কিছু বলে ফেলে বা রাগ করে সে জন্য কিন্তু এর আগে তো অরিত্রর কোন কথা সে ফালায়নি যা চেয়েছে তাইতো দিয়েছে এটা ভেবে একটু খুশি খুশিও লাগছে অরিত্রর মনের দিক থেকে একটু জোড়ও পাচ্ছে কারন সাথে তো তার মা আছেই । অরিত্রকে দেখা মাত্রই অরিত্রর বাবা অরিত্রকে বলে উঠলো কই আমার বউমাকে একটু দেখা ,অরিত্র তার বাবার মুখথেকে এরকম কথা শুনে সৃষ্টিকর্তাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানালো যে এরকম বাবা মায়ের ঘরে সে জন্ম নিতে পেরেছে,অরিত্র বাবার পাশে বসে জয়শ্রীর বেশ কয়েকটি ছবি দেখালো তার বাবাকে জয়শ্রীর ছবি দেখে অরিত্রর বাবারও জয়শ্রীকে অনেক পছন্দ হয়ে যায় ছেলের বউ করে আনবার জন্য তারও কোন অপত্তি থাকেনা সবথেকে বড় কথা এটা যে অরিত্রর পছন্দই হচ্ছে সবার পছন্দ।অরিত্র তার বাব-মাকে জয়শ্রীর ফোন নাম্বার দিয়ে দেয় এবং অরিত্র তার বাবা-মাকে রিকয়েস্ট করে যেন তারা ফোন করে জয়শ্রীর খোঁজখবর নেয়।অরিত্রর বাবা সাথে সাথেই তার ফোন দিয়ে জয়শ্রীকে কল দেয় এবং তার পরিচয় দিয়ে জয়শ্রীর সাথে কথা বলে।

জয়শ্রী অবাক হয়ে যায় অরিত্রর সব কাজই জয়শ্রীকে ভাবায় ,অরিত্রর তার প্রতি এত সিরিয়াস হওয়াটাও তাকে চিন্তিত করে দেয় অরিত্র কখনই জয়শ্রীকে খুব কাছ থেকে দেখেনি আবার জয়শ্রীও অরিত্রকে কখনও সামনাসামনি দেখেনি ।ফোনেই হয়েছিল তাদের প্রথম পরিচয় আর সেখান থেকেই সব কিছুর শুরু।জয়শ্রী খেয়াল করল যে অরিত্র জয়শ্রীর ব্যাপারে একদম সিরিয়াস সে তার বাবা মাকেও জয়শ্রীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল ,জয়শ্রীর একটু অবাক লাগলেও মন থেকে ভাল লাগা শুরু করে ।জয়শ্রীর অরিত্রর বাবা মায়ের সাথে কথা বলে খুব ভাল লাগে ,আর অনেকটা খুশি হয়ে যায় জয়শ্রী।জয়শ্রীর কাছে সবকিছু স্বপ্নের মত মনে হল ।জয়শ্রীর দুজন রুমমেট বান্ধবী ছিল লুবনা আর তন্নী। জয়শ্রী এতদিন অরিত্রর কথা কাউকে বলেনি জয়শ্রীরও ইচ্ছা হচ্ছিল তার রুমমেট দুই বান্ধবীকে অরিত্রর ব্যাপারে বলতে ,জয়শ্রী এখন অরিত্রর ব্যাপারে তার দুই বান্ধবীকে জানিয়ে দিল এমনকি জয়শ্রী যে অরিত্রর বাবা-মায়ের সাথে কথা বলেছে এবং সবাই তাকে মেনে নিয়েছে তাও জানিয়ে দিল।জয়শ্রী আর তার বান্ধবীদের মধ্যে অরিত্রকে নিয়ে অনেক কথা-বার্তা হল।অরিত্রর ইচ্ছা অনুযায়ী অরিত্রর বাবা-মাও এখন থেকে প্রতিদিন ফোন করে জয়শ্রীর খোঁজ-খবর নেয়।অরিত্রর কোন বোন ছিলনা আর অরিত্রর বাবা-মাও জয়শ্রীকে পেয়ে খুব খুশি হয়েছিল ,অরিত্রর বাবা-মা জয়শ্রীকে নিজেদের মেয়ের মতই সবসময় স্নেহ করত । অরিত্র সবসময়ই জয়শ্রীর পড়াশুনা শুরু করে সব ব্যাপারেই খুব খেয়াল নিত আর জয়শ্রীও অরিত্রর সব বিষয়ে খুব নজর দিত। ফেসবুকে মেসেজিং আর ফোনালাপ করেই বেশ ভালই যাচ্ছিল অরিত্র আর জয়শ্রীর দিনগুলো ।

অরিত্র এখন একদম গুছালো হয়ে গেছে।বলতে বলতে অরিত্রর ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়ে গেল কিন্তু অরিত্র আগের মতই জয়শ্রী সময় দিত।অরিত্রর পরীক্ষা চলছে বলে জয়শ্রী চাইত অরিত্র যেন তার সাথে পরীক্ষার কয়েকটাদিন খুব কম কথা বলে কিন্তু অরিত্র জয়শ্রীর সাথে কথা না বলে থাকতেই পারেনা।একদিন জয়শ্রী অরিত্রকে ইমোতে ভিডিও কল করে এর পর থেকে তারা এখন নিয়মিতই অনলাইনে একে অপরের সাথে ভিডিও কলে কথা বলে। অরিত্র একদিন মার্কেট থেকে একটি টি-শার্ট কিনে আনে, অরিত্র টি-শার্ট টি জয়শ্রীকে দেখানোর জন্য ফোন করে জয়শ্রীকে ভিডিও কলে আসতে বলে ,টি-শার্ট টি অরিত্রর গায়েই ছিল জয়শ্রীর টি-শার্ট টি পছন্দ হয়ে যায় সে অরিত্রকে সেই টি-শার্ট তার কাছে পাঠাতে বলে অরিত্রকে।অরিত্র একটু চমকে যায় যে জয়শ্রী কী সত্যি সত্যিই এগুলো পড়বে জয়শ্রীর কি এগুলো পড়ার অভ্যাস আছে? নাকি জয়শ্রী অরিত্রর সাথে মজা করছে?জয়শ্রীর টি-শার্ট লাগবেই!অরিত্র টি-শার্ট টি পড়ে নিয়েছিল আর প্রচন্ড ঘামও লেগেছিল বলে জয়শ্রীকে নতুন করে একটি কিনে পাঠানোর কথা বলে কিন্তু জয়শ্রীর ঘাম মাখানো টি-শার্টই চাই আসলে জয়শ্রী অরিত্রর শরীরে স্পর্শ পাওয়ার জন্যই অরিত্রর কাছে এরকম বাহানা করে বসল। অরিত্র কুরিয়ার করে জয়শ্রীকে টি-শার্ট টি পাঠিয়ে দেয়।জয়শ্রী অনেক সময়ই এরকম অদ্ভুত সব বাহানা করে বসত অরিত্রর কাছে।জয়শ্রী মাঝে মাঝে অরিত্রর ফোন বন্ধ পেলে /অরিত্রর সাথে কোন কিছু নিয়ে মন মালিন্য হলে / অরিত্র জয়শ্রীর সাথে কখনও কোন বিষয় নিয়ে রাগ করলেই - জয়শ্রী অরিত্রর বাবাকে না হয় অরিত্রর মাকে ফোন করে কান্না করে নালিশ করত অরিত্রর নামে আবার শেষে বলেও দিত যেন বেশি কিছু না বলে তারা অরিত্রকে জাস্ট একটু শাসন করে দিলেই হবে। অরিত্রর বাবা মাও অরিত্রকে মিস্টি ভাবে শাসন করে দেয় অরিত্র ঠিকই বুঝে নেয় যে এটা জয়শ্রীর কাজ।অরিত্র জয়শ্রীকে ফোন দেয় –
অরিত্র:-এখন সবাই এক জোটের হয়ে গেছ।
জয়শ্রী:-হব না! আমার সাথে ওভাবে করলে এমনই হবে।
এভাবেই ভালবাসার মান-অভিমানের ভাল লাগার হাজার কথার পথ ধরে এগিয়ে যায় তাদের ভালবাসা।

অরিত্রর পরীক্ষা শেষ হলে জয়শ্রী অরিত্রকে খুলনা আসতে বলে আসলে জয়শ্রী আর অরিত্রর সবসময় ফোনেই কথা-বার্তা হত এখন পর্যন্ত কেউ কাউকে কখনও সামনাসামনি দেখেনি। বলতে বলতে অরিত্রর পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেল,জয়শ্রীও অরিত্রকে চাপ দেয় খুলনাতে আসার জন্য।অরিত্ররও ইচ্ছা করে জয়শ্রীকে খুব কাছ থেকে দেখতে জয়শ্রীর কাছে ছুটে যেতে,অরিত্র যাব যাব বলতে বলতে অনেকটা দিন কেটে গেল।এবার জয়শ্রী অরিত্রর বাবা আর অরিত্রর মাকে ফোন করে অরিত্রর নামে খুব প্রচন্ড ভাবেই নালিশ করে এই জন্য যে -জয়শ্রী অরিত্রকে খুলনা আসার জন্য অনেকবার বল্লেও অরিত্র জয়শ্রীকে এখনও সঠিক সময়টা জানায়নি যে অরিত্র কোন দিন খুলনা আসছে।অরিত্র আসলে কোনদিনই খুলনা যায়নি খুলনাতে অরিত্রর কোন পরিচিত বন্ধু বা আত্মীয়ও ছিলনা ।জয়শ্রীর মুখে মুখে শুনে অরিত্র খুলনার এখন বেশ কয়েকটি জায়গার নাম খুব ভাল ভাবেই জানে যেমন:-পিটিআইমোড়,রয়্যাল মোড়,শহীদ সৃত্মি হাদিস পার্ক ,রুপসা ব্রীজ।জয়শ্রী থাকে পিটিআই মোড় যার কারনে অরিত্র সে জায়গাটার নাম খুব ভাল করেই জানে।একদিন সকাল থেকেই জয়শ্রীর পাগলামিটা প্রচন্ড পরিমানে বেড়ে যায় জয়শ্রী অরিত্রকে বার বার ফোন করে যে করেই হোক সেদিনই যেন খুলনা চলে আসে অরিত্র। অরিত্ররও প্রচন্ড ইচ্ছা করছিল জয়শ্রীর কাছে চলে আসতে ,অরিত্রও জয়শ্রীকে জানিয়ে দিল যে আজকে রাতেই অরিত্র নাইট কোর্সে ঢাকা থেকে খুলনা আসছে এবং ভোর বেলা তারা দেখা করছে।জয়শ্রী অরিত্রর ব্যাপারে অনেক কিছুই শেয়ার করে তার দুই বান্ধবীকে। অরিত্রর মনটাও ছটফট-ছটফট করছে জয়শ্রীর জন্য,অরিত্র একদম দেরি না করে সাথে সাথে তার ব্যাগটা গুছিয়ে নেয় আর গুগল ম্যাপ থেকে খুলনা শহরের ম্যাপটা ভাল করে দেখে নেয় ।

অরিত্র তার বাবা মাকে জানায় যে জয়শ্রীর সাথে দেখা করতে আজকে স্ন্ধ্যায় সে খুলনার উদ্দেশ্য রওনা দিবে।অরিত্রর বাবা অরিত্রকে তার ক্রেডিট কার্ড টি দিয়ে দেয় এবং অরিত্রর মা অরিত্রকে জয়শ্রীর জন্য কিছু নিয়ে যেতে বলে।অরিত্রর বাস ৭:৩০মিনিটে, অরিত্র খুলনার উদ্দেশ্য বাসা থেকে বের হয়ে সোজা একটা জুয়েলারীতে আসে অনেকক্ষন দেখে শুনে একটি রিং কিনে নেয় জয়শ্রীর অনামিকায় পরানোর জন্য।হাতেও বেশি সময় নেই অরিত্র সেখান থেকে তাড়াতাড়ি করে একটি রিক্সা ধরে চলে আসে স্টেশনে। অরিত্র আগে থেকেই ফোনকরে টিকেট কনফার্ম করে রেখেছিল অরিত্র স্টেশনে এসেই টিকিট কাউন্টার থেকে তার টিকেট সংগ্রহ করে নেয়।জয়শ্রী সবসময়ই ফোন করে অরিত্রর খোঁজ-খবর নেয়। অরিত্রর বাস ছেড়ে দিয়েছে এরই মধ্যে,অরিত্রর সময় কাটছেই না তার ভিতর দিয়ে নিরবে বয়ে চলছে অপেক্ষার প্রহর কেঁটে যাওয়ার নি:শব্দ ঝড়।

জয়শ্রীরও সময় কাটছে কোনকিছুতেই নানান রকম ভাবনা তাকে ইশারা করে যায়।কিছুক্ষন পর পর ফোনে মেসেজিং করে কেঁটে যায় একে অপরের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর।খুব ভোরে এসে বাস থামে খুলনাতে ,খুলনার মাটিতে পা দিয়েই অরিত্রর মনে হয় যে খুলনা তার খুবই চিরচেনা অচেনা জায়গাকে এরকমভাবে তার আগে কখনোই খুব চিরচেনা মনে হয়নি।অরিত্র হোটেলে এসে রুম নিয়ে জলদি করে ফ্রেশ হয়ে নেয়।অরিত্র মন কিছুতেই কিছু মানছে না অরিত্র জয়শ্রীর সাথে দেখা করার পাগলের মত হয়ে গেল।

অরিত্র জয়শ্রীকে ফোন দেয় …জয়শ্রী অরিত্রকে হাদিস পার্ক আসতে বলে সেখানেই তারা দেখা করবে।আজকেই প্রথম তারা দুজন দুজনকে একদম সামনাসামনি দেখতে যাবে, দুজনার মনের ভিতর অজান্তেই অজানা ভয় কাজ করতে শুরু করে কিন্তু সে কারনের মানে তারা নিজেরাই জানেনা।অরিত্র ব্যাগ থেকে জয়শ্রীর জন্য কিনে নেওয়া সেই রিং টা পকেটে নেয় আর রুম থেকে বেরিয়ে রিক্সা ধরে সোঁজা পার্কে চলে আসে।অরিত্র পার্কের এককোনে দাড়িয়ে আছে কিন্তু জয়শ্রীর কোন খবর নেই অরিত্র জয়শ্রীকে আবারও কল করে জয়শ্রী অরিত্রকে কয়েকটা মিনিট অপেক্ষা করতে বলে,অরিত্র মনে মনে ভাবে মেয়েরা কি সব কাজেই লেট করে।জয়শ্রী পার্কে এসে অরিত্রকে ফোন দেয় যে অরিত্র কোথায় আছে।অরিত্র দূর থেকে জয়শ্রীকে দেখতে পায়,অরিত্র জয়শ্রীকে যে জায়গায় দাড়িয়ে আছে সে জায়গাতেই দাড়াতে বলে।জয়শ্রী সেখানেই দাড়িয়ে থাকে অরিত্রও জয়শ্রীর একদম কাছে চলে আসে ,এই প্রথম বার দুজন দুজনে এতটা কাছ থেকে দেখছে। দুজন দুজনার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয় হঠাৎ করেই অরিত্র জয়শ্রীর হাতটা ধরে তার অনামিকায় রিং টি পড়িয়ে দেয়।অরিত্র সবসময়ই জয়শ্রীকে অবাক করে দিত কিন্তু এই কাজটি জয়শ্রীকে অনেকটা হতভম্ব করে দিল ।জয়শ্রীর রিং টি প্রচন্ড রকমের পছন্দ হয়।দুজনারই এতদিনের জমিয়ে রাখা হাজারো কথা যেন শেষই হচ্ছেনা।এবারই জয়শ্রী নিজ থেকেই তার হাতটা বাড়িয়ে দেয় অরিত্রকে এবার অরিত্রর জয়শ্রীর হাতটা ধরতে একটু কেমন যেন লাগছিল ,জয়শ্রী নিজ থেকেই অরিত্রর হাতটা খুব শক্ত করে ধরে।

জয়শ্রী স্পীড এনার্জী ড্রিংক খুব পছন্দ করত পার্কের বাইরের দোকান থেকে দুজনে দুটো স্পীড কিনে নেয়।দুজনে স্পীড খাচ্ছে আর একে অপরের হাত ধরে পার্কটা ভাল করে ঘুরে দেখছে আর চলতে থাকে দুজনার অবিরত দুস্ট-মিস্টি খুঁনসুটি।এরই মাঝে কল আসে জয়শ্রীর মোবাইলে কলটা করেছে জয়শ্রীর বড় বোন ,জয়শ্রীর বড় বোন জয়শ্রীর রুমে আসবে তাই জয়শ্রীকে রুমে থাকতে বলে সে ৩০ মিনিটের মধ্যেই জয়শ্রীর রুমে চলে আসবে ।জয়শ্রীর মনটা খারাপ হয়ে গেল,জয়শ্রী আরো একটা দিন থেকে যেতে বলে অরিত্রকে। এখন যদি জয়শ্রী রুমে চলে না যায় আর তার দিদি এসে যদি তাকে রুমে না দেখতে পায় তাহলে তার সাথে খারাপ কিছু হবে তাই তার এখনই রুমে ফিরে যেতে হবে ,অরিত্র না করলনা অরিত্র আরেকটা দিন থেকে যেতে রাজি হয়ে যায়।অরিত্র জয়শ্রীকে রিক্সাতে উঠিয়ে দিয়ে হোটেলে তার রুমে চলে আসলো।কিছুক্ষন পর পরই জয়শ্রী অরিত্রকে কল করে জিজ্ঞেস করে অরিত্রর খাওয়া হয়েছে কিনা ?/কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা ইত্যাদি, অরিত্রর এই সময়টুকু জয়শ্রীর সাথে ফোনে কথা বলেই ভালই কেটে যায়।

রাতে জয়শ্রী অরিত্রকে জানায় যে আগামীকালকে সকালে তার পরীক্ষা থাকার কারনে সে সকালে কোন কিছুতেই বের হতে পারবেনা।পরেরদিন দুপুরে জয়শ্রী অরিত্রকে ফোন দিয়ে তার হোস্টেলের সামনে যে ধাবাটি আছে সেখানে আসতে বলে।প্রায়শই জয়শ্রী অরিত্রকে এই ধাবার কথা বলত কারন জয়শ্রীর এই ধাবার কোল্ড কফি খুব পছন্দের ছিল।অরিত্র ধাবার সামনে দাড়িয়ে জয়শ্রীকে ফোন দিচ্ছে জয়শ্রীকে দেখতে না পেয়ে।অরিত্র যে এত তাড়াতাড়ি চলে আসবে জয়শ্রী তা ভাবতে পারেনি।জয়শ্রী রুম থেকে তাড়াতাড়ি চলে আসে এবং অরিত্রকে সাথে নিয়ে ধাবাতে ঢুকে।অরিত্র জয়শ্রীর কাছে কোল্ড কফি খেতে চাইত কারন মাঝে মাঝে জয়শ্রী যখন এই ধাবাতে কোল্ড কফি খেতে আসত তখন অরিত্রকে ফোন করে জানিয়েই আসত ,তখন অরিত্রও জয়শ্রীর কাছে কোল্ড কফি খেতে চাইত।আজকে সেই ধাবাতেই অরিত্র আর জয়শ্রী খুব পাশাপাশি ভাবে বসে আছে।জয়শ্রী যা যা খেতে পছন্দ করে অরিত্র জয়শ্রীকে সে সবকিছুই অর্ডার করতে বলে, খেতে খেতে অনেক কথা-বার্তাই হয় দুজনার মধ্য। অরিত্রর কি কারনে যেন মনে হচ্ছিল এটাই জয়শ্রীর সাথে তার শেষ দেখা হতে চলছে।জয়শ্রীর কাছ থেকে অরিত্রর যেতে ইচ্ছা করছিলনা কি কারনে যেন হারানোর ভয় অরিত্রকে সবসময় তাড়া করে যাচ্ছিল,অরিত্র জয়শ্রীর কাছ থেক বিদায় নিয়ে চলে আসে।

অরিত্র সেদিনই নাইট কোর্সে খুলনা থেকে ঢাকা চলে আসে।অরিত্র কখন-কোথায় পৌঁছালো জয়শ্রী সবসময়ই ফোন করে তার খোঁজ-খবর রাখে।অরিত্র বাসায় এসেই জয়শ্রীকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে অরিত্র বাসায় পৌঁছে গেছে।অরিত্র জার্নিতে খুব ক্লান্ত হয়ে গেছিল অরিত্র নাস্তা সেরেই রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ে।অরিত্রর বাসায় দুপুরে সবাই একসাথে খেতে বসলে অরিত্রর বাবা অরিত্রর কাছে জয়শ্রীর আর অরিত্রর একসাথে তোলা ছবি দেখতে চায়।অরিত্র খুলনাতে জয়শ্রীর সাথে যে কয়েকটি ছবি তুলেছিল তা তার বাবা-মাকে দেখায় ।বেশ কয়েকদিন ভালই চলছিল দুজনার।

ঐ দিকে জয়শ্রীর সাথে হঠাৎ করেই রনি নামের একটি ছেলের পরিচয় হয়।এখন অরিত্র জয়শ্রীকে ফোন করলেই অনেকটা সময় ব্যস্ত পায়, আসলে জয়শ্রী নতুন পরিচিত হওয়া ছেলেটার সাথে কথা বলে কিন্তু জয়শ্রী তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলছিল বলে অরিত্রকে শান্ত করে দেয়।জয়শ্রী অরিত্রকে অনেকটা এড়িয়ে চলতে থাকে আগের মত দুজনার তেমন কোন যোগাযোগ হয় না। অরিত্র জয়শ্রীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও জয়শ্রী অরিত্রকে আগের মত একটুও সময় দেয় না।

জয়শ্রী এখন সেই ছেলেটার সাথে সারাটাদিন ঘুরে বেড়ায় আর অরিত্র কল করলেই তার অনেক ব্যস্ততা দেখিয়ে তাড়াতাড়ি করে ফোনটা কেটে দেয়।ফেসবুকেও আগের মত অরিত্রর সাথে চ্যাটিং করতে চায়না জয়শ্রী। অরিত্র মেসেজ পাঠালেও আগের মত খুব তাড়াতাড়ি করে কোন রিপ্লে আসেনা অরিত্রর ইনবক্সে।অনেকটা পাল্টে যায় জয়শ্রী ,অরিত্র জয়শ্রীর এরকম পরিবর্তন কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা।

একদিন জয়শ্রীর এক বান্ধবী লুবনা অরিত্রকে কল করে জানায় যে জয়শ্রীর সাথে রনি নামের কোন এক ছেলের সাথে পরিচয় হয়েছে আর তার সাথেই নাকি জয়শ্রী বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছে ।অরিত্র লুবনার কথা বিশ্বাস করতে পারছিলনা অরিত্র তার কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলনা সে কি আসলেই সত্যি শুনছে ?অরিত্র লুবনাকে আবারও জিজ্ঞেস করে যে লুবনা যা বলছে তা ঠিক কিনা ?লুবনা এটাও বলে যে অরিত্র যেন খুব তাড়াতাড়ি জয়শ্রীকে বিয়ে করে নিয়ে যায়।একদিন ফোনে জয়শ্রী অরিত্রর সাথে লুবনা আর তন্নীকে পরিচয় করিয়ে দেয়,তখন লুবনার আর তন্নীর ফোন নাম্বারও দিয়ে দেয় অরিত্রকে।অরিত্র যখন জয়শ্রীর ফোন বন্ধ পেত তখন তার বান্ধবীদেরই ফোন দিত জয়শ্রীর খোঁজ নিতে আর সে সূত্রেই লুবনার সাথে অরিত্রর একটা ভাল সম্পর্ক হয়ে যায়। জয়শ্রী হঠাৎ করেই অরিত্রর সাথে সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।অরিত্র কি করবে ভেবে পাচ্ছিল না!!
প্রতিদিনই অরিত্র কোন না কোন ভাবে জয়শ্রীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে কিন্তু জয়শ্রী অরিত্রর ফোন নাম্বারটাও পর্যন্ত ব্লাকলিস্ট করে দেয় অরিত্র পাগলের মত হয়ে যায়।আগের মতই এখন অরিত্র রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুকেই কাটিয়ে দেয়,জয়শ্রী কিসের জন্য তার সাথে এভাবে করছে? তার কিসের ভুল ?কি জন্য এরকম টা করা হচ্ছে তার সাথে এরকম অনেক মেসেজ পাঠাতে থাকে জয়শ্রীর ইনবক্সে কিন্তু অরিত্র ওপাশ থেকে কোনরকম রিপ্লেই পাচ্ছেনা ।

অনেকটা ছন্ন ছাড়া হয়ে যাচ্ছে অরিত্র, ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া নিয়মিত ক্যাম্পাস যাওয়া সবকিছুই কেমন যেন অনিয়মিত হয়ে যাচ্ছে অরিত্রর।জয়শ্রীর সাথে কয়েকটা মিনিটের জন্য কথা বলিয়ে দেবার জন্য লুবনার কাছে অরিত্র অনেক রিকয়েস্ট করে,জয়শ্রী অরিত্রর সাথে একদমই কথা বলতে চাচ্ছে না।লুবনা অরিত্রর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেয় কারন সে অরিত্রর সাথে জয়শ্রীর কথা বলিয়ে দিতে পারেনি,লুবনাও অনেক বার চেষ্টা করেছিল কিন্তু জয়শ্রী কিছুতেই চাচ্ছিলনা । অরিত্র আর জয়শ্রীর দূরত্বটা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে যাচ্ছে।এবার জয়শ্রী তার ফেসবুক লিস্ট থেকেও অরিত্রকে ব্লক করে দেয়।অরিত্র কিছুতেই মেনে নিত পারছিলনা জয়শ্রীর এরকম পরিবর্তন ,অরিত্রর দুনিয়াটা পাল্টে যেতে শুরু করে খাপছাড়া খাপছাড়া ভাবটা অরিত্রর আাবারও চলে আসে।

একদিন জয়শ্রী অরিত্রকে ফোন করে জানিয়ে দেয় যে-অরিত্র যেন তাকে ভুলে যায় আর কখনও যেন তাকে ডিস্টার্ব না করে।অরিত্র কিছু বলতে যাবে এমন সময়ই লাইনটা কেটে দেয় জয়শ্রী। অরিত্র সাথে সাথেই সেই নাম্বারে আবার ডায়াল করে কিন্তু প্রতিবারই বন্ধ পাচ্ছে।জয়শ্রী যে অরিত্রকে এভাবে ধোকা দিতে পারবে অরিত্র তা কখনো কল্পনাই করতে পারেনি। মুহুর্তেই অরিত্রর সব স্বপ্ন গুলো শেষ হয়ে যায় অরিত্র নিজেকে কিছুতেই শান্ত রাখতে পারছিলান। জয়শ্রীর সৃত্মি অরিত্র কিছুতেই ভুলতে পারছেনা।জয়শ্রী অরিত্রর জীবনে আসার কারনে অরিত্র নিজেকে খুব গুছিয়ে নিয়েছিল অরিত্রর জীবন শূন্যতা থেকে পূর্নতায় ভরে উঠেছিল ,কিন্তু জয়শ্রী অরিত্রর জীবন থেকে চলে যাওয়ায় আজ অরিত্রর জীবন এখন হতাশার এক অশান্ত সমুদ্র।অরিত্রর গুছিয়ে নেয়া রুমটা অগুছালো হয়ে পড়ে তার পছন্দের দেশে আজ বড়ই খড়া লেগেছে।অরিত্রর শখের কি-বোর্ড ,গীটার আজ তার হাতের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত সমস্ত কিছুতেই আজ নিসঙ্গতার ছোঁয়ার স্পর্শ।অরিত্র সমস্ত পৃথীবিটাকে ভুলে গেছে আজ ,সময়ের ঝড় বেদনার পাহাড় নিসঙ্গতায় কেটে যায় অরিত্রর প্রতিটা প্রহর।অন্ধকারই এখন খুব ভাল লাগে অরিত্রর রুমের লাইট অফ করে দিয়ে অন্ধকার রুমেই আবদ্ধ থাকে বেশির ভাগ সময়।সারাটাদিনই এখন অরিত্র তার অগুছালো রুমটায় ল্যাপটপের সামনে বসে থাকে আর ফেসবুকে জয়শ্রীর অপেক্ষায় কাটিয়ে দেয় দিনের পর দিন অরিত্রর আর সে অপেক্ষার প্রহর আর শেষ হয় না ……
বিশ্বাসগুলোও অবিশ্বাস হতে থাকে অধিকার হারাতে হারাতে।তবুও বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকে অরিত্র আর তার অপেক্ষার ওজন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে শুরু করে কিন্তু কারো ইশারা আর আসেনা অরিত্রকে জাগাতে।
ছবিঃগুগল
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মে, ২০১৮ রাত ১২:২৫
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় দেশনায়ক তারেক রহমানকে সম্পৃক্ত করার নেপথ্যে  

লিখেছেন এম টি উল্লাহ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:০৮


আগেই বলেছি ওয়ান ইলেভেনের সরকার এবং আওয়ামীলীগের যবনায় জনাব তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পৌনে একশ মামলা হলেও মূলত অভিযোগ দুইটি। প্রথমত, ওই সময়ে এই প্রজন্মের নিকট উপস্থাপন করা হয়েছিল দেশনায়ক তারেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পকে নিয়ে ব্লগারদের রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১০



**** এডমিন টিমের ব্লগারেরা আমাকে বরাবরের মতোই টার্গেট করে চলেছে, এভাবেই সামু চলবে। ****

ট্রাম্পের বিজয়ে ইউরোপের লোকজন আমেরিকানদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী শংকিত; ট্রাম্প কিভাবে আচরণ করবে ইউরোপিয়ানরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্পের বিজয়, বিশ্ব রাজনীতি এবং বাংলাদেশ প্রসংগ

লিখেছেন সরলপাঠ, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২১

ট্রাম্পের বিজয়ে বাংলাদেশে বা দেশের বাহিরে যে সব বাংলাদশীরা উল্লাস করছেন বা কমলার হেরে যাওয়াতে যারা মিম বানাচ্ছেন, তারাই বিগত দিনের বাংলাদেশের ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তারা আশায় আছেন ট্রাম্প তাদের ফ্যাসিস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠেলার নাম বাবাজী !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩১

এক গ্রামীণ কৃষক জমিদার বাড়িতে খাজনা দিতে যাবে। লোকটি ছিলো ঠোটকাটা যখন তখন বেফাস কথা বা অপ্রিয় বাক্য উচ্চারণ করে ক্যাচাল বাধিয়ে ফেলতে সে ছিলো মহাউস্তাদ। এ জন্য তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শীঘ্রই হাসিনার ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৩৮


পেক্ষার প্রহর শেষ। আর দুই থেকে তিন মাস বাকি। বিশ্ব মানবতার কন্যা, বিশ্ব নেত্রী, মমতাময়ী জননী, শেখ মুজিবের সুয়োগ্য কন্যা, আপোসহীন নেত্রী হযরত শেখ হাসিনা শীগ্রই ক্ষমতার নরম তুলতুলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×